জাতীয় সংসদের ত্রয়োদশ (বাজেট) অধিবেশন গতকাল শেষ হয়েছে। করোনা মহামারী বিবেচনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে ১২ কার্যদিবসেই এ অধিবেশনের সমাপ্তি টানা হয়।

সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের ঘোষণা পাঠ করে শোনানোর মাধ্যমে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশন সমাপ্তির ঘোষণা দেন। শেষ দিনে রেওয়াজ অনুযায়ী সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমাপনী ভাষণ দেন। এছাড়া বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদেরও বক্তব্য রাখেন।

গত ২ জুন সংসদ অধিবেশন শুরুর পর ৩ জুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল ‘জীবন-জীবিকায় প্রাধান্য দিয়ে সুদৃঢ় আগামীর পথে বাংলাদেশ’ সেøাগান শীর্ষক ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন, যা ৩০ জুন পাস হয়। সম্পূরকসহ বাজেটের ওপর ৮৫ জন সরকারী ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যের অংশগ্রহণে মোট ১৫ ঘণ্টা ৩২ মিনিট আলোচনা হয়।

বাজেট পাসসহ এ অধিবেশনে ৭টি সরকারি বিল পাস হয়। আইন প্রণয়ন সম্পর্কিত কার্যাবলী সম্পাদনের পাশাপাশি কার্য প্রণালী বিধির ৭১ বিধিতে ৪০টি নোটিস পাওয়া যায়। এ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর উত্তরদানের জন্য সর্বমোট ৭৩টি প্রশ্ন পাওয়া যায়। এর মধ্যে তিনি ৩০টি প্রশ্নের উত্তর দেন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীদের উত্তরদানের জন্য প্রাপ্ত মোট ১০৫৮টি প্রশ্নের মধ্যে ৭শ’টি প্রশ্নের জবাব দেয়া হয়।

অধিবেশন সমাপ্তির আগে ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাংলায় দেয়া ভাষণের অডিও ভিডিও শোনানো ও প্রদর্শন করা হয়।

এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, নানা বিচারে এবারের বাজেট দীর্ঘমেয়াদী চিন্তা প্রসূত একটি আর্থিক প্রস্তাবনা। ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ শিরোনামের নির্বাচনী ইশতেহার ২০১৮ এর অগ্রাধিকারসমূহের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই এবারের বাজেট প্রণীত হয়েছে। অতীতের অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আগামী দিনের আশা জাগানিয়া সবার জন্য সমৃদ্ধির ভিত্তিভূমি স্থাপনের এক কৌশলী দলিল।

স্পিকার বলেন, বাজেটে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকা- বাস্তবায়নের প্রতিফলন ঘটেছে। ২০৩০ সালে এসডিজির লক্ষ্যসমূহ অর্জনের সময়সীমা, ‘রূপকল্প-২০২১’ এর মত ‘রূপকল্প-২০৪১’কে সামনে রেখে এবারের বাজেট প্রণীত হয়েছে সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। যেখানে অর্থনীতির চালিকা শক্তি হবে উন্নত প্রযুক্তি ও উচ্চতর প্রবৃদ্ধি। এ অধিবেশনের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনায় সহযোগিতা প্রদানের জন্য স্পিকার সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান। এরপর স্পিকার অধিবেশন সমাপ্তি সংক্রান্ত রাষ্ট্রপতির আদেশ পাঠ করেন।