বুয়েটের ‘অক্সিজেট’ প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনার পরামর্শ হাইকোর্টের

করোনা আক্রান্তদের কম খরচে অক্সিজেনের চাহিদা পূরণে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উদ্ভাবিত ভেন্টিলেটর ডিভাইস ‘অক্সিজেট’ ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের (ডিজিডিএ) অনুমোদন না পাওয়ায় বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনার পরামর্শ দিয়েছে হাইকোর্ট। এ উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বরাবর আবেদন করতে এবং ওই আবেদন অ্যাটর্নি জেনারেল ও হাইকোর্টকেও দিতে বলা হয়েছে।

‘অক্সিজেট’ নামের সি-প্যাপ (ঈ-চঅচ) ভেন্টিলেটরটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পরও ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর (ডিজিডিএ) অনুমোদন দিচ্ছে না উল্লেখ করে গতকাল বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার অনিক আর হক। তখন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম তাকে এ পরামর্শ দেন।

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চকে এই আইনজীবী বলেন, বুয়েটের উদ্ভাবিত ‘অক্সিজেট’ যন্ত্রটি এরই মধ্যে বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের (বিএমআরসি) অনুমোদন নিয়ে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের দুটি ধাপ সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। ডিভাইসটি দিয়ে হাসপাতালের সাধারণ বেডেই ৬০ লিটার পর্যন্ত হাই-ফ্লো অক্সিজেন দেয়া সম্ভব। আর একটি হাই-ফ্লো নেইজল ক্যানোলার জন্য খরচ যেখানে ২ থেকে ৫ লাখ টাকা, সেখানে বুয়েটের আবিষ্কৃত এই যন্ত্রটির উৎপাদন খরচ পড়বে মাত্র ২০-২৫ হাজার টাকা। কিন্তু ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর ?(ডিজিডিএ) ‘অক্সিজেট’ যন্ত্রটির বাণিজ্যিক উৎপাদনের অনুমতি দিচ্ছে না। এক্ষেত্রে তারা বলেছেন বাণিজ্যিক উৎপাদনে যেতে পারে কোম্পানি, যাদের ফ্যাক্টরি থাকে। বুয়েট তো কোম্পানি নয়।

ব্যারিস্টার অনিক আর হক আদালতকে বলেন, মাই লর্ড, হাই-ফ্লো নেইজল ক্যানোলার সংকটে করোনায় আক্রান্তদের প্রাণহানি বাড়ছে। তাই এই সংকটে বুয়েটের ‘অক্সিজেট’ যন্ত্রটি উৎপাদনের অনুমতি পেলে দেশে রোগীদের অক্সিজেনের চাহিদা পূরণ হতো। আর এক্ষেত্রে সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল হাই-ফ্লো নেইজল ক্যানোলা বিদেশ থেকে কিনতে হতো না।

এ সময় আদালত বলেন, আমাদের তো আবার বিদেশ থেকে কেনাকাটায় আগ্রহ বেশি। সে যাই হোক, এখানে প্রশ্ন হচ্ছে বুয়েট কি যন্ত্রটি বাণিজ্যিক উৎপাদন করতে পারবে? আর উৎপাদন ও কেনাকাটা ক্ষেত্রে কিছু নীতিমালার বিষয় তো রয়েছে।

একপর্যায়ে হাইকোর্ট ব্যারিস্টার অনিক আর হককে বুয়েটের উদ্ভাবিত ‘অক্সিজেট’ যন্ত্রটির উৎপাদন সংক্রান্ত বিষয় লিখিতভাবে অ্যাটর্নি জেনারেল ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বরাবর পাঠাতে বলেন। এ সময় আদালত বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী ইনোভেটিভ মাইন্ডের। ওনার কাছে ভালো জিনিসের খবর গেলে তা তিনি বিবেচনা করবেন আশা করি।

শ্বাসকষ্টসহ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের অক্সিজেনের চাহিদা পূরণে ‘অক্সিজেট’ নামের যন্ত্রটি সম্প্রতি উদ্ভাবন করে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। সহজে ব্যবহার ও বহনযোগ্য এই যন্ত্র কোন বিদ্যুৎশক্তি ছাড়াই অক্সিজেন সিলিন্ডার বা হাসপাতালে অক্সিজেন লাইনের সঙ্গে যুক্ত করে হাই-ফ্লো নেইজল ক্যানোলার বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যায় বলে দাবি তাদের।

