মানিকগঞ্জে ৫১২
মণ্ডপে শারদোৎসব
প্রতিনিধি, মানিকগঞ্জ
আগামী ১০ অক্টেবর পঞ্চমী তিথিতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। বর্ণাঢ্য সামাজিক, সাস্কৃতিক ও ধর্মীয় এ উৎসবে সারা দেশের মতো মেতে উঠবে মানিকগঞ্জের ৭টি উপজেলার মানুষ। উৎসব উপলক্ষে জেলায় ৭টি উপজেলায় শেষ হয়েছে প্রতিমা তৈরির কাজ। এখন রং ও তুলির কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন শিল্পীরা।
বিভিন্ন মন্দিরে শিল্পীরা ফরমায়েশ অনুযায়ী প্রতিমা তৈরির কাজে মহাব্যস্ত। প্রতিমা কাঠামোতে খড় এবং মাটি লাগানোর কাজ শেষ। রং এবং তুলির কাজ প্রায় শেষের দিকে। প্রতিমার চোখ, হাতের আঙ্গুল, মুখমন্ডল, তৈরিসহ প্রতিটি কাজের জন্য ভিন্ন কারিগর রাতদিন নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। রং এবং তুলির ছোয়ায় প্রতিমার রুপ ও সৌন্দয্য আনার কাজ নিয়ে শিল্পীরা মহা ব্যস্ত।
মানিকগঞ্জে এবার জেলা সদরে ৮৩টি, পৌরসভায় ২৯টি, ঘিওরে ৭৪টি, শিবালয়ে ৮৯টি, দৌলতপুরে ৪৫টি, সিংগাইর পৌরসভায় ১০টি, সিংগাইর সদরে ৫৩টি, হরিরামপুরে ৬৯টি, সাটুরিয়া ৬০টি মন্দিরে দুর্গাপুজা অনুষ্ঠিত হবে। গত বছর ৫০১টি মন্দিরে পুজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
ঘিওর লোকনাথ মন্দিরের অমর পাল ও শতদল মন্দিরের অবিণাশ পাল তার সাগরেদদের নিয়ে প্রতিমা গড়ার কাজে ব্যস্ত সময় ডার করছেন। মাটির ভাস্কর্য্য তৈরিতে তারা পারদর্শী। মানিকগঞ্জের বানিয়াজুরী অমুল্য মালাকারের বাড়ি এবং ঘিওর কচিকাঁচা মিলন সংঘ সবচেয়ে ব্যয়বহুলভাবে প্রতিমা তৈরি করে। হাজার হাজার মানুষ দুর্গা দেবী দেখতে এখানে সমবেত হন। নরম কাঁদা মাটি দিয়ে শৈল্পিক ছোঁয়ায় তিল তিল করে তুলেছেন দশভুজ্য দুর্গাদেবীর প্রতিমা। একই সঙ্গে গনেশ, কার্তিকসহ অন্যান্য প্রতিমার। অবিণাশ পাল দুর্গাদেবীর মুখাকৃতি রাগান্বিত করলেও, কৃতিম হাসির মাঝে তা ফুঁটিয়ে তুলেছেন। ১০ হাতে দুর্গা ত্রিশুল দিয়ে বধ করছেন যমদুত অশুরকে। আর ১০ হাতে দুর্গার ১০ চক্র লীলা ভঙ্গীতে নতুনন্ত আনার চেষ্টা করছেন শিল্পীরা। লীলা এবং গুনের বিষয়টি অত্যন্ত নিখঁতভাবে ধরা হয়েছে।
জেলা পূজা উৎযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক অর্নিবাণ পাল বলেন, ব্যাপক আনন্দ উদ্দিপনার মধ্য দিয়ে মানিকগঞ্জে সকল সম্প্রদায়ের লোকজন এ উৎসবে আনন্দ উল্লাস করে। পূজা উৎযাপন কমিটির উদ্যোগে একটি টিম সার্বক্ষনিক মন্দিরগুলো পরিদর্শন করবে। ইতোমধ্যে আমরা ৭টি উপজেলার মন্দিরের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করেছি। তবে এবার ৫০১টি মন্দিরে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ জানান, শারদীয় দুর্গোৎসবে আইন শৃঙ্খলা সুন্দর ও স্বাভাবিক রাখার জন্য প্রতিটি মন্দিরে পুলিশ, আনসার মোতায়ন করা হবে। মোবাইল টিম সার্বক্ষনিক মন্দিরগুলো পরিদর্শন করবে। শহরের এবং উপজেলার সব মন্দিরগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ একটি দেশ। আবহমানকাল থেকে আমাদের এ দেশে হিন্দু, মুসলমান বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজন মিলে মিশে বাস করে। কাজেই দুর্গা পূজাটি সার্বজনীন।
