তৃতীয় দিন বেড়ে গেছে লোক চলাচল, জেল-জরিমানাও হচ্ছে

দেশব্যাপী বিধিনিষেধের তৃতীয় দিনে আগের দুই দিনের তুলনায় রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলার মানুষের চলাচল বেড়েছে। সেইসঙ্গে, কাঁচাবাজারগুলোতে মানুষের উপস্থিতি ছিল অনেক বেশি। অলিগলিতেও স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান ও চায়ের দোকানগুলোতে ভিড় দেখা গেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিধিনিষেধ যথাযথভাবে কার্যকর করতে আমরা যথেষ্ট সতর্ক ও সচেতনতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছি। কেউ বিনা প্রয়োজনে রাস্তায় বের হলে তাদের জেল জরিমানা করা হচ্ছে।

সরজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীর রায়েরবাগ, শনির আখড়া, যাত্রাবাড়ী, গুলিস্তান, পল্টন, মালিবাগ, মৌচাক, নিউ মার্কেট, শাহবাগ এলাকার প্রধান সড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় সড়কে রিকশার আধিপত্য দেখা যায়। এছাড়া কিছু পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও পিকআপ রাস্তায় রয়েছে। তবে, ব্যাক্তিগত গাড়ির চাপ সামান্য কম ছিল।

প্রধান সড়কে মানুষের উপস্থিতি কম থাকলেও অলিগলিতে মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। রাস্তার পাশে বাজার ও গলিতে থাকা চায়ের দোকান ঘিরে দিনভর জটলা ও আড্ডাও দেখা গেছে। তবে লকডাউনে ঠিক বিপরীত অবস্থানে রয়েছে রাজধানীর কাঁচা বাজারগুলো। অধিকাংশ বাজারগুলোতে সামাজিক দূরত্ব বাজায় রাখার কোন চেষ্টাই চোখে পড়েনি। পরিপালন করা হয়নি কোন স্বাস্থ্যবিধি। তবে সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, মুদি দোকান, হোটেল ও কাঁচা বাজার ব্যতীত সিংহভাগ দোকান বন্ধ দেখা গেছে।

রায়েরবাগের মুজাহিদ নগর এলাকায় কথা হয় মাহমুদ হাসানের সঙ্গে তিনি বলেন, বাজার করতে বের হয়ে এলাকার বন্ধুদের সঙ্গে দেখা। তাই চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছেন।

শনির আখড়ার আরএস মার্কেটের পাশের কাঁচা বাজারে ছিল মানুষের ভিড়। অনেকের মুখেই ছিল না। এ সময় বাজার করতে আসা নুরুজ্জামান বলেন, সরকারের সীমিত লকডাউন ঘোষণার পর থেকে বাসা থেকে বের হইনি। এখন বাসার বাজার শেষ হয়ে গেছে। তাই ঝুঁকি নিয়ে বাজারে এসেছি। মানুষের ভিড়ে পা ফেলার জায়গা নেই। এ বাজারে হাঁটাচলা করতে গায়ে গায়ে ধাক্কা লাগবেই। এখানে স্বাস্থ্যবিধির কোন বালাই নেই।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল বৃষ্টি না থাকায় মানুষের ব্যস্ততা বেড়ে গেছে। নিউ মার্কেট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আলী বলেন, মোটরসাইকেলে দুইজন দেখলে তাদের নামিয়ে দেয়া হচ্ছে। সড়কে কোন গাড়ি কেন বের হয়েছে, তাদের কাছে জানতে চাওয়া হচ্ছে। কেউ আইন না মানলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ১ জুলাই থেকে সাতদিনের জন্য সারাদেশে সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণা দেয়া হয়।

জেল-জরিমানা

তৃতীয় দিনে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে বাইরে অকারণে ঘোরাফেরার কারণে ৬২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি)। এছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৩৪৬ জনকে জরিমানা করা হয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার ৪৫০ টাকা।

ডিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি মিডিয়া) ইফতেখায়রুল ইসলাম, লকডাউনের তৃতীয় দিনে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ডিএমপির আটটি বিভাগের রমনা, লালবাগ, মতিঝিল, ওয়ারী, তেজগাঁও, মিরপুর, গুলশান ও উত্তরা এলাকায় সরকারি নিয়ম অমান্য করে বাইরে বের হওয়ায় ৬২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ৩৪৬ জনকে ১ লাখ ৬ হাজার ৪৫০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এডিসি ইফতেখায়রুল ইসলাম আরও বলেন, সরকারঘোষিত লকডাউনে সড়কে যানবাহন নিয়ে বের হওয়ায় ৮৮৫ মামলায় ১৯ লাখ ২২ হাজার ৫৫০ টাকা জরিমানা করেছে ডিএমপি পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত ও ট্রাফিক বিভাগ।

ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে, করোনার সংক্রমণ রোধে চলমান বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে তৃতীয় দিনে রাজধানীজুড়েই সক্রিয় ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রাজধানীতে সরকারি বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে অকারণে ও নানা অজুহাতে ঘর থেকে বের হওয়ায় ৮৫৫টি মামলা হয়েছে।

উল্লেখ, শুক্রবার (২ জুলাই) লকডাউনের দ্বিতীয় দিন গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছাড়া বাইরে বের হওয়ায় রাজধানীজুড়ে ৩২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এদিন ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়েছিল ২০৮ জনকে। দ্বিতীয় দিনে ট্রাফিক আইন অমান্য করা ও গাড়ি নিয়ে বিনা কারণে বাইরে বের হওয়ায় জরিমানা করা হয়েছিল ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৫০০ টাকা।

ডিএমপি জানিয়েছে এ নিয়ে তিনদিনে বিধিনিষেধ অমান্য করায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা রাজধানীতে এক হাজার ৪৯৯ জনকে আটক করে ঢাকা মেট্রোপলিটন আদালতে পাঠিয়েছেন। আদালত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অধ্যাদেশ ১৯৭৬-এর বিভিন্ন ধারায় একশ’ থেকে সর্বোচ্চ পাঁচশ’ টাকা জরিমানা করেছেন। জরিমানা অনাদায়ে এক থেকে তিনদিনের কারাভোগের আদেশ দেন আদালত।

আদালত থেকে পাওয়া তথ্যমতে, কঠোর বিধিনিষেধ চলার তৃতীয় দিন পর্যন্ত এক হাজার ৪৯৯ জনকে বিভিন্ন পরিমাণ অর্থ জরিমানা করা হয়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার ২৬৩ জন, শুক্রবার ৬২৯ জন ও শনিবার ৬০৭ জনকে জরিমানা করা হয়। জরিমানার টাকা দেয়ার পর আদালত থেকে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে আটকদের। আর যারা জরিমানা দিতে পারছেন না তাদের কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। কারাভোগ শেষে তাদের ছেড়ে দেয়া হচ্ছে।

এ বিষয় ঢাকা মহানগর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু বলেন, ‘করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকার সাতদিনের কঠোর বিধিনিষেধ দিয়েছে। অনেকে বিধিনিষেধ অমান্য করে অকারণে বাসা থেকে বের হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের আটক করে আদালতে পাঠাচ্ছে। আদালত তাদের জরিমানা করছেন। যারা জরিমানার টাকা দিচ্ছেন তাদের ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। আর যারা দিতে পারছেন না তাদের কারাগারে পাঠিয়ে দিচ্ছেন আদালত। তিনি আরও বলেন, ‘অকারণে যারা বাসার বাইরে বের হচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর হওয়া উচিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর।’

image

রাজধানীতে বিধিনিষেধ কঠোর প্রয়োগের মধ্যেও লোকজন বের হয়ে জেল-জরিমানার মুখে পড়ছে -সংবাদ

আরও খবর
এক সপ্তাহে শনাক্ত বেড়ে ৫১.২৯ শতাংশ, মৃত্যু ৮৫৯
সংসদে তোপের মুখে স্বাস্থ্যমন্ত্রী, পদত্যাগ দাবি
ছেলেমেয়েদের মৃত্যুর মুখে ঠেলা হবে কিনা, বিবেচনার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
অক্সিজেন সংকট খুলনা-বগুড়ায়
তৃতীয় দিন বেড়ে গেছে লোক চলাচল, জেল-জরিমানাও হচ্ছে
ছেলেমেয়েদের মৃত্যুর মুখে ঠেলা হবে কিনা, বিবেচনার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
দেশে এলো মডার্না ও সিনোফার্মের ৪৫ লাখ টিকা
কুমিল্লা কারাগারে কয়েদি নির্যাতন
হাসপাতাল থেকে ফের কারাগারে ডেসটিনির রফিকুল
খুন করে এসে খুন হওয়া নারীর পরিবারকে সান্ত¡না দিত খুনি