মঙ্গলবার, ০৬ জুলাই ২০২১ , ২২ আষাঢ় ১৪২৮ ২৪ জিলক্বদ ১৪৪২

বুয়েটের ‘অক্সিজেট’ প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনার পরামর্শ হাইকোর্টের

আদালত বার্তা পরিবেশক

করোনা আক্রান্তদের কম খরচে অক্সিজেনের চাহিদা পূরণে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উদ্ভাবিত ভেন্টিলেটর ডিভাইস ‘অক্সিজেট’ ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের (ডিজিডিএ) অনুমোদন না পাওয়ায় বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনার পরামর্শ দিয়েছে হাইকোর্ট। এ উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বরাবর আবেদন করতে এবং ওই আবেদন অ্যাটর্নি জেনারেল ও হাইকোর্টকেও দিতে বলা হয়েছে।

‘অক্সিজেট’ নামের সি-প্যাপ (ঈ-চঅচ) ভেন্টিলেটরটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পরও ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর (ডিজিডিএ) অনুমোদন দিচ্ছে না উল্লেখ করে গতকাল বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার অনিক আর হক। তখন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম তাকে এ পরামর্শ দেন।

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চকে এই আইনজীবী বলেন, বুয়েটের উদ্ভাবিত ‘অক্সিজেট’ যন্ত্রটি এরই মধ্যে বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের (বিএমআরসি) অনুমোদন নিয়ে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের দুটি ধাপ সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। ডিভাইসটি দিয়ে হাসপাতালের সাধারণ বেডেই ৬০ লিটার পর্যন্ত হাই-ফ্লো অক্সিজেন দেয়া সম্ভব। আর একটি হাই-ফ্লো নেইজল ক্যানোলার জন্য খরচ যেখানে ২ থেকে ৫ লাখ টাকা, সেখানে বুয়েটের আবিষ্কৃত এই যন্ত্রটির উৎপাদন খরচ পড়বে মাত্র ২০-২৫ হাজার টাকা। কিন্তু ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর ?(ডিজিডিএ) ‘অক্সিজেট’ যন্ত্রটির বাণিজ্যিক উৎপাদনের অনুমতি দিচ্ছে না। এক্ষেত্রে তারা বলেছেন বাণিজ্যিক উৎপাদনে যেতে পারে কোম্পানি, যাদের ফ্যাক্টরি থাকে। বুয়েট তো কোম্পানি নয়।

ব্যারিস্টার অনিক আর হক আদালতকে বলেন, মাই লর্ড, হাই-ফ্লো নেইজল ক্যানোলার সংকটে করোনায় আক্রান্তদের প্রাণহানি বাড়ছে। তাই এই সংকটে বুয়েটের ‘অক্সিজেট’ যন্ত্রটি উৎপাদনের অনুমতি পেলে দেশে রোগীদের অক্সিজেনের চাহিদা পূরণ হতো। আর এক্ষেত্রে সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল হাই-ফ্লো নেইজল ক্যানোলা বিদেশ থেকে কিনতে হতো না।

এ সময় আদালত বলেন, আমাদের তো আবার বিদেশ থেকে কেনাকাটায় আগ্রহ বেশি। সে যাই হোক, এখানে প্রশ্ন হচ্ছে বুয়েট কি যন্ত্রটি বাণিজ্যিক উৎপাদন করতে পারবে? আর উৎপাদন ও কেনাকাটা ক্ষেত্রে কিছু নীতিমালার বিষয় তো রয়েছে।

একপর্যায়ে হাইকোর্ট ব্যারিস্টার অনিক আর হককে বুয়েটের উদ্ভাবিত ‘অক্সিজেট’ যন্ত্রটির উৎপাদন সংক্রান্ত বিষয় লিখিতভাবে অ্যাটর্নি জেনারেল ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বরাবর পাঠাতে বলেন। এ সময় আদালত বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী ইনোভেটিভ মাইন্ডের। ওনার কাছে ভালো জিনিসের খবর গেলে তা তিনি বিবেচনা করবেন আশা করি।

শ্বাসকষ্টসহ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের অক্সিজেনের চাহিদা পূরণে ‘অক্সিজেট’ নামের যন্ত্রটি সম্প্রতি উদ্ভাবন করে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। সহজে ব্যবহার ও বহনযোগ্য এই যন্ত্র কোন বিদ্যুৎশক্তি ছাড়াই অক্সিজেন সিলিন্ডার বা হাসপাতালে অক্সিজেন লাইনের সঙ্গে যুক্ত করে হাই-ফ্লো নেইজল ক্যানোলার বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যায় বলে দাবি তাদের।