হ্যাকিং বেড়েছে

সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতায় মাসব্যাপী কর্মসূচি

সাইবার নিরাপত্তায় সচেতনতা বৃদ্ধিতে ‘সচেতন রই, সাইবার স্মার্ট হই’ স্লোগানে অক্টোবর মাসব্যাপী এক সচেতনতা কর্মসূচির আয়োজন করেছে সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা মাস বিষয়ক জাতীয় কমিটি। গতকাল ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে সিসিএ ফাউন্ডেশনের সাম্প্রতিক গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে সংগঠনটির উপদেষ্টা রাশনা ইমাম বলেন, ২০১৯-২০২০ সালে বাংলাদেশে সাইবার অপরাধ আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সামাজিক মাধ্যমসহ অন্যান্য অনলাইন অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং বা তথ্য চুরির ঘটনা বেড়েছে।

জরিপ থেকে এটিএম কার্ড হ্যাকিংয়ের মতো একটি নতুন আলামত শনাক্ত করা হয়। তিনি আরও বলেন, জরিপে সাইবার অপরাধের তুলনামূলক পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, প্রথম স্থানে রয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অন্যান্য অনলাইন অ্যাকাউন্ট হ্যাকিংয়ের ঘটনা, যার হার ২৮ দশমিক ৩১ শতাংশ। যেখানে ২০১৯ সালের প্রতিবেদনে এই হার ছিল ১৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ, যা এবারের তুলনায় প্রায় ১৩ শতাংশ কম ছিল। যদিও ২০১৯ সালের প্রতিবেদনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচারের ঘটনা ছিল ২২ দশমিক ৩৩ শতাংশ, কিন্তু এবার এ সংখ্যা কমে গিয়ে দাঁড়ায় ১৬ দশমিক ৩ শতাংশে।

সাইবার অপরাধের বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এদের মধ্যে বেশিরভাগ ভুক্তভোগীর বয়স ১৮-৩০ বছর এবং ভুক্তভোগীদের হার ৮৬ দশমিক ৯০ শতাংশ। বোঝা যাচ্ছে, দেশে সাইবার সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি সাইবার লিটারেসিও বাড়াতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে সভাপতি ও সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা বিষয়ক জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন, দেশে ক্রমেই নানা ধরনের প্রযুক্তি এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে। এই হার কেবল ভাবিয়েই তুলছে না, ভবিষ্যৎ নিয়ে জন্ম নিয়েছে নতুন শঙ্কা। জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম বলেন, স্বাস্থ্য-শিক্ষা-বিনোদন সব কিছুতেই মহাসড়ক হয়েছে ইন্টারনেট। কিন্তু এই মহাসড়কে দুর্ঘটনাও ঘটছে প্রতিনিয়ত। সড়কের সিগনাল সম্পর্কে না জানা বা বোঝার পাশাপাশি দুর্বৃত্তদের মাধ্যমেও দিন দিন এখানে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। অনেকেই জেনে এবং না জেনে সাইবার অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে।

আয়োজকরা জানান, পুরো মাসের কর্মসূচিকে চারটি সপ্তাহে ভাগ করে বিষয়ভিত্তিক সচেতনতার ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে থাকছে প্রথম সপ্তাহ (৪-৮ অক্টোবর), সাইবার স্মার্ট হই, দ্বিতীয় সপ্তাহ (১১-১৫ অক্টোবর), ফিশিং প্রতিরোধ, তৃতীয় সপ্তাহ (১৮-২২ অক্টোবর), সাইবার সিকিউরিটিতে ক্যারিয়ার এবং চতুর্থ সপ্তাহ (২৫-২৯ অক্টোবর), সবার আগে সাইবার নিরাপত্তা। এই চার সপ্তাহে বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক ওয়েবিনার, কর্মশালা, ক্যাম্পেইন আয়োজন থাকবে ঢাকাসহ সারাদেশে। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন রবির ভাইস প্রেসিডেন্ট সনজয় চক্রবর্তী, ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপিএবি’র সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হক।

