সপ্তাহব্যাপী কঠোর লকডাউনের প্রথম দিনে ফেরিঘাট এলাকা ছিল একরকম জনশূন্য। ফেরি চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও খুব সামান্য লোক নিয়ে ফেরিগুলো ঘাট ত্যাগ করে। পণ্যবাহী গাড়ি, রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স এবং দুইএকটা প্রাইভেটকার মাইক্রোবাস ছাড়া তেমন যানবাহনও দেখা যায়নি। মাঠে পুলিশের সঙ্গে সেনাবাহিনীর অবস্থান করার কথা থাকলে তাদের দেখা যায়নি। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিনিধিরা জানান, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার ঘোষিত সপ্তাহব্যাপী কঠোর বিধিনিষেদের প্রথম দিন গতকাল রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাট ছিল অনেকটা ফাঁকা। কিছু পণ্যবাহী গাড়ি, জরুরি এক-দুইটি প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ছাড়া তেমন কোন যানবাহন চলেনি। তবে দুই-একজনকে মহাবিপাকে পড়ে ঘাট পার হতে হয়।
রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া নৌপথ। কঠোর বিধিনিষেধের প্রথম দিনে এই রুটে ফেরি চলাচল ছিল স্বাভাবিক। নদী পাড়ি দিয়ে আসা ফেরিগুলোতে পণ্যবাহী গাড়ি ছাড়া অন্যকোন গাড়ি তেমন দেখা যায়নি।
ঘাট সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সকাল থেকে তেমন কোন মানুষজন পারাপার হয়নি। তবে ঘাট এলাকার কিছু হকারকে (ফল, ডিম বিক্রেতা) ফেরিতে উঠতে দেখা যায়। মাঝেমধ্যে এক-দুটি রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সকে পার হতে দেখা যায়।
সরেজমিন সকাল ৮টা থেকে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় অবস্থান করে দেখা যায়, গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান আকন্দ কয়েকজন সদস্য সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে টহল দিচ্ছে। মাস্ক ছাড়া কিছু লোকজন ঘোরাফেরা করতে দেখে তাদের সরিয়ে যার যার ঘরে ফিরে যাওয়ার নির্দেশনা দেন। বেলা ১১টার দিকে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজিজুল হক খান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) রফিকুল ইসলাম, গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আবদুল্লাহ আল তায়াবীরসহ উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের তৎপরতা দেখা যায়। ফেরিঘাট এলাকায় টহলরত গোয়ালন্দ ঘাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান আকন্দ বলেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ভোর থেকে ডিউটিতে আছি। থানার ওসি আবদুল্লাহ আল তায়াবির নেতৃত্বে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। ভোরে কিছু অটোরিকশা দেখেছিলাম। তাদের বুঝিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি। ঘাট এলাকায় এখন পুলিশ, সাংবাদিক ছাড়া কাউকে দেখছি না।
বিআইডব্লিউটিসি টার্মিনাল তত্ত্বাবধায়ক শওকত আলী বলেন, বর্তমানে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ১৪টি ফেরি চলছে। পণ্যবাহী এবং জরুরি গাড়ি পারাপারে সবকটি ফেরি চালু রাখা হয়েছে।
শিবালয় প্রতিনিধি জানান, কঠোর বিধিনিষেধের লকডাউনে আর্মি, বিজিবি মোতায়েনের কথা শুনেই জনশূন্য পাটুরিয়া ও আরিচা ঘাটের ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। গতকাল সকাল থেকে কঠোরভাবে লকডাউন পালন করায় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও আরিচা-কাজীরহাট নৌ-রুটে ফেরি পারাপারের জন্য যানবাহন কম দেখা গেছে। স্বল্পসংখ্যক পণ্যবাহী ট্রাক, কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স, কিছু ওষুধের গাড়ি পারাপার হয়েছে। ঘাট এলাকা ছিল জনশূন্য ।
