সিনোফার্মা, ফাইজার ও মডার্নার ৫৫ লাখ ডোজ মজুদ রয়েছে

আগস্টে আরও ৬০ লাখ ফাইজার টিকা আসছে

স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে বর্তমানে ‘সিনোফার্মা, ফাইজার ও মডার্নার ৫৫ লাখ ডোজ করোনার টিকা মজুদ রয়েছে। কিন্তু অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা’ টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণকারী ১৫ লাখ ২৫ হাজারের বেশি মানুষের দ্বিতীয় ডোজের যোগান এখনও হয়নি। চুক্তি অনুযায়ী, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট কবে নাগাদ টিকা সরবরাহ করতে পারবেÑ সে সম্পর্কে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা এখনও কিছু বলতে পারছেন না।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি দেশে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর ৮ এপ্রিল দ্বিতীয় ডোজের টিকাদান শুরু হয়। কিন্তু টিকার স্বল্পতার কারণে গত ২৫ এপ্রিল থেকে টিকার প্রথম ডোজ দেয়া বন্ধ রয়েছে। প্রথম ডোজ দেয়ার আট থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্যে সবাইকে দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার পরিকল্পনা ছিল স্বাস্থ্য বিভাগের। এ হিসেবে ‘অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা’ টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণকারী অনেকেরই দুই মাস চলে গেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা গতকাল সংবাদকে জানিয়েছেন, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার প্রথম ডোজ নেয়া প্রায় ১৫ লাখ মানুষের দ্বিতীয় ডোজের টিকার ঘাটতি রয়েছে। তাদের দ্বিতীয় ডোজ নিশ্চিত করতে জাপানই আপাতত ভরসা। জাপান সরকার গত ২ জুলাই বাংলাদেশকে এই টিকার ২০ লাখ ডোজ অনুদান দেয়ার প্রস্তাব করেছে। শীঘ্রই জাপান থেকে টিকা পাওয়ার আশা করছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।

সেরাম ইনস্টিটিউট ও ভারত সরকারের কাছ থেকে উপহার হিসেবে এ পর্যন্ত মোট এক কোটি তিন লাখ ডোজ ‘অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা’র টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ। এখন পর্যন্ত এই টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৫৮ লাখ ২০ হাজার ২৩ জন। তাদের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ৪২ লাখ ৯৪ হাজার ৫৫৫ জন। এ হিসেবে দ্বিতীয় ডোজ পাননি- এমন টিকা গ্রহীতার সংখ্যা ১৫ লাখ ২৫ হাজার ৪৬৮ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, টিকা পেতে গত ৮ জুলাই পর্যন্ত মোট নিবন্ধন করেছেন ৮০ লাখ ৯৭ হাজার ৯৭২ জন।

টিকার মজুদ

বর্তমানে স্বাস্থ্য বিভাগের ‘অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা’ টিকার মজুদ রয়েছে প্রায় দশ হাজার ডোজ। এছাড়া সরকার এ পর্যন্ত চীনের ‘সিনোফার্মা’ টিকা পেয়েছে ৩১ লাখ ডোজ। এর মধ্যে ১১ লাখ ডোজ উপহার হিসেবে দিয়েছে চীন। বাকি টিকা চুক্তির আওতায় কেনা হয়েছে।

এ পর্যন্ত ‘সিনোফার্মা’ টিকার নিয়েছেন এক লাখ দশ হাজার ব্যক্তি। এ হিসেবে ‘সাইনোফার্মা’ টিকার মজুদ রয়েছে ২৯ লাখ ৯০ হাজার ডোজ।

টিকা সংগ্রহের জোট ‘কোভাক্স ফ্যাসিলিটি’র আওতায় স্বল্প মূল্যে যুক্তরাষ্ট্র ‘ফাইজার’র কাছ থেকে এক লাখ ৬০০ ডোজ টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ। ৮ জুলাই পর্যন্ত ‘ফাইজার’র টিকার প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছে ৯ হাজার ৭৭৩ জনকে। এ হিসেবে স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে ‘ফাইজার’ টিকার ৯০ হাজার ৮২৭ ডোজ টিকা মজুদ রয়েছে।

