লকডাউন শিথিল হওয়ার প্রথমদিন গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ছিল যানবাহনের প্রচন্ড চাপ। কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে গতকাল থেকেই সারাদেশে চালু হয়েছে সব ধরনের গণপরিবহন। লকডাউন শিথিল হওয়ার প্রথম দিনে ট্রেনে স্বাস্থ্যবিধি মানা হলেও বাস ও লঞ্চ সার্ভিসে তা ছিল উপেক্ষিত।
রাজধানীতে চলাচল করা বেশিরভাগ গণপরিবহনেই স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি। অর্ধেক আসন ফাঁকা রাখার কথা থাকলেও দাঁড় করিয়ে যাত্রী পরিবহন করতে দেখা গেছে অনেক বাস-মিনিবাসে। দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীদের বাড়তি ভাড়া গুণতে হয়েছে অভিযোগ তাদের।
চালকরা অভিযোগ করেন, যাত্রীর তুলনায় গাড়ি কম থাকায় সব সময় সরকারি নির্দেশনা মানতে পারছেন না তারা। গতকাল লকডাউন শিথিলের প্রথম দিনে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে গণপরিবহনের এই দৃশ্য দেখা গেছে।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় আরিফ নামের এক যাত্রী বলেন, ‘মাতুয়াইল থেকে একটি মিনিবাসে যাত্রাবাড়ী এসেছি। এক দুই সিটে একজন যাত্রী বসার কথা। কিন্তু তা তো হয় করেনি। উল্টো দাঁড়িয়ে যাত্রী আনা হয়েছে। ভাড়া কিন্তু ৬০ শতাংশ বেশি নেয়া হয়েছে। আগে মাতুয়াইল থেকে যাত্রাবাড়ী ভাড়া ছিল ১০ টাকা। এখন নেয়া হয় ২০ টাকা।’
পাঁচ দফা নির্দেশনা মানেনি গণপরিবহন
স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে সড়কপথের বাস-মিনিবাস চলাচলের জন্য পাঁচ দফা নির্দেশনা দিয়েছিল সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। ১. মোটরযানের রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটে উল্লিখিত মোট আসন সংখ্যার অর্ধেকের বেশি যাত্রী বহন করা যাবে না। ২. সমন্বয় করা ভাড়ার (বিদ্যমান ভাড়ার ৬০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়ার) অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা যাবে না; ৩. গণপরিবহনে যাত্রী, চালক, সুপারভাইজর/কন্ডাক্টর, হেলপার ও টিকিট বিক্রয় কেন্দ্রের দায়িত্বে নিয়োজিতদের মাস্ক পরা/ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে; ৪. যাত্রার শুরু ও শেষে বাস-মিনিবাসগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নসহ জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে; ৫. যানবাহনের মালিকপক্ষকে যাত্রীদের হাতব্যাগ, মালপত্র জীবাণুনাশক ছিটিয়ে জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা করতে হবে এবং সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে গণপরিবহনে যাত্রী উঠা-নামা করতে হবে।
কিন্তু গতকাল বেশিরভাগ গণপরিবহেন নির্দেশনা মানা হয়নি বলে যাত্রীরা জানান। রাজধানীর পুরানা পল্টন এলাকায় কাওসার নামের এক যাত্রী বলেন, ‘৬ নম্বর পরিবহনে মগবাজার থেকে পল্টনে আসলাম। ভাড়া নেয়া নিয়েছে ২০ টাকা। আগে ১০ টাকা ছিল। করোনার কারণে আরও ১০ টাকা বেশি নিয়েছে। দুই সিটে একজন যাত্রী বসানো হয়েছে। কিন্তু অনেক যাত্রী দাঁড়িয়ে ছিল। তাহলে স্বাস্থ্যবিধি কোথায় মানা হলো।’
স্বাস্থ্যবিধি মানতে অনীহা লঞ্চ যাত্রীদের
নৌ-পথের যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে লঞ্চ মালিক ও অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কঠোর ব্যবস্থা নিলেও উদাসীন ছিল যাত্রীরা। যাত্রীদের মাস্ক পরা ও সমাজিক দূরত্ব মানতে অনীহা ছিল যাত্রীদের।
