করোনা মহামারীতেও ভিয়েতনামের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ১৭ শতাংশ

করোনা মহামারীতে যখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি ধুকছে তখন প্রবৃদ্ধি বজায় রেখেছে ভিয়েতনাম। দেশটিতে চলতি বছরের জুনে রপ্তানি আয় হয়েছে আনুমানিক ২ হাজার ৬৫০ কোটি ডলার। এটি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি।

ভিয়েতনাম টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ভিয়েতনামের মোট রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ছিল আনুমানিক ১৫ হাজার ৭৬৩ কোটি ডলার যা গত বছরের প্রথম ছয় মাসের তুলনায় ২৮ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি। বছরের এ সময়ে ভিয়েতনামের কৃষি ও মৎস্যজাত পণ্য সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে দেশটির রাবারজাত পণ্য রপ্তানি বেড়েছে সবচেয়ে বেশি।

গত বছরের প্রথম ছয় মাসের তুলনায় চলতি বছরের একই সময়ে রাবার পণ্যের রপ্তানির পরিমাণ বেড়েছে ৪১ দশমিক ৩ শতাংশ এবং রপ্তানি আয় বেড়েছে ৮০ শতাংশ। চলতি বছর রাবার পণ্যের রপ্তানির পরিমাণ ৬৮১ হাজার টনে পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে, যার রপ্তানি মূল্য দাঁড়াতে পারে ১১৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার।

এছাড়া গত বছরের প্রথমার্ধের তুলনায় চলতি বছরের একই সময়ে কাসাভা (মাটির নিচে উৎপাদিত এক ধরনের আলু) ও কাসাভাজাত পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে ৩০ দশমিক ৫ শতাংশ। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি বছর সামুদ্রিক খাদ্যের রপ্তানি বেড়েছে ১২ দশমিক ৫ শতাংশ এবং শাকসবজি রপ্তানির পরিমাণ বেড়েছে ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ। গত বছরের তুলনায় চলতি বছর ভিয়েতনামের সবজি রপ্তানির পরিমাণ যথেষ্ট বেড়েছে। চলতি বছরের প্রথমার্ধে ভিয়েতনামের কৃষি, বন ও মৎস্যজাত পণ্যের রপ্তানি মূল্য দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৩০ কোটি ডলার।

ভিয়েতনামের চা মাও প্রদেশের চিংড়ি প্রক্রিয়াজাত ও রপ্তানির পরিমাণ চলতি বছরের প্রথমার্ধে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে। অঞ্চলটির এ সময়ে রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ লাখ ৮ হাজার টন, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি। চিংড়ির রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৪৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৮ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। চা মাও অঞ্চলে প্রক্রিয়াজাত অধিকাংশ চিংড়িই রপ্তানি হয় যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাপান ও কোরিয়ায়।

চা মাও প্রদেশের শিল্প ও বাণিজ্য বিভাগের উপ-পরিচালক ডং ভো নাম জানান, চা মাও অঞ্চলের কভিড-১৯ পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে। ফলে অঞ্চলটির অনেক রপ্তানি খাত মহামারীর কারণে তেমনটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। ভোক্তা পর্যায়ে মৎস্যজাত পণ্যের চাহিদা বাড়ায় রেস্তোরাঁ ও খাদ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে যথেষ্ট আমদানি আদেশ আসছে।

ফলে এ খাত ক্রমেই মহামারী-পূর্ববর্তী অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে।

যদিও অনেক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানই কভিডের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি বছর ভিয়েতনামের প্রক্রিয়াজাত শিল্পের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ১৩ হাজার ৫৫০ কোটি ডলার। এটা ভিয়েতনামের মোট রপ্তানি টার্নওভারের ৮৫ দশমিক ৯ শতাংশ। এ প্রবৃদ্ধি মূলত দেশটির স্মার্টফোন ও ফোনের খুচরা যন্ত্রাংশ এবং কাঠ ও কাঠ নির্মিত পণ্য রপ্তানির ফলে অর্জিত হয়েছে।