এ ছাড়াও ‘কোভাক্স ফ্যাসিলিটি’র আওতায় যুক্তরাষ্ট্রের ‘মডার্না’ টিকার ২৫ লাখ ডোজ সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ। এই টিকা দিয়ে এখনও কর্মসূচি শুরু করেনি স্বাস্থ্য বিভাগ।

আগস্টে আরও ৬০ লাখ ফাইজারের টিকা আসছে

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, আগামী আগস্ট মাসে কোভ্যাক্স সুবিধার আওতায় ফাইজারের আরও ৬০ লাখ ডোজ টিকা দেশে আসছে।

গতকাল শনিবার (১০ জুলাই) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের টিকাদান কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন।

আমাদের কাছে চিঠি এসেছে, আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে এই টিকা দেশে আসবে উল্লেখ করে জাহিদ মালেক বলেন, দেশে টিকার সমস্যা আল্লাহর রহমতে কেটে গেছে। ইতোমধ্যে কোভ্যাক্সের আওতায় ৪৫ লাখ টিকা এসেছে। আপনারা শুনে আনন্দিত হবেন, গতকাল (৯ জুলাই) বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা থেকে আমরা চিঠি পেয়েছি। তারা আমাদের কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটির আওতায় ফাইজার বায়োএনটেকের আরও ৬০ লাখ টিকা দেবে।

চীন থেকেও আরও টিকা আসবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, চীন থেকেও টিকার বড় চালান আসছে, তাদের থেকে আমরা আরও টিকা পাব। সব মিলিয়ে আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে দেড় থেকে পৌনে দুই কোটি ডোজ টিকা বাংলাদেশের হাতে আসবে।

রবিবার, ১১ জুলাই ২০২১ , ২৭ আষাঢ় ১৪২৮ ২৯ জিলক্বদ ১৪৪২

সিনোফার্মা, ফাইজার ও মডার্নার ৫৫ লাখ ডোজ মজুদ রয়েছে

আগস্টে আরও ৬০ লাখ ফাইজার টিকা আসছে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে বর্তমানে ‘সিনোফার্মা, ফাইজার ও মডার্নার ৫৫ লাখ ডোজ করোনার টিকা মজুদ রয়েছে। কিন্তু অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা’ টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণকারী ১৫ লাখ ২৫ হাজারের বেশি মানুষের দ্বিতীয় ডোজের যোগান এখনও হয়নি। চুক্তি অনুযায়ী, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট কবে নাগাদ টিকা সরবরাহ করতে পারবেÑ সে সম্পর্কে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা এখনও কিছু বলতে পারছেন না।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি দেশে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর ৮ এপ্রিল দ্বিতীয় ডোজের টিকাদান শুরু হয়। কিন্তু টিকার স্বল্পতার কারণে গত ২৫ এপ্রিল থেকে টিকার প্রথম ডোজ দেয়া বন্ধ রয়েছে। প্রথম ডোজ দেয়ার আট থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্যে সবাইকে দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার পরিকল্পনা ছিল স্বাস্থ্য বিভাগের। এ হিসেবে ‘অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা’ টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণকারী অনেকেরই দুই মাস চলে গেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা গতকাল সংবাদকে জানিয়েছেন, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার প্রথম ডোজ নেয়া প্রায় ১৫ লাখ মানুষের দ্বিতীয় ডোজের টিকার ঘাটতি রয়েছে। তাদের দ্বিতীয় ডোজ নিশ্চিত করতে জাপানই আপাতত ভরসা। জাপান সরকার গত ২ জুলাই বাংলাদেশকে এই টিকার ২০ লাখ ডোজ অনুদান দেয়ার প্রস্তাব করেছে। শীঘ্রই জাপান থেকে টিকা পাওয়ার আশা করছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।

