রাজশাহী বিভাগে করোনা টিকা নিল ২০ হাজার ২৬৬ জন

গত ফেব্রুয়ারিতে দেশে যখন করোনাভাইরাসের গণটিকাদান শুরু হয় তখন অনেকের মধ্যে তা গ্রহণে অনীহা ছিল। সুযোগ থাকা সত্ত্বেও অনেকে সে সময় টিকা নেননি। এমনকি টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে ছড়ানো হচ্ছিল নানা গুজব। কোন গুজবে কান না দিয়ে টিকা গ্রহণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বারবার আহ্বানও করা হচ্ছিল।

এক পর্যায়ে টিকা সংকটে বন্ধ হয়ে যায় গণটিকাদান কর্মসূচি। তবে সম্প্রতি দ্বিতীয় দফায় শুরু হওয়া গণটিকাদানের প্রতি বিপুল আগ্রহ দেখা দিয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। এখন টিকা পাওয়ার জন্য উদগ্রীব তারা।

এদিকে রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন স্থানে টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে সাধারণ মানুষের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা বলেছেন, এবার টিকাকেন্দ্রগুলোতে মানুষের ভিড় অনেক বেশি এবং চাপ সামলাতে তারা হিমশিম খাচ্ছেন।

রাজশাহীর সিভিল সার্জন মোহাম্মদ কাইয়ুম তালুকদার বলেন, টিকার জন্য মানুষ এখন ধৈর্যহারা হয়ে পড়েছেন। প্রতিটা মানুষই চাচ্ছে যে কত তাড়াতাড়ি ভ্যাকসিনটা নেয়া যাবে। মানে তারা একদিনের দেরিও সহ্য করতে চাচ্ছে না। ভ্যাকসিন শেষ হয়ে যায় কিনা সেই সন্দেহও কাজ করছে অনেক মানুষের মাঝে।

তিনি মনে করেন, গ্রামের মানুষ প্রথমে টিকা উপেক্ষা করেছে। কিন্তু এখন গ্রামে সংক্রমণ দেখে তারাই বেশি আগ্রহী হচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আগের ভ্যকসিন না নিয়ে অনেকে ভুল করেছে, এমন ধারণা অনেকে হয়েছে। তারা ভাবছে, আবার কখন ভ্যাকসিন শেষ হয়ে যাবে, সেজন্য আগে-ভাগে ভ্যাকসিনটা নিয়ে নিই।’

এদিকে দ্বিতীয় দফায় রাজশাহী বিভাগে করোনা টিকাদান কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাজশাহী বিভাগে টিকা পেয়েছেন মোট ২০ হাজার ২৬৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১১ হাজার ১২১ জন ও নারী ৯ হাজার ১৪৫ জন। বিভাগের রাজশাহী জেলায় টিকা নিয়েছে এক হাজার ৮১০ জন, পুরুষ ১০২৯ ও ৮৭১ জন নারী।

চাঁপাইনবাগঞ্জে এক হাজার ৬৬৯ জন পুরুষ ৯৩৩ জন ও নারী ৭৩৬ জন। নাটোরে দুই হাজার ৪৮৩ জন পুরুষ এক হাজার ২৯৫ জন ও নারী এক হাজার ১৮৮ জন। নওগাঁয় দুই হাজার ৭৮৭ জন পুরুষ এক হাজার ৪৯৯ জন ও নারী এক হাজার ২৮৮ জন। পাবনায় ৪ হাজার ৭ জন পুরুষ দুই হাজার ২১২ জন ও নারী এক হাজার ৭৯৫ জন।

সিরাজগঞ্জে দুই হাজার ৪০৫ জন পুরুষ এক হাজার ৩০৯ জন ও নারী এক হাজার ৯৬ জন। বগুড়ায় ৪ হাজার ৭২ জন পুরুষ দুই হাজার ৩০৪ জন ও নারী এক হাজার ৭৬৮ জন। জয়পুরহাটে এক হাজার ৩৩ জন পুরুষ ৫৪০ জন ও নারী ৪৯৩ জন। এদিকে গতকাল ছুটির দিন থাকায় বন্ধ রয়েছে টিকাদান। আজ আবারও টিকাদান কর্মসূচি চলবে।

এদিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে একদিনে আরও ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে পাঁচজন আক্রান্ত এবং দুইজন মারা যান করোনামুক্ত হয়ে পরবর্তী স্বাস্থ্য জটিলতায়। এছাড়া শ্বাসকষ্টসহ করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান আরও আটজন। গত বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে গতকাল সকাল ৬টার মধ্যে তাদের মৃত্যু হয়।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে ১০ জনের বাড়ি রাজশাহী জেলায়। বাকিদের মধ্যে নাটোরের দুইজন, নওগাঁর একজন, পাবনার একজন ও মেহেরপুরের একজন।

