নদী বাঁচাতে হবে, তা না হলে শ্যামল বাংলাদেশ থাকবে না’। উল্লেখ করে সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘নদীতে এত ব্রিজ করার দরকার কী? সেতু যত নির্মাণ করবেন তত নাব্যতা হারাবে। এখন থেকে সরকার সেতুর পরিবর্তে টানেলের দিকে জোর দিচ্ছে।’ তাই দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ সহজতর করতে সরকার দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় দ্বিতীয় পদ্মা সেতুর বদলে টানেল নির্মাণের কথা ভাবছে বলে জানান তিনি।
গতকাল ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক সেমিনারে এ কথা বলেন মন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এই সেমিনারের আয়োজন করে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটি।
সেমিনারে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পদ্মা সেতু একটা হয়েছে, এখন দাবি উঠেছে দৌলতদিয়ায় আরেকটি সেতু। দুটি সেতু হলে নদীর নাব্যতার কি হবে? এটা কিন্তু আমরা পরীক্ষা নিরীক্ষা করছি। কাজেই সেতু না করে আমরা আন্ডারপাস করার চিন্তা ভাবনা করছি। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় আমরা টানেল নির্মাণের চিন্তা ভাবনা করছি। ওইদিকে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ থেকে গাইবান্ধা পর্যন্ত আরেকটি টানেল নির্মাণের পরিকল্পনাও আমাদের রয়েছে।’
চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে দেশের প্রথম যে বঙ্গবন্ধু টানেল হচ্ছে, তার কাজ ৭৫ শতাংশ শেষ হয়েছে বলে অনুষ্ঠানে জানান সেতুমন্ত্রী কাদের। তিনি বলেন, ‘অনেক সেতু উদ্বোধন হয়েছে, আরও প্রায় ৫০টির মতো সেতু উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে।’ যশোর-খুলনা মহাসড়ক বারবার কেন নষ্ট হচ্ছে তা ভালোভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সংস্কার করার নির্দেশ দেন মন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, ‘রাস্তা করার পর রক্ষণাবেক্ষণ না হলে তার সুফল পাওয়া যাবে না।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ঢাকা-মাওয়ার মতো এক্সপ্রেসওয়ে ইউরোপের অনেক দেশেও নেই। প্রতিবেশী দেশ ভারতেও নেই। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের কথা উল্লেখ করে সড়কমন্ত্রী বলেন, ‘এ রকম এক্সপ্রেসওয়ে গাজীপুর থেকে টাঙ্গাইল, এলেঙ্গা থেকে রংপুর, রংপুর থেকে যাবে পঞ্চগড় একটা। আরেকটা বুড়িমাড়ী, এগুলো আমাদের পরিকল্পনা। এর কাজ চলছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘খুলনা-মোংলা-বাগেরহাট এগুলোও আমাদের কাজেরই অংশ। এখানে নতুন কোন পরিকল্পনার প্রয়োজন নেই। এগুলোর বাইরে ঢাকা-সিলেট চার লেইনের কাজ যত দ্রুত শেষ করা যায়, আরেকটা হচ্ছে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার চার লেইন। সেটাও প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। ওটাও দ্রুত শুরু করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। ফরিদপুর থেকে বরিশাল চার লেইন করার জন্য এডিবির সঙ্গে কথা হয়েছে।’
গত নির্বাচনে বিএনপির ভিশন-২০৩০ ঘোষণার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা হলো নির্বাচন সামনে রেখে পলিটিক্যালি স্ট্যান্টবাজি। ওটা বিবৃতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ আর আলোর মুখ দেখবে না। বিএনপি নির্বাচন করবে কী দিয়ে?
