করোনায় নতুন উদ্বেগ বিনোদন কেন্দ্রের ভিড়

নিয়ামতপুর

প্রতিনিধি, নিয়ামতপুর (নওগাঁ)

কোন বিনোদন কিংবা পর্যটন কেন্দ্র না থাকায় করোনা পরিস্থিতিতেও ব্যক্তি মালিকানায় তৈরি বরেন্দ্র গার্ডেন পার্ক, সম্ভাবনাময় পর্যটন কেন্দ্র ৫০-৬০টি শতবর্ষী বটবৃক্ষ ছায়া ঘেরা ঐতিহ্যবাহী বেলগাপুর হাট, ঘুঘুডাংগা সারি সারি তালগাছ বিশিষ্ট গ্রামীণ রাস্তা, ছাতড়া বিলের ধার, হরিপুর ব্রিজসহ উপজেলার উন্মুক্ত স্থানগুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। ঈদের আনন্দে দলবেঁধে ঘুরে বেড়াচ্ছে শিশু-কিশোর, যুবক ও বৃদ্ধরা। করোনার ভয়াবহতা ভুলে গিয়ে সবাই নিজেদের মতো করে সময় কাটাচ্ছেন। তবে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব না মেনে এভাবে ঘোরাঘুরিতে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্যসচেতন ব্যক্তিরা। উপজেলা প্রশাসন কিংবা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন তৎপরতা দেখা যায়নি মাস্ক পরা বা স্বাস্থ্যবিধি মানার।

ঈদের দিন ও দ্বিতীয় দিন গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার উপজেলার হাজিনগর ইউনিয়নের ঘুঘুডাংগা গ্রামে দুধারে সারিবদ্ধ তালগাছ বিশিষ্ট রাস্তায় গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকে মোটর সাইকেল, প্রাইভেটকার, সিএনজি চালিত অটোরিকশায় শত শত মানুষ আসছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মানুষের আনাগোনাও। কেউ আসছে পরিবার-স্বজন নিয়ে, কেউবা আবার বন্ধুদের সঙ্গে। কেউ গাছতলায় শুয়ে-বসে গল্প করছেন। সেই আনন্দঘন মুহূর্তটি স্মৃতি হিসেবে ধরে রাখতে মোবাইল ফোনে ছবি ও সেলফি তুলছেন। তরুণদের কাউকে কাউকে ঝুঁকিপূর্ণ মোটরসাইকেল রেসিং করতেও দেখা গেছে। অথচ সেখানে বিনোদনের কোন কিছুই নেই। রাস্তায় ভিড় থাকায় যে কোন মুহূর্তে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। শুধু ঈদ কিংবা বিশেষ দিনে গণজামায়েত নয়, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় এখানে যদি অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো যায় তাহলে সারা বছরই হয়ে উঠতে পারে বিনোদন কেন্দ্র।

ঘুঘুডাংগা সারিবদ্ধ তালগাছ বিশিষ্ট রাস্তায় ঘুরতে আসা ভ্রমণপ্রেমীরা বলেন, ফেসবুকে দেখে আমরা ঘুরতে এসেছি। আসলে এখানে বিনোদন করার মত কিছু নেই। নেই বসা বা আড্ডা দেওয়ার মত কোন জায়গা, নেই কোন দোকান কিংবা পানির ব্যবস্থা। শুধু রাস্তায় ঘুরাঘুরি। যে কোন মুহুর্তে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।

বর্ষা মৌসুম হওয়ায় ছাতড়া বা হরিপুর কালামারা ব্রীজের ধারে লোক সমাগম অনেক বেশী। বিল পানিতে থৈ থৈ করছে। সৌদর্য বৃদ্ধি পেয়েছে অনেকগুণ বেশি। উপজেলায় বিনোদন করার মতো তেমন কোন জায়গা না থাকায় নিরুপায় হয়ে ঈদের আনন্দকে ভাগাভাগি করতেই ভ্রমণপ্রেমীরা ছুটে যাচ্ছে এসব জায়গায়।

