পশুর হাটে বাড়ছে বিকিকিনি স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষায় গভীর উদ্বেগ

দিনাজপুর

প্রতিনিধি, দিনাজপুর

দিনাজপুরের পশুর হাটগুলোতে কিছুতেই মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। পাশাপাশি জটলা হয়ে পশু দর কষাকষিতে ব্যস্ত লক্ষ্য করা গেছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের। এভাবে চলতে থাকলে ঈদের পরে করোনা অতিমারী রুপ ধারণ করবে বলে মনে করছে জেলার সচেতনমহল।

দিনাজপুর জেলায় সর্ববৃহৎ অস্থায়ী পশুর হাটটি বসেছে শহরের মহারাজা গিরিজানাথ স্কুল মাঠে। গত কোরবানি ঈদে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে এই পশুর হাটটি তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালু করেছিল এবং ক্রেতা বিক্রেতাও সব কিছু মেনে কোরবানির পশুর হাটে কেনা-বেচা শেষ করতে পেরেছিল। কিন্তু এবার বিপরীত চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। হাটের ইজরাদার বড় পশুর হাটটিতে মাইকিং করে প্রচার প্রচারণা চালালেও ক্রেতা-বিক্রেতা তা মোটেও তোয়াক্কা করছেন না। পশু হাটে মাস্ক এর ব্যবহার নেই বললেই চলে। হাত ধোয়ার ব্যবস্থা থাকলেও তা কেউ ব্যবহার করছেন না।

ক্রেতারা বলছে, গরুর দাম বেশি হওয়ায় তাদের পছন্দমতো গরু কিনতে পারছেন না। অন্যদিকে গরু ব্যাপারীরা বলছে, করোনার কারণে আর্থিক সঙ্কটে সকলেই। এ কারণে ক্রেতারা গরুর সঠিক দাম বলছে না। এতে খামারি ও গরু ব্যবসায়ীরা লোকসানের কথাই বলছেন।

প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা বলছেন, দিনাজপুরের ১৩ উপজেলায় ছোট-বড় খামারি ও গৃহস্থ মিলে কোরবানির জন্য প্রায় ২ লাখ পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। যা জেলার চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ৭০ হাজার পশু ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় বিক্রির জন্য পাঠিয়েছেন খামারিরা।

ঝালকাঠি

জেলা বার্তা পরিবেশক, ঝালকাঠি

ঝালকাঠিতে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে কোরবানির পশুরহাটগুলো। জেলার প্রচলিত ২২টি পশুহাটের পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাট পরিচালনার অঙ্গিকারকারী আরও ১৫টি পশুহাটের অনুমোদন দিয়েছে প্রশাসন। ঝালকাঠি জেলায় ১৬৩৮টি খামার থেকে মোটাতাজাকরণ ৮৬৫০টি গরু ও ২৮৬টি ছাগল কোরবানির পশুরহাটে বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছে খামারিরা। এছাড়াও এ সকল পশুর হাটে খুলনা অঞ্চলের চিতলমারি থেকে কয়েক শত গরু-ছাগল নিয়ে এসেছে বেপারিরা। এই হাটগুলোতে সর্বনিম্নœ ৪০ হাজার টাকা থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা দামের গরু এসেছে। তবে কোন ভারতীয় গরুর অনুপ্রবেশ ঘটেনি। গরু বিক্রেতা বেপারিরা দাবি করেছে হাটে ক্রেতা আসলেও গরুর দাম কমিয়ে বলছে। সেই দামে বিক্রি করলে তাদের কোন মুনাফা থাকে না। ক্রেতা কম থাকায় এবং করোনা পরিস্থিতির কারণে অন্য বছরগুলোর চেয়ে ক্রেতা কম থাকায় এ বছর গরুর দাম কমে যাওয়া আশঙ্কা করছে বেপারিরা। বড় বড় পশুরহাটে প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা পশুর হাটে আসা গরুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও ব্যাংক কর্মকর্তারা জালনোট শনাক্তকারী মেশিন নিয়ে হাটে রয়েছেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা ও উপজেলায় পশুরহাটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য মনিটরিং করা হচ্ছে। তবে হাটগুলো ঘুড়ে দেখা গেছে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের একটি অংশ মাস্ক ব্যবহার না করেই হাটগুলোতে ঘোড়াফেরা করছে। কোরবানি এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে হাটগুলোতেও বাড়ছে ক্রেতার ভিড়।

