বানকো সিকিউরিটিজের সব ব্যাংক হিসাব তলব

বানকো সিকিউরিটিজ লিমিটেডের সরকারি- বেসরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় ব্যাংক হিসাব তলব করে চিঠি দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। প্রতিষ্ঠানটির সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল বিভাগ থেকে গত সপ্তাহে বাংলাদেশের সব তফসিলী ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর এসব চিঠি পাঠানো হয়েছে। গতকাল এনবিআরের জনসংযোগ দপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

চিঠিতে বলা হয়, বানকো সিকিউরিটিজ ও এর মালিকানা ব্যক্তিদের নামে থাকা আমানত হিসাব (এফডিআর ও এসটিডি হিসাবসহ যে কোন ধরনের বা নামের মেয়াদী আমানত হিসাব), যে কোন ধরনের বা মেয়াদের সঞ্চয়ী হিসাব, চলতি হিসাব, ঋণ হিসাব, ফরেন কারেন্সি হিসাব, ক্রেডিট কার্ড, লকার বা ভল্ট, সঞ্চয়পত্র বা অন্য যে কোন ধরনের সেভিংস ইনস্ট্রুমেন্ট, ইনভেস্টমেন্ট স্কিম বা ডিপোজিট স্কিম বা অন্য যে কোন ধরনের কিংবা নামের হিসাব পরিচালিত বা রক্ষিত হয়ে থাকলে জরুরিভিত্তিতে সরবরাহ করতে অনুরোধ করা গেল।

যদিও গত ৫ জুলাই দুর্নীতির অভিযোগে বানকো সিকিউরিটিজ ও এর পরিচালকদের সংশ্লিষ্ট আরও ১০টি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- বানকো সিকিউরিটিজ, বানকো ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, সুব্রা সিস্টেমস, সুব্রা ফ্যাশনস, বানকো পাওয়ার, বানকো এনার্জি জেনারেশন, বানকো স্মার্ট সল্যুশন, ক্লাসিক ফুড ল্যাব, অ্যামুলেট ফার্মাসিউটিক্যালস ও সামিট প্রপার্টিজ লিমিটেড।

এর আগে গত ২৮ জুন পুঁজিবাজার থেকে ৬৬ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বানকো সিকিউরিটিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান আবদুল মুহিত ও পাঁচ পরিচালকের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। সংস্থাটির সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ সংস্থাটির উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নুর আলম সিদ্দিকী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। ওইদিন পালিয়ে লন্ডনে যাওয়ার সময় আসামি আবদুল মুহিত গ্রেপ্তার হন।

দুদকের মামলার আসামিরা হলেন- বানকো সিকিউরিটিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান আবদুল মুহিত, পরিচালক শফিউল আজম, ওয়ালিউল হাসান চৌধুরী, নুরুল ঈশান সাদাত, এ মুনিম চৌধুরী ও পরিচালক জামিল আহমেদ।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বানকো আইন লঙ্ঘনের মাধ্যমে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের লেনদেন নিষ্পত্তি করতে ব্যর্থ হয়। পরে চলতি বছরের ৭ জুন বিশেষ পরিদর্শনে ডিএসই সম্মিলিত গ্রাহক অ্যাকাউন্টে ৬৬ কোটি ৫৯ লাখ ১৯ হাজার ১৩৩ টাকার ঘাটতির প্রমাণ পায়। বানকো সিকিউরিটিজ লিমিটেডের মালিক পক্ষ বিনিয়োগকারীদের অর্থ ও শেয়ার আত্মসাৎ করেছে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। বিনিয়োগকারীদের সমন্বিত হিসাবের ৬৬ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত ১৫ জুন থেকে ডিএসইতে বানকো সিকিউরিটিজ লিমিটেডের লেনদেন কার্যক্রম বন্ধ। একই সঙ্গে ব্রোকার হাউজটির পরিচালক ও পরিবারের সদস্যরা যাতে বিদেশে যেতে না পারেন, সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্যানুসারে, বানকো সিকিউরিটিজের মালিকানায় ৬ জনের নাম থাকলেও কোম্পানির একক নেতৃত্বে ছিলেন আসামি শফিউল আজম মুন্না। তিনি বানকোর চেয়ারম্যান আবদুল মুহিতের আপন বড় বোনের ছেলে। ভাগ্নে হওয়ায় মুন্নাকে বানকোর মূল দায়িত্ব দিয়েছিলেন মামা মুহিত। অন্যদিকে বেশ কয়েক বছর আগে অপর আসামি ও মুহিতের বড় ভাই মুনিম চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ছেলের কাছে চলে যাওয়ায় মুন্না সম্পূর্ণ নিজের খেয়াল খুশি মতো প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