বিআইডব্লিউটিএ’র সূত্র জানায়, সরকারের নির্দেশ মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী পরিবহন করতে হবে। এজন্য ডেকের যাত্রীদের ক্ষেত্রে রঙ দিয়ে দাগ দিয়ে দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে মাস্ক ছাড়া যাত্রীদের লঞ্চে উঠতে দেয়া হবে না। লঞ্চের প্রবেশে যাত্রীদের জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজার স্প্রে করা হবে। এক সিট ফাঁকা রেখে যাত্রী বসানো হবে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে যাত্রীরা তা মানছে না বলে জানান লঞ্চ মালিকারা। ঈদে যাত্রী চাপ বেশি থাকার কারণে তাড়াহুড়ো করে অনেকই লঞ্চে উঠে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে লঞ্চ মালিক সমিতির সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, ‘আমরা কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে লঞ্চ ছাড়ছি। স্বাস্থ্যবিধি মানতে সব লঞ্চ মালিকদের বলা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করলে কর্তৃপক্ষ যদি কোন জরিমানা করে তাহলে আমাদের কিছু করার থাকবে না। আমরা এবার স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে কঠোর অবস্থানে আছি।’
এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেক সংবাদকে বলেন, ‘যাত্রী ও জাহাজ মালিক যে কেউ স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করলে তাদের জরিমানার আওতায় আনা হচ্ছে। বিআইডব্লিউটিএ’র ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হচ্ছে। নৌ-পথে যাত্রী শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মানার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে কোন ছাড় দেয়া হবে না।’
অর্ধেক যাত্রী নিয়ে ছেড়ে গেছে ট্রেন
আন্তঃনগর ট্রেনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিচালনা করা সম্ভব হলেও লোকাল ট্রেনে স্বাস্থ্যবিধি মানানো কিছুটা কঠিন বলে মন্তব্য করেছেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। লকডাউন শিথিলের পর গতকাল কমলাপুর স্টেশন পরিদর্শনে এসে মন্ত্রী সাংবাদিকদের প্রশ্নে এ কথা বলেন।
লোকাল ট্রেনে স্বাস্থ্যবিধি কিভাবে নিশ্চিত করা হবে প্রশ্নে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘লোকাল ট্রেন প্রতিটা স্টেশনে থামে, লোকাল ট্রেনের স্বাস্থ্যবিধি না মানার আশঙ্কা আমাদেরও ছিল। লোকাল ট্রেন প্রতিটা স্টেশনে থামে। সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ যাত্রী ওঠে। এটা বন্ধ করা গেলে স্বাস্থ্যবিধি মানানো যাবে। সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মানানো একটু কঠিন।’
স্বাস্থ্যবিধি মেনে ট্রেন পরিচালনা করার সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘স্টেশনে ট্রেন দাঁড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হুড়োহুড়ি করে মানুষ উঠে যায়। এটা বন্ধ করার মেকানিজম আমাদের নেই। স্টেশনে প্রবেশে যদি যাত্রীদের কন্ট্রোল করা যায় তাহলে যে অভিযোগগুলো আসছে সেগুলো আর থাকবে না।’
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ঈদের আগে লকডাউন শিথিল হওয়ায় ৩৮টি আন্তঃনগর এবং ১৯টি মেইল ও কমিউটার ট্রেন দিয়ে গতকাল সকাল থেকে শুরু হয়েছে ট্রেন যাত্রা। ১৫ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত (২১ জুলাই, ঈদের দিন ছাড়া) যাত্রীদের সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিতে আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর বিদ্যমান আসন সংখ্যার অর্ধেক (৫০ শতাংশ) টিকেট অনলাইনে বিক্রয় শুরু হয়েছে গতকাল থেকে। অনলাইনে টিকেট কেনায় ভোগান্তির অভিযোগ ওঠে বুধবার সকাল থেকেই।
এ বিষয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘এটি অস্বাভাবিক কিছু না ৪০ থেকে ৫০ লাখ লোক যদি টিকিট কাটার চেষ্টা করে, ট্রেনের সিট ক্যাপাসিটি থাকে ৭০০ সেখানে টিকিট বিক্রি হয় ৩৫০টা। টিকেট প্রত্যাশীদের যে চাপ সেটাতো সামাল দেয়া যাবে না।’
শুক্রবার, ১৬ জুলাই ২০২১ , ১ শ্রাবন ১৪২৮ ৫ জিলহজ ১৪৪২