রবিবার, ১১ জুলাই ২০২১ , ২৭ আষাঢ় ১৪২৮ ২৯ জিলক্বদ ১৪৪২

করোনা মহামারীতেও ভিয়েতনামের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ১৭ শতাংশ

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

image

করোনা মহামারীতে যখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি ধুকছে তখন প্রবৃদ্ধি বজায় রেখেছে ভিয়েতনাম। দেশটিতে চলতি বছরের জুনে রপ্তানি আয় হয়েছে আনুমানিক ২ হাজার ৬৫০ কোটি ডলার। এটি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি।

ভিয়েতনাম টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ভিয়েতনামের মোট রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ছিল আনুমানিক ১৫ হাজার ৭৬৩ কোটি ডলার যা গত বছরের প্রথম ছয় মাসের তুলনায় ২৮ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি। বছরের এ সময়ে ভিয়েতনামের কৃষি ও মৎস্যজাত পণ্য সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে দেশটির রাবারজাত পণ্য রপ্তানি বেড়েছে সবচেয়ে বেশি।

গত বছরের প্রথম ছয় মাসের তুলনায় চলতি বছরের একই সময়ে রাবার পণ্যের রপ্তানির পরিমাণ বেড়েছে ৪১ দশমিক ৩ শতাংশ এবং রপ্তানি আয় বেড়েছে ৮০ শতাংশ। চলতি বছর রাবার পণ্যের রপ্তানির পরিমাণ ৬৮১ হাজার টনে পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে, যার রপ্তানি মূল্য দাঁড়াতে পারে ১১৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার।

এছাড়া গত বছরের প্রথমার্ধের তুলনায় চলতি বছরের একই সময়ে কাসাভা (মাটির নিচে উৎপাদিত এক ধরনের আলু) ও কাসাভাজাত পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে ৩০ দশমিক ৫ শতাংশ। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি বছর সামুদ্রিক খাদ্যের রপ্তানি বেড়েছে ১২ দশমিক ৫ শতাংশ এবং শাকসবজি রপ্তানির পরিমাণ বেড়েছে ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ। গত বছরের তুলনায় চলতি বছর ভিয়েতনামের সবজি রপ্তানির পরিমাণ যথেষ্ট বেড়েছে। চলতি বছরের প্রথমার্ধে ভিয়েতনামের কৃষি, বন ও মৎস্যজাত পণ্যের রপ্তানি মূল্য দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৩০ কোটি ডলার।

ভিয়েতনামের চা মাও প্রদেশের চিংড়ি প্রক্রিয়াজাত ও রপ্তানির পরিমাণ চলতি বছরের প্রথমার্ধে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে। অঞ্চলটির এ সময়ে রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ লাখ ৮ হাজার টন, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি। চিংড়ির রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৪৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৮ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। চা মাও অঞ্চলে প্রক্রিয়াজাত অধিকাংশ চিংড়িই রপ্তানি হয় যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাপান ও কোরিয়ায়।

চা মাও প্রদেশের শিল্প ও বাণিজ্য বিভাগের উপ-পরিচালক ডং ভো নাম জানান, চা মাও অঞ্চলের কভিড-১৯ পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে। ফলে অঞ্চলটির অনেক রপ্তানি খাত মহামারীর কারণে তেমনটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। ভোক্তা পর্যায়ে মৎস্যজাত পণ্যের চাহিদা বাড়ায় রেস্তোরাঁ ও খাদ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে যথেষ্ট আমদানি আদেশ আসছে।

ফলে এ খাত ক্রমেই মহামারী-পূর্ববর্তী অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে।

যদিও অনেক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানই কভিডের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি বছর ভিয়েতনামের প্রক্রিয়াজাত শিল্পের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ১৩ হাজার ৫৫০ কোটি ডলার। এটা ভিয়েতনামের মোট রপ্তানি টার্নওভারের ৮৫ দশমিক ৯ শতাংশ। এ প্রবৃদ্ধি মূলত দেশটির স্মার্টফোন ও ফোনের খুচরা যন্ত্রাংশ এবং কাঠ ও কাঠ নির্মিত পণ্য রপ্তানির ফলে অর্জিত হয়েছে।