মসজিদে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই : বাড়ছে করোনা সংক্রমণ

নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার মসজিদগুলোতে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। উপজেলার কোন মসজিদেই যথাযথ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা হচ্ছে না। মাস্ক, নিজস্ব জায়নামাজ কোনটিই ব্যবহার করা হচ্ছে না। মানা হচ্ছে না মুসল্লির সংখ্যা।

গত শুক্রবার জুম্মার নামাজের দিন উপজেলা সদরের কেন্দ্রীয় বাজার জামে মসজিদে গিয়ে দেখা যায় স্বাভাবিক সময়ের মতোই অসংখ্য মুসল্লি গায়ের সঙ্গে গা লাগিয়ে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করছেন। এদিন এই মসজিদের ইমাম সাহেব, মুয়াজ্জিন, খাদেম কারও মুখেই মাস্ক দেখা যায়নি। উপজেলা কমপ্লেক্স মসজিদে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জায়গা চিহ্নিত করে দেয়া হলেও অন্য কোন মসজিদে তা দেখা যায়নি। জামাত শুরুর আগে ইমাম সাহেব মুসল্লিদের উদ্দেশে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নামাজে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেও তা তদারকি করা হয়নি।

খুৎবা ও নামাজ শেষে ইমাম সাহেব মুখে মাস্ক লাগান। কিন্তু মুসল্লিরা জানান, মুয়াজ্জিন ও খাদেম কখনোই মাস্ক ব্যবহার করেন না। জানতে চাইলে ওই মসজিদের পেশ ইমাম, উপজেলা ইমাম ওলামা কমিটির সভাপতি ও জোয়ানপুর কামিল মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা মো. জিল্লুর রহমান মুয়াজ্জিন ও খাদেমের মাস্ক ব্যবহার না করা সম্পর্কে কিছু বলতে পারেননি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মসজিদের ইমাম বলেন, ‘মহান আল্লাহ রাব্বুল আ’লামিন করোনা দিয়েছেন। তিনিই আমাদের হেফাজত করবেন। আল্লাহ করোনা দিতে চাইলে মাস্ক তা ঠেকাতে পারবেনা।’ তিনি প্রশ্ন করে বলেন, ‘গার্মেন্টস, হাটবাজার, গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানা না হলেও শুধুমাত্র মসজিদের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি কেন।’ কিন্তু সচেতন মুসল্লিরা জানান, ইমাম সাহেবদের দেখাদেখি অন্য মুসল্লিরাও মাস্ক ব্যবহার করছেন না। এতে করে করোনাভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে।

উপজেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমান মিলন জানান, মসজিদ, মন্দির, অন্যান্য উপাসনালয় ও হাটবাজার পরিদর্শনের জন্য কমিটি করে দেয়া হয়েছে। কমিটির সদস্যরা নিয়মিত এসব মনিটরিং করছেন।

কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার ও উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার ফরিদুল ইসলাম জানান, প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তিনি নিয়মিত উপজেলার বিভিন্ন প্রত্যন্ত পল্লীর হাটবাজার ও মসজিদে গিয়ে মাস্ক ব্যবহার, হাত ধোয়া ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিশ্চিতকরণে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছেন। শনিবার তিনি কমিটির সদস্যদের নিয়ে উপজেলার সদর ইউনিয়নের জোয়ানপুর বাজার ও নাটশাল গোপালপুর বাজার পরিদর্শন করেন। এ সময় ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক মাগরিবের নামাজের সময় শারীরিক/সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ও মুখে মাস্ক ব্যবহার করে নামাজ আদায়ের জন্য মুসল্লিদের অনুরোধ জানান।

সোমবার, ২৬ জুলাই ২০২১ , ১০ শ্রাবন ১৪২৮ ১৪ জিলহজ ১৪৪২

মসজিদে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই : বাড়ছে করোনা সংক্রমণ

প্রতিনিধি, মহাদেবপুর (নওগাঁ)

নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার মসজিদগুলোতে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। উপজেলার কোন মসজিদেই যথাযথ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা হচ্ছে না। মাস্ক, নিজস্ব জায়নামাজ কোনটিই ব্যবহার করা হচ্ছে না। মানা হচ্ছে না মুসল্লির সংখ্যা।

গত শুক্রবার জুম্মার নামাজের দিন উপজেলা সদরের কেন্দ্রীয় বাজার জামে মসজিদে গিয়ে দেখা যায় স্বাভাবিক সময়ের মতোই অসংখ্য মুসল্লি গায়ের সঙ্গে গা লাগিয়ে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করছেন। এদিন এই মসজিদের ইমাম সাহেব, মুয়াজ্জিন, খাদেম কারও মুখেই মাস্ক দেখা যায়নি। উপজেলা কমপ্লেক্স মসজিদে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জায়গা চিহ্নিত করে দেয়া হলেও অন্য কোন মসজিদে তা দেখা যায়নি। জামাত শুরুর আগে ইমাম সাহেব মুসল্লিদের উদ্দেশে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নামাজে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেও তা তদারকি করা হয়নি।

খুৎবা ও নামাজ শেষে ইমাম সাহেব মুখে মাস্ক লাগান। কিন্তু মুসল্লিরা জানান, মুয়াজ্জিন ও খাদেম কখনোই মাস্ক ব্যবহার করেন না। জানতে চাইলে ওই মসজিদের পেশ ইমাম, উপজেলা ইমাম ওলামা কমিটির সভাপতি ও জোয়ানপুর কামিল মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা মো. জিল্লুর রহমান মুয়াজ্জিন ও খাদেমের মাস্ক ব্যবহার না করা সম্পর্কে কিছু বলতে পারেননি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মসজিদের ইমাম বলেন, ‘মহান আল্লাহ রাব্বুল আ’লামিন করোনা দিয়েছেন। তিনিই আমাদের হেফাজত করবেন। আল্লাহ করোনা দিতে চাইলে মাস্ক তা ঠেকাতে পারবেনা।’ তিনি প্রশ্ন করে বলেন, ‘গার্মেন্টস, হাটবাজার, গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানা না হলেও শুধুমাত্র মসজিদের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি কেন।’ কিন্তু সচেতন মুসল্লিরা জানান, ইমাম সাহেবদের দেখাদেখি অন্য মুসল্লিরাও মাস্ক ব্যবহার করছেন না। এতে করে করোনাভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে।

উপজেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমান মিলন জানান, মসজিদ, মন্দির, অন্যান্য উপাসনালয় ও হাটবাজার পরিদর্শনের জন্য কমিটি করে দেয়া হয়েছে। কমিটির সদস্যরা নিয়মিত এসব মনিটরিং করছেন।

কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার ও উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার ফরিদুল ইসলাম জানান, প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তিনি নিয়মিত উপজেলার বিভিন্ন প্রত্যন্ত পল্লীর হাটবাজার ও মসজিদে গিয়ে মাস্ক ব্যবহার, হাত ধোয়া ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিশ্চিতকরণে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছেন। শনিবার তিনি কমিটির সদস্যদের নিয়ে উপজেলার সদর ইউনিয়নের জোয়ানপুর বাজার ও নাটশাল গোপালপুর বাজার পরিদর্শন করেন। এ সময় ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক মাগরিবের নামাজের সময় শারীরিক/সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ও মুখে মাস্ক ব্যবহার করে নামাজ আদায়ের জন্য মুসল্লিদের অনুরোধ জানান।