সেরাম ইনস্টিটিউট ও ভারত সরকারের কাছ থেকে উপহার হিসেবে এ পর্যন্ত মোট এক কোটি তিন লাখ ডোজ ‘অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা’র টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ। এখন পর্যন্ত এই টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৫৮ লাখ ২০ হাজার ২৩ জন। তাদের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ৪২ লাখ ৯৪ হাজার ৫৫৫ জন। এ হিসেবে দ্বিতীয় ডোজ পাননি- এমন টিকা গ্রহীতার সংখ্যা ১৫ লাখ ২৫ হাজার ৪৬৮ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, টিকা পেতে গত ৮ জুলাই পর্যন্ত মোট নিবন্ধন করেছেন ৮০ লাখ ৯৭ হাজার ৯৭২ জন।

টিকার মজুদ

বর্তমানে স্বাস্থ্য বিভাগের ‘অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা’ টিকার মজুদ রয়েছে প্রায় দশ হাজার ডোজ। এছাড়া সরকার এ পর্যন্ত চীনের ‘সিনোফার্মা’ টিকা পেয়েছে ৩১ লাখ ডোজ। এর মধ্যে ১১ লাখ ডোজ উপহার হিসেবে দিয়েছে চীন। বাকি টিকা চুক্তির আওতায় কেনা হয়েছে।

এ পর্যন্ত ‘সিনোফার্মা’ টিকার নিয়েছেন এক লাখ দশ হাজার ব্যক্তি। এ হিসেবে ‘সাইনোফার্মা’ টিকার মজুদ রয়েছে ২৯ লাখ ৯০ হাজার ডোজ।

টিকা সংগ্রহের জোট ‘কোভাক্স ফ্যাসিলিটি’র আওতায় স্বল্প মূল্যে যুক্তরাষ্ট্র ‘ফাইজার’র কাছ থেকে এক লাখ ৬০০ ডোজ টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ। ৮ জুলাই পর্যন্ত ‘ফাইজার’র টিকার প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছে ৯ হাজার ৭৭৩ জনকে। এ হিসেবে স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে ‘ফাইজার’ টিকার ৯০ হাজার ৮২৭ ডোজ টিকা মজুদ রয়েছে।

এ ছাড়াও ‘কোভাক্স ফ্যাসিলিটি’র আওতায় যুক্তরাষ্ট্রের ‘মডার্না’ টিকার ২৫ লাখ ডোজ সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ। এই টিকা দিয়ে এখনও কর্মসূচি শুরু করেনি স্বাস্থ্য বিভাগ।

আগস্টে আরও ৬০ লাখ ফাইজারের টিকা আসছে

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, আগামী আগস্ট মাসে কোভ্যাক্স সুবিধার আওতায় ফাইজারের আরও ৬০ লাখ ডোজ টিকা দেশে আসছে।

গতকাল শনিবার (১০ জুলাই) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের টিকাদান কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন।

আমাদের কাছে চিঠি এসেছে, আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে এই টিকা দেশে আসবে উল্লেখ করে জাহিদ মালেক বলেন, দেশে টিকার সমস্যা আল্লাহর রহমতে কেটে গেছে। ইতোমধ্যে কোভ্যাক্সের আওতায় ৪৫ লাখ টিকা এসেছে। আপনারা শুনে আনন্দিত হবেন, গতকাল (৯ জুলাই) বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা থেকে আমরা চিঠি পেয়েছি। তারা আমাদের কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটির আওতায় ফাইজার বায়োএনটেকের আরও ৬০ লাখ টিকা দেবে।

চীন থেকেও আরও টিকা আসবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, চীন থেকেও টিকার বড় চালান আসছে, তাদের থেকে আমরা আরও টিকা পাব। সব মিলিয়ে আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে দেড় থেকে পৌনে দুই কোটি ডোজ টিকা বাংলাদেশের হাতে আসবে।