ইভ্যালির সব নথি হাইকোর্টে তলব

রাসেল-শামীমাকে আরেক মামলায় জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ

আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির সব নথিপত্র তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ১১ অক্টোবরের মধ্যে এসব আদালতে দাখিল করতে রেজিস্ট্রার ফর জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গতকাল বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

একজন গ্রাহক গত ৫ মাস আগে ইভ্যালিতে ওয়াশিং মেশিন অর্ডার করেছিলেন। কিন্তু গত ৫ মাসেও তাকে অর্ডার বুঝিয়ে না দেয়া এবং টাকা ফেরত না দেয়ায় তিনি ইভ্যালির বিলুপ্তি চেয়ে ২২ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে আবেদন করেন। সে দিন শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ইভ্যালির সব সম্পদ বিক্রি ও হস্তান্তর থেকে বিরত থাকতে নিষেধাজ্ঞা দেন। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে ইভ্যালির সবধরনের সম্পদ বিক্রি-হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন আদালত। একই সঙ্গে ইভ্যালিকে কেন অবসায়ন করা হবে না, তা জানতে চেয়ে নোটিশও জারি করেন আদালত।

আবেদনে ইভ্যালি লিমিটেড, রেজিস্ট্রার জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, কনজুমার রাইটস প্রটেকশন ব্যুরো, নগদ, বিকাশ, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন, ই-ক্যাব অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বেসিস, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্য সচিবকে বিবাদী করা হয়।

রাসেল-শামীমার রিমান্ড নামঞ্জুর, জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ

এদিকে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল ও তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে রাজধানীর ধানমন্ডি থানার এক মামলায় আদালত জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছে।

গতকাল ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন (সিএমএম) আদালত এ আদেশ দেয়। রাসেলের আইনজীবী মনিরুজ্জামান আসাদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, প্রতারণার মাধ্যমে ৮৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মুজাহিদুর রহমান নামের এক গ্রাহকের করা মামলায় রাসেল ও শামীমাকে আজ আদালতে হাজির করে পাঁচ দিন রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করে ধানমন্ডি থানার পুলিশ। আদালত উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে রাসেল ও শামীমাকে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন নাকচ করেন। তাদের জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের জামিনের আবেদনও নাকচ করেন।

গত ২২ সেপ্টেম্বর রাসেল ও শামীমার বিরুদ্ধে সিএমএম আদালতে মামলা করেন মুজাহিদুর। আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে রেকর্ড করার জন্য ধানমন্ডি থানাকে নির্দেশ দেন।

মামলায় মুজাহিদুর অভিযোগ করেছেন, দুই টন এসি ও একটি কাঠের টি-টেবিলের জন্য তিনি ইভ্যালিতে ক্রয়াদেশ দেন। গত বছরের ১১ জুলাই তিনি টাকা পরিশোধ করেন। পণ্য দুটি ৪৫ দিনের মধ্যে ডেলিভারি দেয়ার কথা থাকলেও আসামিরা তা করেননি।

এদিকে, ২৭ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির রাসেল, শামীমাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে একটি মামলা করেন আলমগীর হোসেন নামের এক আইনজীবী। আদালত মামলাটি তদন্ত করে খিলগাঁও থানার ওসি প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেন।

মামলায় আলমগীর অভিযোগ করেছেন, গত ৩০ এপ্রিল একটি মোটরবাইক কেনার জন্য তিনি ইভ্যালিতে ক্রয়াদেশ দেন। গত ৩ মে তিনি টাকা পরিশোধ করেন। তবে ইভ্যালি কর্তৃপক্ষ এখনও তার মোটরসাইকেল দেয়নি।

আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, প্রতারণার মাধ্যমে গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে রাসেল ও শামীমার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত গুলশান থানায় একটি ও ধানমন্ডি থানায় দুটি মামলা হয়েছে। আর আদালতে মামলা হয়েছে দুটি।

১৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের স্যার সৈয়দ রোডের বাসা থেকে রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রাসেলকে দুই দফা ও শামীমাকে এক দফা রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। দুজনই এখন কারাগারে আছেন।