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
লকডাউন শিথিল হওয়ার প্রথমদিন গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ছিল যানবাহনের প্রচন্ড চাপ। কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে গতকাল থেকেই সারাদেশে চালু হয়েছে সব ধরনের গণপরিবহন। লকডাউন শিথিল হওয়ার প্রথম দিনে ট্রেনে স্বাস্থ্যবিধি মানা হলেও বাস ও লঞ্চ সার্ভিসে তা ছিল উপেক্ষিত।
রাজধানীতে চলাচল করা বেশিরভাগ গণপরিবহনেই স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি। অর্ধেক আসন ফাঁকা রাখার কথা থাকলেও দাঁড় করিয়ে যাত্রী পরিবহন করতে দেখা গেছে অনেক বাস-মিনিবাসে। দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীদের বাড়তি ভাড়া গুণতে হয়েছে অভিযোগ তাদের।
চালকরা অভিযোগ করেন, যাত্রীর তুলনায় গাড়ি কম থাকায় সব সময় সরকারি নির্দেশনা মানতে পারছেন না তারা। গতকাল লকডাউন শিথিলের প্রথম দিনে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে গণপরিবহনের এই দৃশ্য দেখা গেছে।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় আরিফ নামের এক যাত্রী বলেন, ‘মাতুয়াইল থেকে একটি মিনিবাসে যাত্রাবাড়ী এসেছি। এক দুই সিটে একজন যাত্রী বসার কথা। কিন্তু তা তো হয় করেনি। উল্টো দাঁড়িয়ে যাত্রী আনা হয়েছে। ভাড়া কিন্তু ৬০ শতাংশ বেশি নেয়া হয়েছে। আগে মাতুয়াইল থেকে যাত্রাবাড়ী ভাড়া ছিল ১০ টাকা। এখন নেয়া হয় ২০ টাকা।’
পাঁচ দফা নির্দেশনা মানেনি গণপরিবহন
স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে সড়কপথের বাস-মিনিবাস চলাচলের জন্য পাঁচ দফা নির্দেশনা দিয়েছিল সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। ১. মোটরযানের রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটে উল্লিখিত মোট আসন সংখ্যার অর্ধেকের বেশি যাত্রী বহন করা যাবে না। ২. সমন্বয় করা ভাড়ার (বিদ্যমান ভাড়ার ৬০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়ার) অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা যাবে না; ৩. গণপরিবহনে যাত্রী, চালক, সুপারভাইজর/কন্ডাক্টর, হেলপার ও টিকিট বিক্রয় কেন্দ্রের দায়িত্বে নিয়োজিতদের মাস্ক পরা/ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে; ৪. যাত্রার শুরু ও শেষে বাস-মিনিবাসগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নসহ জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে; ৫. যানবাহনের মালিকপক্ষকে যাত্রীদের হাতব্যাগ, মালপত্র জীবাণুনাশক ছিটিয়ে জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা করতে হবে এবং সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে গণপরিবহনে যাত্রী উঠা-নামা করতে হবে।
কিন্তু গতকাল বেশিরভাগ গণপরিবহেন নির্দেশনা মানা হয়নি বলে যাত্রীরা জানান। রাজধানীর পুরানা পল্টন এলাকায় কাওসার নামের এক যাত্রী বলেন, ‘৬ নম্বর পরিবহনে মগবাজার থেকে পল্টনে আসলাম। ভাড়া নেয়া নিয়েছে ২০ টাকা। আগে ১০ টাকা ছিল। করোনার কারণে আরও ১০ টাকা বেশি নিয়েছে। দুই সিটে একজন যাত্রী বসানো হয়েছে। কিন্তু অনেক যাত্রী দাঁড়িয়ে ছিল। তাহলে স্বাস্থ্যবিধি কোথায় মানা হলো।’
স্বাস্থ্যবিধি মানতে অনীহা লঞ্চ যাত্রীদের
নৌ-পথের যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে লঞ্চ মালিক ও অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কঠোর ব্যবস্থা নিলেও উদাসীন ছিল যাত্রীরা। যাত্রীদের মাস্ক পরা ও সমাজিক দূরত্ব মানতে অনীহা ছিল যাত্রীদের।
