বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ : একটি প্রকল্পের কাহিনী

রেলওয়ে বিভাগ প্রকল্পটি তৈরি করেছিল ১৬ বছর আগে। এর প্রাক-সমীক্ষা করতেই লেগে যায় পাঁচ বছর। আর একনেকে অনুমোদন হয় তারও আট বছর পর। এই প্রকল্পের পরামর্শক নিয়োগ করা হয়েছে গত সোমবার অর্থাৎ চূড়ান্ত অনুমোদনের তিন বছর পর।

কিন্তু এর কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০২৩ সালের জুন মাসে। অথচ এখনও এর কাজেই শুরু হয়নি। ২০০৫ সালে বগুড়া শহর থেকে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশন পর্যন্ত ৮৬ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পটি গ্রহণ করে রেলওয়ে।

২০১০ সালে এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি)’র অর্থায়নে প্রাক-সমীক্ষা করা হয়। অর্থ সংকটের কারণে দীর্ঘদিন আটকে ছিল প্রকল্পটি। ২০১৭ সালে ভারতের তৃতীয় লাইন অব ক্রেডিটের (এলওসি)’র অর্থায়নে রেলপথটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। প্রকল্পটি ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর একনেক সভায় অনুমোদন দেয়া হয়।

প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩ হাজার ১৪৬ কোটি টাকা ঋণ দেবে ভারত। বাকি ২ হাজার ৪৩৩ কোটি টাকার সরকারের ফান্ড থেকে ব্যয় হয়ে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা থেকে বগুড়ার দূরত্ব ১১২ কিলোমিটার কমে যাবে। রুট নকশা, জমি অধিগ্রহণ ও ঠিকাদার নিয়োগ শেষে ২০২৩ সালের প্রথম দিকে নির্মাণকাজ শুরু করা যাবে বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান।

এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক মো. আবু জাফর মিঞা সংবাদকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন অর্থায়ন নিশ্চিত না হওয়ার কারণে প্রকল্পটি আটকে ছিল। পরে ভারতের তৃতীয় এলওসির মাধ্যমে প্রকল্পের বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু এলওসির অর্থ ছাড়া ও পরামর্শ নিয়োগের টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করতে কিছু সময় গেছে।’

এছাড়া করোনাভাইরাসের কারণে এক বছর কোন কাজ করা যায়নি। এ সময় দাতা সংস্থারা ঢাকায় আসতে পারেনি। পরামর্শ প্রতিষ্ঠান আগামী এক বছরের মধ্যে রুটের নকশা চূড়ান্ত করা ও মূল ঠিকাদার নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করবে। এরপর ২০২৩ সালের প্রথম দিকে প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু করা যাবে বলে জানান তিনি।

প্রকল্প সূত্র জানায়, সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশন থেকে বগুড়া রেলাইন পর্যন্ত ৭২ কিলোমিটার মূল রেলপথ নির্মাণ করা হবে। এছাড়া কাহালু থেকে রানীরহাট পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার রেলপথসহ মোট ৮৪ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ রেললাইন তৈরি করা হবে। আড়াই কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হবে বগুড়া শহর থেকে বেলাইল পর্যন্ত। প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ৯৬০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ঢাকার সঙ্গে বগুড়া ও সিরাজগঞ্জের মধ্যে সরাসরি কোন রেলপথ না থাকায় উত্তরাঞ্চলের লালমনি এক্সপ্রেস ও অন্য আন্তঃনগর ট্রেনগুলোকে সান্তাহার জংশন, নাটোর ও পাবনার ঈশ্বরদী হয়ে প্রায় ১২০ কিলোমিটার পথ ঘুরে ঢাকায় আসতে হয়।

