‘জুলাইয়ের ১৪ দিনেই জুন মাসের সমান শনাক্ত’
করোনায় মাত্র পাঁচদিনেই এক হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে করোনা সংক্রমণে মোট মৃত্যু ১৭ হাজার ছাড়িয়েছে। টানা চতুর্থ দিনের মতো সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে ২১০ জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এদিন নতুন করে ১২ হাজার ৩৮৩ জনের দেহে সংক্রমণ পাওয়া গেছে। আগের দিন ১২ হাজার ১৯৮ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। নতুন শনাক্ত হওয়া রোগী নিয়ে দেশে মোট করোনা শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো দশ লাখ ৫৯ হাজার ৫৩৮ জনে।
করোনায় মৃত্যু ও শনাক্তের সংখ্যা এখনও ঊর্ধ্বমুখী অবস্থানে রয়েছে। তবে নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে সংক্রমণের হার কমতে শুরু করেছে। যদিও চলমান ‘লকডাউন’ আজ থেকে এক সপ্তাহের জন্য শিথিল হচ্ছে। এ কারণে সংক্রমণ পুনরায় বৃদ্ধির শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, ঈদ উপলক্ষে চলমান ‘লকডাউন’ বা বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ায় পুনরায় সংক্রমণ বৃদ্ধির ঝুঁকি রয়েছে। কারণ বিধিনিষেধ শিথিলের আগের দিন গতকালই বিপুল সংখ্যক মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে ঢাকা ছাড়তে দেখা গেছে। ঈদের আগ মুহূর্তে এই পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে সংক্রমণের হার ছিল ২৯ দশমিক ১৪ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ২৯ দশমিক ২১ শতাংশ। আর ১২ জুলাই সংক্রমণের হার ছিল ৩১ দশমিক ২৪ শতাংশ।
সংক্রমণ ও মৃত্যু আরও বৃদ্ধির শঙ্কা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন গতকাল এক ভার্চুয়াল বুলেটিনে জানান, জুলাই মাস অত্যন্ত কঠিন মাস।
জুনে এক লাখ ১২ হাজার ৭১৮ জন রোগী শনাক্ত করা হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আর জুলাইয়ের ১৪ দিনে আমরা এ রোগী পেয়ে গেছি। এ মাসের আরও ১৬ দিন বাকি আছে। যেহেতু সংক্রমণের মাত্রা এখন অনেক বৃদ্ধি পাচ্ছে, স্বাস্থ্যবিধি ও প্রতিরোধে ব্যবস্থা যদি না নেয়া হয়, দুই সপ্তাহ পর্যন্ত টানা এভাবে চলতে পারে। মৃত্যু তিন সপ্তাহ পর্যন্ত এভাবে চলতে পারে।’
মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানতে উদাসীন হলে করোনা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে ডা. রোবেদ আমিন বলেন, ‘হাসপাতালে যদি আর নতুন রোগীকে জায়গা দেয়া না যায়, তাহলে আমরা সবাই বিপদে পড়ে যাব।’
গত বছর থেকে বিভিন্ন ধরনের ‘ভ্যারিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট ও ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন’ নিয়ে বাংলাদেশ সংগ্রাম করে যাচ্ছে জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা পর্যবেক্ষণ করছি, বর্তমান সময়ের করুণতম পরিস্থিতির উপক্রমে আমরা চলে এসেছি। যেখানে সংক্রমণের মাত্রা ও মৃত্যু ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
পাঁচদিনেই হাজারের বেশি মৃত্যু
গত ৯ জুলাই করোনায় মৃত্যু ১৬ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এরপর মাত্র পাঁচদিনে এক হাজার ৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত ১০ জুলাই ১৮৫ জন, ১১ জুলাই সর্বোচ্চ ২৩০ জন, ১২ জুলাই ২২০ জন, ১৩ জুলাই ২০৩ জন এবং সর্বশেষ একদিনে ২১০ জন মারা গেছেন করোনা আক্রান্ত হয়ে। ওইদিন মৃত্যু হওয়া লোকজনসহ দেশে করোনায় মোট মারা গেছেন ১৭ হাজার ৫২ জন।
২৪ ঘণ্টায় কমেছে সংক্রমণ হার
গতকাল বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাছিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা সিটিসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ও বাড়িতে উপসর্গবিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় আট হাজার ২৪৫ জন সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে মোট আট লাখ ৯৭ হাজার ৪১২ জন সুস্থ হয়েছেন।