আরিচা-পাটুরিয়া সরজমিনে পরিদর্শন করে দেখা গেছে, নৌরুট দুইটি দিয়ে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন পারাপার হয়নি। এদিকে সর্বাত্মক লকডাউন পালন করতে পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনী মাঠে রয়েছেন বলে থানা সূত্রে জানা গেছে। কিন্তু সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রোডঘাটে সেনাটহল চোখে পড়েনি।
ঘাট এলাকায় সব ধরনের দোকানপাট সকাল থেকেই বন্ধ ছিল। দুই একজন ছাড়া কোথাও কোন লোজজনের সমাগম দেখা যায়নি। ঘাট এলাকা একেবারেই ফাঁকা ছিল। মাঝে মধ্যে দুই একটি করে পণ্যবাহী ট্রাক ও অ্যাম্বুলেন্স ফেরিতে উঠতে দেখা গেছে। যানবাহন একেবারে কম আসা ও ফেরি পারাপার যাত্রী না থাকায় দেড় দুই ঘণ্টা পর পর ফেরিগুলো দৌলতদিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে।
এদিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কেই পণ্যবাহী ট্রাক, ওষুধের গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া অন্য কোন যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়নি। এ মহাসড়কও ফাঁকা ছিল। উপজেলার হাট-বাজারগুলোর দোকানপাটও বন্ধ ছিল। এ ছাড়া, উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেসমিন সুলতানা ঘাট এলাকাসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে ঘুরে পরির্দশন করছেন।
বিআইডব্লিউটিসির ডিজিএম জিল্লুর রহমান জানান, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ১৩টি ও আরিচা-কাজীরহাট নৌরুটে ২টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। ভোর থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত প্রায় ৫ শতাধিক ট্রাক ও ১৫-১৬টি অ্যাম্বুলেন্স নদী পারাপার হয়েছে। শিবালয় থানার ওসি ফিরোজ কবির জানান, সরকার ঘোষিত লকডাউন কঠোরভাবে পালন করার জন্য ঘাট এলাকায় পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনী রয়েছে।
শুক্রবার, ০২ জুলাই ২০২১ , ১৮ আষাঢ় ১৪২৮ ২০ জিলক্বদ ১৪৪২
সংবাদ ডেস্ক
সপ্তাহব্যাপী কঠোর লকডাউনের প্রথম দিনে ফেরিঘাট এলাকা ছিল একরকম জনশূন্য। ফেরি চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও খুব সামান্য লোক নিয়ে ফেরিগুলো ঘাট ত্যাগ করে। পণ্যবাহী গাড়ি, রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স এবং দুইএকটা প্রাইভেটকার মাইক্রোবাস ছাড়া তেমন যানবাহনও দেখা যায়নি। মাঠে পুলিশের সঙ্গে সেনাবাহিনীর অবস্থান করার কথা থাকলে তাদের দেখা যায়নি। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিনিধিরা জানান, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার ঘোষিত সপ্তাহব্যাপী কঠোর বিধিনিষেদের প্রথম দিন গতকাল রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাট ছিল অনেকটা ফাঁকা। কিছু পণ্যবাহী গাড়ি, জরুরি এক-দুইটি প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ছাড়া তেমন কোন যানবাহন চলেনি। তবে দুই-একজনকে মহাবিপাকে পড়ে ঘাট পার হতে হয়।
রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া নৌপথ। কঠোর বিধিনিষেধের প্রথম দিনে এই রুটে ফেরি চলাচল ছিল স্বাভাবিক। নদী পাড়ি দিয়ে আসা ফেরিগুলোতে পণ্যবাহী গাড়ি ছাড়া অন্যকোন গাড়ি তেমন দেখা যায়নি।
ঘাট সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সকাল থেকে তেমন কোন মানুষজন পারাপার হয়নি। তবে ঘাট এলাকার কিছু হকারকে (ফল, ডিম বিক্রেতা) ফেরিতে উঠতে দেখা যায়। মাঝেমধ্যে এক-দুটি রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সকে পার হতে দেখা যায়।
