কাফি খানের জীবনাবসান

ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগের প্রাক্তন সংবাদ পাঠক, নাট্য ও চলচ্চিত্র শিল্পী কাফি খান মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর। যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার আর্লিংটনে ভার্জিনিয়া সেন্টার হাসপাতালে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার বিকেলে কাফি খান শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। যুক্তরাষ্ট্র সময় শুক্রবার জুমার নামাজের পর সুগারল্যান্ড রোডের অ্যাডামস সেন্টার মসজিদে তার জানাজা হয়েছে। এরপর মুসলিম গোরস্তানে দাফন করা হয়। তার ছেলে রাফি খান এই খবর নিশ্চিত করেন।

দুই ছেলে ও দুই মেয়ের জনক কাফি খান ১৯৬৬ সালে ভয়েস অব আমেরিকায় যোগ দেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তিনি ওয়াশিংটনে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭৩ সালে তিনি বাংলাদেশে ফিরে যান। ১৯৮৩ সালে তিনি দ্বিতীয়বার ভয়েস অব আমেরিকায় যোগ দেন। ১৯৯৪ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। এরপর ১৯৯৯ সাল থেকে তিনি বেশ কিছু দিন খ-কালীন বেতার সম্প্রচারক হিসেবে ভয়েস অব আমেরিকায় যুক্ত ছিলেন। ষাটের দশকে ঢাকায় তিনি তদানীন্তন ইউনাইটেড স্টেট ইনফরমেশন অ্যাজেন্সিতে (ইউএসআইএ) কাজ করেছেন। সত্তরের দশকের শেষ থেকে আশির দশকের প্রথম দিক পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশের প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রেস সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

কাফি খানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শোকবার্তায় মির্জা ফখরুল বলেন, মরহুম কাফি খান ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। একদিকে সাংবাদিকতা, অন্যদিকে সাংস্কৃতিক অঙ্গনসহ সবখানেই তার অসামান্য প্রতিভা তাকে এক স্বতন্ত্র মাত্রা দান করেছিল।

কাফি খানের জন্ম ব্রিটিশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশপরগনা জেলার বারাসাত এলাকার কাজীপাড়া গ্রামে। সার্টিফিকেট অনুযায়ী তার জন্ম ১৯২৯ সালের ১ মে। গ্রামের স্কুলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের পাঠ চুকিয়ে বারাসত গভার্নমেন্ট হাই স্কুল থেকে তিনি পাস করেন ম্যাট্রিক। তারপর কলকাতার রিপন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক করে বিকমে ভর্তি হন। ১৯৪৭ এ দেশভাগের পর ভাইয়ের সঙ্গে ঢাকা চলে আসেন কাফি খান। ঢাকায় এসে পাকিস্তানের রাজস্ব বিভাগে কেরানির চাকরি দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন কাফি। পাশাপাশি ১৯৫১ সালে পাকিস্তান রেডিওর ঢাকা শাখায় বেতার-নাটকে কণ্ঠদানও শুরু করেন। এছাড়া ঢাকায় মঞ্চনাটকের অন্যতম সংগঠক হিসেবেও কাজ করতে থাকেন। ১৯৬৬ সালে কাফি খান প্রথমবার ভয়েস অব অ্যামেরিকার বাংলা বিভাগের কর্মী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে যান।

শনিবার, ০৩ জুলাই ২০২১ , ১৯ আষাঢ় ১৪২৮ ২১ জিলক্বদ ১৪৪২

সংবাদ পাঠক অভিনেতা

কাফি খানের জীবনাবসান

সংবাদ ডেস্ক

ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগের প্রাক্তন সংবাদ পাঠক, নাট্য ও চলচ্চিত্র শিল্পী কাফি খান মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর। যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার আর্লিংটনে ভার্জিনিয়া সেন্টার হাসপাতালে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার বিকেলে কাফি খান শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। যুক্তরাষ্ট্র সময় শুক্রবার জুমার নামাজের পর সুগারল্যান্ড রোডের অ্যাডামস সেন্টার মসজিদে তার জানাজা হয়েছে। এরপর মুসলিম গোরস্তানে দাফন করা হয়। তার ছেলে রাফি খান এই খবর নিশ্চিত করেন।

দুই ছেলে ও দুই মেয়ের জনক কাফি খান ১৯৬৬ সালে ভয়েস অব আমেরিকায় যোগ দেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তিনি ওয়াশিংটনে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭৩ সালে তিনি বাংলাদেশে ফিরে যান। ১৯৮৩ সালে তিনি দ্বিতীয়বার ভয়েস অব আমেরিকায় যোগ দেন। ১৯৯৪ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। এরপর ১৯৯৯ সাল থেকে তিনি বেশ কিছু দিন খ-কালীন বেতার সম্প্রচারক হিসেবে ভয়েস অব আমেরিকায় যুক্ত ছিলেন। ষাটের দশকে ঢাকায় তিনি তদানীন্তন ইউনাইটেড স্টেট ইনফরমেশন অ্যাজেন্সিতে (ইউএসআইএ) কাজ করেছেন। সত্তরের দশকের শেষ থেকে আশির দশকের প্রথম দিক পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশের প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রেস সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

কাফি খানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শোকবার্তায় মির্জা ফখরুল বলেন, মরহুম কাফি খান ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। একদিকে সাংবাদিকতা, অন্যদিকে সাংস্কৃতিক অঙ্গনসহ সবখানেই তার অসামান্য প্রতিভা তাকে এক স্বতন্ত্র মাত্রা দান করেছিল।

কাফি খানের জন্ম ব্রিটিশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশপরগনা জেলার বারাসাত এলাকার কাজীপাড়া গ্রামে। সার্টিফিকেট অনুযায়ী তার জন্ম ১৯২৯ সালের ১ মে। গ্রামের স্কুলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের পাঠ চুকিয়ে বারাসত গভার্নমেন্ট হাই স্কুল থেকে তিনি পাস করেন ম্যাট্রিক। তারপর কলকাতার রিপন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক করে বিকমে ভর্তি হন। ১৯৪৭ এ দেশভাগের পর ভাইয়ের সঙ্গে ঢাকা চলে আসেন কাফি খান। ঢাকায় এসে পাকিস্তানের রাজস্ব বিভাগে কেরানির চাকরি দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন কাফি। পাশাপাশি ১৯৫১ সালে পাকিস্তান রেডিওর ঢাকা শাখায় বেতার-নাটকে কণ্ঠদানও শুরু করেন। এছাড়া ঢাকায় মঞ্চনাটকের অন্যতম সংগঠক হিসেবেও কাজ করতে থাকেন। ১৯৬৬ সালে কাফি খান প্রথমবার ভয়েস অব অ্যামেরিকার বাংলা বিভাগের কর্মী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে যান।