রবিবার, ০৪ জুলাই ২০২১ , ২০ আষাঢ় ১৪২৮ ২২ জিলক্বদ ১৪৪২

তৃতীয় দিন বেড়ে গেছে লোক চলাচল, জেল-জরিমানাও হচ্ছে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

রাজধানীতে বিধিনিষেধ কঠোর প্রয়োগের মধ্যেও লোকজন বের হয়ে জেল-জরিমানার মুখে পড়ছে -সংবাদ

দেশব্যাপী বিধিনিষেধের তৃতীয় দিনে আগের দুই দিনের তুলনায় রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলার মানুষের চলাচল বেড়েছে। সেইসঙ্গে, কাঁচাবাজারগুলোতে মানুষের উপস্থিতি ছিল অনেক বেশি। অলিগলিতেও স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান ও চায়ের দোকানগুলোতে ভিড় দেখা গেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিধিনিষেধ যথাযথভাবে কার্যকর করতে আমরা যথেষ্ট সতর্ক ও সচেতনতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছি। কেউ বিনা প্রয়োজনে রাস্তায় বের হলে তাদের জেল জরিমানা করা হচ্ছে।

সরজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীর রায়েরবাগ, শনির আখড়া, যাত্রাবাড়ী, গুলিস্তান, পল্টন, মালিবাগ, মৌচাক, নিউ মার্কেট, শাহবাগ এলাকার প্রধান সড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় সড়কে রিকশার আধিপত্য দেখা যায়। এছাড়া কিছু পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও পিকআপ রাস্তায় রয়েছে। তবে, ব্যাক্তিগত গাড়ির চাপ সামান্য কম ছিল।

প্রধান সড়কে মানুষের উপস্থিতি কম থাকলেও অলিগলিতে মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। রাস্তার পাশে বাজার ও গলিতে থাকা চায়ের দোকান ঘিরে দিনভর জটলা ও আড্ডাও দেখা গেছে। তবে লকডাউনে ঠিক বিপরীত অবস্থানে রয়েছে রাজধানীর কাঁচা বাজারগুলো। অধিকাংশ বাজারগুলোতে সামাজিক দূরত্ব বাজায় রাখার কোন চেষ্টাই চোখে পড়েনি। পরিপালন করা হয়নি কোন স্বাস্থ্যবিধি। তবে সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, মুদি দোকান, হোটেল ও কাঁচা বাজার ব্যতীত সিংহভাগ দোকান বন্ধ দেখা গেছে।

রায়েরবাগের মুজাহিদ নগর এলাকায় কথা হয় মাহমুদ হাসানের সঙ্গে তিনি বলেন, বাজার করতে বের হয়ে এলাকার বন্ধুদের সঙ্গে দেখা। তাই চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছেন।

শনির আখড়ার আরএস মার্কেটের পাশের কাঁচা বাজারে ছিল মানুষের ভিড়। অনেকের মুখেই ছিল না। এ সময় বাজার করতে আসা নুরুজ্জামান বলেন, সরকারের সীমিত লকডাউন ঘোষণার পর থেকে বাসা থেকে বের হইনি। এখন বাসার বাজার শেষ হয়ে গেছে। তাই ঝুঁকি নিয়ে বাজারে এসেছি। মানুষের ভিড়ে পা ফেলার জায়গা নেই। এ বাজারে হাঁটাচলা করতে গায়ে গায়ে ধাক্কা লাগবেই। এখানে স্বাস্থ্যবিধির কোন বালাই নেই।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল বৃষ্টি না থাকায় মানুষের ব্যস্ততা বেড়ে গেছে। নিউ মার্কেট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আলী বলেন, মোটরসাইকেলে দুইজন দেখলে তাদের নামিয়ে দেয়া হচ্ছে। সড়কে কোন গাড়ি কেন বের হয়েছে, তাদের কাছে জানতে চাওয়া হচ্ছে। কেউ আইন না মানলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ১ জুলাই থেকে সাতদিনের জন্য সারাদেশে সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণা দেয়া হয়।

