ফিলিপাইনে সামরিক বিমান বিধ্বস্ত : নিহত ১৭

ফিলিপাইনে একটি সামরিক বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ১৭ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ৪০ জনকে। বিমানটি দেশটির সুলু প্রদেশের জোলো দ্বীপে অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয়। ওই বিমানটিতে কমপক্ষে ৮৫ জন আরওহী ছিলেন। রয়টার্স

রুশ সংবাদ মাধ্যম আরটি জানিয়েছে, বিমান দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৭ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ৪০ জনকে। তবে বাকিদের ভাগ্যে কি ঘটেছে তা এখনও জানা যায়নি। দুর্ঘটনাস্থলে এখনও উদ্ধার কাজ চলছে।

ফিলিপাইনের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান জেনারেল কিরিলিতো সোবেজানা জানিয়েছেন, বিমানটিতে কমপক্ষে ৮৫ জন আরোহী ছিলেন এবং ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলে অবতরণের সময় বিমানবন্দরের পার্শ্ববর্তী একটি গ্রামে সেটা বিধ্বস্ত হয়।

তিনি আরও বলেন, বিধ্বস্ত ওই সামরিক বিমানটি সি-১৩০ মডেলের এবং দুর্ঘটনার পর সেখান থেকে ৪০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। বিধ্বস্ত বিমানটি সৈন্যদের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পরিবহনের কাজে নিয়োজিত ছিল বলেও জানান তিনি।

তবে ফিলিপাইনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বিমানটিতে মোট ৯২ জন আরোহী ছিলেন।

জেনারেল সোবেজানা বলেন, এটা খুব দুর্ভাগ্যজনক। বিমানটি রানওয়ে খুঁজে পাচ্ছিল না। তারপরও অবতরণের চেষ্টা করার সময় সেটি বিধ্বস্ত হয়।

ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলা থেকে জামেলা আলিন্দোগান জানিয়েছেন, বিমানটি যেখানে বিধ্বস্ত হয়েছে, তার পাশেই ফিলিপাইনের একটি বিশাল সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। তাই বিমানে করে সেখানে সৈন্যদের পরিবহনের কাজটা নিয়মিত করা হতো।

উদ্ধারকৃত সেনাদের হেলিকপ্টারের মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

দুর্ঘটনাস্থলে এখনও উদ্ধার কাজ চলছে। নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এদিকে, হাইতিতেও একটি ব্যক্তিগত বিমান বিধ্বস্ত হয়ে দুই মার্কিন মিশনারিসহ ৬ আরোহীর সবাই নিহত হয়েছেন।

রাজধানী পোর্ট-অব-প্রিন্স থেকে দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলীয় শহর জ্যাকমেইলে যাওয়ার সময় বিমানটি ভূপাতিত হয় বলে মিয়ামি হেরাল্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে; তারা হাইতির ন্যাশনাল সিভিল অ্যাভিয়েশন অফিসের (এনসিএও) বিবৃতির বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে। তবে বিমান বিধ্বস্তের কারণটি তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

ঘটনার বিষয়ে মন্তব্যের জন্য হাইতির একজন সরকারি প্রতিনিধি ও সেখানকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা তাৎক্ষণিভাবে সাড়া দেয়নি বলে রয়টার্স জানিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ‘গসপেল টু হাইতি’ তাদের ফেইসবুক পেইজে পোস্ট করা এক ঘোষণায় জানায়, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় তাদের গোষ্ঠীর সদস্য দুই মার্কিন নাগরিক ট্রেন্ট হসটেলটার (৩৫) ও জন মিলার (৪৩) নিহত হয়েছেন।

কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিকভাবে নিহত অপর চার আরোহীর পরিচয় প্রকাশ করেননি।

গসপেল টু হাইতি জানিয়েছে, হসটেলটারের স্ত্রী ও তিন সন্তান আগের ফ্লাইটে গন্তব্যে চলে যান। ছোট ওই বিমানটিতে জায়গা না থাকায় তিনি মিলারের সঙ্গে পরের বিমানে আসার জন্য থেকে যান।

দ্বিতীয় বিমানটি ঠিক সময়ে না আসায় তারা উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই জানাতে পারেন, বিমানটি লিওগেইনের কাছে কোথাও বিধ্বস্ত হয়েছে। একটি তল্লাশি দল গঠন করে সেখানে পাঠানো হয় আর তারা আজ সকালে (শনিবার) বিমানটি খুঁজে পায় এবং সব আরোহী মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করে, গোষ্ঠীটির ফেসবুক পেজে এমনটি বলা হয়েছে।

গসপেল টু হাইতি জানিয়েছে, পোর্ট-অব-প্রিন্সে চলমান ‘অস্থিরতার’ কারণে তারা ছোট একটি ভাড়া বিমান নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।

image

৮৫ জন আরওহী নিয়ে সুলু প্রদেশের জোলো দ্বীপে অবতরণের সময় বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে -রয়টার্স

আরও খবর
ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে ৪৩ অভিবাসীর মৃত্যু
করোনা ঠেকাতে মিশ্র টিকা বেশি কার্যকর