মাধবদী

প্রতিনিধি, মাধবদী (নরসিংদী)

মাধবদী পৌর শহর ও নরসিংদী সদর উপজেলার সর্বত্র স্থায়ী ও অস্থায়ী কোরবানির পশুর হাট শেষ মুহূর্তে বেশ জমে উঠেছে ক্রেতা-কিক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। করো শারীরিক দূরত্ব, মুখে মাস্ক দেখা যায়নি ৮০ ভাগ ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে। এখানকার হাটগুলোতে খামারিদের আমদানি করা মাঝারি সাইজের ষাড় গরু ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ, ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে বেশি। ১ লাখ ৪০,৫০ হাজার টাকায় অন্য জেলা থেকে আমদানি করা বেশ ক’টি মহিষ ও বিক্রি হতে দেখা গেছে। খাঁসির ক্রেতা বিভিন্ন হাটে ভিড় এবং অনেক বড় বড় খাসি’র আমদানি হলে সোমবারে মাধবদী, বালাপুরসহ আশপাশের অস্থায়ী হাটগুলোতে বিক্রি হয়েছে স্বল্প সংখ্যকখাসি, ভেড়া ও কয়েকটি ছাগল।

মির্জাগঞ্জ

প্রতিনিধি, মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী)

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার সর্ববৃহৎ গরুর হাট দেউলী সাপ্তাহিক হাটে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে পশু কেনাবেচা। প্রচন্ড উপচে পড়া ভিড়ে গাদাগাদি করে পশু কেনাবেচায় ব্যস্ত সময় পার করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। এতে বেশিরভাগ ক্রেতা-বিক্রেতাই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। তাদের মুখে মাস্ক নেই। সামাজিক দূরত্বও উধাও। যেন করোনার সংক্রমণের কথা ভুলেই গেছেন সবাই। পশুর দাম তুলনামূলক কম থাকলেও বেচাকেনা তেমন নেই বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।

গতকাল দেউলী সাপ্তাহিক হাটে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। সামাজিক দূরত্বের বালাই নেই। অনেকেরই মুখে মাস্ক নেই। হাতে গোনা দু-একজনের মাস্ক থাকলেও কথা বলার সুবিধার্থে মুখ থেকে তা নামিয়ে রেখেছেন থুতনিতে অথবা গলায়।

তবে হাট কমিটির পক্ষ থেকে মাস্ক পড়া ও সামাজিক দূরত্বের জন্য মাইকিং করে বারবার সচেতন করা হচ্ছে। হাটে প্রবেশের সময় মানুষের হাতে জীবাণুনাশক দেয়া হচ্ছে এবং সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তারপরও স্বাস্থ্য মানছেন না কেউ। পশু ক্রয়-বিক্রয়ের পরে খাজনা দেয়ার ঘরেও ছিল গাদাগাদি।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রায়হান উজ্জামান বলেন, আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কোরবানির পশু বেচাকেনার জন্য সবাইকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যদি এর ব্যতিক্রম ঘটে, প্রয়োজনে হাট বন্ধ করে দেয়া হবে।

চকরিয়া

প্রতিনিধি, চকরিয়া (কক্সবাজার)