উপজেলার সদর ইউনিয়নের বরেন্দ্র বাজারে নির্মিত একমাত্র ব্যক্তি মালিকানায় বরেন্দ্র গার্ডেন পার্ক নামে একটি পার্ক রয়েছে। যা সবেমাত্র হাঁটি হাঁটি পা পা করে এগিয়ে যাচ্ছে। উপজেলার কোথাও কোন পার্ক না থাকায় ঈদ কিংবা বিশেষ দিনে ভ্রমণপ্রেমীরা ফুটে আসেন এখানে। মাত্র ২০ টাকার বিনিময়ে ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে অভিভাবকরা ছুটে যান একটু আনন্দ দেওয়ার জন্য।

গাইবান্ধা

প্রতিনিধি, গাইবান্ধা

করোনার ভীতি নেই ঈদ উৎসবে গাইবান্ধার শহর ও গ্রামাঞ্চলের পার্ক, নদীর তীর, লেক, ব্রিজ ও ছোট ছোট বিনোদন ষ্পটগুলোতে। বিভিন্ন স্থানের মানুষজনের একাকার হয়ে চলাফেরা করছে। এসব স্পটে বসেছে নানা ধরনের খাবার রেষ্টুরেন্ট। স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত আর মানার ক্ষেত্রে নেই কোন তদারকি।

ঈদুল আজহায় গাইবান্ধা জেলার বালাসিঘাট, ঘাঘট লেক, পৌরপার্ক, সাঘাটার থানা সংলগ্ন ওয়াপদা বাঁধ, মেলানদহ ব্রীজ, সাদুল্যাপুরের ঘাঘটপাড়, সুন্দরগঞ্জের আলীবাবা থীম পার্ক, গোবিন্দগঞ্জের বড়দহ সেতুসসহ আরো কয়েকটি বিনোদন স্পটে ঈদ উৎসব পালনে শতশত মানুষের উপস্থিতি ও সমাগম বেড়েছে। মেলার মতো এসব এলাকায় বেসেছ নানা ধরনের খাবার ও খেলনার দোকান। এসব এলাকায় বেশিরভাগ মানুষের মুখে দেখা যায়নি মাস্ক।

সাঘাটার জুমারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রোস্তম আলী জানান, মেলানদহ ব্রিজে আরো কয়েকদিন মানুষের সমাগম হবে। সোনাতলা, শিবগঞ্জ, বগুড়া, গোবিন্দগঞ্জ ও সাঘাটা উপজেলার শতশত শিশু, কিশোর-কিশোরীসহ সববয়সী মানুষ এখানে আসে। তবে তিনি জানান, এগুলো প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ করা দরকার।

গাইবান্ধার বালাসীঘাটের ঈদের দিন থেকে পরবর্তী একসপ্তাহ বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন এসে এখানে সময় পার করেন বলে জানান কঞ্চিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্দুল হামিদ।

সাঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বেলাল হোসেন জানান, বিভিন্ন এলাকা থেকে অপরিচিত মানুষজন ঈদে সময় পার করতে এসব স্পটে আসছে, এইসময়ে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা খুব মুশকিল। এসব মানুষজনকে মাস্ক পরার নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। তবে এই নির্দেশনা না মানলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার হবে বলে জানান তিনি।

গাইবান্ধার সিভিল সার্জন ডা. আখতারুজ্জামান জানান, বিভিন্ন এলাকার মানুষজন গ্রামে ঈদ উৎসবে আসায় ঈদের পরবর্তী কয়েক দিন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ সময়, এই সময়ে সংক্রমন বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

image

নিয়ামতপুর (নওগাঁ) : স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে ঘুঘুডাঙ্গা তালতলি বিনোদন কেন্দ্রে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। লকডাউন শিথিলের সুযোগে দিন দিন বেড়েই চলেছে সংক্রমণের ঝুঁকি -সংবাদ

আরও খবর
৭ জেলায় করোনায় মৃত্যু ৫২ শনাক্ত ৫৭৯
২৪ ঘণ্টা ফ্রি অক্সিজেন সেবা
রোগী নিয়ে হিমশিম কুষ্টিয়া হাসপাতাল হাত বাড়াল ডায়াবেটিক সমিতি
শৈলকুপায় জমি বিবাদে গৃহবধূ নির্যাতন, বাইক ভাংচুর-টাকা লুট

