লকডাউনকে পুঁজি করে বাড়াছে পণ্যের দাম

লকডাউনকে পুঁজি করে সিলেটে বেড়েছে সবজি ও মাছের দাম। সব ধরনের কাঁচা সবজি ১০-১৫ টাকা বেশি দরে কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। মাছের দাম কেজিতে বেড়েছে ৩০-৪০ টাকা। সেই সঙ্গে প্রতি কেজি চালে ৫-৮ টাকা বেড়েছে। বেশি দামে পণ্য কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। ক্রেতারা বলছেন, অনেকটা বেসামাল হয়ে পড়েছে বাজার। কঠোর লকডাউন চলাকালে সিলেটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপরতা দেখা গেলেও বাজার মনিটরিংয়ে প্রশাসনের কোন তদারকি নেই। যার কারণেই ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতে দাম বৃদ্ধি করে যাচ্ছেন। এদিকে মাছ ও সবজির দাম বৃদ্ধির জন্য বিক্রেতারা প্রশাসনের বেঁধে দেয়া কম সময়কে দায়ী করছেন। তবে ক্রেতারা বলছেন, লকডাউনের অযুহাত দেখিয়ে ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছেন। কঠিন পরিস্থিতিতে মানুষকে বাঁচাতে বাজার মনিটরিং করা খুবই জরুরি। অন্যথায় মানুষ আরও বিপদে পড়বে। মূলত লকডাউনের কারণে মাছ-মাংসসহ সব পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ক্রেতারা। গতকাল সকালে সিলেটের কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, কঠোর বিধিনিষেধের কারণে কাঁচাবাজারে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ক্রেতার ভিড় বেশ কম।

সিসিকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুনন্দা রায় বলেন, প্রতিদিনই সিলেটের বাজারগুলোতে অভিযান চালিয়ে জরিমানাও করা হচ্ছে। সিসিকের অভিযান সব সময় অব্যাহত আছে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, বেগুনের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৫০ টাকার কেজি বেগুন ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া ঝিঙে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। করলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি, যা আগে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে। চিচিঙ্গার কেজি সপ্তাহের ব্যবধানে ২০ টাকা বেড়ে ৬০ টাকা হয়ে গেছে। ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বরবটির দাম বেড়ে ৮০ টাকা হয়েছে। আগের মতো ঢেঁড়শ ৪০ থেকে ৫০ টাকা এবং পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। কাঁচকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। বাজারে চাল কুমড়া পিস ৪০ থেকে ৫০ টাকা, প্রতি পিস লাউ আকারভেদে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়ার পিস ৪০ টাকা, কচুর লতি ৬০ টাকা, ধুন্দুল ৫০ টাকা। কাঁচামরিচের কেজি ৪০ টাকা। শশার দাম ৪০ টাকা। কাঁকরোল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ১০-১৫ টাকায়। আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা।

এদিকে আমদানি করা আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা। আর দেশি আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। দেশি পেঁয়াজের কেজি গত সপ্তাহের মতো ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মাছের দাম গত সপ্তাহের চেয়ে বেশি। তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা কেজিতে, যা আগে ছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২০০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যে। মৃগেল মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি, যা আগে ছিল ১৬০ থেকে ১৮০ টাকার মধ্যে। পাবদা মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। রূপচাঁদা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮৫০ টাকায়।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে অধিকাংশ পণ্যের দাম বাড়লেও কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। বন্দরবাজারের লালবাজারে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৫০ টাকা কেজি। এদিকে, ব্রয়লার মুরগির দাম কমলেও অপরিবর্তিত রয়েছে পাকিস্তানি কক বা সোনালী মুরগি এবং লাল লেয়ার মুরগি। লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা। আর সোনালী মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৩০ টাকা।

চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে প্রতি কেজি চালের দাম বেড়েছে ৪-৫ টাকা। বিআর-২৮ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫২ টাকা। গত সপ্তাহে এই চালের দাম ছিল ৪৬ থেকে ৪৮ টাকা। বাজারে এখন মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬২ টাকা, গত সপ্তাহে এই চালের দাম ছিল ৫৮ টাকা থেকে ৬০ টাকা কেজি। এখন পাইজাম চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০ টাকা। গত সপ্তাহে এই চালের দাম ছিল ৪৮ টাকা কেজি। বাজারে নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা গত সপ্তাহে এই চালের দাম ছিল ৬৭ কেজি।

