দুই কাউন্সিলরের সংঘাত নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া

ভোলার চরফ্যাশন পৌরসভার বর্তমান ও সাবেক দুই পৌর কাউন্সিলরের মধ্যে সংঘাতকে ঘিরে স্থানীয় জনগণের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার এ নিয়ে উভয়ে সাংবাদিকদের কাছে একে অপরকে দোষারোপ করে বক্তব্য দেন।

এ নিয়ে চরফ্যাশন থানায় লিখিত অভিযোগ করেন সাবেক কাউন্সিলর জয়নাল আবদিন। তাতে বর্তমান ৪নং ওয়ার্ডের পাঁচবারের নির্বাচিত পৌর কাউন্সিলর আকতারুল আলম সামু ও তার ভাই মীরুকে আসামি করা হয়। বর্তমান কাউন্সিলর সামুর বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় ৪নং ওয়ার্ড তথা পুরো চরফ্যাশন পৌরবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

সামু সাংবাদিকদের জানান, জয়নাল আবদীন ১৯৯৮ সালে ৫নং ওয়ার্ডের পৌর কাউন্সিলর ছিলেন। ২০১৪ সালে তিনি ৪নং ওয়ার্ডে কলেজপাড়ায় বাড়ি করে বসবাস শুরু করেন। কয়েক বছর আগে তিনি প্রতিবেশী কলেজ শিক্ষক মো. মহিউদ্দিনের জমি দখল করে মাত্র দুই ফুট উচ্চতার সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করেন।

এ নিয়ে গেল বছর পৌরসভায় সালিশি বৈঠকে সাবেক মেয়র বাদল কৃষ্ণ দেবনাথ ওই সীমানা প্রাচীর ভেঙে মহিউদ্দিনের জমি ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দেন। এই নির্দেশ উপেক্ষা করে জয়নাল আবদীন ফের সীমানা প্রাচীরের উচ্চতা বাড়াতে গেলে কাউন্সিলর সামু নিজে উপস্থিত থেকে বুধবার হামার দিয়ে প্রাচীর ভাঙতে গেলে তার ওপর জয়নাল আবদীন ও তার স্ত্রী হামলা করেন। এ সময় নিজেকে রক্ষা করতে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে জয়নাল আবদীনের স্ত্রী মমতাজ বেগম গেটের ওপর পড়ে আহত হন।

কাউন্সিলর সামু দাবি করেন, চরফ্যাশন পৌর ৪নং ওয়ার্ডে আমার জনপ্রিয়তায় হিংসা পরায়ন হয়ে সাবেক কমিশনার জয়নাল আবেদীন আমার ও আমার ভাইর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও সাজানো মামলা দিয়েছেন চরফ্যাশন থানায়। উক্ত মামলায় তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।

জয়নাল আবদীনের অভিযোগ, পৌর নির্বাচনে সামুর পক্ষে না থাকায় গত বুধবার সামু জোরপূর্বক তার বাড়ির প্রাচীর ভাঙতে শুরু করে। একই সঙ্গে তার স্ত্রীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে।

ওই এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী এম আবু ছিদ্দিক জানান, জয়নাল আবদীনের সঙ্গে তার আশপাশের সব প্রতিবেশীর জমির বিরোধ রয়েছে। অপরদিকে বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর মেলার কেন্দ্রীয় সম্পাদক চরফ্যাশনের বাসিন্দা মো. ইয়াছিন জানান, ঘটনাটি দুঃখজনক। স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সামু জনস্বার্থে পৌরসভার পক্ষে চরফ্যাশন সদর বাজারে প্রায়ই ভেজালবিরোধী অভিযান চালান। এতে যেসব ব্যবসায়ী অসুস্থ গরুর গোশত বিক্রি করেন, গরুর দুধে পানি মেশান, খাবার হোটেলে পচা-বাসি খাবার বিক্রি করে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে ফেলেন সেই সমস্ত অসৎ ব্যবসায়ীদের খুঁজে বের করে পৌরসভার পক্ষ থেকে শাস্তির আওতায় আনেন তিনি। এছাড়া কাউন্সিলর সামুর কাছে তার ওয়ার্ডের কোন লোক ন্যায় বিচারের জন্য দ্বারস্থ হলে তিনি ন্যায় বিচার করেন বলে একাধিক অসহায় মানুষ জানিয়েছেন।