সোমবার, ০৫ জুলাই ২০২১ , ২১ আষাঢ় ১৪২৮ ২৩ জিলক্বদ ১৪৪২

ফিলিপাইনে সামরিক বিমান বিধ্বস্ত : নিহত ১৭

image

৮৫ জন আরওহী নিয়ে সুলু প্রদেশের জোলো দ্বীপে অবতরণের সময় বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে -রয়টার্স

ফিলিপাইনে একটি সামরিক বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ১৭ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ৪০ জনকে। বিমানটি দেশটির সুলু প্রদেশের জোলো দ্বীপে অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয়। ওই বিমানটিতে কমপক্ষে ৮৫ জন আরওহী ছিলেন। রয়টার্স

রুশ সংবাদ মাধ্যম আরটি জানিয়েছে, বিমান দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৭ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ৪০ জনকে। তবে বাকিদের ভাগ্যে কি ঘটেছে তা এখনও জানা যায়নি। দুর্ঘটনাস্থলে এখনও উদ্ধার কাজ চলছে।

ফিলিপাইনের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান জেনারেল কিরিলিতো সোবেজানা জানিয়েছেন, বিমানটিতে কমপক্ষে ৮৫ জন আরোহী ছিলেন এবং ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলে অবতরণের সময় বিমানবন্দরের পার্শ্ববর্তী একটি গ্রামে সেটা বিধ্বস্ত হয়।

তিনি আরও বলেন, বিধ্বস্ত ওই সামরিক বিমানটি সি-১৩০ মডেলের এবং দুর্ঘটনার পর সেখান থেকে ৪০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। বিধ্বস্ত বিমানটি সৈন্যদের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পরিবহনের কাজে নিয়োজিত ছিল বলেও জানান তিনি।

তবে ফিলিপাইনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বিমানটিতে মোট ৯২ জন আরোহী ছিলেন।

জেনারেল সোবেজানা বলেন, এটা খুব দুর্ভাগ্যজনক। বিমানটি রানওয়ে খুঁজে পাচ্ছিল না। তারপরও অবতরণের চেষ্টা করার সময় সেটি বিধ্বস্ত হয়।

ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলা থেকে জামেলা আলিন্দোগান জানিয়েছেন, বিমানটি যেখানে বিধ্বস্ত হয়েছে, তার পাশেই ফিলিপাইনের একটি বিশাল সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। তাই বিমানে করে সেখানে সৈন্যদের পরিবহনের কাজটা নিয়মিত করা হতো।

উদ্ধারকৃত সেনাদের হেলিকপ্টারের মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

দুর্ঘটনাস্থলে এখনও উদ্ধার কাজ চলছে। নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এদিকে, হাইতিতেও একটি ব্যক্তিগত বিমান বিধ্বস্ত হয়ে দুই মার্কিন মিশনারিসহ ৬ আরোহীর সবাই নিহত হয়েছেন।

রাজধানী পোর্ট-অব-প্রিন্স থেকে দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলীয় শহর জ্যাকমেইলে যাওয়ার সময় বিমানটি ভূপাতিত হয় বলে মিয়ামি হেরাল্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে; তারা হাইতির ন্যাশনাল সিভিল অ্যাভিয়েশন অফিসের (এনসিএও) বিবৃতির বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে। তবে বিমান বিধ্বস্তের কারণটি তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

ঘটনার বিষয়ে মন্তব্যের জন্য হাইতির একজন সরকারি প্রতিনিধি ও সেখানকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা তাৎক্ষণিভাবে সাড়া দেয়নি বলে রয়টার্স জানিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ‘গসপেল টু হাইতি’ তাদের ফেইসবুক পেইজে পোস্ট করা এক ঘোষণায় জানায়, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় তাদের গোষ্ঠীর সদস্য দুই মার্কিন নাগরিক ট্রেন্ট হসটেলটার (৩৫) ও জন মিলার (৪৩) নিহত হয়েছেন।

কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিকভাবে নিহত অপর চার আরোহীর পরিচয় প্রকাশ করেননি।

গসপেল টু হাইতি জানিয়েছে, হসটেলটারের স্ত্রী ও তিন সন্তান আগের ফ্লাইটে গন্তব্যে চলে যান। ছোট ওই বিমানটিতে জায়গা না থাকায় তিনি মিলারের সঙ্গে পরের বিমানে আসার জন্য থেকে যান।

দ্বিতীয় বিমানটি ঠিক সময়ে না আসায় তারা উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই জানাতে পারেন, বিমানটি লিওগেইনের কাছে কোথাও বিধ্বস্ত হয়েছে। একটি তল্লাশি দল গঠন করে সেখানে পাঠানো হয় আর তারা আজ সকালে (শনিবার) বিমানটি খুঁজে পায় এবং সব আরোহী মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করে, গোষ্ঠীটির ফেসবুক পেজে এমনটি বলা হয়েছে।

গসপেল টু হাইতি জানিয়েছে, পোর্ট-অব-প্রিন্সে চলমান ‘অস্থিরতার’ কারণে তারা ছোট একটি ভাড়া বিমান নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।