একেবারে শেষমুহূর্তে জমে উঠেছে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার কোরবানি পশুর হাটগুলো। করোনা সংক্রমণের শুরুতে প্রথমে লকডাউন পরে শিথিল করার ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে উপজেলার হাটগুলোতে স্থানীয় খামারিদের পাশাপাশি প্রতিদিন বিভিন্নস্থান থেকে গাড়ি যোগে কোরবানি পশু তথা গরু মহিষ ছাগল আসতে শুরু করেছে। এতে শেষের কয়েকদিনে বেশ বেচাবিক্রিও বেড়ে চলছে বলে জানিয়েছেন পশুরহাটের একাধিক ইজারাদার।

জানা গেছে, করোনাভাইরাসের ঝুঁকি থাকলেও তা উপেক্ষা করে বর্তমানে চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকায় প্রশাসনের অনুমোদনপ্রাপ্ত স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে অন্তত ২৫টি কোরবানি পশুর হাটে বেচাকেনা বেশ জমে উঠেছে।

ইজারাদার পক্ষের লোকজন পশুর হাটে আগত ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়কে সতর্ক করতে মাইকিং করছেন। বলছেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশু বেচাকেনা করুন।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবেলায় কোরবানি পশুর হাটগুলোতে সব ধরনের সুরক্ষামূলক উদ্যোগ নিতে আগে থেকে বাজার ইজারদার সবাইকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

মোরেলগঞ্জ

প্রতিনিধি, মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট)

পবিত্র ঈদুল আজাহার বাকি আর মাত্র ৪দিন। মহামারী করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধিতে এবারে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে পশুরহাটগুলো জমছে না। অনলাইনে ক্রয় বিক্রয় সরকারি নির্দেশনা থাকলেও তেমন প্রভাব পড়েনি। সর্বশেষ খুলে দেয়া হয়েছে পশুরহাট। বাজারে একাধিক দেশি জাতের গরু বেপারিরা উঠালেও ক্রেতাদের ভিড় নেই। দুশ্চিন্তায় খামারি ও বেপারিরা। ৫ হাজার ৭শ’ ৭৮ পশু প্রস্তুত রাখা হলেও হাটগুলোতে ক্রেতা শূন্য।

সরেজমিনে বৃহস্পতিবার কালিকাবাড়ি হাট, এ পশুর হাটটি এক সময়ে উপজেলার জমজমাট গরুর হাট ছিল। উপজেলা ও বিভিন্ন জেলা শহর থেকে বেপারিরা এখানে গরু নিয়ে আসত। রাত-দিন বিক্রি হতো। উপচে পড়া ভিড় থাকত। সেখানে আজ ক্রেতা শূন্য হয়ে পড়েছে। বেপারি ও খামারিরা গরু নিয়ে দীর্ঘ সময় পার করেও পাচ্ছে না একজন ক্রেতা।

কথা হয় পশুরহাটে গরু নিয়ে আসা খারইখালী গ্রামের বেপারি নান্টু মোল্লা, পঞ্চকরনের খোকন শেখ, সোনাখালীর স্বপন গাজি, নাজমুল হাসান শেখ, দেবরাজের মতিন মিয়া ও হাসান মিয়া এরা প্রত্যেকেই ১০-১৫টি গরু নিয়ে এসেছেন হাটে। করোনার কারণে তেমন একটা গরু বিক্রি হচ্ছে না। হাটে ক্রেতাও কম। দাম দিয়ে কি হবে। ২-৪ ঘণ্টায়ও একজন ক্রেতা এসে দামের কথা জিজ্ঞেস করছেনা। অনেক টাকা খরচ করেছি গরুর খাবারের পেছনে। বিক্রি করতে না পারলে কিভাবে উঠবে এ টাকা।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণি সম্পাদক কর্মকর্তা ডা. জিএম আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী এবারে এ উপজেলায় ‘অনলাইন কোরবানির পশুর হাট, মোরেলগঞ্জ’ নামের অনলাইন গ্রুপের মাধ্যমে গরু ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে। এবারে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৫ হাজার ৭৭৮ গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া ।