“আগামী বছর যখন এসব মেগা প্রকল্প উদ্বোধন হতে থাকবে, বিএনপি চোখে সর্ষে ফুল দেখবে। এমনিতেই নেতিবাচক রাজনীতি করে বিএনপি জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। নির্বাচন বর্জন করে আপনারা জনগণ থেকে আরও বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবেন।’
সেমিনারের স্বাগত বক্তব্যে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এবং উপ-কমিটির সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য মো. হোসেন মনসুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন আইইবির ঢাকা কেন্দ্রের সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার কাজী খায়রুল বাশার। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ইঞ্জিনিয়ার এ এফ এম সাইফুল আমিন।
শনিবার, ০২ অক্টোবর ২০২১ , ১৭ আশ্বিন ১৪২৮ ২৩ সফর ১৪৪৩
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
নদী বাঁচাতে হবে, তা না হলে শ্যামল বাংলাদেশ থাকবে না’। উল্লেখ করে সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘নদীতে এত ব্রিজ করার দরকার কী? সেতু যত নির্মাণ করবেন তত নাব্যতা হারাবে। এখন থেকে সরকার সেতুর পরিবর্তে টানেলের দিকে জোর দিচ্ছে।’ তাই দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ সহজতর করতে সরকার দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় দ্বিতীয় পদ্মা সেতুর বদলে টানেল নির্মাণের কথা ভাবছে বলে জানান তিনি।
গতকাল ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক সেমিনারে এ কথা বলেন মন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এই সেমিনারের আয়োজন করে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটি।
সেমিনারে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পদ্মা সেতু একটা হয়েছে, এখন দাবি উঠেছে দৌলতদিয়ায় আরেকটি সেতু। দুটি সেতু হলে নদীর নাব্যতার কি হবে? এটা কিন্তু আমরা পরীক্ষা নিরীক্ষা করছি। কাজেই সেতু না করে আমরা আন্ডারপাস করার চিন্তা ভাবনা করছি। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় আমরা টানেল নির্মাণের চিন্তা ভাবনা করছি। ওইদিকে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ থেকে গাইবান্ধা পর্যন্ত আরেকটি টানেল নির্মাণের পরিকল্পনাও আমাদের রয়েছে।’
চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে দেশের প্রথম যে বঙ্গবন্ধু টানেল হচ্ছে, তার কাজ ৭৫ শতাংশ শেষ হয়েছে বলে অনুষ্ঠানে জানান সেতুমন্ত্রী কাদের। তিনি বলেন, ‘অনেক সেতু উদ্বোধন হয়েছে, আরও প্রায় ৫০টির মতো সেতু উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে।’ যশোর-খুলনা মহাসড়ক বারবার কেন নষ্ট হচ্ছে তা ভালোভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সংস্কার করার নির্দেশ দেন মন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, ‘রাস্তা করার পর রক্ষণাবেক্ষণ না হলে তার সুফল পাওয়া যাবে না।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ঢাকা-মাওয়ার মতো এক্সপ্রেসওয়ে ইউরোপের অনেক দেশেও নেই। প্রতিবেশী দেশ ভারতেও নেই। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের কথা উল্লেখ করে সড়কমন্ত্রী বলেন, ‘এ রকম এক্সপ্রেসওয়ে গাজীপুর থেকে টাঙ্গাইল, এলেঙ্গা থেকে রংপুর, রংপুর থেকে যাবে পঞ্চগড় একটা। আরেকটা বুড়িমাড়ী, এগুলো আমাদের পরিকল্পনা। এর কাজ চলছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘খুলনা-মোংলা-বাগেরহাট এগুলোও আমাদের কাজেরই অংশ। এখানে নতুন কোন পরিকল্পনার প্রয়োজন নেই। এগুলোর বাইরে ঢাকা-সিলেট চার লেইনের কাজ যত দ্রুত শেষ করা যায়, আরেকটা হচ্ছে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার চার লেইন। সেটাও প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। ওটাও দ্রুত শুরু করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। ফরিদপুর থেকে বরিশাল চার লেইন করার জন্য এডিবির সঙ্গে কথা হয়েছে।’
গত নির্বাচনে বিএনপির ভিশন-২০৩০ ঘোষণার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা হলো নির্বাচন সামনে রেখে পলিটিক্যালি স্ট্যান্টবাজি। ওটা বিবৃতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ আর আলোর মুখ দেখবে না। বিএনপি নির্বাচন করবে কী দিয়ে?
“আগামী বছর যখন এসব মেগা প্রকল্প উদ্বোধন হতে থাকবে, বিএনপি চোখে সর্ষে ফুল দেখবে। এমনিতেই নেতিবাচক রাজনীতি করে বিএনপি জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। নির্বাচন বর্জন করে আপনারা জনগণ থেকে আরও বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবেন।’
সেমিনারের স্বাগত বক্তব্যে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এবং উপ-কমিটির সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য মো. হোসেন মনসুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন আইইবির ঢাকা কেন্দ্রের সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার কাজী খায়রুল বাশার। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ইঞ্জিনিয়ার এ এফ এম সাইফুল আমিন।