বরগুনার পাথরঘাটা এলাকার সুমাইয়া (১৮) নামে এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় জেলে যান শাহিন মুন্সি (২১)। তিন মাস হাজতবাসের পর শাহিন জামিনে বেরিয়ে বিয়ে করেন সুমাইয়াকে। বিয়ের পরে দাম্পত্য কলহের জের ধরে একদিন স্ত্রী ও ৯ মাসের কন্যাকে হত্যা করে মাটিচাপা দিয়ে পালিয়ে যান শাহিন মুন্সি। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার তদন্তের ধারাবাহিকতায় গত সোমবার বিকেলে চট্টগ্রামের বন্দর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে শাহিন মুন্সিকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। গ্রেপ্তার শাহিন মুন্সি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা করে মাটিচাপা দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছে।
গতকাল রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মুক্তা ধর। তিনি জানান, গত ৩০ জুন সুমাইয়া পাথরঘাটার হাতেমপুর এলাকার পিতার বাড়ি থেকে সন্ধ্যায় শ্বশুরবাড়িতে ফেরেন। পরে ২ জুলাই সুমাইয়ার ছোট বোন সুমাইয়ার খোঁজ জানতে চাইলে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন জানায়, ওইদিন থেকে সুমাইয়াকে এবং আগের দিন থেকে তার কন্যাকে দেখা যায়নি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর সুমাইয়ার শ্বশুরবাড়িতে তার ঘরের পাশেই এক স্থানে মাটি আলগা দেখা যায়। ৩ জুলাই সকালে সেই স্থানের মাটি খুঁড়লে সুমাইয়া ও তার সন্তানের মরদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নিহত সুমাইয়ার বাবা রিপন বাদশা শাহিনকে প্রধান আসামি করে পাথরঘাটা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এসএসপি মুক্তা ধর বলেন, এই ঘটনা গণমাধ্যমে এলে সিআইডির একটি বিশেষ দল ছায়া তদন্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার চট্টগ্রামের বন্দর থানা এলাকা থেকে প্রধান আসামি শাহিন মুন্সিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শাহিনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ১ জুলাই সন্ধ্যা থেকে সুমাইয়ার সঙ্গে তার স্বামীর প্রচণ্ড বাগবিতণ্ডা হয়। এর মধ্যে সুমাইয়া ঘর থেকে বের হলে শাহিনও তার পেছন পেছন গিয়ে বর্শির লাইলনের সুতা দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে। এরপর ৯ মাস বয়সী শিশু সন্তানকেও হত্যা করে। পরে কোদাল দিয়ে মাটি খুঁড়ে স্ত্রী-সন্তানকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়।
মুক্তা ধর বলেন, শাহিন স্ত্রী-সন্তানকে মাটিচাপা দিয়ে প্রথমে খুলনা পালিয়ে যান। এরপর সেখান থেকে আত্মগোপনের জন্য চট্টগ্রাম গিয়ে শুধুমাত্র থাকা-খাওয়ার বিনিময়ে একটি গ্যারেজে চাকরি নেন। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আর কেউ জড়িত রয়েছে কিনা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। গত বছরের ১৪ জুলাই সুমাইয়াকে ধর্ষণের অভিযোগে শাহিন মুন্সির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় তিন মাস জেল খেটে জামিনে বেরিয়ে সুমাইয়াকেই বিয়ে করেন শাহিন মুন্সি। এক প্রশ্নের জবাবে সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তার শাহিন জানিয়েছেন তার স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার কোন পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। তবে তাদের সাত মাসের দাম্পত্য জীবন ভালো যাচ্ছিল না। আগের ধর্ষণ মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে মুক্তা ধর বলেন, মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। ওই মামলায় অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে। সুমাইয়াকে বিয়ে করার শর্তে শাহিনের জামিন হয়েছিল কিনা সে সংক্রান্ত কোন কাগজপত্র পাওয়া যায়নি। তবে শাহিনের জামিনের বিষয়ে বাদীপক্ষের কোন আপত্তি ছিল না।
বুধবার, ১৪ জুলাই ২০২১ , ৩০ আষাঢ় ১৪২৮ ৩ জিলহজ্জ ১৪৪২