মঙ্গলবার, ২০ জুলাই ২০২১ , ৫ শ্রাবন ১৪২৮ ৯ জিলহজ ১৪৪২

পশুর হাটে বাড়ছে বিকিকিনি স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষায় গভীর উদ্বেগ

image

দিনাজপুর : জেলার সর্ববৃহৎ অস্থায়ী পশুর হাট মহারাজা গিরিজানাথ স্কুল মাঠে ভিড় করে চলছে বেচাকেনা -সংবাদ

দিনাজপুর

প্রতিনিধি, দিনাজপুর

দিনাজপুরের পশুর হাটগুলোতে কিছুতেই মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। পাশাপাশি জটলা হয়ে পশু দর কষাকষিতে ব্যস্ত লক্ষ্য করা গেছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের। এভাবে চলতে থাকলে ঈদের পরে করোনা অতিমারী রুপ ধারণ করবে বলে মনে করছে জেলার সচেতনমহল।

দিনাজপুর জেলায় সর্ববৃহৎ অস্থায়ী পশুর হাটটি বসেছে শহরের মহারাজা গিরিজানাথ স্কুল মাঠে। গত কোরবানি ঈদে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে এই পশুর হাটটি তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালু করেছিল এবং ক্রেতা বিক্রেতাও সব কিছু মেনে কোরবানির পশুর হাটে কেনা-বেচা শেষ করতে পেরেছিল। কিন্তু এবার বিপরীত চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। হাটের ইজরাদার বড় পশুর হাটটিতে মাইকিং করে প্রচার প্রচারণা চালালেও ক্রেতা-বিক্রেতা তা মোটেও তোয়াক্কা করছেন না। পশু হাটে মাস্ক এর ব্যবহার নেই বললেই চলে। হাত ধোয়ার ব্যবস্থা থাকলেও তা কেউ ব্যবহার করছেন না।

ক্রেতারা বলছে, গরুর দাম বেশি হওয়ায় তাদের পছন্দমতো গরু কিনতে পারছেন না। অন্যদিকে গরু ব্যাপারীরা বলছে, করোনার কারণে আর্থিক সঙ্কটে সকলেই। এ কারণে ক্রেতারা গরুর সঠিক দাম বলছে না। এতে খামারি ও গরু ব্যবসায়ীরা লোকসানের কথাই বলছেন।

প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা বলছেন, দিনাজপুরের ১৩ উপজেলায় ছোট-বড় খামারি ও গৃহস্থ মিলে কোরবানির জন্য প্রায় ২ লাখ পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। যা জেলার চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ৭০ হাজার পশু ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় বিক্রির জন্য পাঠিয়েছেন খামারিরা।

ঝালকাঠি

জেলা বার্তা পরিবেশক, ঝালকাঠি

ঝালকাঠিতে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে কোরবানির পশুরহাটগুলো। জেলার প্রচলিত ২২টি পশুহাটের পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাট পরিচালনার অঙ্গিকারকারী আরও ১৫টি পশুহাটের অনুমোদন দিয়েছে প্রশাসন। ঝালকাঠি জেলায় ১৬৩৮টি খামার থেকে মোটাতাজাকরণ ৮৬৫০টি গরু ও ২৮৬টি ছাগল কোরবানির পশুরহাটে বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছে খামারিরা। এছাড়াও এ সকল পশুর হাটে খুলনা অঞ্চলের চিতলমারি থেকে কয়েক শত গরু-ছাগল নিয়ে এসেছে বেপারিরা। এই হাটগুলোতে সর্বনিম্নœ ৪০ হাজার টাকা থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা দামের গরু এসেছে। তবে কোন ভারতীয় গরুর অনুপ্রবেশ ঘটেনি। গরু বিক্রেতা বেপারিরা দাবি করেছে হাটে ক্রেতা আসলেও গরুর দাম কমিয়ে বলছে। সেই দামে বিক্রি করলে তাদের কোন মুনাফা থাকে না। ক্রেতা কম থাকায় এবং করোনা পরিস্থিতির কারণে অন্য বছরগুলোর চেয়ে ক্রেতা কম থাকায় এ বছর গরুর দাম কমে যাওয়া আশঙ্কা করছে বেপারিরা। বড় বড় পশুরহাটে প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা পশুর হাটে আসা গরুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও ব্যাংক কর্মকর্তারা জালনোট শনাক্তকারী মেশিন নিয়ে হাটে রয়েছেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা ও উপজেলায় পশুরহাটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য মনিটরিং করা হচ্ছে। তবে হাটগুলো ঘুড়ে দেখা গেছে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের একটি অংশ মাস্ক ব্যবহার না করেই হাটগুলোতে ঘোড়াফেরা করছে। কোরবানি এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে হাটগুলোতেও বাড়ছে ক্রেতার ভিড়।