শনিবার, ০২ অক্টোবর ২০২১ , ১৭ আশ্বিন ১৪২৮ ২৩ সফর ১৪৪৩

হ্যাকিং বেড়েছে

সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতায় মাসব্যাপী কর্মসূচি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

সাইবার নিরাপত্তায় সচেতনতা বৃদ্ধিতে ‘সচেতন রই, সাইবার স্মার্ট হই’ স্লোগানে অক্টোবর মাসব্যাপী এক সচেতনতা কর্মসূচির আয়োজন করেছে সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা মাস বিষয়ক জাতীয় কমিটি। গতকাল ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে সিসিএ ফাউন্ডেশনের সাম্প্রতিক গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে সংগঠনটির উপদেষ্টা রাশনা ইমাম বলেন, ২০১৯-২০২০ সালে বাংলাদেশে সাইবার অপরাধ আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সামাজিক মাধ্যমসহ অন্যান্য অনলাইন অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং বা তথ্য চুরির ঘটনা বেড়েছে।

জরিপ থেকে এটিএম কার্ড হ্যাকিংয়ের মতো একটি নতুন আলামত শনাক্ত করা হয়। তিনি আরও বলেন, জরিপে সাইবার অপরাধের তুলনামূলক পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, প্রথম স্থানে রয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অন্যান্য অনলাইন অ্যাকাউন্ট হ্যাকিংয়ের ঘটনা, যার হার ২৮ দশমিক ৩১ শতাংশ। যেখানে ২০১৯ সালের প্রতিবেদনে এই হার ছিল ১৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ, যা এবারের তুলনায় প্রায় ১৩ শতাংশ কম ছিল। যদিও ২০১৯ সালের প্রতিবেদনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচারের ঘটনা ছিল ২২ দশমিক ৩৩ শতাংশ, কিন্তু এবার এ সংখ্যা কমে গিয়ে দাঁড়ায় ১৬ দশমিক ৩ শতাংশে।

সাইবার অপরাধের বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এদের মধ্যে বেশিরভাগ ভুক্তভোগীর বয়স ১৮-৩০ বছর এবং ভুক্তভোগীদের হার ৮৬ দশমিক ৯০ শতাংশ। বোঝা যাচ্ছে, দেশে সাইবার সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি সাইবার লিটারেসিও বাড়াতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে সভাপতি ও সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা বিষয়ক জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন, দেশে ক্রমেই নানা ধরনের প্রযুক্তি এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে। এই হার কেবল ভাবিয়েই তুলছে না, ভবিষ্যৎ নিয়ে জন্ম নিয়েছে নতুন শঙ্কা। জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম বলেন, স্বাস্থ্য-শিক্ষা-বিনোদন সব কিছুতেই মহাসড়ক হয়েছে ইন্টারনেট। কিন্তু এই মহাসড়কে দুর্ঘটনাও ঘটছে প্রতিনিয়ত। সড়কের সিগনাল সম্পর্কে না জানা বা বোঝার পাশাপাশি দুর্বৃত্তদের মাধ্যমেও দিন দিন এখানে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। অনেকেই জেনে এবং না জেনে সাইবার অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে।

আয়োজকরা জানান, পুরো মাসের কর্মসূচিকে চারটি সপ্তাহে ভাগ করে বিষয়ভিত্তিক সচেতনতার ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে থাকছে প্রথম সপ্তাহ (৪-৮ অক্টোবর), সাইবার স্মার্ট হই, দ্বিতীয় সপ্তাহ (১১-১৫ অক্টোবর), ফিশিং প্রতিরোধ, তৃতীয় সপ্তাহ (১৮-২২ অক্টোবর), সাইবার সিকিউরিটিতে ক্যারিয়ার এবং চতুর্থ সপ্তাহ (২৫-২৯ অক্টোবর), সবার আগে সাইবার নিরাপত্তা। এই চার সপ্তাহে বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক ওয়েবিনার, কর্মশালা, ক্যাম্পেইন আয়োজন থাকবে ঢাকাসহ সারাদেশে। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন রবির ভাইস প্রেসিডেন্ট সনজয় চক্রবর্তী, ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপিএবি’র সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হক।