উপকূলের মানুষের অশ্রুর মূল্য

ঘূর্ণিঝড় কিংবা বন্যায় বাঁধ ভেঙে উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত হওয়া নতুন কোনো ঘটনা নয়। এসব এলাকায় একদিকে যেমন নতুন বাঁধ নির্মাণ বা সংস্কার করা হচ্ছে অন্যদিকে ভাঙছেও। এই ভাঙা-গড়ার মধ্যেই সিডর, আইলা, বুলবুল, আম্পানের পর গত ২৫ মে আসে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। এর প্রভাবে বাঁধ ভেঙে সাতক্ষীরার শ্যামনগর, আশাশুনিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

এসব এলাকায় আম্পানে পর সংস্কার বা নির্মাণ করা বাঁধ ভেঙে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হয়। এরপরই দেখা দেয় নিদারুণ খাদ্য ও পানীয় জলের অভাব। পরে সরকারের পক্ষ থেকে যে ত্রাণসমগ্রী বিতরণ করা হয় তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগণ্য। বিগত দিনে রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় বানের জলে ডুবে বহু মানুষ মারা গেছে। বহু কষ্ট সহ্য করে দুর্যোগপ্রবণ এলাকার মানুষেরা টিকে আছে। আবার অনেকে নিজ বাস্তুভিটা ছেড়ে শহরে পাড়ি জমিয়েছে। তাদের ঠাঁই হয়েছে শহরের বিভিন্ন বস্তিতে।

এ অঞ্চলের মানুষ একটু ঝুঁকিমুক্ত হয়ে নিরাপদ জীবন যাপন করতে চায়। তাদের মনে একটাই প্রশ্ন, কবে নির্মাণ করা হবে টেকসই বেড়িবাঁধ? প্রতিবছর সরকার এসব এলাকার উন্নয়নের জন্য কোটি কোটি টাকার বাজেটে ঘোষণা করেন। কিন্তু মানুষের ভাগ্যের আর উন্নয়ন হয় না। কারণ তাদের একটি কান্নার চোখের জল শুকাতে না শুনাতে নতুন আরেকটি বিষাদের কান্না এসে হাজির হয়। উপকূলীয় অঞ্চলের এসব মানুষের অশ্রুর মূল্য দেবে কে?

গাজী আবদুর রহিম

বামনহাট, কালিগঞ্জ, সাতক্ষীরা

সোমবার, ০৫ জুলাই ২০২১ , ২১ আষাঢ় ১৪২৮ ২৩ জিলক্বদ ১৪৪২

উপকূলের মানুষের অশ্রুর মূল্য

ঘূর্ণিঝড় কিংবা বন্যায় বাঁধ ভেঙে উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত হওয়া নতুন কোনো ঘটনা নয়। এসব এলাকায় একদিকে যেমন নতুন বাঁধ নির্মাণ বা সংস্কার করা হচ্ছে অন্যদিকে ভাঙছেও। এই ভাঙা-গড়ার মধ্যেই সিডর, আইলা, বুলবুল, আম্পানের পর গত ২৫ মে আসে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। এর প্রভাবে বাঁধ ভেঙে সাতক্ষীরার শ্যামনগর, আশাশুনিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

এসব এলাকায় আম্পানে পর সংস্কার বা নির্মাণ করা বাঁধ ভেঙে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হয়। এরপরই দেখা দেয় নিদারুণ খাদ্য ও পানীয় জলের অভাব। পরে সরকারের পক্ষ থেকে যে ত্রাণসমগ্রী বিতরণ করা হয় তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগণ্য। বিগত দিনে রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় বানের জলে ডুবে বহু মানুষ মারা গেছে। বহু কষ্ট সহ্য করে দুর্যোগপ্রবণ এলাকার মানুষেরা টিকে আছে। আবার অনেকে নিজ বাস্তুভিটা ছেড়ে শহরে পাড়ি জমিয়েছে। তাদের ঠাঁই হয়েছে শহরের বিভিন্ন বস্তিতে।

এ অঞ্চলের মানুষ একটু ঝুঁকিমুক্ত হয়ে নিরাপদ জীবন যাপন করতে চায়। তাদের মনে একটাই প্রশ্ন, কবে নির্মাণ করা হবে টেকসই বেড়িবাঁধ? প্রতিবছর সরকার এসব এলাকার উন্নয়নের জন্য কোটি কোটি টাকার বাজেটে ঘোষণা করেন। কিন্তু মানুষের ভাগ্যের আর উন্নয়ন হয় না। কারণ তাদের একটি কান্নার চোখের জল শুকাতে না শুনাতে নতুন আরেকটি বিষাদের কান্না এসে হাজির হয়। উপকূলীয় অঞ্চলের এসব মানুষের অশ্রুর মূল্য দেবে কে?

গাজী আবদুর রহিম

বামনহাট, কালিগঞ্জ, সাতক্ষীরা