সর্বশেষ একদিনে সারাদেশের ৬২৭টি ল্যাবরেটরিতে মোট ৪২ হাজার ৪৯০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৭০ লাখ ৯৯ হাজার ৪৯০টি।
২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ছিল ২৯ দশমিক ১৪ শতাংশ। আর এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৯২ শতাংশ। এছাড়া মোট শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৪ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুহার ১ দশমিক ৬১ শতাংশ।
গত একদিনে মারা যাওয়া ২১০ জনের মধ্যে পুরুষ ১৩১ জন এবং নারী ৭৯ জন। তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ ৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্য বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রামে ৩৯ জন, রাজশাহীতে ১৫ জন, খুলনায় ৪৬ জন, বরিশালে ১০ জন, সিলেটে নয়জন, রংপুরে ১৪ জন ও ময়মনসিংহ বিভাগে আটজনের মৃত্যু হয়েছে।
বয়স বিশ্লেষণে দেখা গেছে, একদিনে মারা যাওয়া ১০৭ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরে বেশি, অন্যদের মধ্যে ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৫২ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ২৯ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১৪ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে সাতজন ও ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে একজন রয়েছেন।
বিভাগভিত্তিক সংক্রমণ চিত্র
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগে ১৮ হাজার ১১০টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পরীক্ষায় পাঁচ হাজার ৫৮ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে এ বিভাগে সংক্রমণের হার ২৭ দশমিক ৯২ শতাংশ।
এর মধ্যে ঢাকা মহানগরসহ জেলায় ১৩ হাজার ৪৭৬টি নমুনা পরীক্ষায় তিন হাজার ৪৯৬ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। ঢাকায় পরীক্ষা বিবেচনায় সংক্রমণের হার ২৫ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
ময়মনসিংহ বিভাগে একদিনে এক হাজার ৭৬১টি নমুনা পরীক্ষায় ৪৮৪ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের জীবাণু পাওয়া গেছে। এই বিভাগে শনাক্তের হার ২৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
চট্টগ্রাম বিভাগে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সাত হাজার ২৫৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পরীক্ষায় দুই হাজার ৪৭০ জনের শরীরে করোনার জীবাণু শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষা অনুপাতে চট্টগ্রামে সংক্রমণের হার ৩৪ দশমিক ০২ শতাংশ।
রাজশাহী বিভাগে একদিনে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে পাঁচ হাজার ৭৮৪টি। এতে এক হাজার ১৯৬ জনের দেহে সংক্রমণ পাওয়া গেছে। রাজশাহীতে শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
রংপুরে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা হয়েছে এক হাজার ৯৬৭টি। এ পরীক্ষায় ৫৮৮ জনের দেহে করোনার জীবাণু পেয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। পরীক্ষা অনুপাতে রংপুরে সংক্রমণের হার ২৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
খুলনা বিভাগে ২৪ ঘণ্টায় পাঁচ হাজার ২০৫টি নমুনা পরীক্ষা করেছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। তারা এদিন এক হাজার ৬২১ জনের দেহে করোনার জীবাণু পেয়েছেন। একদিনে খুলনা বিভাগে সংক্রমণের হার ৩১ দশমিক ১৪ শতাংশ।
বরিশাল বিভাগে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা হয়েছে এক হাজার ৩২২টি। এ পরীক্ষায় ৫৩৩ জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। বরিশালে পরীক্ষা অনুপাতে সংক্রমণের হার ৪০ দশমিক ৩১ শতাংশ।
সিলেট বিভাগে গত একদিনে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে এক হাজার ৮২টি। এতে ৪৩৩ জনের শরীরে করোনার জীবাণু পাওয়া গেছে। সিলেট বিভাগে সংক্রমণের হার ৪০ দশমিক ০১ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার, ১৫ জুলাই ২০২১ , ৩১ আষাঢ় ১৪২৮ ৪ জিলহজ ১৪৪২