রবিবার, ১১ জুলাই ২০২১ , ২৭ আষাঢ় ১৪২৮ ২৯ জিলক্বদ ১৪৪২

বেসামাল সিলেটের বাজার

লকডাউনকে পুঁজি করে বাড়াছে পণ্যের দাম

প্রতিনিধি, সিলেট

লকডাউনকে পুঁজি করে সিলেটে বেড়েছে সবজি ও মাছের দাম। সব ধরনের কাঁচা সবজি ১০-১৫ টাকা বেশি দরে কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। মাছের দাম কেজিতে বেড়েছে ৩০-৪০ টাকা। সেই সঙ্গে প্রতি কেজি চালে ৫-৮ টাকা বেড়েছে। বেশি দামে পণ্য কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। ক্রেতারা বলছেন, অনেকটা বেসামাল হয়ে পড়েছে বাজার। কঠোর লকডাউন চলাকালে সিলেটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপরতা দেখা গেলেও বাজার মনিটরিংয়ে প্রশাসনের কোন তদারকি নেই। যার কারণেই ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতে দাম বৃদ্ধি করে যাচ্ছেন। এদিকে মাছ ও সবজির দাম বৃদ্ধির জন্য বিক্রেতারা প্রশাসনের বেঁধে দেয়া কম সময়কে দায়ী করছেন। তবে ক্রেতারা বলছেন, লকডাউনের অযুহাত দেখিয়ে ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছেন। কঠিন পরিস্থিতিতে মানুষকে বাঁচাতে বাজার মনিটরিং করা খুবই জরুরি। অন্যথায় মানুষ আরও বিপদে পড়বে। মূলত লকডাউনের কারণে মাছ-মাংসসহ সব পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ক্রেতারা। গতকাল সকালে সিলেটের কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, কঠোর বিধিনিষেধের কারণে কাঁচাবাজারে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ক্রেতার ভিড় বেশ কম।

সিসিকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুনন্দা রায় বলেন, প্রতিদিনই সিলেটের বাজারগুলোতে অভিযান চালিয়ে জরিমানাও করা হচ্ছে। সিসিকের অভিযান সব সময় অব্যাহত আছে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, বেগুনের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৫০ টাকার কেজি বেগুন ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া ঝিঙে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। করলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি, যা আগে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে। চিচিঙ্গার কেজি সপ্তাহের ব্যবধানে ২০ টাকা বেড়ে ৬০ টাকা হয়ে গেছে। ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বরবটির দাম বেড়ে ৮০ টাকা হয়েছে। আগের মতো ঢেঁড়শ ৪০ থেকে ৫০ টাকা এবং পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। কাঁচকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। বাজারে চাল কুমড়া পিস ৪০ থেকে ৫০ টাকা, প্রতি পিস লাউ আকারভেদে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়ার পিস ৪০ টাকা, কচুর লতি ৬০ টাকা, ধুন্দুল ৫০ টাকা। কাঁচামরিচের কেজি ৪০ টাকা। শশার দাম ৪০ টাকা। কাঁকরোল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ১০-১৫ টাকায়। আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা।

এদিকে আমদানি করা আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা। আর দেশি আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। দেশি পেঁয়াজের কেজি গত সপ্তাহের মতো ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মাছের দাম গত সপ্তাহের চেয়ে বেশি। তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা কেজিতে, যা আগে ছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২০০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যে। মৃগেল মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি, যা আগে ছিল ১৬০ থেকে ১৮০ টাকার মধ্যে। পাবদা মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। রূপচাঁদা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮৫০ টাকায়।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে অধিকাংশ পণ্যের দাম বাড়লেও কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। বন্দরবাজারের লালবাজারে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৫০ টাকা কেজি। এদিকে, ব্রয়লার মুরগির দাম কমলেও অপরিবর্তিত রয়েছে পাকিস্তানি কক বা সোনালী মুরগি এবং লাল লেয়ার মুরগি। লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা। আর সোনালী মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৩০ টাকা।

চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে প্রতি কেজি চালের দাম বেড়েছে ৪-৫ টাকা। বিআর-২৮ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫২ টাকা। গত সপ্তাহে এই চালের দাম ছিল ৪৬ থেকে ৪৮ টাকা। বাজারে এখন মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬২ টাকা, গত সপ্তাহে এই চালের দাম ছিল ৫৮ টাকা থেকে ৬০ টাকা কেজি। এখন পাইজাম চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০ টাকা। গত সপ্তাহে এই চালের দাম ছিল ৪৮ টাকা কেজি। বাজারে নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা গত সপ্তাহে এই চালের দাম ছিল ৬৭ কেজি।