কিশোরগঞ্জে ৪০৩ মণ্ডপে দুর্গোৎসব
জেলা বার্তা পরিবেশক, কিশোরগঞ্জ
কিশোরগঞ্জে এবার ৪০৩টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। আসন্ন দুর্গপূজা উদযাপনের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলমের সভাপতিত্বে ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাজমুল ইসলাম সরকারের সঞ্চালনায় গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কালেক্টরেট সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন ডা. মো. মুজিবুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোস্তাক সরকার, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমএ আফজাল, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. গোলাম মোস্তফা, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ও হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলন, কালিবাড়ি পরিচালনা কমিটির সভাপতি বিজয় শংকর রায়, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রণব কুমার সরকার প্রমুখ। সভায় জানানো হয়, এবার জেলার ১৩টি উপজেলায় মোট ৪০৩টি মণ্ডপে পূজার আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে সার্বজনীন মণ্ডপ রয়েছে ৩৮১টি, পারিবারিক মণ্ডপ ২২টি।
সভায় পূজার সামগ্রিক আয়োজন, নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। এতে বিভিন্ন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও দপ্তরগুলোর কর্মকর্তাসহ পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
শনিবার, ০২ অক্টোবর ২০২১ , ১৭ আশ্বিন ১৪২৮ ২৩ সফর ১৪৪৩
মানিকগঞ্জে ৫১২
মণ্ডপে শারদোৎসব
প্রতিনিধি, মানিকগঞ্জ
আগামী ১০ অক্টেবর পঞ্চমী তিথিতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। বর্ণাঢ্য সামাজিক, সাস্কৃতিক ও ধর্মীয় এ উৎসবে সারা দেশের মতো মেতে উঠবে মানিকগঞ্জের ৭টি উপজেলার মানুষ। উৎসব উপলক্ষে জেলায় ৭টি উপজেলায় শেষ হয়েছে প্রতিমা তৈরির কাজ। এখন রং ও তুলির কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন শিল্পীরা।
বিভিন্ন মন্দিরে শিল্পীরা ফরমায়েশ অনুযায়ী প্রতিমা তৈরির কাজে মহাব্যস্ত। প্রতিমা কাঠামোতে খড় এবং মাটি লাগানোর কাজ শেষ। রং এবং তুলির কাজ প্রায় শেষের দিকে। প্রতিমার চোখ, হাতের আঙ্গুল, মুখমন্ডল, তৈরিসহ প্রতিটি কাজের জন্য ভিন্ন কারিগর রাতদিন নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। রং এবং তুলির ছোয়ায় প্রতিমার রুপ ও সৌন্দয্য আনার কাজ নিয়ে শিল্পীরা মহা ব্যস্ত।
মানিকগঞ্জে এবার জেলা সদরে ৮৩টি, পৌরসভায় ২৯টি, ঘিওরে ৭৪টি, শিবালয়ে ৮৯টি, দৌলতপুরে ৪৫টি, সিংগাইর পৌরসভায় ১০টি, সিংগাইর সদরে ৫৩টি, হরিরামপুরে ৬৯টি, সাটুরিয়া ৬০টি মন্দিরে দুর্গাপুজা অনুষ্ঠিত হবে। গত বছর ৫০১টি মন্দিরে পুজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