শনিবার, ২৪ জুলাই ২০২১ , ৮ শ্রাবন ১৪২৮ ১২ জিলহজ ১৪৪২

করোনায় নতুন উদ্বেগ বিনোদন কেন্দ্রের ভিড়

image

নিয়ামতপুর (নওগাঁ) : স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে ঘুঘুডাঙ্গা তালতলি বিনোদন কেন্দ্রে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। লকডাউন শিথিলের সুযোগে দিন দিন বেড়েই চলেছে সংক্রমণের ঝুঁকি -সংবাদ

নিয়ামতপুর

প্রতিনিধি, নিয়ামতপুর (নওগাঁ)

কোন বিনোদন কিংবা পর্যটন কেন্দ্র না থাকায় করোনা পরিস্থিতিতেও ব্যক্তি মালিকানায় তৈরি বরেন্দ্র গার্ডেন পার্ক, সম্ভাবনাময় পর্যটন কেন্দ্র ৫০-৬০টি শতবর্ষী বটবৃক্ষ ছায়া ঘেরা ঐতিহ্যবাহী বেলগাপুর হাট, ঘুঘুডাংগা সারি সারি তালগাছ বিশিষ্ট গ্রামীণ রাস্তা, ছাতড়া বিলের ধার, হরিপুর ব্রিজসহ উপজেলার উন্মুক্ত স্থানগুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। ঈদের আনন্দে দলবেঁধে ঘুরে বেড়াচ্ছে শিশু-কিশোর, যুবক ও বৃদ্ধরা। করোনার ভয়াবহতা ভুলে গিয়ে সবাই নিজেদের মতো করে সময় কাটাচ্ছেন। তবে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব না মেনে এভাবে ঘোরাঘুরিতে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্যসচেতন ব্যক্তিরা। উপজেলা প্রশাসন কিংবা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন তৎপরতা দেখা যায়নি মাস্ক পরা বা স্বাস্থ্যবিধি মানার।

ঈদের দিন ও দ্বিতীয় দিন গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার উপজেলার হাজিনগর ইউনিয়নের ঘুঘুডাংগা গ্রামে দুধারে সারিবদ্ধ তালগাছ বিশিষ্ট রাস্তায় গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকে মোটর সাইকেল, প্রাইভেটকার, সিএনজি চালিত অটোরিকশায় শত শত মানুষ আসছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মানুষের আনাগোনাও। কেউ আসছে পরিবার-স্বজন নিয়ে, কেউবা আবার বন্ধুদের সঙ্গে। কেউ গাছতলায় শুয়ে-বসে গল্প করছেন। সেই আনন্দঘন মুহূর্তটি স্মৃতি হিসেবে ধরে রাখতে মোবাইল ফোনে ছবি ও সেলফি তুলছেন। তরুণদের কাউকে কাউকে ঝুঁকিপূর্ণ মোটরসাইকেল রেসিং করতেও দেখা গেছে। অথচ সেখানে বিনোদনের কোন কিছুই নেই। রাস্তায় ভিড় থাকায় যে কোন মুহূর্তে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। শুধু ঈদ কিংবা বিশেষ দিনে গণজামায়েত নয়, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় এখানে যদি অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো যায় তাহলে সারা বছরই হয়ে উঠতে পারে বিনোদন কেন্দ্র।

ঘুঘুডাংগা সারিবদ্ধ তালগাছ বিশিষ্ট রাস্তায় ঘুরতে আসা ভ্রমণপ্রেমীরা বলেন, ফেসবুকে দেখে আমরা ঘুরতে এসেছি। আসলে এখানে বিনোদন করার মত কিছু নেই। নেই বসা বা আড্ডা দেওয়ার মত কোন জায়গা, নেই কোন দোকান কিংবা পানির ব্যবস্থা। শুধু রাস্তায় ঘুরাঘুরি। যে কোন মুহুর্তে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।

