যানজট নিরসনে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে

রাজধানী ঢাকায় ব্যক্তিগত গাড়িতে চলাচল করেন ৭ শতাংশ মানুষ। অথচ এসব গাড়ি সড়কের ৭০ ভাগ জায়গা দখল করে রাখে। যানজটেরও অন্যতম কারণ ব্যক্তিগত গাড়ি। গতকাল সংবাদ-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে এই তথ্য। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীতে যানজটের কারণে প্রতিদিন ৫০ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। এর আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ বছরে প্রায় ৩৭ হাজার কোটি টাকা।

যানজট শুধু মানুষের অমূল্য সময়কেই কেড়ে নিচ্ছে না, শরীর-মনের ওপরও ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এসব ক্ষতির আর্থিক মূল্য কত সেটা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সংস্থা হিসাব কষে দেখিয়েছে।

ব্যক্তিগত গাড়ির কারণে রাজধানীতে যানজট তৈরি হচ্ছে সেটা অস্বীকার করা যাবে না। তবে এটা একমাত্র কারণ নয়। একটি নগরীকে তখনই আধুনিক বলা যায় যখন তার মোট আয়তনের ২০ থেকে ২৫ ভাগ জায়গায় রাস্তা থাকে। কিন্তু ঢাকায় রাস্তা আছে সাত থেকে আট ভাগ? এ হিসাবে ঢাকাকে আধুনিক নগরী বলার উপায় নেই।

আবার যে সড়ক আছে তার বড় একটি অংশই দখল হয়ে গেছে। সড়ক দখলের রয়েছে নানা মাত্রা। শুধু হকাররাই সড়ক দখল করে না। সড়কের ওপর রাখা হয় নির্মাণসামগ্রী। যথেচ্ছভাবে গাড়ি পার্কিং করে রাখা হয়। এখানে মোটরবাইক উঠে যায় ফুটপাতে আর মানুষ হেঁটে চলে সড়কে।

আনফিট গাড়িও বড় একটি সমস্যা। একই সড়কে দ্রুতগতির যানের পাশাপাশি ধীরগতির যান চলছে। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় রয়েছে দুর্বলতা। মানুষ ট্রাফিক আইন মানতে চায় না বা মানে না। ট্রাফিক আইনের প্রয়োগে শৈথিল্য দেখা যায়।

রাজধানীর যানজট নিরসনে এ পর্যন্ত অনেক পদক্ষেপই নেয়া হয়েছে। শত শত কোটি টাকার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। তবে সমস্যার সমাধান হয়নি। শুধু প্রকল্প বড় হলেই যানজট সমস্যা থাকবে না এটা ভাবার কারণ নেই। স্বল্পমেয়াদে ছোট প্রকল্প বাস্তবায়ন করাও জরুরি। সকালে ফুটপাত বা সড়ক দখলমুক্ত করা হলে তা বিকালে পুনর্দখল হওয়া বন্ধ করতে হবে।

এক-দুটি সমস্যার সমাধান করলে যানজট দূর হবে না। এ সমস্যা দূর করার জন্য সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গিতে কাজ করতে হবে সমন্বিতভাবে। সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, নগর কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকে কাজ করতে হবে একযোগে। রাজধানীমুখী চাপ কমানোও জরুরি। এজন্য বিকেন্দ্রীকরণের বিকল্প নেই।

সোমবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১ , ৫ আশ্বিন ১৪২৮ ১১ সফর ১৪৪৩

যানজট নিরসনে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে

রাজধানী ঢাকায় ব্যক্তিগত গাড়িতে চলাচল করেন ৭ শতাংশ মানুষ। অথচ এসব গাড়ি সড়কের ৭০ ভাগ জায়গা দখল করে রাখে। যানজটেরও অন্যতম কারণ ব্যক্তিগত গাড়ি। গতকাল সংবাদ-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে এই তথ্য। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীতে যানজটের কারণে প্রতিদিন ৫০ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। এর আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ বছরে প্রায় ৩৭ হাজার কোটি টাকা।

যানজট শুধু মানুষের অমূল্য সময়কেই কেড়ে নিচ্ছে না, শরীর-মনের ওপরও ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এসব ক্ষতির আর্থিক মূল্য কত সেটা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সংস্থা হিসাব কষে দেখিয়েছে।

ব্যক্তিগত গাড়ির কারণে রাজধানীতে যানজট তৈরি হচ্ছে সেটা অস্বীকার করা যাবে না। তবে এটা একমাত্র কারণ নয়। একটি নগরীকে তখনই আধুনিক বলা যায় যখন তার মোট আয়তনের ২০ থেকে ২৫ ভাগ জায়গায় রাস্তা থাকে। কিন্তু ঢাকায় রাস্তা আছে সাত থেকে আট ভাগ? এ হিসাবে ঢাকাকে আধুনিক নগরী বলার উপায় নেই।

আবার যে সড়ক আছে তার বড় একটি অংশই দখল হয়ে গেছে। সড়ক দখলের রয়েছে নানা মাত্রা। শুধু হকাররাই সড়ক দখল করে না। সড়কের ওপর রাখা হয় নির্মাণসামগ্রী। যথেচ্ছভাবে গাড়ি পার্কিং করে রাখা হয়। এখানে মোটরবাইক উঠে যায় ফুটপাতে আর মানুষ হেঁটে চলে সড়কে।

আনফিট গাড়িও বড় একটি সমস্যা। একই সড়কে দ্রুতগতির যানের পাশাপাশি ধীরগতির যান চলছে। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় রয়েছে দুর্বলতা। মানুষ ট্রাফিক আইন মানতে চায় না বা মানে না। ট্রাফিক আইনের প্রয়োগে শৈথিল্য দেখা যায়।

রাজধানীর যানজট নিরসনে এ পর্যন্ত অনেক পদক্ষেপই নেয়া হয়েছে। শত শত কোটি টাকার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। তবে সমস্যার সমাধান হয়নি। শুধু প্রকল্প বড় হলেই যানজট সমস্যা থাকবে না এটা ভাবার কারণ নেই। স্বল্পমেয়াদে ছোট প্রকল্প বাস্তবায়ন করাও জরুরি। সকালে ফুটপাত বা সড়ক দখলমুক্ত করা হলে তা বিকালে পুনর্দখল হওয়া বন্ধ করতে হবে।

এক-দুটি সমস্যার সমাধান করলে যানজট দূর হবে না। এ সমস্যা দূর করার জন্য সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গিতে কাজ করতে হবে সমন্বিতভাবে। সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, নগর কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকে কাজ করতে হবে একযোগে। রাজধানীমুখী চাপ কমানোও জরুরি। এজন্য বিকেন্দ্রীকরণের বিকল্প নেই।