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
বরগুনার পাথরঘাটা এলাকার সুমাইয়া (১৮) নামে এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় জেলে যান শাহিন মুন্সি (২১)। তিন মাস হাজতবাসের পর শাহিন জামিনে বেরিয়ে বিয়ে করেন সুমাইয়াকে। বিয়ের পরে দাম্পত্য কলহের জের ধরে একদিন স্ত্রী ও ৯ মাসের কন্যাকে হত্যা করে মাটিচাপা দিয়ে পালিয়ে যান শাহিন মুন্সি। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার তদন্তের ধারাবাহিকতায় গত সোমবার বিকেলে চট্টগ্রামের বন্দর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে শাহিন মুন্সিকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। গ্রেপ্তার শাহিন মুন্সি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা করে মাটিচাপা দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছে।
গতকাল রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মুক্তা ধর। তিনি জানান, গত ৩০ জুন সুমাইয়া পাথরঘাটার হাতেমপুর এলাকার পিতার বাড়ি থেকে সন্ধ্যায় শ্বশুরবাড়িতে ফেরেন। পরে ২ জুলাই সুমাইয়ার ছোট বোন সুমাইয়ার খোঁজ জানতে চাইলে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন জানায়, ওইদিন থেকে সুমাইয়াকে এবং আগের দিন থেকে তার কন্যাকে দেখা যায়নি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর সুমাইয়ার শ্বশুরবাড়িতে তার ঘরের পাশেই এক স্থানে মাটি আলগা দেখা যায়। ৩ জুলাই সকালে সেই স্থানের মাটি খুঁড়লে সুমাইয়া ও তার সন্তানের মরদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নিহত সুমাইয়ার বাবা রিপন বাদশা শাহিনকে প্রধান আসামি করে পাথরঘাটা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এসএসপি মুক্তা ধর বলেন, এই ঘটনা গণমাধ্যমে এলে সিআইডির একটি বিশেষ দল ছায়া তদন্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার চট্টগ্রামের বন্দর থানা এলাকা থেকে প্রধান আসামি শাহিন মুন্সিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শাহিনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ১ জুলাই সন্ধ্যা থেকে সুমাইয়ার সঙ্গে তার স্বামীর প্রচণ্ড বাগবিতণ্ডা হয়। এর মধ্যে সুমাইয়া ঘর থেকে বের হলে শাহিনও তার পেছন পেছন গিয়ে বর্শির লাইলনের সুতা দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে। এরপর ৯ মাস বয়সী শিশু সন্তানকেও হত্যা করে। পরে কোদাল দিয়ে মাটি খুঁড়ে স্ত্রী-সন্তানকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়।
মুক্তা ধর বলেন, শাহিন স্ত্রী-সন্তানকে মাটিচাপা দিয়ে প্রথমে খুলনা পালিয়ে যান। এরপর সেখান থেকে আত্মগোপনের জন্য চট্টগ্রাম গিয়ে শুধুমাত্র থাকা-খাওয়ার বিনিময়ে একটি গ্যারেজে চাকরি নেন। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আর কেউ জড়িত রয়েছে কিনা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। গত বছরের ১৪ জুলাই সুমাইয়াকে ধর্ষণের অভিযোগে শাহিন মুন্সির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় তিন মাস জেল খেটে জামিনে বেরিয়ে সুমাইয়াকেই বিয়ে করেন শাহিন মুন্সি। এক প্রশ্নের জবাবে সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তার শাহিন জানিয়েছেন তার স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার কোন পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। তবে তাদের সাত মাসের দাম্পত্য জীবন ভালো যাচ্ছিল না। আগের ধর্ষণ মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে মুক্তা ধর বলেন, মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। ওই মামলায় অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে। সুমাইয়াকে বিয়ে করার শর্তে শাহিনের জামিন হয়েছিল কিনা সে সংক্রান্ত কোন কাগজপত্র পাওয়া যায়নি। তবে শাহিনের জামিনের বিষয়ে বাদীপক্ষের কোন আপত্তি ছিল না।