২০ বছর পর আফগানিস্তানের বাগরাম বিমানঘাঁটি ছাড়ল মার্কিন সেনারা

দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর পর আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বড় সামরিক ঘাঁটি বাগরাম থেকে যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটোর সব সেনা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা। রয়টার্স

তালেবানদের সঙ্গে হওয়া শান্তিচুক্তির অংশ হিসেবেই ওই বিমানঘাঁটিটি খালি করে দেওয়া হয়েছে, বলেছেন তিনি। বাগরাম ঘাঁটিটি কাবুলের ৬০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। দুই দশক ধরে চলা আফগান যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও তার নেতৃত্বাধীন বাহিনী এখান থেকেই তালেবান ও অন্য ইসলামপন্থি জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর ওপর বেশিরভাগ বিমান হামলা চালাত। তালেবান ও আল-কায়েদার সঙ্গে লড়াইয়ের একপর্যায়ে এ ঘাঁটিটিতে এক লাখেরও বেশি মার্কিন সেনা ছিল। বিদেশি সেনা সরে যাওয়ার পর ঘাঁটিটি এখন আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করা হবে। শনিবার এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ঘাঁটিটি আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন আফগানিস্তানের এক কর্মকর্তা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, বাগরাম বিমানঘাঁটি ছাড়লেও আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীর শীর্ষ কমান্ডার জেনারেল অস্টিন মিলার এখনো কাবুলে থাকা মার্কিন সেনাদের নিরাপত্তায় যেকোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার রাখেন।

কয়েকদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের দুই নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেছিলেন, ৪ জুলাইয়ের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে থাকা বেশিরভাগ সৈন্য সরিয়ে নেবে; বাকি যারা থাকবে তারা মূলত দূতাবাস পাহারা দেবে।

গত মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনিকে বলেন, আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ কী হবে, সে বিষয়ে এখন থেকে দেশটির জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।

আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারে তালেবানের সঙ্গে হওয়া চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে। চুক্তিতে চলতি বছরের ১ মে-র মধ্যে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের কথা থাকলেও, বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ওই সময়সীমা বাড়িয়ে ১১ সেপ্টেম্বর করা হয়।

চুক্তি অনুযায়ী, বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের বদলে তালেবানরা আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করে কোনো আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনকে মাথাচাড়া দিতে দেবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেয়। একইসঙ্গে আফগান সরকারসহ প্রতিদ্বন্দ্বী বিভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনা করবে বলেও কথা দেয় তারা। এরপর আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কাঠামো নিয়ে বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে আলোচনা শুরু হলেও, এখন পর্যন্ত তাতে খুব বেশি অগ্রগতি দেখা যায়নি।

শনিবার, ০৩ জুলাই ২০২১ , ১৯ আষাঢ় ১৪২৮ ২১ জিলক্বদ ১৪৪২

২০ বছর পর আফগানিস্তানের বাগরাম বিমানঘাঁটি ছাড়ল মার্কিন সেনারা

দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর পর আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বড় সামরিক ঘাঁটি বাগরাম থেকে যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটোর সব সেনা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা। রয়টার্স

তালেবানদের সঙ্গে হওয়া শান্তিচুক্তির অংশ হিসেবেই ওই বিমানঘাঁটিটি খালি করে দেওয়া হয়েছে, বলেছেন তিনি। বাগরাম ঘাঁটিটি কাবুলের ৬০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। দুই দশক ধরে চলা আফগান যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও তার নেতৃত্বাধীন বাহিনী এখান থেকেই তালেবান ও অন্য ইসলামপন্থি জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর ওপর বেশিরভাগ বিমান হামলা চালাত। তালেবান ও আল-কায়েদার সঙ্গে লড়াইয়ের একপর্যায়ে এ ঘাঁটিটিতে এক লাখেরও বেশি মার্কিন সেনা ছিল। বিদেশি সেনা সরে যাওয়ার পর ঘাঁটিটি এখন আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করা হবে। শনিবার এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ঘাঁটিটি আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন আফগানিস্তানের এক কর্মকর্তা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, বাগরাম বিমানঘাঁটি ছাড়লেও আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীর শীর্ষ কমান্ডার জেনারেল অস্টিন মিলার এখনো কাবুলে থাকা মার্কিন সেনাদের নিরাপত্তায় যেকোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার রাখেন।

কয়েকদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের দুই নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেছিলেন, ৪ জুলাইয়ের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে থাকা বেশিরভাগ সৈন্য সরিয়ে নেবে; বাকি যারা থাকবে তারা মূলত দূতাবাস পাহারা দেবে।

গত মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনিকে বলেন, আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ কী হবে, সে বিষয়ে এখন থেকে দেশটির জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।

আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারে তালেবানের সঙ্গে হওয়া চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে। চুক্তিতে চলতি বছরের ১ মে-র মধ্যে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের কথা থাকলেও, বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ওই সময়সীমা বাড়িয়ে ১১ সেপ্টেম্বর করা হয়।

চুক্তি অনুযায়ী, বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের বদলে তালেবানরা আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করে কোনো আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনকে মাথাচাড়া দিতে দেবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেয়। একইসঙ্গে আফগান সরকারসহ প্রতিদ্বন্দ্বী বিভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনা করবে বলেও কথা দেয় তারা। এরপর আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কাঠামো নিয়ে বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে আলোচনা শুরু হলেও, এখন পর্যন্ত তাতে খুব বেশি অগ্রগতি দেখা যায়নি।