নেত্রকোনার দুর্গাপুরে সোমেশ্বরী নদীর ভাঙ্গন অব্যাহত। আতঙ্কে ৮ গ্রামের মানুষ। পরিদর্শন করেছেন নেত্রকোনার জেলা প্রশাসন। অবিরাম বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নতুন করে সোমেশ্বরী নদীর ভাঙনে চোখের পলকেই বিলীন হচ্ছে নানা স্থাপনা। নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার কুল্লাগড়া ইউনিয়নের কামারখালী বাজারটি ইতোমধ্যে নদীর গর্ভে চলে গেছে। বহেরাতলী, বড়ইকান্দি, রানীখং,ও দুর্গাপুর সদর ইউনিয়নের ফারংপাড়া গ্রামের বেশকিছু অংশ ভেঙ্গে গেছে। ফসলি জমি, বসতভিটা, রাস্তাঘাট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিছুই ভাঙন থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। সোমেশ্বরীর ভাঙনে গত দুই বছরে বিলীন হয়েছে ওই এলাকার শত শত পরিবার। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, স্থায়ী কোন বেরিবাঁধ না থাকায় ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছে ওই এলকার ৮ গ্রামের মানুষ। থামছে না নদী ভাঙ্গন, বাড়ছে সাধারণ মানুষের কান্না। সোমেশ্বরীর করাল গ্রাসে বিলীন হয়ে যাচ্ছে মানুষের মাথা গোঁজার শেষ সম্বলটুকু। দুশ্চিন্তায় পড়েছেন নদীর পাড়ে বসবাসকৃত আদিবাসীসহ হাজারও মানুষ। নতুন করে নদীর পানি বৃদ্ধিতে হুমকির মুখে রয়েছে মসজিদ, মন্দির, বিদ্যালয়সহ ঐহিত্যবাহী রানীখং ধর্মপল্লী। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ভাঙন রোধে প্রায় আট কোটি টাকা ব্যয়ে নয়শত মিটার ভাঙন এলাকায় ৬টি প্যাকেজের মাধ্যমে জিও ব্যাগ ফেলানোর কাজ শুরু হলেও ধীরগতিতে কাজ করায় এখনও তা শেষ হয়নি। নয়শত মিটার কাজের মধ্যে মাত্র ২শ’ মিটার কাজ সম্পন্ন হলেও মুখ থুবড়ে পড়ে আছে বাকি কাজগুলো। ভাঙ্গন এলাকাগুলোতে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলানোর জন্য ভরে রাখা শত শত ব্যাগ পড়ে থাকলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ট্রাস্কফোর্স এর তদারকি না থাকায় তা নষ্ট হচ্ছে বলে জানান এলাকাবাসী। ওই কাজে নিয়োজিত বেশ কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বর্ষা শুরু হওয়ার আগ থেকে বারংবার তাগিদ দেয়া হলেও তা কোন প্রকার আমলে নেয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে ওই এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হক বলেন, আমার বলার ভাষা নাই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের এই বিমাতা সুলভ আচরণ দেখে। আমরা এ দেশের নাগরিক কিনা, ঘৃণা হচ্ছে নিজেদের প্রতি। যে কাজ ৩ মাসে শেষ হওয়ার কথা, তা ১ বছরেও শেষ হচ্ছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ড এর নেত্রকোনা জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন লাল সৈকত সংবাদকে বলেন, নদীতে নতুন করে পানি আসার ফলে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান সংবাদ কে বলেন, সোমেশ্বরী নদীর ভাঙন ঠেকাতে স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের ঐকান্তিক চেষ্টায় ভাঙ্গন রোধে ওই এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলানোর কাজ শুরু হয়েছে। ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করে জেলা প্রশাসক কাজী মো. আবদুর রহমান, স্থানীয়দের জানান দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়ে নদীর তীর ভাঙন রোধে জিও ব্যাগের কাজ দ্রুত সম্পন্নের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার, ০৮ জুলাই ২০২১ , ২৪ আষাঢ় ১৪২৮ ২৬ জিলক্বদ ১৪৪২