সরেজমিন সকাল ৮টা থেকে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় অবস্থান করে দেখা যায়, গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান আকন্দ কয়েকজন সদস্য সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে টহল দিচ্ছে। মাস্ক ছাড়া কিছু লোকজন ঘোরাফেরা করতে দেখে তাদের সরিয়ে যার যার ঘরে ফিরে যাওয়ার নির্দেশনা দেন। বেলা ১১টার দিকে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজিজুল হক খান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) রফিকুল ইসলাম, গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আবদুল্লাহ আল তায়াবীরসহ উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের তৎপরতা দেখা যায়। ফেরিঘাট এলাকায় টহলরত গোয়ালন্দ ঘাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান আকন্দ বলেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ভোর থেকে ডিউটিতে আছি। থানার ওসি আবদুল্লাহ আল তায়াবির নেতৃত্বে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। ভোরে কিছু অটোরিকশা দেখেছিলাম। তাদের বুঝিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি। ঘাট এলাকায় এখন পুলিশ, সাংবাদিক ছাড়া কাউকে দেখছি না।
বিআইডব্লিউটিসি টার্মিনাল তত্ত্বাবধায়ক শওকত আলী বলেন, বর্তমানে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ১৪টি ফেরি চলছে। পণ্যবাহী এবং জরুরি গাড়ি পারাপারে সবকটি ফেরি চালু রাখা হয়েছে।
শিবালয় প্রতিনিধি জানান, কঠোর বিধিনিষেধের লকডাউনে আর্মি, বিজিবি মোতায়েনের কথা শুনেই জনশূন্য পাটুরিয়া ও আরিচা ঘাটের ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। গতকাল সকাল থেকে কঠোরভাবে লকডাউন পালন করায় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও আরিচা-কাজীরহাট নৌ-রুটে ফেরি পারাপারের জন্য যানবাহন কম দেখা গেছে। স্বল্পসংখ্যক পণ্যবাহী ট্রাক, কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স, কিছু ওষুধের গাড়ি পারাপার হয়েছে। ঘাট এলাকা ছিল জনশূন্য ।
আরিচা-পাটুরিয়া সরজমিনে পরিদর্শন করে দেখা গেছে, নৌরুট দুইটি দিয়ে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন পারাপার হয়নি। এদিকে সর্বাত্মক লকডাউন পালন করতে পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনী মাঠে রয়েছেন বলে থানা সূত্রে জানা গেছে। কিন্তু সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রোডঘাটে সেনাটহল চোখে পড়েনি।
ঘাট এলাকায় সব ধরনের দোকানপাট সকাল থেকেই বন্ধ ছিল। দুই একজন ছাড়া কোথাও কোন লোজজনের সমাগম দেখা যায়নি। ঘাট এলাকা একেবারেই ফাঁকা ছিল। মাঝে মধ্যে দুই একটি করে পণ্যবাহী ট্রাক ও অ্যাম্বুলেন্স ফেরিতে উঠতে দেখা গেছে। যানবাহন একেবারে কম আসা ও ফেরি পারাপার যাত্রী না থাকায় দেড় দুই ঘণ্টা পর পর ফেরিগুলো দৌলতদিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে।
এদিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কেই পণ্যবাহী ট্রাক, ওষুধের গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া অন্য কোন যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়নি। এ মহাসড়কও ফাঁকা ছিল। উপজেলার হাট-বাজারগুলোর দোকানপাটও বন্ধ ছিল। এ ছাড়া, উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেসমিন সুলতানা ঘাট এলাকাসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে ঘুরে পরির্দশন করছেন।
বিআইডব্লিউটিসির ডিজিএম জিল্লুর রহমান জানান, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ১৩টি ও আরিচা-কাজীরহাট নৌরুটে ২টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। ভোর থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত প্রায় ৫ শতাধিক ট্রাক ও ১৫-১৬টি অ্যাম্বুলেন্স নদী পারাপার হয়েছে। শিবালয় থানার ওসি ফিরোজ কবির জানান, সরকার ঘোষিত লকডাউন কঠোরভাবে পালন করার জন্য ঘাট এলাকায় পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনী রয়েছে।