মির্জাগঞ্জে করোনা ঊর্ধ্বমুখী প্যারাসিটামল সংকটে ভোগান্তি

৩৯ নমুনায় শনাক্ত ২৪

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার ওষুধের দোকানগুলোতে (ফার্মেসি) প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এদিকে উপজেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় (২৪ জুলাই) ৩৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২৪ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। হোম আইসোলেশন এ চিকিৎসাধীন রয়েছে ১০১ জন। পাশাপাশি ঋতু পরিবর্তনের কারণে দেখা দিয়েছে সাধারণ ঠা-া জ্বরের প্রকোপ। এমন পরিস্থিতিতে ওষুধ কিনতে না পারায় চরম দুর্ভোগে পড়ছেন রোগীরা।

গতকাল রবিবার সকালে উপজেলা সদরের কয়েকটি ওষুধের দোকানে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ট্যাবলেট নাপা, নাপা-৫০০, নাপা এক্সটেন্ড, নাপা র‌্যাপিড, নাপা সিরাপ, নাপা ড্রপ এবং স্কয়ার গ্রুপের এইচ প্লাস, এইচ সিরাপ ইত্যাদি ওষুধের চরম সঙ্কট রয়েছে।

স্থানীয় ওষুধ ব্যবসায়ীরা বলছেন, উপজেলায় করোনাসহ ঋতু পরিবর্তনের কারণে সাধারণ ঠা-া-জ্বরের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধের ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে। একইসঙ্গে কোম্পানি থেকে সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাজারে এ জাতীয় ওষুধের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ওষুধ কিনতে আসা মোসা. মিতু আক্তার বলেন, আমার বেশ কয়েকদিন ধরে ঠা-া-জ্বর, তাই নাপা ট্যাবলেট কিনতে এসেছি। কিন্তু কয়েকটি দোকান ঘুরেও নাপা ট্যাবলেট কিনতে পারিনি। এ রকম অভিযোগ জানিয়ে আরেকজন ওষুধ ক্রেতা মো. মুমিত বিশ্বাস জানান, আমি উপজেলা সদরের প্রায় সবগুলো ফার্মেসিতে খুজেও নাপা ট্যাবলেট কিনতে পারিনি। বর্তমান সময়ে এ ধরনের ওষুধের সঙ্কট সাধারণ মানুষকে ভাবিয়ে তুলছে।

উপজেলা পরিষদের সামনে মেডিসিন হাউজের মালিক মনির হোসেন বলেন, হঠাৎ করে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে জ্বরের ওষুধের চাহিদা প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। আমরা কোম্পানিগুলোকে বারবার চাহিদা দিলেও তারা ওষুধ সরবরাহ করছে না। তাই এ জাতীয় ওষুধের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এই সময় নাপা এবং এইস ট্যাবলেট ও সিরাপের সরবরাহ না থাকলে ভোগান্তি আরও বাড়বে।

সুবিদখালী সদরের রোগমুক্তি ফার্মেসির মালিক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, করোনা ও সাধারণ সর্দি-জ্বরের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্তমানে যার এক পাতা প্যারাসিটামল ওষুধের প্রয়োজন সে ১০ পাতা ওষুধ কিনছে। এ ওষুধের সঙ্কট দেখা দেয়ার এটাও একটা মূল কারণ। যাদের প্রয়োজন নেই তারাও ওষুধ কিনে ঘরে রেখে দিচ্ছে। প্রায় ২ মাস ধরে নাপা গ্রুপের ওষুধের সঙ্কট রয়েছে।

বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মেডিকেল প্রমোশন এক্সিকিউটিভ (এমপিই) মো. সাব্বির হোসেন সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বর্তমানে করোনাকালে নাপার চাহিদা অনেক বেড়ে যাওয়ায় ‘নাপাথ ট্যাবলেটের কাঁচামালের সঙ্কটে উৎপাদন কমে গেছে। তবে কমবেশি প্রায় দোকানে ট্যাবলেট সরবরাহ করা হচ্ছে। আশাকরি কিছু দিনের মধ্যে বাজারে এ সঙ্কট আর থাকবে না।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা. দিলরুবা ইয়াসমীন লিজা বলেন, উপজেলায় করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। তবে হাসপাতলে পর্যাপ্ত প্যারাসিটামল ওষুধ মজুদ রয়েছে। হাসপাতালে যেসব রোগী আসছে তাদের সরকারিভাবে এ ওষুধ দেয়া হচ্ছে।