‘জুলাইয়ের ১৪ দিনেই জুন মাসের সমান শনাক্ত’
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
করোনায় মাত্র পাঁচদিনেই এক হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে করোনা সংক্রমণে মোট মৃত্যু ১৭ হাজার ছাড়িয়েছে। টানা চতুর্থ দিনের মতো সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে ২১০ জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এদিন নতুন করে ১২ হাজার ৩৮৩ জনের দেহে সংক্রমণ পাওয়া গেছে। আগের দিন ১২ হাজার ১৯৮ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। নতুন শনাক্ত হওয়া রোগী নিয়ে দেশে মোট করোনা শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো দশ লাখ ৫৯ হাজার ৫৩৮ জনে।
করোনায় মৃত্যু ও শনাক্তের সংখ্যা এখনও ঊর্ধ্বমুখী অবস্থানে রয়েছে। তবে নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে সংক্রমণের হার কমতে শুরু করেছে। যদিও চলমান ‘লকডাউন’ আজ থেকে এক সপ্তাহের জন্য শিথিল হচ্ছে। এ কারণে সংক্রমণ পুনরায় বৃদ্ধির শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, ঈদ উপলক্ষে চলমান ‘লকডাউন’ বা বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ায় পুনরায় সংক্রমণ বৃদ্ধির ঝুঁকি রয়েছে। কারণ বিধিনিষেধ শিথিলের আগের দিন গতকালই বিপুল সংখ্যক মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে ঢাকা ছাড়তে দেখা গেছে। ঈদের আগ মুহূর্তে এই পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে সংক্রমণের হার ছিল ২৯ দশমিক ১৪ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ২৯ দশমিক ২১ শতাংশ। আর ১২ জুলাই সংক্রমণের হার ছিল ৩১ দশমিক ২৪ শতাংশ।
সংক্রমণ ও মৃত্যু আরও বৃদ্ধির শঙ্কা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন গতকাল এক ভার্চুয়াল বুলেটিনে জানান, জুলাই মাস অত্যন্ত কঠিন মাস।
জুনে এক লাখ ১২ হাজার ৭১৮ জন রোগী শনাক্ত করা হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আর জুলাইয়ের ১৪ দিনে আমরা এ রোগী পেয়ে গেছি। এ মাসের আরও ১৬ দিন বাকি আছে। যেহেতু সংক্রমণের মাত্রা এখন অনেক বৃদ্ধি পাচ্ছে, স্বাস্থ্যবিধি ও প্রতিরোধে ব্যবস্থা যদি না নেয়া হয়, দুই সপ্তাহ পর্যন্ত টানা এভাবে চলতে পারে। মৃত্যু তিন সপ্তাহ পর্যন্ত এভাবে চলতে পারে।’
মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানতে উদাসীন হলে করোনা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে ডা. রোবেদ আমিন বলেন, ‘হাসপাতালে যদি আর নতুন রোগীকে জায়গা দেয়া না যায়, তাহলে আমরা সবাই বিপদে পড়ে যাব।’
গত বছর থেকে বিভিন্ন ধরনের ‘ভ্যারিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট ও ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন’ নিয়ে বাংলাদেশ সংগ্রাম করে যাচ্ছে জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা পর্যবেক্ষণ করছি, বর্তমান সময়ের করুণতম পরিস্থিতির উপক্রমে আমরা চলে এসেছি। যেখানে সংক্রমণের মাত্রা ও মৃত্যু ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
পাঁচদিনেই হাজারের বেশি মৃত্যু
গত ৯ জুলাই করোনায় মৃত্যু ১৬ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এরপর মাত্র পাঁচদিনে এক হাজার ৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত ১০ জুলাই ১৮৫ জন, ১১ জুলাই সর্বোচ্চ ২৩০ জন, ১২ জুলাই ২২০ জন, ১৩ জুলাই ২০৩ জন এবং সর্বশেষ একদিনে ২১০ জন মারা গেছেন করোনা আক্রান্ত হয়ে। ওইদিন মৃত্যু হওয়া লোকজনসহ দেশে করোনায় মোট মারা গেছেন ১৭ হাজার ৫২ জন।
২৪ ঘণ্টায় কমেছে সংক্রমণ হার
গতকাল বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাছিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা সিটিসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ও বাড়িতে উপসর্গবিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় আট হাজার ২৪৫ জন সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে মোট আট লাখ ৯৭ হাজার ৪১২ জন সুস্থ হয়েছেন।