বর্ষা মৌসুম হওয়ায় ছাতড়া বা হরিপুর কালামারা ব্রীজের ধারে লোক সমাগম অনেক বেশী। বিল পানিতে থৈ থৈ করছে। সৌদর্য বৃদ্ধি পেয়েছে অনেকগুণ বেশি। উপজেলায় বিনোদন করার মতো তেমন কোন জায়গা না থাকায় নিরুপায় হয়ে ঈদের আনন্দকে ভাগাভাগি করতেই ভ্রমণপ্রেমীরা ছুটে যাচ্ছে এসব জায়গায়।

উপজেলার সদর ইউনিয়নের বরেন্দ্র বাজারে নির্মিত একমাত্র ব্যক্তি মালিকানায় বরেন্দ্র গার্ডেন পার্ক নামে একটি পার্ক রয়েছে। যা সবেমাত্র হাঁটি হাঁটি পা পা করে এগিয়ে যাচ্ছে। উপজেলার কোথাও কোন পার্ক না থাকায় ঈদ কিংবা বিশেষ দিনে ভ্রমণপ্রেমীরা ফুটে আসেন এখানে। মাত্র ২০ টাকার বিনিময়ে ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে অভিভাবকরা ছুটে যান একটু আনন্দ দেওয়ার জন্য।

গাইবান্ধা

প্রতিনিধি, গাইবান্ধা

করোনার ভীতি নেই ঈদ উৎসবে গাইবান্ধার শহর ও গ্রামাঞ্চলের পার্ক, নদীর তীর, লেক, ব্রিজ ও ছোট ছোট বিনোদন ষ্পটগুলোতে। বিভিন্ন স্থানের মানুষজনের একাকার হয়ে চলাফেরা করছে। এসব স্পটে বসেছে নানা ধরনের খাবার রেষ্টুরেন্ট। স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত আর মানার ক্ষেত্রে নেই কোন তদারকি।

ঈদুল আজহায় গাইবান্ধা জেলার বালাসিঘাট, ঘাঘট লেক, পৌরপার্ক, সাঘাটার থানা সংলগ্ন ওয়াপদা বাঁধ, মেলানদহ ব্রীজ, সাদুল্যাপুরের ঘাঘটপাড়, সুন্দরগঞ্জের আলীবাবা থীম পার্ক, গোবিন্দগঞ্জের বড়দহ সেতুসসহ আরো কয়েকটি বিনোদন স্পটে ঈদ উৎসব পালনে শতশত মানুষের উপস্থিতি ও সমাগম বেড়েছে। মেলার মতো এসব এলাকায় বেসেছ নানা ধরনের খাবার ও খেলনার দোকান। এসব এলাকায় বেশিরভাগ মানুষের মুখে দেখা যায়নি মাস্ক।

সাঘাটার জুমারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রোস্তম আলী জানান, মেলানদহ ব্রিজে আরো কয়েকদিন মানুষের সমাগম হবে। সোনাতলা, শিবগঞ্জ, বগুড়া, গোবিন্দগঞ্জ ও সাঘাটা উপজেলার শতশত শিশু, কিশোর-কিশোরীসহ সববয়সী মানুষ এখানে আসে। তবে তিনি জানান, এগুলো প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ করা দরকার।

গাইবান্ধার বালাসীঘাটের ঈদের দিন থেকে পরবর্তী একসপ্তাহ বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন এসে এখানে সময় পার করেন বলে জানান কঞ্চিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্দুল হামিদ।

সাঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বেলাল হোসেন জানান, বিভিন্ন এলাকা থেকে অপরিচিত মানুষজন ঈদে সময় পার করতে এসব স্পটে আসছে, এইসময়ে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা খুব মুশকিল। এসব মানুষজনকে মাস্ক পরার নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। তবে এই নির্দেশনা না মানলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার হবে বলে জানান তিনি।

গাইবান্ধার সিভিল সার্জন ডা. আখতারুজ্জামান জানান, বিভিন্ন এলাকার মানুষজন গ্রামে ঈদ উৎসবে আসায় ঈদের পরবর্তী কয়েক দিন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ সময়, এই সময়ে সংক্রমন বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।