মাধবদী

প্রতিনিধি, মাধবদী (নরসিংদী)

মাধবদী পৌর শহর ও নরসিংদী সদর উপজেলার সর্বত্র স্থায়ী ও অস্থায়ী কোরবানির পশুর হাট শেষ মুহূর্তে বেশ জমে উঠেছে ক্রেতা-কিক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। করো শারীরিক দূরত্ব, মুখে মাস্ক দেখা যায়নি ৮০ ভাগ ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে। এখানকার হাটগুলোতে খামারিদের আমদানি করা মাঝারি সাইজের ষাড় গরু ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ, ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে বেশি। ১ লাখ ৪০,৫০ হাজার টাকায় অন্য জেলা থেকে আমদানি করা বেশ ক’টি মহিষ ও বিক্রি হতে দেখা গেছে। খাঁসির ক্রেতা বিভিন্ন হাটে ভিড় এবং অনেক বড় বড় খাসি’র আমদানি হলে সোমবারে মাধবদী, বালাপুরসহ আশপাশের অস্থায়ী হাটগুলোতে বিক্রি হয়েছে স্বল্প সংখ্যকখাসি, ভেড়া ও কয়েকটি ছাগল।

মির্জাগঞ্জ

প্রতিনিধি, মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী)

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার সর্ববৃহৎ গরুর হাট দেউলী সাপ্তাহিক হাটে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে পশু কেনাবেচা। প্রচন্ড উপচে পড়া ভিড়ে গাদাগাদি করে পশু কেনাবেচায় ব্যস্ত সময় পার করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। এতে বেশিরভাগ ক্রেতা-বিক্রেতাই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। তাদের মুখে মাস্ক নেই। সামাজিক দূরত্বও উধাও। যেন করোনার সংক্রমণের কথা ভুলেই গেছেন সবাই। পশুর দাম তুলনামূলক কম থাকলেও বেচাকেনা তেমন নেই বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।

গতকাল দেউলী সাপ্তাহিক হাটে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। সামাজিক দূরত্বের বালাই নেই। অনেকেরই মুখে মাস্ক নেই। হাতে গোনা দু-একজনের মাস্ক থাকলেও কথা বলার সুবিধার্থে মুখ থেকে তা নামিয়ে রেখেছেন থুতনিতে অথবা গলায়।

তবে হাট কমিটির পক্ষ থেকে মাস্ক পড়া ও সামাজিক দূরত্বের জন্য মাইকিং করে বারবার সচেতন করা হচ্ছে। হাটে প্রবেশের সময় মানুষের হাতে জীবাণুনাশক দেয়া হচ্ছে এবং সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তারপরও স্বাস্থ্য মানছেন না কেউ। পশু ক্রয়-বিক্রয়ের পরে খাজনা দেয়ার ঘরেও ছিল গাদাগাদি।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রায়হান উজ্জামান বলেন, আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কোরবানির পশু বেচাকেনার জন্য সবাইকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যদি এর ব্যতিক্রম ঘটে, প্রয়োজনে হাট বন্ধ করে দেয়া হবে।

চকরিয়া

প্রতিনিধি, চকরিয়া (কক্সবাজার)