সর্বশেষ একদিনে সারাদেশের ৬২৭টি ল্যাবরেটরিতে মোট ৪২ হাজার ৪৯০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৭০ লাখ ৯৯ হাজার ৪৯০টি।
২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ছিল ২৯ দশমিক ১৪ শতাংশ। আর এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৯২ শতাংশ। এছাড়া মোট শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৪ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুহার ১ দশমিক ৬১ শতাংশ।
গত একদিনে মারা যাওয়া ২১০ জনের মধ্যে পুরুষ ১৩১ জন এবং নারী ৭৯ জন। তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ ৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্য বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রামে ৩৯ জন, রাজশাহীতে ১৫ জন, খুলনায় ৪৬ জন, বরিশালে ১০ জন, সিলেটে নয়জন, রংপুরে ১৪ জন ও ময়মনসিংহ বিভাগে আটজনের মৃত্যু হয়েছে।
বয়স বিশ্লেষণে দেখা গেছে, একদিনে মারা যাওয়া ১০৭ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরে বেশি, অন্যদের মধ্যে ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৫২ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ২৯ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১৪ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে সাতজন ও ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে একজন রয়েছেন।
বিভাগভিত্তিক সংক্রমণ চিত্র
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগে ১৮ হাজার ১১০টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পরীক্ষায় পাঁচ হাজার ৫৮ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে এ বিভাগে সংক্রমণের হার ২৭ দশমিক ৯২ শতাংশ।
এর মধ্যে ঢাকা মহানগরসহ জেলায় ১৩ হাজার ৪৭৬টি নমুনা পরীক্ষায় তিন হাজার ৪৯৬ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। ঢাকায় পরীক্ষা বিবেচনায় সংক্রমণের হার ২৫ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
ময়মনসিংহ বিভাগে একদিনে এক হাজার ৭৬১টি নমুনা পরীক্ষায় ৪৮৪ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের জীবাণু পাওয়া গেছে। এই বিভাগে শনাক্তের হার ২৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
চট্টগ্রাম বিভাগে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সাত হাজার ২৫৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পরীক্ষায় দুই হাজার ৪৭০ জনের শরীরে করোনার জীবাণু শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষা অনুপাতে চট্টগ্রামে সংক্রমণের হার ৩৪ দশমিক ০২ শতাংশ।
রাজশাহী বিভাগে একদিনে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে পাঁচ হাজার ৭৮৪টি। এতে এক হাজার ১৯৬ জনের দেহে সংক্রমণ পাওয়া গেছে। রাজশাহীতে শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
রংপুরে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা হয়েছে এক হাজার ৯৬৭টি। এ পরীক্ষায় ৫৮৮ জনের দেহে করোনার জীবাণু পেয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। পরীক্ষা অনুপাতে রংপুরে সংক্রমণের হার ২৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
খুলনা বিভাগে ২৪ ঘণ্টায় পাঁচ হাজার ২০৫টি নমুনা পরীক্ষা করেছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। তারা এদিন এক হাজার ৬২১ জনের দেহে করোনার জীবাণু পেয়েছেন। একদিনে খুলনা বিভাগে সংক্রমণের হার ৩১ দশমিক ১৪ শতাংশ।
বরিশাল বিভাগে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা হয়েছে এক হাজার ৩২২টি। এ পরীক্ষায় ৫৩৩ জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। বরিশালে পরীক্ষা অনুপাতে সংক্রমণের হার ৪০ দশমিক ৩১ শতাংশ।
সিলেট বিভাগে গত একদিনে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে এক হাজার ৮২টি। এতে ৪৩৩ জনের শরীরে করোনার জীবাণু পাওয়া গেছে। সিলেট বিভাগে সংক্রমণের হার ৪০ দশমিক ০১ শতাংশ।