জাপানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা

জাপানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন দেশটির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির দলীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ ও গণনা শেষে নিশ্চিত হয়, বিদায়ী দলনেতা ও প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগার স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন কিশিদা।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচনে সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রার্থী টিকা বণ্টনবিষয়ক প্রধান তারো কোনোকে হারিয়ে জয় লাভ করেন কিশিদা। নির্বাচনে অংশ নেন এলডিপির ৩৮২ জন আইনপ্রণেতা এবং দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের একই সংখ্যক সদস্য। ৮৭ ভোটের ব্যবধানে জিতেছেন কিশিদা। তার পক্ষে পড়েছে ২৫৭টি ভোট। বিপরীতে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তারো কোনো পেয়েছেন ১৭০টি ভোট।

দলীয় নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থীকে শিগগিরই কিশিদাকে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অনুমোদন দেবে ক্ষমতাসীন দল। পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে এলডিপি সংখ্যাগরিষ্ঠ বলে সরকারপ্রধান হিসেবে কিশিদার নিয়োগ এখনই চূড়ান্ত। ফুমিও কিশিদা বর্তমানে এলডিপির নীতিমালাবিষয়ক প্রধান। গত বছরও দলীয় নির্বাচনে ইয়োশিহিদে সুগার বিপরীতে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ফুমিও কিশিদা। ওই নির্বাচনে সুগার কাছে পরাজিত হলেও এক বছরের ব্যবধানে জয়ের মালা পড়লেন তিনি।

হিরোশিমার রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী পরিবারের ছেলে কিশিদা গত বছর সুগার বিপরীতে পরাজয়ের বিষয়ে জানান, ওই অভিজ্ঞতা আরও শক্তিশালী ও দৃঢ়প্রত্যয়ী করে তুলেছে তাকে। নতুন প্রধানমন্ত্রীকে মহামারী পরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধার থেকে শুরু করে প্রতিবেশী উত্তর কোরিয়া ও চীনের কারণে সৃষ্ট নিরাপত্তা ঝুঁকি পর্যন্ত বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। তবে প্রথমেই জাপানে আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে এলডিপির পুনরায় ক্ষমতা আসা নিশ্চিত করা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কিশিদা সরকারের জন্য।

নির্বাচনী প্রচারে প্রধানমন্ত্রী হলে মহামারীর মধ্যে প্রণোদনা বাড়াবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন কিশিদা। মহামারী ইস্যুতে বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী সুগার বিরুদ্ধে সৃষ্ট জনরোষকে হাতিয়ার করেছিলেন তিনি। সুগার বিরুদ্ধে মহামারী নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগে এলডিপি সরকারের জনপ্রিয়তা রেকর্ড সর্বনি¤েœ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বর্তমান দলপ্রধান ও দেশের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা পুনঃনির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত জানান। দলীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার ফলে এর মধ্য দিয়েই জাপানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে অসুস্থতাজনিত কারণে পদত্যাগ করার পর গত বছরই তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন সুগা।

দলীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মোট চারজন প্রার্থী। কিশিদা ও কোনো ছাড়া বাকি দুই প্রার্থী ছিলেন নারী।

দুই নারী রাজনীতিকের একজন ডানপন্থি সানায় তাকাইচি, অপরজন জেন্ডারবিষয়ক সাবেক মন্ত্রী ও নারীবাদী হিসেবে পরিচিত সেইকো নোদা। প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে দুজনের একজনও আলোচিত ছিলেন না।

জাপানের ইতিহাসে আজ পর্যন্ত কোনো নারী প্রধানমন্ত্রী হননি। দেশটির রাজনীতিতেও উল্লেখযোগ্য নারী চরিত্রের সংখ্যা হাতেগোনা।

বৃহস্পতিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১ , ১৫ আশ্বিন ১৪২৮ ২১ সফর ১৪৪৩

জাপানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা

জাপানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন দেশটির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির দলীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ ও গণনা শেষে নিশ্চিত হয়, বিদায়ী দলনেতা ও প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগার স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন কিশিদা।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচনে সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রার্থী টিকা বণ্টনবিষয়ক প্রধান তারো কোনোকে হারিয়ে জয় লাভ করেন কিশিদা। নির্বাচনে অংশ নেন এলডিপির ৩৮২ জন আইনপ্রণেতা এবং দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের একই সংখ্যক সদস্য। ৮৭ ভোটের ব্যবধানে জিতেছেন কিশিদা। তার পক্ষে পড়েছে ২৫৭টি ভোট। বিপরীতে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তারো কোনো পেয়েছেন ১৭০টি ভোট।

দলীয় নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থীকে শিগগিরই কিশিদাকে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অনুমোদন দেবে ক্ষমতাসীন দল। পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে এলডিপি সংখ্যাগরিষ্ঠ বলে সরকারপ্রধান হিসেবে কিশিদার নিয়োগ এখনই চূড়ান্ত। ফুমিও কিশিদা বর্তমানে এলডিপির নীতিমালাবিষয়ক প্রধান। গত বছরও দলীয় নির্বাচনে ইয়োশিহিদে সুগার বিপরীতে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ফুমিও কিশিদা। ওই নির্বাচনে সুগার কাছে পরাজিত হলেও এক বছরের ব্যবধানে জয়ের মালা পড়লেন তিনি।

হিরোশিমার রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী পরিবারের ছেলে কিশিদা গত বছর সুগার বিপরীতে পরাজয়ের বিষয়ে জানান, ওই অভিজ্ঞতা আরও শক্তিশালী ও দৃঢ়প্রত্যয়ী করে তুলেছে তাকে। নতুন প্রধানমন্ত্রীকে মহামারী পরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধার থেকে শুরু করে প্রতিবেশী উত্তর কোরিয়া ও চীনের কারণে সৃষ্ট নিরাপত্তা ঝুঁকি পর্যন্ত বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। তবে প্রথমেই জাপানে আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে এলডিপির পুনরায় ক্ষমতা আসা নিশ্চিত করা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কিশিদা সরকারের জন্য।

নির্বাচনী প্রচারে প্রধানমন্ত্রী হলে মহামারীর মধ্যে প্রণোদনা বাড়াবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন কিশিদা। মহামারী ইস্যুতে বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী সুগার বিরুদ্ধে সৃষ্ট জনরোষকে হাতিয়ার করেছিলেন তিনি। সুগার বিরুদ্ধে মহামারী নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগে এলডিপি সরকারের জনপ্রিয়তা রেকর্ড সর্বনি¤েœ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বর্তমান দলপ্রধান ও দেশের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা পুনঃনির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত জানান। দলীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার ফলে এর মধ্য দিয়েই জাপানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে অসুস্থতাজনিত কারণে পদত্যাগ করার পর গত বছরই তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন সুগা।

দলীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মোট চারজন প্রার্থী। কিশিদা ও কোনো ছাড়া বাকি দুই প্রার্থী ছিলেন নারী।

দুই নারী রাজনীতিকের একজন ডানপন্থি সানায় তাকাইচি, অপরজন জেন্ডারবিষয়ক সাবেক মন্ত্রী ও নারীবাদী হিসেবে পরিচিত সেইকো নোদা। প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে দুজনের একজনও আলোচিত ছিলেন না।

জাপানের ইতিহাসে আজ পর্যন্ত কোনো নারী প্রধানমন্ত্রী হননি। দেশটির রাজনীতিতেও উল্লেখযোগ্য নারী চরিত্রের সংখ্যা হাতেগোনা।