শনিবার, ১৭ জুলাই ২০২১ , ২ শ্রাবন ১৪২৮ ৬ জিলহজ ১৪৪২

এখন টিকা পেতে উদগ্রীব মানুষ

রাজশাহী বিভাগে করোনা টিকা নিল ২০ হাজার ২৬৬ জন

জেলা বার্তা পরিবেশক, রাজশাহী

গত ফেব্রুয়ারিতে দেশে যখন করোনাভাইরাসের গণটিকাদান শুরু হয় তখন অনেকের মধ্যে তা গ্রহণে অনীহা ছিল। সুযোগ থাকা সত্ত্বেও অনেকে সে সময় টিকা নেননি। এমনকি টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে ছড়ানো হচ্ছিল নানা গুজব। কোন গুজবে কান না দিয়ে টিকা গ্রহণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বারবার আহ্বানও করা হচ্ছিল।

এক পর্যায়ে টিকা সংকটে বন্ধ হয়ে যায় গণটিকাদান কর্মসূচি। তবে সম্প্রতি দ্বিতীয় দফায় শুরু হওয়া গণটিকাদানের প্রতি বিপুল আগ্রহ দেখা দিয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। এখন টিকা পাওয়ার জন্য উদগ্রীব তারা।

এদিকে রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন স্থানে টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে সাধারণ মানুষের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা বলেছেন, এবার টিকাকেন্দ্রগুলোতে মানুষের ভিড় অনেক বেশি এবং চাপ সামলাতে তারা হিমশিম খাচ্ছেন।

রাজশাহীর সিভিল সার্জন মোহাম্মদ কাইয়ুম তালুকদার বলেন, টিকার জন্য মানুষ এখন ধৈর্যহারা হয়ে পড়েছেন। প্রতিটা মানুষই চাচ্ছে যে কত তাড়াতাড়ি ভ্যাকসিনটা নেয়া যাবে। মানে তারা একদিনের দেরিও সহ্য করতে চাচ্ছে না। ভ্যাকসিন শেষ হয়ে যায় কিনা সেই সন্দেহও কাজ করছে অনেক মানুষের মাঝে।

তিনি মনে করেন, গ্রামের মানুষ প্রথমে টিকা উপেক্ষা করেছে। কিন্তু এখন গ্রামে সংক্রমণ দেখে তারাই বেশি আগ্রহী হচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আগের ভ্যকসিন না নিয়ে অনেকে ভুল করেছে, এমন ধারণা অনেকে হয়েছে। তারা ভাবছে, আবার কখন ভ্যাকসিন শেষ হয়ে যাবে, সেজন্য আগে-ভাগে ভ্যাকসিনটা নিয়ে নিই।’

এদিকে দ্বিতীয় দফায় রাজশাহী বিভাগে করোনা টিকাদান কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাজশাহী বিভাগে টিকা পেয়েছেন মোট ২০ হাজার ২৬৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১১ হাজার ১২১ জন ও নারী ৯ হাজার ১৪৫ জন। বিভাগের রাজশাহী জেলায় টিকা নিয়েছে এক হাজার ৮১০ জন, পুরুষ ১০২৯ ও ৮৭১ জন নারী।

চাঁপাইনবাগঞ্জে এক হাজার ৬৬৯ জন পুরুষ ৯৩৩ জন ও নারী ৭৩৬ জন। নাটোরে দুই হাজার ৪৮৩ জন পুরুষ এক হাজার ২৯৫ জন ও নারী এক হাজার ১৮৮ জন। নওগাঁয় দুই হাজার ৭৮৭ জন পুরুষ এক হাজার ৪৯৯ জন ও নারী এক হাজার ২৮৮ জন। পাবনায় ৪ হাজার ৭ জন পুরুষ দুই হাজার ২১২ জন ও নারী এক হাজার ৭৯৫ জন।

সিরাজগঞ্জে দুই হাজার ৪০৫ জন পুরুষ এক হাজার ৩০৯ জন ও নারী এক হাজার ৯৬ জন। বগুড়ায় ৪ হাজার ৭২ জন পুরুষ দুই হাজার ৩০৪ জন ও নারী এক হাজার ৭৬৮ জন। জয়পুরহাটে এক হাজার ৩৩ জন পুরুষ ৫৪০ জন ও নারী ৪৯৩ জন। এদিকে গতকাল ছুটির দিন থাকায় বন্ধ রয়েছে টিকাদান। আজ আবারও টিকাদান কর্মসূচি চলবে।

এদিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে একদিনে আরও ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে পাঁচজন আক্রান্ত এবং দুইজন মারা যান করোনামুক্ত হয়ে পরবর্তী স্বাস্থ্য জটিলতায়। এছাড়া শ্বাসকষ্টসহ করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান আরও আটজন। গত বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে গতকাল সকাল ৬টার মধ্যে তাদের মৃত্যু হয়।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে ১০ জনের বাড়ি রাজশাহী জেলায়। বাকিদের মধ্যে নাটোরের দুইজন, নওগাঁর একজন, পাবনার একজন ও মেহেরপুরের একজন।