দ্বিগুণ পথ যেতে সময় ও অর্থের বেশি ব্যয় হয়। ট্রেনে বগুড়া থেকে দীর্ঘপথ ঘুরে ঢাকার দূরত্ব ৪০৫ কিলোমিটার। যানজট ছাড়া বগুড়া থেকে ঢাকায় বাসে যেতে সর্বোচ্চ সময় লাগে পাঁচ ঘণ্টা। অথচ ট্রেনে যেতে সময় ব্যয় হয় ১০-১২ ঘণ্টা। বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ নির্মাণ হলে ট্রেনে কম করে তিন ঘণ্টা সময় সাশ্রয় হবে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, ঢাকা-বগুড়ার বর্তমান দূরত্ব ৩২৪ কিলোমিটার। নতুন রেলপথ নির্মাণ হলে এই দূরত্ব কমে হবে ২১২ কিলোমিটার। ১১২ কিলোমিটার দূরত্ব কমে আসবে। প্রকল্পের আওতায় ডুয়েলগেজের দুটি রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা হয়। বগুড়া রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার পশ্চিমে ছোট বেলাইল এলাকা থেকে সিরাজগঞ্জের এম মনসুর আলী স্টেশন পর্যন্ত মূল রুট ৭২ কিলোমিটার এবং বগুড়ার কাহালু স্টেশন থেকে রাণীরহাট পর্যন্ত ১২ কিলোমিটারসহ মোট ৮৪ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ রেলপথ।

বগুড়া শহর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে রাণীরহাটে জংশন নির্মাণ করা হবে। এছাড়া বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রুটে শেরপুর, চাঁন্দাইকোনা, রায়গঞ্জ, কৃষাণদিয়া ও সদানন্দপুর স্টেশন স্থাপন করা হবে। প্রস্তাবিত ৮৪ কিলোমিটার রেলপথের জন্য ৯৬০ একর জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে বগুড়ায় ৫২ কিলোমিটার রেলপথের জন্য ৫১০ একর এবং সিরাজগঞ্জের ৩২ কিলোমিটারের জন্য ৪৫০ একর।

এ বিষয়ে রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘এ লাইনটি তৈরি উত্তরাঞ্চলের দীর্ঘদিনের দাবি। নতুন এ রেললাইনের মাধ্যমে সমগ্র উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার সহজ যোগাযোগ স্থাপিত হবে, সময় কমে যাবে। বর্তমান সরকার রেল ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে। বাংলাদেশের রেল ব্যবস্থা যমুনা সেতু দ্বারা বিভক্ত। পশ্চিমাঞ্চলে মিটারগেজ লাইন এবং পূর্বাঞ্চলে ব্রডগেজ লাইন। বর্তমান সরকার সারাদেশকে একইভাবে নিয়ে আসার উদ্যোগ নিয়েছে। এজন্য পর্যায়ক্রমে ডাবল লাইন করা হচ্ছে।’

রেলওয়ে সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে গত সোমবার ভারতীয় দুই প্রতিষ্ঠানকে পরামর্শক নিয়োগে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা, বিস্তারিত নকশা তৈরি, টেন্ডার প্রক্রিয়া এবং নির্মাণ তদারকি কার্যক্রমের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং ভারতীয় কনসালটেন্সি সার্ভিস রাইটস এবং আরভি অ্যাসোসিয়েটস আর্কিটেক্টস ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড কনসালটেন্টস প্রাইভেট লিমিটেডের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষে প্রকল্প পরিচালক মো. আবু জাফর মিঞা এবং কনসালটেন্সি সার্ভিসের পক্ষে ভারতের রাইটসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্জয় আগারওয়াল। ৯৭ কোটি টাকার বিনিময়ে আগামী ছয় মাসে প্রকল্পের বিস্তারিত সমীক্ষা করবে এ দুই প্রতিষ্ঠান। পরের সাত মাসে বিস্তারিত নকশা প্রণয়ন করবে। এরপর শুরু হবে দরপত্র আহ্বান প্রক্রিয়া।

এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক আবু জাফর মিঞা জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে রাইটস ইন্ডিয়া অ্যান্ড আরভি ইন্ডিয়া জয়েনভেঞ্চারের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। আগামী ১৩ মাসের মধ্যে স্টাডি, ডিজাইন অ্যান্ড টেন্ডার ডকুমেন্ট প্রিপারেশন করবে। সব মিলিয়ে এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে এসব প্রক্রিয়া শেষ করে কাজ শুরু করা যাবে। এ জন্য ডিপিপি সংশোধন করা লাগতে পারে। তখন ব্যয় বাড়তেও পারে আবার কমতেও পারে।