শনিবার, ০৩ জুলাই ২০২১ , ১৯ আষাঢ় ১৪২৮ ২১ জিলক্বদ ১৪৪২

চরফ্যাশন পৌরসভায়

দুই কাউন্সিলরের সংঘাত নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

ভোলার চরফ্যাশন পৌরসভার বর্তমান ও সাবেক দুই পৌর কাউন্সিলরের মধ্যে সংঘাতকে ঘিরে স্থানীয় জনগণের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার এ নিয়ে উভয়ে সাংবাদিকদের কাছে একে অপরকে দোষারোপ করে বক্তব্য দেন।

এ নিয়ে চরফ্যাশন থানায় লিখিত অভিযোগ করেন সাবেক কাউন্সিলর জয়নাল আবদিন। তাতে বর্তমান ৪নং ওয়ার্ডের পাঁচবারের নির্বাচিত পৌর কাউন্সিলর আকতারুল আলম সামু ও তার ভাই মীরুকে আসামি করা হয়। বর্তমান কাউন্সিলর সামুর বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় ৪নং ওয়ার্ড তথা পুরো চরফ্যাশন পৌরবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

সামু সাংবাদিকদের জানান, জয়নাল আবদীন ১৯৯৮ সালে ৫নং ওয়ার্ডের পৌর কাউন্সিলর ছিলেন। ২০১৪ সালে তিনি ৪নং ওয়ার্ডে কলেজপাড়ায় বাড়ি করে বসবাস শুরু করেন। কয়েক বছর আগে তিনি প্রতিবেশী কলেজ শিক্ষক মো. মহিউদ্দিনের জমি দখল করে মাত্র দুই ফুট উচ্চতার সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করেন।

এ নিয়ে গেল বছর পৌরসভায় সালিশি বৈঠকে সাবেক মেয়র বাদল কৃষ্ণ দেবনাথ ওই সীমানা প্রাচীর ভেঙে মহিউদ্দিনের জমি ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দেন। এই নির্দেশ উপেক্ষা করে জয়নাল আবদীন ফের সীমানা প্রাচীরের উচ্চতা বাড়াতে গেলে কাউন্সিলর সামু নিজে উপস্থিত থেকে বুধবার হামার দিয়ে প্রাচীর ভাঙতে গেলে তার ওপর জয়নাল আবদীন ও তার স্ত্রী হামলা করেন। এ সময় নিজেকে রক্ষা করতে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে জয়নাল আবদীনের স্ত্রী মমতাজ বেগম গেটের ওপর পড়ে আহত হন।

কাউন্সিলর সামু দাবি করেন, চরফ্যাশন পৌর ৪নং ওয়ার্ডে আমার জনপ্রিয়তায় হিংসা পরায়ন হয়ে সাবেক কমিশনার জয়নাল আবেদীন আমার ও আমার ভাইর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও সাজানো মামলা দিয়েছেন চরফ্যাশন থানায়। উক্ত মামলায় তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।

জয়নাল আবদীনের অভিযোগ, পৌর নির্বাচনে সামুর পক্ষে না থাকায় গত বুধবার সামু জোরপূর্বক তার বাড়ির প্রাচীর ভাঙতে শুরু করে। একই সঙ্গে তার স্ত্রীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে।

ওই এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী এম আবু ছিদ্দিক জানান, জয়নাল আবদীনের সঙ্গে তার আশপাশের সব প্রতিবেশীর জমির বিরোধ রয়েছে। অপরদিকে বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর মেলার কেন্দ্রীয় সম্পাদক চরফ্যাশনের বাসিন্দা মো. ইয়াছিন জানান, ঘটনাটি দুঃখজনক। স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সামু জনস্বার্থে পৌরসভার পক্ষে চরফ্যাশন সদর বাজারে প্রায়ই ভেজালবিরোধী অভিযান চালান। এতে যেসব ব্যবসায়ী অসুস্থ গরুর গোশত বিক্রি করেন, গরুর দুধে পানি মেশান, খাবার হোটেলে পচা-বাসি খাবার বিক্রি করে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে ফেলেন সেই সমস্ত অসৎ ব্যবসায়ীদের খুঁজে বের করে পৌরসভার পক্ষ থেকে শাস্তির আওতায় আনেন তিনি। এছাড়া কাউন্সিলর সামুর কাছে তার ওয়ার্ডের কোন লোক ন্যায় বিচারের জন্য দ্বারস্থ হলে তিনি ন্যায় বিচার করেন বলে একাধিক অসহায় মানুষ জানিয়েছেন।