বিআইডব্লিউটিএ’র সূত্র জানায়, সরকারের নির্দেশ মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী পরিবহন করতে হবে। এজন্য ডেকের যাত্রীদের ক্ষেত্রে রঙ দিয়ে দাগ দিয়ে দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে মাস্ক ছাড়া যাত্রীদের লঞ্চে উঠতে দেয়া হবে না। লঞ্চের প্রবেশে যাত্রীদের জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজার স্প্রে করা হবে। এক সিট ফাঁকা রেখে যাত্রী বসানো হবে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে যাত্রীরা তা মানছে না বলে জানান লঞ্চ মালিকারা। ঈদে যাত্রী চাপ বেশি থাকার কারণে তাড়াহুড়ো করে অনেকই লঞ্চে উঠে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে লঞ্চ মালিক সমিতির সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, ‘আমরা কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে লঞ্চ ছাড়ছি। স্বাস্থ্যবিধি মানতে সব লঞ্চ মালিকদের বলা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করলে কর্তৃপক্ষ যদি কোন জরিমানা করে তাহলে আমাদের কিছু করার থাকবে না। আমরা এবার স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে কঠোর অবস্থানে আছি।’
এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেক সংবাদকে বলেন, ‘যাত্রী ও জাহাজ মালিক যে কেউ স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করলে তাদের জরিমানার আওতায় আনা হচ্ছে। বিআইডব্লিউটিএ’র ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হচ্ছে। নৌ-পথে যাত্রী শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মানার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে কোন ছাড় দেয়া হবে না।’
অর্ধেক যাত্রী নিয়ে ছেড়ে গেছে ট্রেন
আন্তঃনগর ট্রেনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিচালনা করা সম্ভব হলেও লোকাল ট্রেনে স্বাস্থ্যবিধি মানানো কিছুটা কঠিন বলে মন্তব্য করেছেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। লকডাউন শিথিলের পর গতকাল কমলাপুর স্টেশন পরিদর্শনে এসে মন্ত্রী সাংবাদিকদের প্রশ্নে এ কথা বলেন।
লোকাল ট্রেনে স্বাস্থ্যবিধি কিভাবে নিশ্চিত করা হবে প্রশ্নে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘লোকাল ট্রেন প্রতিটা স্টেশনে থামে, লোকাল ট্রেনের স্বাস্থ্যবিধি না মানার আশঙ্কা আমাদেরও ছিল। লোকাল ট্রেন প্রতিটা স্টেশনে থামে। সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ যাত্রী ওঠে। এটা বন্ধ করা গেলে স্বাস্থ্যবিধি মানানো যাবে। সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মানানো একটু কঠিন।’
স্বাস্থ্যবিধি মেনে ট্রেন পরিচালনা করার সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘স্টেশনে ট্রেন দাঁড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হুড়োহুড়ি করে মানুষ উঠে যায়। এটা বন্ধ করার মেকানিজম আমাদের নেই। স্টেশনে প্রবেশে যদি যাত্রীদের কন্ট্রোল করা যায় তাহলে যে অভিযোগগুলো আসছে সেগুলো আর থাকবে না।’
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ঈদের আগে লকডাউন শিথিল হওয়ায় ৩৮টি আন্তঃনগর এবং ১৯টি মেইল ও কমিউটার ট্রেন দিয়ে গতকাল সকাল থেকে শুরু হয়েছে ট্রেন যাত্রা। ১৫ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত (২১ জুলাই, ঈদের দিন ছাড়া) যাত্রীদের সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিতে আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর বিদ্যমান আসন সংখ্যার অর্ধেক (৫০ শতাংশ) টিকেট অনলাইনে বিক্রয় শুরু হয়েছে গতকাল থেকে। অনলাইনে টিকেট কেনায় ভোগান্তির অভিযোগ ওঠে বুধবার সকাল থেকেই।
এ বিষয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘এটি অস্বাভাবিক কিছু না ৪০ থেকে ৫০ লাখ লোক যদি টিকিট কাটার চেষ্টা করে, ট্রেনের সিট ক্যাপাসিটি থাকে ৭০০ সেখানে টিকিট বিক্রি হয় ৩৫০টা। টিকেট প্রত্যাশীদের যে চাপ সেটাতো সামাল দেয়া যাবে না।’