প্রতিনিধি, দুর্গাপুর (নেত্রকোনা)
নেত্রকোনার দুর্গাপুরে সোমেশ্বরী নদীর ভাঙ্গন অব্যাহত। আতঙ্কে ৮ গ্রামের মানুষ। পরিদর্শন করেছেন নেত্রকোনার জেলা প্রশাসন। অবিরাম বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নতুন করে সোমেশ্বরী নদীর ভাঙনে চোখের পলকেই বিলীন হচ্ছে নানা স্থাপনা। নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার কুল্লাগড়া ইউনিয়নের কামারখালী বাজারটি ইতোমধ্যে নদীর গর্ভে চলে গেছে। বহেরাতলী, বড়ইকান্দি, রানীখং,ও দুর্গাপুর সদর ইউনিয়নের ফারংপাড়া গ্রামের বেশকিছু অংশ ভেঙ্গে গেছে। ফসলি জমি, বসতভিটা, রাস্তাঘাট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিছুই ভাঙন থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। সোমেশ্বরীর ভাঙনে গত দুই বছরে বিলীন হয়েছে ওই এলাকার শত শত পরিবার। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, স্থায়ী কোন বেরিবাঁধ না থাকায় ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছে ওই এলকার ৮ গ্রামের মানুষ। থামছে না নদী ভাঙ্গন, বাড়ছে সাধারণ মানুষের কান্না। সোমেশ্বরীর করাল গ্রাসে বিলীন হয়ে যাচ্ছে মানুষের মাথা গোঁজার শেষ সম্বলটুকু। দুশ্চিন্তায় পড়েছেন নদীর পাড়ে বসবাসকৃত আদিবাসীসহ হাজারও মানুষ। নতুন করে নদীর পানি বৃদ্ধিতে হুমকির মুখে রয়েছে মসজিদ, মন্দির, বিদ্যালয়সহ ঐহিত্যবাহী রানীখং ধর্মপল্লী। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ভাঙন রোধে প্রায় আট কোটি টাকা ব্যয়ে নয়শত মিটার ভাঙন এলাকায় ৬টি প্যাকেজের মাধ্যমে জিও ব্যাগ ফেলানোর কাজ শুরু হলেও ধীরগতিতে কাজ করায় এখনও তা শেষ হয়নি। নয়শত মিটার কাজের মধ্যে মাত্র ২শ’ মিটার কাজ সম্পন্ন হলেও মুখ থুবড়ে পড়ে আছে বাকি কাজগুলো। ভাঙ্গন এলাকাগুলোতে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলানোর জন্য ভরে রাখা শত শত ব্যাগ পড়ে থাকলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ট্রাস্কফোর্স এর তদারকি না থাকায় তা নষ্ট হচ্ছে বলে জানান এলাকাবাসী। ওই কাজে নিয়োজিত বেশ কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বর্ষা শুরু হওয়ার আগ থেকে বারংবার তাগিদ দেয়া হলেও তা কোন প্রকার আমলে নেয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে ওই এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হক বলেন, আমার বলার ভাষা নাই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের এই বিমাতা সুলভ আচরণ দেখে। আমরা এ দেশের নাগরিক কিনা, ঘৃণা হচ্ছে নিজেদের প্রতি। যে কাজ ৩ মাসে শেষ হওয়ার কথা, তা ১ বছরেও শেষ হচ্ছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ড এর নেত্রকোনা জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন লাল সৈকত সংবাদকে বলেন, নদীতে নতুন করে পানি আসার ফলে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান সংবাদ কে বলেন, সোমেশ্বরী নদীর ভাঙন ঠেকাতে স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের ঐকান্তিক চেষ্টায় ভাঙ্গন রোধে ওই এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলানোর কাজ শুরু হয়েছে। ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করে জেলা প্রশাসক কাজী মো. আবদুর রহমান, স্থানীয়দের জানান দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়ে নদীর তীর ভাঙন রোধে জিও ব্যাগের কাজ দ্রুত সম্পন্নের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দিয়েছেন।