শনিবার, ০২ অক্টোবর ২০২১ , ১৭ আশ্বিন ১৪২৮ ২৩ সফর ১৪৪৩

বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ : একটি প্রকল্পের কাহিনী

ইবরাহীম মাহমুদ আকাশ

রেলওয়ে বিভাগ প্রকল্পটি তৈরি করেছিল ১৬ বছর আগে। এর প্রাক-সমীক্ষা করতেই লেগে যায় পাঁচ বছর। আর একনেকে অনুমোদন হয় তারও আট বছর পর। এই প্রকল্পের পরামর্শক নিয়োগ করা হয়েছে গত সোমবার অর্থাৎ চূড়ান্ত অনুমোদনের তিন বছর পর।

কিন্তু এর কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০২৩ সালের জুন মাসে। অথচ এখনও এর কাজেই শুরু হয়নি। ২০০৫ সালে বগুড়া শহর থেকে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশন পর্যন্ত ৮৬ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পটি গ্রহণ করে রেলওয়ে।

২০১০ সালে এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি)’র অর্থায়নে প্রাক-সমীক্ষা করা হয়। অর্থ সংকটের কারণে দীর্ঘদিন আটকে ছিল প্রকল্পটি। ২০১৭ সালে ভারতের তৃতীয় লাইন অব ক্রেডিটের (এলওসি)’র অর্থায়নে রেলপথটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। প্রকল্পটি ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর একনেক সভায় অনুমোদন দেয়া হয়।

প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩ হাজার ১৪৬ কোটি টাকা ঋণ দেবে ভারত। বাকি ২ হাজার ৪৩৩ কোটি টাকার সরকারের ফান্ড থেকে ব্যয় হয়ে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা থেকে বগুড়ার দূরত্ব ১১২ কিলোমিটার কমে যাবে। রুট নকশা, জমি অধিগ্রহণ ও ঠিকাদার নিয়োগ শেষে ২০২৩ সালের প্রথম দিকে নির্মাণকাজ শুরু করা যাবে বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান।

এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক মো. আবু জাফর মিঞা সংবাদকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন অর্থায়ন নিশ্চিত না হওয়ার কারণে প্রকল্পটি আটকে ছিল। পরে ভারতের তৃতীয় এলওসির মাধ্যমে প্রকল্পের বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু এলওসির অর্থ ছাড়া ও পরামর্শ নিয়োগের টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করতে কিছু সময় গেছে।’

এছাড়া করোনাভাইরাসের কারণে এক বছর কোন কাজ করা যায়নি। এ সময় দাতা সংস্থারা ঢাকায় আসতে পারেনি। পরামর্শ প্রতিষ্ঠান আগামী এক বছরের মধ্যে রুটের নকশা চূড়ান্ত করা ও মূল ঠিকাদার নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করবে। এরপর ২০২৩ সালের প্রথম দিকে প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু করা যাবে বলে জানান তিনি।

প্রকল্প সূত্র জানায়, সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশন থেকে বগুড়া রেলাইন পর্যন্ত ৭২ কিলোমিটার মূল রেলপথ নির্মাণ করা হবে। এছাড়া কাহালু থেকে রানীরহাট পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার রেলপথসহ মোট ৮৪ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ রেললাইন তৈরি করা হবে। আড়াই কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হবে বগুড়া শহর থেকে বেলাইল পর্যন্ত। প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ৯৬০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ঢাকার সঙ্গে বগুড়া ও সিরাজগঞ্জের মধ্যে সরাসরি কোন রেলপথ না থাকায় উত্তরাঞ্চলের লালমনি এক্সপ্রেস ও অন্য আন্তঃনগর ট্রেনগুলোকে সান্তাহার জংশন, নাটোর ও পাবনার ঈশ্বরদী হয়ে প্রায় ১২০ কিলোমিটার পথ ঘুরে ঢাকায় আসতে হয়।

