ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক

দুই সেতুর বাতিতে ১০ বছরেও জ্বলেনি আলো!

প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে বরিশাল-ফরিদপুর-ঢাকা মহাসড়কের ‘বীর শ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু (দোয়ারিকা সেতু)’ ও ‘মেজর জলিল সেতু (শিকারপুর সেতু)’ দুটি আলোকিত করার লক্ষ্যে বিদ্যুৎ সরঞ্জাম স্থাপনের পরে দশ বছর কেটে গেলেও এসব স্পর্শকাতর স্থাপনায় কোন দিনই বাতি জ্বলেনি। অথচ এখানে সরকারি কোষাগার থেকে বেরিয়ে গেছে বিপুল অংকের অর্থ। কবে কিভাবে এসব বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম স্থাপন করা হয়েছিল তাও সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের বর্তমান দায়িত্বশীলমহল কিছুই জানেন না। অথচ সন্ধ্যা হলেই এসব সেতু ও সংযোগ সড়কসহ সন্নিহিত এলাকা ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত হচ্ছে।

কুয়েত উন্নয়ন তহবিল থেকে প্রায় দেড়শ কোটি টাকা ব্যয়ে বরিশাল মহানগরী থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার ও ২১ কিলোমিটার উত্তরে বরিশাল-ফরিদপুর-ঢাকা মহাসড়কে যথাক্রমে দোয়ারিকা ও শিকারপুরে দুটি সেতু নির্মাণ করা হয়। ১৯৯৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুটি সেতুরই ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের পরে ২০০৩ সালের ২০ এপ্রিল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া মুক্তিযদ্ধের দুই বীর সেনানীর নামে সেতু দুটি উদ্বোধন করেন। বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর ও মেজর জলিল-এর নামে নামকরণ করেন।

প্রি-স্ট্রেসড কংক্রিট গার্ডার পদ্ধতির এই দুটি সেতু ও দীর্ঘ সাড়ে ১২ কিলোমিটার সংযোগ সড়কটি আলোকিত করার কোন পদক্ষেপ ছিলনা মূল প্রকল্পে। ফলে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের সাথে সারাদেশেরর সড়ক যোগাযোগ রক্ষাকারী এই দুটি সেতু ও সংযোগ সড়ক সন্ধ্যার পরেই অন্ধকারে ডুবে যাওয়ায় মহাসড়কটি ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তাহীন করে তুলছে। ইতোমধ্যে এই সেতু ও সংযোগ সড়কে অনেক ছিনতাই ও রাহাজানির ঘটনা সড়ক ব্যবহারকারীসহ পথচারীদের প্রায়শই আতঙ্কিত করছে। পুরো সংযোগ সড়ক ও সেতু দুটির বেশিরভাগ এলাকাই জনমানবহীন ফসলি জমির ভেতর দিয়ে চলে গেছে।

২০১২ সালে বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু ও মেজর জলিল সেতুর রেলিংসহ সংযোগ সড়কটির ২০ মিটারের মধ্যে প্রায় দেড়শ বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপন করে সোডিয়াম বাতি স্থাপন করা হয়। কিন্তু ট্রান্সফর্মার স্থাপনসহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি থেকে বৈদ্যুতিক সংযোগ গ্রহণ করে এসব খুঁটিতে আর কোনদিন আলো জ্বলেনি। বরিশাল সড়ক বিভাগও বিষয়টি নিয়ে পরবর্তিতে নূন্যতম কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে বরিশাল সড়ক বিভাগের সাবেক দু’জন নির্বাহী প্রকৌশলীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তারা কেন সেতু দুটিতে ও সংযোগ সড়কে বৈদ্যুতিক বাতির সংযোগ দেয়া হয়নি সে সম্পর্কে কিছু বলতে পারেননি। বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলীও বিষয়টি নিয়ে সঠিক কিছু বলতে না পারলেও পুরনো সব নথি খুঁজে বের করে পরবর্তীতে পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানিয়েছেন।

শুক্রবার, ০১ অক্টোবর ২০২১ , ১৬ আশ্বিন ১৪২৮ ২২ সফর ১৪৪৩

ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক

দুই সেতুর বাতিতে ১০ বছরেও জ্বলেনি আলো!

