২৮ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা ঋণ পাবে কৃষক

কৃষি উৎপাদন বাড়াতে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে কৃষকদের জন্য ২৮ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা ঋণ বরাদ্দ রেখেছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো।

গতকাল নতুন অর্থবছরের জন্য কৃ?ষি ও পল্লী ঋণ এ নীতিমালা ও কর্মসূচি প্রণয়ন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিভাগ।

নী?তিমালায় বলা হয়, করোনা মহামারীর কারণে সৃষ্ট আর্থিক সংকট মোকাবিলায় এবং সরকারের কৃষি ও কৃষকবান্ধব নীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে দেশের টেকসই উন্নয়নের নির্ধারিত লক্ষ্যের কৃ?ষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালায় তিনটি বিষয় জোর দেয়া হয়েছে। এগুলো হলো- দারিদ্র্য বিমোচন, ক্ষুধামুক্তি এবং গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নের উদ্দেশ্যে পল্লী অঞ্চলে পর্যাপ্ত কৃষি ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধির মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বাড়ানো।

চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংকের বার্ষিক কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতর?ণের লক্ষ্য ঠিক ক?রে?ছে ২৮ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। যা গত অর্থবছরের চেয়ে ৭ দশমিক ৯৮ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরে কৃষি ঋণের লক্ষ্য ছিল ?২৬ হাজার ২৯২ কোটি টাকা।

এবার কৃষি ও পল্লী ঋণের চাহিদা বিবেচনায় চলতি অর্থবছরেও মোট লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো ১১ হাজার ৪৫ কোটি টাকা এবং বেসরকারি ও বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংক ১৭ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।

বিগত ২০২০-২১ অর্থবছরে ব্যাংকগু?লো মোট ২৫ হাজার ৫১১ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণ করেছে, যা অর্থবছরের মোট লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ দশমিক ৯৭ শতাংশ বা ৭৮১ কোটি টাকা কম।

জানা গে?ছে, করোনার প্রার্দুভাবের মধ্যেও কৃষি খাতের উৎপাদন প্রক্রিয়া সচল ছিল। তাই মহামারীতে ঋণ বেশি প্রয়োজন ছিল কৃষকদের। কিন্তু ব্যাংকগুলো তাদের সঠিক সময় ঋণ সহায়তা দেয়নি। ফলে দ্বিতীয়বারের মতো কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হলো ব্যাংকগুলো।

কেন্দ্রীয় ব্যাং?কের তথ্য বলছে, গত অর্থবছরে ৩০ লাখ ৫৫ হাজার ১৬৬ জন কৃষি ও পল্লী ঋণ পেয়েছেন। এর মধ্যে ব্যাংকগুলোর নিজস্ব নেটওয়ার্ক ও এমএফআই লিংকেজের মাধ্যমে ১৬ লাখ ৫ হাজার ৯৪৭ জন নারী প্রায় ৯ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লী ঋণ পেয়েছেন।

এছাড়া গত অর্থবছরে ২২ লাখ ৪৫ হাজার ৫১২ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ১৭ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা এবং চর, হাওর প্রভৃতি অনগ্রসর এলাকার ৭ হাজার ৭৯৬ জন কৃষক প্রায় ৩৩ লাখ ৯৬ কোটি টাকা ঋণ পেয়েছেন।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, পরিবেশবান্ধব ও টেকসই কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তুলে জনসাধারণের খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি নিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রে উদ্ভূত সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং কৃষকদের কাছে কৃষি ঋণ সহজলভ্য করার লক্ষ্যে বর্তমান নীতিমালা ও কর্মসূচিতে বেশ কিছু বিষয় সংযোজিত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- সোনালী মুরগী ও মহিষ এবং গাড়ল পালনের জন্য ঋণ দেয়া, কৃষি ঋণের সুদের হার ৯ শতাংশ থেকে কমিয়ে করে ৮ শতাংশ করা, একর প্রতি ঋণসীমা কৃষকদের প্রকৃত চাহিদা ও বাস্তবতার নিরিখে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো ও কমানোর সুযোগ, মাছ চাষে একর প্রতি ঋণ সীমা বাড়ানো এবং ব্যাংক কর্তৃক বিতরণকৃত ঋণের তদারকি অধিকতর জোরদার করা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, করোনাভাইরাসে আর্থিক সংকট মোকাবিলার লক্ষ্যে চলতি মূলধন ভিত্তিক কৃষি খাতে চলতি মূলধন সরবরাহের উদ্দ্যেশ্যে গত অর্থবছরের বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব অর্থায়নে ৫০০০ কোটি টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠন করা হয়। স্কিমমটির মেয়াদ জুন ২০২১ মাসে শেষ হয়েছে। ওই স্কিমের আওতায় তফসিলি ব্যাংকগুলো ৪ হাজার ২৯৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা বিতরণ করেছে। এছাড়াও সুদ-ক্ষতি সুবিধার আওতায় শস্য ও ফসল খাতে ব্যাংকগুলো কৃষক পর্যায়ে ৪ শতাংশ হার সুদে ঋণ বিতরণের জন্য সার্কুলার জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ৩০ জুন শেষ হওয়া এ স্কিমের আওতায় ব্যাংকগুলো ৪ হাজার ৮৮০ কোটি ৭১ লাখ টাকা বিতরণ করেছে।