সোমবার, ২৬ জুলাই ২০২১ , ১০ শ্রাবন ১৪২৮ ১৪ জিলহজ ১৪৪২

মির্জাগঞ্জে করোনা ঊর্ধ্বমুখী প্যারাসিটামল সংকটে ভোগান্তি

৩৯ নমুনায় শনাক্ত ২৪

প্রতিনিধি, মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী)

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার ওষুধের দোকানগুলোতে (ফার্মেসি) প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এদিকে উপজেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় (২৪ জুলাই) ৩৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২৪ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। হোম আইসোলেশন এ চিকিৎসাধীন রয়েছে ১০১ জন। পাশাপাশি ঋতু পরিবর্তনের কারণে দেখা দিয়েছে সাধারণ ঠা-া জ্বরের প্রকোপ। এমন পরিস্থিতিতে ওষুধ কিনতে না পারায় চরম দুর্ভোগে পড়ছেন রোগীরা।

গতকাল রবিবার সকালে উপজেলা সদরের কয়েকটি ওষুধের দোকানে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ট্যাবলেট নাপা, নাপা-৫০০, নাপা এক্সটেন্ড, নাপা র‌্যাপিড, নাপা সিরাপ, নাপা ড্রপ এবং স্কয়ার গ্রুপের এইচ প্লাস, এইচ সিরাপ ইত্যাদি ওষুধের চরম সঙ্কট রয়েছে।

স্থানীয় ওষুধ ব্যবসায়ীরা বলছেন, উপজেলায় করোনাসহ ঋতু পরিবর্তনের কারণে সাধারণ ঠা-া-জ্বরের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধের ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে। একইসঙ্গে কোম্পানি থেকে সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাজারে এ জাতীয় ওষুধের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ওষুধ কিনতে আসা মোসা. মিতু আক্তার বলেন, আমার বেশ কয়েকদিন ধরে ঠা-া-জ্বর, তাই নাপা ট্যাবলেট কিনতে এসেছি। কিন্তু কয়েকটি দোকান ঘুরেও নাপা ট্যাবলেট কিনতে পারিনি। এ রকম অভিযোগ জানিয়ে আরেকজন ওষুধ ক্রেতা মো. মুমিত বিশ্বাস জানান, আমি উপজেলা সদরের প্রায় সবগুলো ফার্মেসিতে খুজেও নাপা ট্যাবলেট কিনতে পারিনি। বর্তমান সময়ে এ ধরনের ওষুধের সঙ্কট সাধারণ মানুষকে ভাবিয়ে তুলছে।

উপজেলা পরিষদের সামনে মেডিসিন হাউজের মালিক মনির হোসেন বলেন, হঠাৎ করে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে জ্বরের ওষুধের চাহিদা প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। আমরা কোম্পানিগুলোকে বারবার চাহিদা দিলেও তারা ওষুধ সরবরাহ করছে না। তাই এ জাতীয় ওষুধের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এই সময় নাপা এবং এইস ট্যাবলেট ও সিরাপের সরবরাহ না থাকলে ভোগান্তি আরও বাড়বে।

সুবিদখালী সদরের রোগমুক্তি ফার্মেসির মালিক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, করোনা ও সাধারণ সর্দি-জ্বরের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্তমানে যার এক পাতা প্যারাসিটামল ওষুধের প্রয়োজন সে ১০ পাতা ওষুধ কিনছে। এ ওষুধের সঙ্কট দেখা দেয়ার এটাও একটা মূল কারণ। যাদের প্রয়োজন নেই তারাও ওষুধ কিনে ঘরে রেখে দিচ্ছে। প্রায় ২ মাস ধরে নাপা গ্রুপের ওষুধের সঙ্কট রয়েছে।

বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মেডিকেল প্রমোশন এক্সিকিউটিভ (এমপিই) মো. সাব্বির হোসেন সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বর্তমানে করোনাকালে নাপার চাহিদা অনেক বেড়ে যাওয়ায় ‘নাপাথ ট্যাবলেটের কাঁচামালের সঙ্কটে উৎপাদন কমে গেছে। তবে কমবেশি প্রায় দোকানে ট্যাবলেট সরবরাহ করা হচ্ছে। আশাকরি কিছু দিনের মধ্যে বাজারে এ সঙ্কট আর থাকবে না।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা. দিলরুবা ইয়াসমীন লিজা বলেন, উপজেলায় করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। তবে হাসপাতলে পর্যাপ্ত প্যারাসিটামল ওষুধ মজুদ রয়েছে। হাসপাতালে যেসব রোগী আসছে তাদের সরকারিভাবে এ ওষুধ দেয়া হচ্ছে।