একেবারে শেষমুহূর্তে জমে উঠেছে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার কোরবানি পশুর হাটগুলো। করোনা সংক্রমণের শুরুতে প্রথমে লকডাউন পরে শিথিল করার ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে উপজেলার হাটগুলোতে স্থানীয় খামারিদের পাশাপাশি প্রতিদিন বিভিন্নস্থান থেকে গাড়ি যোগে কোরবানি পশু তথা গরু মহিষ ছাগল আসতে শুরু করেছে। এতে শেষের কয়েকদিনে বেশ বেচাবিক্রিও বেড়ে চলছে বলে জানিয়েছেন পশুরহাটের একাধিক ইজারাদার।

জানা গেছে, করোনাভাইরাসের ঝুঁকি থাকলেও তা উপেক্ষা করে বর্তমানে চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকায় প্রশাসনের অনুমোদনপ্রাপ্ত স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে অন্তত ২৫টি কোরবানি পশুর হাটে বেচাকেনা বেশ জমে উঠেছে।

ইজারাদার পক্ষের লোকজন পশুর হাটে আগত ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়কে সতর্ক করতে মাইকিং করছেন। বলছেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশু বেচাকেনা করুন।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবেলায় কোরবানি পশুর হাটগুলোতে সব ধরনের সুরক্ষামূলক উদ্যোগ নিতে আগে থেকে বাজার ইজারদার সবাইকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

মোরেলগঞ্জ

প্রতিনিধি, মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট)

পবিত্র ঈদুল আজাহার বাকি আর মাত্র ৪দিন। মহামারী করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধিতে এবারে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে পশুরহাটগুলো জমছে না। অনলাইনে ক্রয় বিক্রয় সরকারি নির্দেশনা থাকলেও তেমন প্রভাব পড়েনি। সর্বশেষ খুলে দেয়া হয়েছে পশুরহাট। বাজারে একাধিক দেশি জাতের গরু বেপারিরা উঠালেও ক্রেতাদের ভিড় নেই। দুশ্চিন্তায় খামারি ও বেপারিরা। ৫ হাজার ৭শ’ ৭৮ পশু প্রস্তুত রাখা হলেও হাটগুলোতে ক্রেতা শূন্য।

সরেজমিনে বৃহস্পতিবার কালিকাবাড়ি হাট, এ পশুর হাটটি এক সময়ে উপজেলার জমজমাট গরুর হাট ছিল। উপজেলা ও বিভিন্ন জেলা শহর থেকে বেপারিরা এখানে গরু নিয়ে আসত। রাত-দিন বিক্রি হতো। উপচে পড়া ভিড় থাকত। সেখানে আজ ক্রেতা শূন্য হয়ে পড়েছে। বেপারি ও খামারিরা গরু নিয়ে দীর্ঘ সময় পার করেও পাচ্ছে না একজন ক্রেতা।

কথা হয় পশুরহাটে গরু নিয়ে আসা খারইখালী গ্রামের বেপারি নান্টু মোল্লা, পঞ্চকরনের খোকন শেখ, সোনাখালীর স্বপন গাজি, নাজমুল হাসান শেখ, দেবরাজের মতিন মিয়া ও হাসান মিয়া এরা প্রত্যেকেই ১০-১৫টি গরু নিয়ে এসেছেন হাটে। করোনার কারণে তেমন একটা গরু বিক্রি হচ্ছে না। হাটে ক্রেতাও কম। দাম দিয়ে কি হবে। ২-৪ ঘণ্টায়ও একজন ক্রেতা এসে দামের কথা জিজ্ঞেস করছেনা। অনেক টাকা খরচ করেছি গরুর খাবারের পেছনে। বিক্রি করতে না পারলে কিভাবে উঠবে এ টাকা।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণি সম্পাদক কর্মকর্তা ডা. জিএম আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী এবারে এ উপজেলায় ‘অনলাইন কোরবানির পশুর হাট, মোরেলগঞ্জ’ নামের অনলাইন গ্রুপের মাধ্যমে গরু ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে। এবারে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৫ হাজার ৭৭৮ গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া ।