ঘিওর লোকনাথ মন্দিরের অমর পাল ও শতদল মন্দিরের অবিণাশ পাল তার সাগরেদদের নিয়ে প্রতিমা গড়ার কাজে ব্যস্ত সময় ডার করছেন। মাটির ভাস্কর্য্য তৈরিতে তারা পারদর্শী। মানিকগঞ্জের বানিয়াজুরী অমুল্য মালাকারের বাড়ি এবং ঘিওর কচিকাঁচা মিলন সংঘ সবচেয়ে ব্যয়বহুলভাবে প্রতিমা তৈরি করে। হাজার হাজার মানুষ দুর্গা দেবী দেখতে এখানে সমবেত হন। নরম কাঁদা মাটি দিয়ে শৈল্পিক ছোঁয়ায় তিল তিল করে তুলেছেন দশভুজ্য দুর্গাদেবীর প্রতিমা। একই সঙ্গে গনেশ, কার্তিকসহ অন্যান্য প্রতিমার। অবিণাশ পাল দুর্গাদেবীর মুখাকৃতি রাগান্বিত করলেও, কৃতিম হাসির মাঝে তা ফুঁটিয়ে তুলেছেন। ১০ হাতে দুর্গা ত্রিশুল দিয়ে বধ করছেন যমদুত অশুরকে। আর ১০ হাতে দুর্গার ১০ চক্র লীলা ভঙ্গীতে নতুনন্ত আনার চেষ্টা করছেন শিল্পীরা। লীলা এবং গুনের বিষয়টি অত্যন্ত নিখঁতভাবে ধরা হয়েছে।
জেলা পূজা উৎযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক অর্নিবাণ পাল বলেন, ব্যাপক আনন্দ উদ্দিপনার মধ্য দিয়ে মানিকগঞ্জে সকল সম্প্রদায়ের লোকজন এ উৎসবে আনন্দ উল্লাস করে। পূজা উৎযাপন কমিটির উদ্যোগে একটি টিম সার্বক্ষনিক মন্দিরগুলো পরিদর্শন করবে। ইতোমধ্যে আমরা ৭টি উপজেলার মন্দিরের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করেছি। তবে এবার ৫০১টি মন্দিরে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ জানান, শারদীয় দুর্গোৎসবে আইন শৃঙ্খলা সুন্দর ও স্বাভাবিক রাখার জন্য প্রতিটি মন্দিরে পুলিশ, আনসার মোতায়ন করা হবে। মোবাইল টিম সার্বক্ষনিক মন্দিরগুলো পরিদর্শন করবে। শহরের এবং উপজেলার সব মন্দিরগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ একটি দেশ। আবহমানকাল থেকে আমাদের এ দেশে হিন্দু, মুসলমান বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজন মিলে মিশে বাস করে। কাজেই দুর্গা পূজাটি সার্বজনীন।
কিশোরগঞ্জে ৪০৩ মণ্ডপে দুর্গোৎসব
জেলা বার্তা পরিবেশক, কিশোরগঞ্জ
কিশোরগঞ্জে এবার ৪০৩টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। আসন্ন দুর্গপূজা উদযাপনের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলমের সভাপতিত্বে ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাজমুল ইসলাম সরকারের সঞ্চালনায় গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কালেক্টরেট সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন ডা. মো. মুজিবুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোস্তাক সরকার, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমএ আফজাল, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. গোলাম মোস্তফা, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ও হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলন, কালিবাড়ি পরিচালনা কমিটির সভাপতি বিজয় শংকর রায়, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রণব কুমার সরকার প্রমুখ। সভায় জানানো হয়, এবার জেলার ১৩টি উপজেলায় মোট ৪০৩টি মণ্ডপে পূজার আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে সার্বজনীন মণ্ডপ রয়েছে ৩৮১টি, পারিবারিক মণ্ডপ ২২টি।
সভায় পূজার সামগ্রিক আয়োজন, নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। এতে বিভিন্ন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও দপ্তরগুলোর কর্মকর্তাসহ পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।