রবিবার, ১৮ জুলাই ২০২১ , ৩ শ্রাবন ১৪২৮ ৭ জিলহজ ১৪৪২

বানকো সিকিউরিটিজের সব ব্যাংক হিসাব তলব

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

image

বানকো সিকিউরিটিজ লিমিটেডের সরকারি- বেসরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় ব্যাংক হিসাব তলব করে চিঠি দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। প্রতিষ্ঠানটির সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল বিভাগ থেকে গত সপ্তাহে বাংলাদেশের সব তফসিলী ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর এসব চিঠি পাঠানো হয়েছে। গতকাল এনবিআরের জনসংযোগ দপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

চিঠিতে বলা হয়, বানকো সিকিউরিটিজ ও এর মালিকানা ব্যক্তিদের নামে থাকা আমানত হিসাব (এফডিআর ও এসটিডি হিসাবসহ যে কোন ধরনের বা নামের মেয়াদী আমানত হিসাব), যে কোন ধরনের বা মেয়াদের সঞ্চয়ী হিসাব, চলতি হিসাব, ঋণ হিসাব, ফরেন কারেন্সি হিসাব, ক্রেডিট কার্ড, লকার বা ভল্ট, সঞ্চয়পত্র বা অন্য যে কোন ধরনের সেভিংস ইনস্ট্রুমেন্ট, ইনভেস্টমেন্ট স্কিম বা ডিপোজিট স্কিম বা অন্য যে কোন ধরনের কিংবা নামের হিসাব পরিচালিত বা রক্ষিত হয়ে থাকলে জরুরিভিত্তিতে সরবরাহ করতে অনুরোধ করা গেল।

যদিও গত ৫ জুলাই দুর্নীতির অভিযোগে বানকো সিকিউরিটিজ ও এর পরিচালকদের সংশ্লিষ্ট আরও ১০টি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- বানকো সিকিউরিটিজ, বানকো ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, সুব্রা সিস্টেমস, সুব্রা ফ্যাশনস, বানকো পাওয়ার, বানকো এনার্জি জেনারেশন, বানকো স্মার্ট সল্যুশন, ক্লাসিক ফুড ল্যাব, অ্যামুলেট ফার্মাসিউটিক্যালস ও সামিট প্রপার্টিজ লিমিটেড।

এর আগে গত ২৮ জুন পুঁজিবাজার থেকে ৬৬ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বানকো সিকিউরিটিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান আবদুল মুহিত ও পাঁচ পরিচালকের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। সংস্থাটির সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ সংস্থাটির উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নুর আলম সিদ্দিকী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। ওইদিন পালিয়ে লন্ডনে যাওয়ার সময় আসামি আবদুল মুহিত গ্রেপ্তার হন।

দুদকের মামলার আসামিরা হলেন- বানকো সিকিউরিটিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান আবদুল মুহিত, পরিচালক শফিউল আজম, ওয়ালিউল হাসান চৌধুরী, নুরুল ঈশান সাদাত, এ মুনিম চৌধুরী ও পরিচালক জামিল আহমেদ।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বানকো আইন লঙ্ঘনের মাধ্যমে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের লেনদেন নিষ্পত্তি করতে ব্যর্থ হয়। পরে চলতি বছরের ৭ জুন বিশেষ পরিদর্শনে ডিএসই সম্মিলিত গ্রাহক অ্যাকাউন্টে ৬৬ কোটি ৫৯ লাখ ১৯ হাজার ১৩৩ টাকার ঘাটতির প্রমাণ পায়। বানকো সিকিউরিটিজ লিমিটেডের মালিক পক্ষ বিনিয়োগকারীদের অর্থ ও শেয়ার আত্মসাৎ করেছে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। বিনিয়োগকারীদের সমন্বিত হিসাবের ৬৬ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত ১৫ জুন থেকে ডিএসইতে বানকো সিকিউরিটিজ লিমিটেডের লেনদেন কার্যক্রম বন্ধ। একই সঙ্গে ব্রোকার হাউজটির পরিচালক ও পরিবারের সদস্যরা যাতে বিদেশে যেতে না পারেন, সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্যানুসারে, বানকো সিকিউরিটিজের মালিকানায় ৬ জনের নাম থাকলেও কোম্পানির একক নেতৃত্বে ছিলেন আসামি শফিউল আজম মুন্না। তিনি বানকোর চেয়ারম্যান আবদুল মুহিতের আপন বড় বোনের ছেলে। ভাগ্নে হওয়ায় মুন্নাকে বানকোর মূল দায়িত্ব দিয়েছিলেন মামা মুহিত। অন্যদিকে বেশ কয়েক বছর আগে অপর আসামি ও মুহিতের বড় ভাই মুনিম চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ছেলের কাছে চলে যাওয়ায় মুন্না সম্পূর্ণ নিজের খেয়াল খুশি মতো প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।