মানবেন্দ্র বটব্যাল, বরিশাল

image

বরিশাল : ১০ বছর আগে সেতুর দুই পাশে স্থাপন করা সড়ক বাতি -সংবাদ

প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে বরিশাল-ফরিদপুর-ঢাকা মহাসড়কের ‘বীর শ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু (দোয়ারিকা সেতু)’ ও ‘মেজর জলিল সেতু (শিকারপুর সেতু)’ দুটি আলোকিত করার লক্ষ্যে বিদ্যুৎ সরঞ্জাম স্থাপনের পরে দশ বছর কেটে গেলেও এসব স্পর্শকাতর স্থাপনায় কোন দিনই বাতি জ্বলেনি। অথচ এখানে সরকারি কোষাগার থেকে বেরিয়ে গেছে বিপুল অংকের অর্থ। কবে কিভাবে এসব বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম স্থাপন করা হয়েছিল তাও সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের বর্তমান দায়িত্বশীলমহল কিছুই জানেন না। অথচ সন্ধ্যা হলেই এসব সেতু ও সংযোগ সড়কসহ সন্নিহিত এলাকা ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত হচ্ছে।

কুয়েত উন্নয়ন তহবিল থেকে প্রায় দেড়শ কোটি টাকা ব্যয়ে বরিশাল মহানগরী থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার ও ২১ কিলোমিটার উত্তরে বরিশাল-ফরিদপুর-ঢাকা মহাসড়কে যথাক্রমে দোয়ারিকা ও শিকারপুরে দুটি সেতু নির্মাণ করা হয়। ১৯৯৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুটি সেতুরই ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের পরে ২০০৩ সালের ২০ এপ্রিল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া মুক্তিযদ্ধের দুই বীর সেনানীর নামে সেতু দুটি উদ্বোধন করেন। বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর ও মেজর জলিল-এর নামে নামকরণ করেন।

প্রি-স্ট্রেসড কংক্রিট গার্ডার পদ্ধতির এই দুটি সেতু ও দীর্ঘ সাড়ে ১২ কিলোমিটার সংযোগ সড়কটি আলোকিত করার কোন পদক্ষেপ ছিলনা মূল প্রকল্পে। ফলে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের সাথে সারাদেশেরর সড়ক যোগাযোগ রক্ষাকারী এই দুটি সেতু ও সংযোগ সড়ক সন্ধ্যার পরেই অন্ধকারে ডুবে যাওয়ায় মহাসড়কটি ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তাহীন করে তুলছে। ইতোমধ্যে এই সেতু ও সংযোগ সড়কে অনেক ছিনতাই ও রাহাজানির ঘটনা সড়ক ব্যবহারকারীসহ পথচারীদের প্রায়শই আতঙ্কিত করছে। পুরো সংযোগ সড়ক ও সেতু দুটির বেশিরভাগ এলাকাই জনমানবহীন ফসলি জমির ভেতর দিয়ে চলে গেছে।

২০১২ সালে বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু ও মেজর জলিল সেতুর রেলিংসহ সংযোগ সড়কটির ২০ মিটারের মধ্যে প্রায় দেড়শ বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপন করে সোডিয়াম বাতি স্থাপন করা হয়। কিন্তু ট্রান্সফর্মার স্থাপনসহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি থেকে বৈদ্যুতিক সংযোগ গ্রহণ করে এসব খুঁটিতে আর কোনদিন আলো জ্বলেনি। বরিশাল সড়ক বিভাগও বিষয়টি নিয়ে পরবর্তিতে নূন্যতম কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে বরিশাল সড়ক বিভাগের সাবেক দু’জন নির্বাহী প্রকৌশলীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তারা কেন সেতু দুটিতে ও সংযোগ সড়কে বৈদ্যুতিক বাতির সংযোগ দেয়া হয়নি সে সম্পর্কে কিছু বলতে পারেননি। বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলীও বিষয়টি নিয়ে সঠিক কিছু বলতে না পারলেও পুরনো সব নথি খুঁজে বের করে পরবর্তীতে পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানিয়েছেন।