জেল-জরিমানা

তৃতীয় দিনে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে বাইরে অকারণে ঘোরাফেরার কারণে ৬২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি)। এছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৩৪৬ জনকে জরিমানা করা হয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার ৪৫০ টাকা।

ডিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি মিডিয়া) ইফতেখায়রুল ইসলাম, লকডাউনের তৃতীয় দিনে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ডিএমপির আটটি বিভাগের রমনা, লালবাগ, মতিঝিল, ওয়ারী, তেজগাঁও, মিরপুর, গুলশান ও উত্তরা এলাকায় সরকারি নিয়ম অমান্য করে বাইরে বের হওয়ায় ৬২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ৩৪৬ জনকে ১ লাখ ৬ হাজার ৪৫০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এডিসি ইফতেখায়রুল ইসলাম আরও বলেন, সরকারঘোষিত লকডাউনে সড়কে যানবাহন নিয়ে বের হওয়ায় ৮৮৫ মামলায় ১৯ লাখ ২২ হাজার ৫৫০ টাকা জরিমানা করেছে ডিএমপি পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত ও ট্রাফিক বিভাগ।

ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে, করোনার সংক্রমণ রোধে চলমান বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে তৃতীয় দিনে রাজধানীজুড়েই সক্রিয় ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রাজধানীতে সরকারি বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে অকারণে ও নানা অজুহাতে ঘর থেকে বের হওয়ায় ৮৫৫টি মামলা হয়েছে।

উল্লেখ, শুক্রবার (২ জুলাই) লকডাউনের দ্বিতীয় দিন গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছাড়া বাইরে বের হওয়ায় রাজধানীজুড়ে ৩২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এদিন ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়েছিল ২০৮ জনকে। দ্বিতীয় দিনে ট্রাফিক আইন অমান্য করা ও গাড়ি নিয়ে বিনা কারণে বাইরে বের হওয়ায় জরিমানা করা হয়েছিল ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৫০০ টাকা।

ডিএমপি জানিয়েছে এ নিয়ে তিনদিনে বিধিনিষেধ অমান্য করায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা রাজধানীতে এক হাজার ৪৯৯ জনকে আটক করে ঢাকা মেট্রোপলিটন আদালতে পাঠিয়েছেন। আদালত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অধ্যাদেশ ১৯৭৬-এর বিভিন্ন ধারায় একশ’ থেকে সর্বোচ্চ পাঁচশ’ টাকা জরিমানা করেছেন। জরিমানা অনাদায়ে এক থেকে তিনদিনের কারাভোগের আদেশ দেন আদালত।

আদালত থেকে পাওয়া তথ্যমতে, কঠোর বিধিনিষেধ চলার তৃতীয় দিন পর্যন্ত এক হাজার ৪৯৯ জনকে বিভিন্ন পরিমাণ অর্থ জরিমানা করা হয়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার ২৬৩ জন, শুক্রবার ৬২৯ জন ও শনিবার ৬০৭ জনকে জরিমানা করা হয়। জরিমানার টাকা দেয়ার পর আদালত থেকে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে আটকদের। আর যারা জরিমানা দিতে পারছেন না তাদের কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। কারাভোগ শেষে তাদের ছেড়ে দেয়া হচ্ছে।

এ বিষয় ঢাকা মহানগর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু বলেন, ‘করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকার সাতদিনের কঠোর বিধিনিষেধ দিয়েছে। অনেকে বিধিনিষেধ অমান্য করে অকারণে বাসা থেকে বের হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের আটক করে আদালতে পাঠাচ্ছে। আদালত তাদের জরিমানা করছেন। যারা জরিমানার টাকা দিচ্ছেন তাদের ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। আর যারা দিতে পারছেন না তাদের কারাগারে পাঠিয়ে দিচ্ছেন আদালত। তিনি আরও বলেন, ‘অকারণে যারা বাসার বাইরে বের হচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর হওয়া উচিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর।’