শুক্রবার, ৩০ জুলাই ২০২১ , ১৪ শ্রাবন ১৪২৮ ১৮ জিলহজ ১৪৪২

২৮ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা ঋণ পাবে কৃষক

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

image

কৃষি উৎপাদন বাড়াতে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে কৃষকদের জন্য ২৮ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা ঋণ বরাদ্দ রেখেছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো।

গতকাল নতুন অর্থবছরের জন্য কৃ?ষি ও পল্লী ঋণ এ নীতিমালা ও কর্মসূচি প্রণয়ন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিভাগ।

নী?তিমালায় বলা হয়, করোনা মহামারীর কারণে সৃষ্ট আর্থিক সংকট মোকাবিলায় এবং সরকারের কৃষি ও কৃষকবান্ধব নীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে দেশের টেকসই উন্নয়নের নির্ধারিত লক্ষ্যের কৃ?ষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালায় তিনটি বিষয় জোর দেয়া হয়েছে। এগুলো হলো- দারিদ্র্য বিমোচন, ক্ষুধামুক্তি এবং গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নের উদ্দেশ্যে পল্লী অঞ্চলে পর্যাপ্ত কৃষি ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধির মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বাড়ানো।

চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংকের বার্ষিক কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতর?ণের লক্ষ্য ঠিক ক?রে?ছে ২৮ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। যা গত অর্থবছরের চেয়ে ৭ দশমিক ৯৮ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরে কৃষি ঋণের লক্ষ্য ছিল ?২৬ হাজার ২৯২ কোটি টাকা।

এবার কৃষি ও পল্লী ঋণের চাহিদা বিবেচনায় চলতি অর্থবছরেও মোট লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো ১১ হাজার ৪৫ কোটি টাকা এবং বেসরকারি ও বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংক ১৭ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।

বিগত ২০২০-২১ অর্থবছরে ব্যাংকগু?লো মোট ২৫ হাজার ৫১১ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণ করেছে, যা অর্থবছরের মোট লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ দশমিক ৯৭ শতাংশ বা ৭৮১ কোটি টাকা কম।

জানা গে?ছে, করোনার প্রার্দুভাবের মধ্যেও কৃষি খাতের উৎপাদন প্রক্রিয়া সচল ছিল। তাই মহামারীতে ঋণ বেশি প্রয়োজন ছিল কৃষকদের। কিন্তু ব্যাংকগুলো তাদের সঠিক সময় ঋণ সহায়তা দেয়নি। ফলে দ্বিতীয়বারের মতো কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হলো ব্যাংকগুলো।

কেন্দ্রীয় ব্যাং?কের তথ্য বলছে, গত অর্থবছরে ৩০ লাখ ৫৫ হাজার ১৬৬ জন কৃষি ও পল্লী ঋণ পেয়েছেন। এর মধ্যে ব্যাংকগুলোর নিজস্ব নেটওয়ার্ক ও এমএফআই লিংকেজের মাধ্যমে ১৬ লাখ ৫ হাজার ৯৪৭ জন নারী প্রায় ৯ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লী ঋণ পেয়েছেন।

এছাড়া গত অর্থবছরে ২২ লাখ ৪৫ হাজার ৫১২ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ১৭ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা এবং চর, হাওর প্রভৃতি অনগ্রসর এলাকার ৭ হাজার ৭৯৬ জন কৃষক প্রায় ৩৩ লাখ ৯৬ কোটি টাকা ঋণ পেয়েছেন।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, পরিবেশবান্ধব ও টেকসই কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তুলে জনসাধারণের খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি নিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রে উদ্ভূত সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং কৃষকদের কাছে কৃষি ঋণ সহজলভ্য করার লক্ষ্যে বর্তমান নীতিমালা ও কর্মসূচিতে বেশ কিছু বিষয় সংযোজিত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- সোনালী মুরগী ও মহিষ এবং গাড়ল পালনের জন্য ঋণ দেয়া, কৃষি ঋণের সুদের হার ৯ শতাংশ থেকে কমিয়ে করে ৮ শতাংশ করা, একর প্রতি ঋণসীমা কৃষকদের প্রকৃত চাহিদা ও বাস্তবতার নিরিখে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো ও কমানোর সুযোগ, মাছ চাষে একর প্রতি ঋণ সীমা বাড়ানো এবং ব্যাংক কর্তৃক বিতরণকৃত ঋণের তদারকি অধিকতর জোরদার করা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, করোনাভাইরাসে আর্থিক সংকট মোকাবিলার লক্ষ্যে চলতি মূলধন ভিত্তিক কৃষি খাতে চলতি মূলধন সরবরাহের উদ্দ্যেশ্যে গত অর্থবছরের বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব অর্থায়নে ৫০০০ কোটি টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠন করা হয়। স্কিমমটির মেয়াদ জুন ২০২১ মাসে শেষ হয়েছে। ওই স্কিমের আওতায় তফসিলি ব্যাংকগুলো ৪ হাজার ২৯৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা বিতরণ করেছে। এছাড়াও সুদ-ক্ষতি সুবিধার আওতায় শস্য ও ফসল খাতে ব্যাংকগুলো কৃষক পর্যায়ে ৪ শতাংশ হার সুদে ঋণ বিতরণের জন্য সার্কুলার জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ৩০ জুন শেষ হওয়া এ স্কিমের আওতায় ব্যাংকগুলো ৪ হাজার ৮৮০ কোটি ৭১ লাখ টাকা বিতরণ করেছে।