দ্বিগুণ পথ যেতে সময় ও অর্থের বেশি ব্যয় হয়। ট্রেনে বগুড়া থেকে দীর্ঘপথ ঘুরে ঢাকার দূরত্ব ৪০৫ কিলোমিটার। যানজট ছাড়া বগুড়া থেকে ঢাকায় বাসে যেতে সর্বোচ্চ সময় লাগে পাঁচ ঘণ্টা। অথচ ট্রেনে যেতে সময় ব্যয় হয় ১০-১২ ঘণ্টা। বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ নির্মাণ হলে ট্রেনে কম করে তিন ঘণ্টা সময় সাশ্রয় হবে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, ঢাকা-বগুড়ার বর্তমান দূরত্ব ৩২৪ কিলোমিটার। নতুন রেলপথ নির্মাণ হলে এই দূরত্ব কমে হবে ২১২ কিলোমিটার। ১১২ কিলোমিটার দূরত্ব কমে আসবে। প্রকল্পের আওতায় ডুয়েলগেজের দুটি রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা হয়। বগুড়া রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার পশ্চিমে ছোট বেলাইল এলাকা থেকে সিরাজগঞ্জের এম মনসুর আলী স্টেশন পর্যন্ত মূল রুট ৭২ কিলোমিটার এবং বগুড়ার কাহালু স্টেশন থেকে রাণীরহাট পর্যন্ত ১২ কিলোমিটারসহ মোট ৮৪ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ রেলপথ।

বগুড়া শহর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে রাণীরহাটে জংশন নির্মাণ করা হবে। এছাড়া বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রুটে শেরপুর, চাঁন্দাইকোনা, রায়গঞ্জ, কৃষাণদিয়া ও সদানন্দপুর স্টেশন স্থাপন করা হবে। প্রস্তাবিত ৮৪ কিলোমিটার রেলপথের জন্য ৯৬০ একর জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে বগুড়ায় ৫২ কিলোমিটার রেলপথের জন্য ৫১০ একর এবং সিরাজগঞ্জের ৩২ কিলোমিটারের জন্য ৪৫০ একর।

এ বিষয়ে রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘এ লাইনটি তৈরি উত্তরাঞ্চলের দীর্ঘদিনের দাবি। নতুন এ রেললাইনের মাধ্যমে সমগ্র উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার সহজ যোগাযোগ স্থাপিত হবে, সময় কমে যাবে। বর্তমান সরকার রেল ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে। বাংলাদেশের রেল ব্যবস্থা যমুনা সেতু দ্বারা বিভক্ত। পশ্চিমাঞ্চলে মিটারগেজ লাইন এবং পূর্বাঞ্চলে ব্রডগেজ লাইন। বর্তমান সরকার সারাদেশকে একইভাবে নিয়ে আসার উদ্যোগ নিয়েছে। এজন্য পর্যায়ক্রমে ডাবল লাইন করা হচ্ছে।’

রেলওয়ে সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে গত সোমবার ভারতীয় দুই প্রতিষ্ঠানকে পরামর্শক নিয়োগে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা, বিস্তারিত নকশা তৈরি, টেন্ডার প্রক্রিয়া এবং নির্মাণ তদারকি কার্যক্রমের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং ভারতীয় কনসালটেন্সি সার্ভিস রাইটস এবং আরভি অ্যাসোসিয়েটস আর্কিটেক্টস ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড কনসালটেন্টস প্রাইভেট লিমিটেডের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষে প্রকল্প পরিচালক মো. আবু জাফর মিঞা এবং কনসালটেন্সি সার্ভিসের পক্ষে ভারতের রাইটসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্জয় আগারওয়াল। ৯৭ কোটি টাকার বিনিময়ে আগামী ছয় মাসে প্রকল্পের বিস্তারিত সমীক্ষা করবে এ দুই প্রতিষ্ঠান। পরের সাত মাসে বিস্তারিত নকশা প্রণয়ন করবে। এরপর শুরু হবে দরপত্র আহ্বান প্রক্রিয়া।

এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক আবু জাফর মিঞা জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে রাইটস ইন্ডিয়া অ্যান্ড আরভি ইন্ডিয়া জয়েনভেঞ্চারের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। আগামী ১৩ মাসের মধ্যে স্টাডি, ডিজাইন অ্যান্ড টেন্ডার ডকুমেন্ট প্রিপারেশন করবে। সব মিলিয়ে এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে এসব প্রক্রিয়া শেষ করে কাজ শুরু করা যাবে। এ জন্য ডিপিপি সংশোধন করা লাগতে পারে। তখন ব্যয় বাড়তেও পারে আবার কমতেও পারে।