সখীপুরে দুই বন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ

টাঙ্গাইলের সখীপুরে হতেয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা আলাল খান ও কালিদাস বিট কর্মকর্তা মোস্তানুর চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উপজেলার বোয়ালী গ্রামের মো. আ. মজিদ বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। লিখিত অভিযোগে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করা ব্যক্তির কাছ থেকে বসত ঘর, মুরগির ফার্ম বাবদ প্রায় ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ আছে।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার হতেয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা আলাল খান এবং কালিদাস বিট কর্মকর্তা মোস্তানুর চৌধুরী যোগদান করার পর থেকে তাদের আওতাধীন বনবিভাগের শাল গজারি গাছ রাতের আধারে কেটে কেটে পাচার চলছে। এছাড়া বনের জমি টাকার বিনিময়ে কালিদাস, বোয়ালী পূর্বপাড়া, শোলাপ্রতিমা, পানাউল্যাহপাড়া, কীর্ত্তণখোলা, ইছাদিঘী, কালিয়ানপাড়া, গজারিয়া, বহুরিয়া, খামারচালা, বৌ-বাজার, হতেয়া এলাকার অর্ধ শতাধিক বাড়িঘর, পোল্ট্রি ফার্ম ও দোকানঘর নির্মাণ করা হয়েছে।

এসব স্থাপনা নির্মাণ করতে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ওই দুই বন কর্মকর্তা। চাহিদা মাফিক টাকা দিলে ঘর তুলতে দেয়া হয়। না দিলে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়। আবার টাকা নিয়েও কখনো কখনো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কথা বলে বাড়িঘর ভেঙে দেয়ার হুমকি দিয়ে আরও টাকা হাতিয়ে নেন।

ওই অভিযোগে আরও বলা হয় তাদের এ টাকা লেনদেনে সহায়তা করেন কালিদাস পানাউল্লাহ গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে কবির নামের এক ব্যাক্তি। যিনি নিজেও ওই বন কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে বনের তিন একর জমির শাল গজারি গাছ কেটে দখল করে নিয়েছেন। কেউ বনের জমিতে কিছু করতে চাইলেই ওই দুই কর্মকর্তা কবিরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। আর কবির হোসেনের হাত ছাড়া কেউ ঘর তুলতে পারে না। ওই দুই কর্মকর্তা তার কথায়ই উঠে বসে এলাকায় তিনি বনবিভাগের দালাল নামেই পরিচিত।

গতকাল সরেজমিন ওই দুই কর্মকর্তার এলাকা পরিদর্শনে গেলে অভিযোগে উল্লেখ বনের জমি দখল করে ১৪ জনের বসতবাড়ি ছাড়াও প্রায় অর্ধ শতাধিক বসতবাড়ি চোখে পড়ে। বনের গাছ কেটে প্রতিটি স্থাপনা বাবদ ওই দুই কর্মকর্তাকে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা দিতে হয়েছে।

বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (টাঙ্গাইল) ড. জহিরুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত করতে সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) জামাল উদ্দিনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) জামাল উদ্দিন তালুকদার বলেন, সরেজমিন তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা মিললে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

হতেয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা আলাল খান বলেন, এ স্থাপনাগুলো আমার আমলে হয়নি। অভিযোগের সত্যতা মিললে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমার বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা নেবে আমি তা মেনে নেব। কালিদাস বিট কর্মকর্তা মোস্তানুর চৌধুরী তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। কবির দালাল বনবিভাগের নামে টাকা নিয়ে থাকলে বিষয়টি একান্ত তার। তার সঙ্গে কোন সখ্যতা নেই বলেও তিনি জানান।

শুক্রবার, ০২ জুলাই ২০২১ , ১৮ আষাঢ় ১৪২৮ ২০ জিলক্বদ ১৪৪২

সখীপুরে দুই বন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ

প্রতিনিধি, সখীপুর (টাঙ্গাইল)

টাঙ্গাইলের সখীপুরে হতেয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা আলাল খান ও কালিদাস বিট কর্মকর্তা মোস্তানুর চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উপজেলার বোয়ালী গ্রামের মো. আ. মজিদ বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। লিখিত অভিযোগে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করা ব্যক্তির কাছ থেকে বসত ঘর, মুরগির ফার্ম বাবদ প্রায় ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ আছে।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার হতেয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা আলাল খান এবং কালিদাস বিট কর্মকর্তা মোস্তানুর চৌধুরী যোগদান করার পর থেকে তাদের আওতাধীন বনবিভাগের শাল গজারি গাছ রাতের আধারে কেটে কেটে পাচার চলছে। এছাড়া বনের জমি টাকার বিনিময়ে কালিদাস, বোয়ালী পূর্বপাড়া, শোলাপ্রতিমা, পানাউল্যাহপাড়া, কীর্ত্তণখোলা, ইছাদিঘী, কালিয়ানপাড়া, গজারিয়া, বহুরিয়া, খামারচালা, বৌ-বাজার, হতেয়া এলাকার অর্ধ শতাধিক বাড়িঘর, পোল্ট্রি ফার্ম ও দোকানঘর নির্মাণ করা হয়েছে।

এসব স্থাপনা নির্মাণ করতে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ওই দুই বন কর্মকর্তা। চাহিদা মাফিক টাকা দিলে ঘর তুলতে দেয়া হয়। না দিলে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়। আবার টাকা নিয়েও কখনো কখনো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কথা বলে বাড়িঘর ভেঙে দেয়ার হুমকি দিয়ে আরও টাকা হাতিয়ে নেন।

ওই অভিযোগে আরও বলা হয় তাদের এ টাকা লেনদেনে সহায়তা করেন কালিদাস পানাউল্লাহ গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে কবির নামের এক ব্যাক্তি। যিনি নিজেও ওই বন কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে বনের তিন একর জমির শাল গজারি গাছ কেটে দখল করে নিয়েছেন। কেউ বনের জমিতে কিছু করতে চাইলেই ওই দুই কর্মকর্তা কবিরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। আর কবির হোসেনের হাত ছাড়া কেউ ঘর তুলতে পারে না। ওই দুই কর্মকর্তা তার কথায়ই উঠে বসে এলাকায় তিনি বনবিভাগের দালাল নামেই পরিচিত।

গতকাল সরেজমিন ওই দুই কর্মকর্তার এলাকা পরিদর্শনে গেলে অভিযোগে উল্লেখ বনের জমি দখল করে ১৪ জনের বসতবাড়ি ছাড়াও প্রায় অর্ধ শতাধিক বসতবাড়ি চোখে পড়ে। বনের গাছ কেটে প্রতিটি স্থাপনা বাবদ ওই দুই কর্মকর্তাকে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা দিতে হয়েছে।

বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (টাঙ্গাইল) ড. জহিরুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত করতে সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) জামাল উদ্দিনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) জামাল উদ্দিন তালুকদার বলেন, সরেজমিন তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা মিললে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

হতেয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা আলাল খান বলেন, এ স্থাপনাগুলো আমার আমলে হয়নি। অভিযোগের সত্যতা মিললে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমার বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা নেবে আমি তা মেনে নেব। কালিদাস বিট কর্মকর্তা মোস্তানুর চৌধুরী তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। কবির দালাল বনবিভাগের নামে টাকা নিয়ে থাকলে বিষয়টি একান্ত তার। তার সঙ্গে কোন সখ্যতা নেই বলেও তিনি জানান।