শুক্রবার, ০১ অক্টোবর ২০২১ , ১৬ আশ্বিন ১৪২৮ ২২ সফর ১৪৪৩

ইভ্যালির সব নথি হাইকোর্টে তলব

রাসেল-শামীমাকে আরেক মামলায় জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির সব নথিপত্র তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ১১ অক্টোবরের মধ্যে এসব আদালতে দাখিল করতে রেজিস্ট্রার ফর জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গতকাল বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

একজন গ্রাহক গত ৫ মাস আগে ইভ্যালিতে ওয়াশিং মেশিন অর্ডার করেছিলেন। কিন্তু গত ৫ মাসেও তাকে অর্ডার বুঝিয়ে না দেয়া এবং টাকা ফেরত না দেয়ায় তিনি ইভ্যালির বিলুপ্তি চেয়ে ২২ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে আবেদন করেন। সে দিন শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ইভ্যালির সব সম্পদ বিক্রি ও হস্তান্তর থেকে বিরত থাকতে নিষেধাজ্ঞা দেন। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে ইভ্যালির সবধরনের সম্পদ বিক্রি-হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন আদালত। একই সঙ্গে ইভ্যালিকে কেন অবসায়ন করা হবে না, তা জানতে চেয়ে নোটিশও জারি করেন আদালত।

আবেদনে ইভ্যালি লিমিটেড, রেজিস্ট্রার জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, কনজুমার রাইটস প্রটেকশন ব্যুরো, নগদ, বিকাশ, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন, ই-ক্যাব অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বেসিস, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্য সচিবকে বিবাদী করা হয়।

রাসেল-শামীমার রিমান্ড নামঞ্জুর, জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ

এদিকে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল ও তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে রাজধানীর ধানমন্ডি থানার এক মামলায় আদালত জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছে।

গতকাল ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন (সিএমএম) আদালত এ আদেশ দেয়। রাসেলের আইনজীবী মনিরুজ্জামান আসাদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, প্রতারণার মাধ্যমে ৮৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মুজাহিদুর রহমান নামের এক গ্রাহকের করা মামলায় রাসেল ও শামীমাকে আজ আদালতে হাজির করে পাঁচ দিন রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করে ধানমন্ডি থানার পুলিশ। আদালত উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে রাসেল ও শামীমাকে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন নাকচ করেন। তাদের জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের জামিনের আবেদনও নাকচ করেন।

গত ২২ সেপ্টেম্বর রাসেল ও শামীমার বিরুদ্ধে সিএমএম আদালতে মামলা করেন মুজাহিদুর। আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে রেকর্ড করার জন্য ধানমন্ডি থানাকে নির্দেশ দেন।

মামলায় মুজাহিদুর অভিযোগ করেছেন, দুই টন এসি ও একটি কাঠের টি-টেবিলের জন্য তিনি ইভ্যালিতে ক্রয়াদেশ দেন। গত বছরের ১১ জুলাই তিনি টাকা পরিশোধ করেন। পণ্য দুটি ৪৫ দিনের মধ্যে ডেলিভারি দেয়ার কথা থাকলেও আসামিরা তা করেননি।

এদিকে, ২৭ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির রাসেল, শামীমাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে একটি মামলা করেন আলমগীর হোসেন নামের এক আইনজীবী। আদালত মামলাটি তদন্ত করে খিলগাঁও থানার ওসি প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেন।

মামলায় আলমগীর অভিযোগ করেছেন, গত ৩০ এপ্রিল একটি মোটরবাইক কেনার জন্য তিনি ইভ্যালিতে ক্রয়াদেশ দেন। গত ৩ মে তিনি টাকা পরিশোধ করেন। তবে ইভ্যালি কর্তৃপক্ষ এখনও তার মোটরসাইকেল দেয়নি।

আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, প্রতারণার মাধ্যমে গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে রাসেল ও শামীমার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত গুলশান থানায় একটি ও ধানমন্ডি থানায় দুটি মামলা হয়েছে। আর আদালতে মামলা হয়েছে দুটি।

১৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের স্যার সৈয়দ রোডের বাসা থেকে রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রাসেলকে দুই দফা ও শামীমাকে এক দফা রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। দুজনই এখন কারাগারে আছেন।