চট্টগ্রামের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ২২শ’ জন, যার বেশিরভাগ শিশু। তবে পরিস্থিতি মোকাবেলায় খাওয়ার স্যালাইনসহ যাবতীয় প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
কখনো ভ্যাপসা গরম, কখনো ঠাণ্ডা- চট্টগ্রামে ঋতু পরিবর্তনের এমন ছন্দ চলছে কিছুদিন ধরে। আবহাওয়ার খেয়ালি এ ছন্দে চট্টগ্রামে বেড়েছে ঠাণ্ডাজনিত ও পানিবাহিত রোগ। চিকিৎসকরা বলছেন, ঋতু বদলের কারণে প্রকৃতিতে এখন প্রচণ্ড গরম। এ কারণে এক সপ্তাহ ধরে পানিশূন্যতা ও পানিবাহিত রোগের সংখ্যা বাড়ছে।
গত এক সপ্তাহে চট্টগ্রাম বিভাগে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এমন রোগীর সংখ্যা ৭ হাজার ১৫ জন। যার মধ্যে চট্টগ্রামে ২ হাজার ২০০ জন, কক্সবাজারে ২ হাজার ৪২০ জন, ১ হাজার ৬০ জন, রাঙ্গামাটিতে ১৮ জন, ফেনীতে ৩৫৯ জন, নোয়াখালীতে ৫৩৬ জন, লক্ষ্মীপুরে ২৪৮ জন, কুমিল্লায় ৯৬ জন, চাঁদপুরে ৪২ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৭৮ জন।
চট্টগ্রাম জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, শুধুমাত্র গত এক সপ্তাহেই পানিবাহিত রোগ অর্থাৎ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ২০০ জন, যার বড় অংশই হচ্ছে শিশু। মোট আক্রান্তের মধ্যে ১ হাজার ৫৯১ জন সুস্থ হয়ে ওঠলেও বাকি ৬০৯ জন এখনও বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। যদিও সুখবর হচ্ছে, এখন পর্যন্ত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে কোন মৃত্যুর খবর নেই। এমনটিই প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
স্বাস্থ্য দপ্তরের হিসেবে দেখা যায়, চট্টগ্রামের ১১টি জেলায় চলতি মাসে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে প্রায় ২১ হাজার। তারমধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী পাওয়া গেছে কক্সবাজারে। গত এক সপ্তাহ এ জেলায় রোগী শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ৪২০ জন। আর চলতি মাসেও রোগী শনাক্তের রেকর্ড গড়েছে কক্সবাজার।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ঠাণ্ডাজনিত অনেক রোগের সঙ্গেই ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যাও ক্রমশ বেড়েই যায়। এ সময়টুকুতে প্রতিবছরেই এমন হয়ে থাকে। তবে এক্ষেত্রে বাঁচতে হলে অবশ্যই সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে শিশুদের প্রতি যতœশীল থাকতে হবে। পাতলা পায়খানা ও বমি শুরু হলে শিশুকে মুখে খাবার স্যালাইন বার বার খাওয়ানো ও মায়ের বুকের দুধও খাওয়াতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
এদিকে, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালেও গেল সপ্তাহ ধরে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। বিশেষ করে হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে পানিবাহিত এ রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়ছে। একই পরিস্থিতি চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালেও। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ দুই হাসপাতালেও গেল কিছুদিন ধরে ঠাণ্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা ক্রমই বাড়ছে।
চমেক হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের প্রধান ডা. জগদীশ দাশ বলেন, এই মৌসুমে সবসময় ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে শিশুরা ভর্তি হয়ে থাকে। এখনও তার বিকল্প কিছুই নেই। বেশ কিছুদিন ধরেই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
রবিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২১ , ১৮ আশ্বিন ১৪২৮ ২৪ সফর ১৪৪৩
চট্টগ্রাম ব্যুরো
চট্টগ্রামের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ২২শ’ জন, যার বেশিরভাগ শিশু। তবে পরিস্থিতি মোকাবেলায় খাওয়ার স্যালাইনসহ যাবতীয় প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
কখনো ভ্যাপসা গরম, কখনো ঠাণ্ডা- চট্টগ্রামে ঋতু পরিবর্তনের এমন ছন্দ চলছে কিছুদিন ধরে। আবহাওয়ার খেয়ালি এ ছন্দে চট্টগ্রামে বেড়েছে ঠাণ্ডাজনিত ও পানিবাহিত রোগ। চিকিৎসকরা বলছেন, ঋতু বদলের কারণে প্রকৃতিতে এখন প্রচণ্ড গরম। এ কারণে এক সপ্তাহ ধরে পানিশূন্যতা ও পানিবাহিত রোগের সংখ্যা বাড়ছে।
গত এক সপ্তাহে চট্টগ্রাম বিভাগে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এমন রোগীর সংখ্যা ৭ হাজার ১৫ জন। যার মধ্যে চট্টগ্রামে ২ হাজার ২০০ জন, কক্সবাজারে ২ হাজার ৪২০ জন, ১ হাজার ৬০ জন, রাঙ্গামাটিতে ১৮ জন, ফেনীতে ৩৫৯ জন, নোয়াখালীতে ৫৩৬ জন, লক্ষ্মীপুরে ২৪৮ জন, কুমিল্লায় ৯৬ জন, চাঁদপুরে ৪২ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৭৮ জন।
চট্টগ্রাম জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, শুধুমাত্র গত এক সপ্তাহেই পানিবাহিত রোগ অর্থাৎ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ২০০ জন, যার বড় অংশই হচ্ছে শিশু। মোট আক্রান্তের মধ্যে ১ হাজার ৫৯১ জন সুস্থ হয়ে ওঠলেও বাকি ৬০৯ জন এখনও বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। যদিও সুখবর হচ্ছে, এখন পর্যন্ত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে কোন মৃত্যুর খবর নেই। এমনটিই প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
স্বাস্থ্য দপ্তরের হিসেবে দেখা যায়, চট্টগ্রামের ১১টি জেলায় চলতি মাসে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে প্রায় ২১ হাজার। তারমধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী পাওয়া গেছে কক্সবাজারে। গত এক সপ্তাহ এ জেলায় রোগী শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ৪২০ জন। আর চলতি মাসেও রোগী শনাক্তের রেকর্ড গড়েছে কক্সবাজার।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ঠাণ্ডাজনিত অনেক রোগের সঙ্গেই ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যাও ক্রমশ বেড়েই যায়। এ সময়টুকুতে প্রতিবছরেই এমন হয়ে থাকে। তবে এক্ষেত্রে বাঁচতে হলে অবশ্যই সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে শিশুদের প্রতি যতœশীল থাকতে হবে। পাতলা পায়খানা ও বমি শুরু হলে শিশুকে মুখে খাবার স্যালাইন বার বার খাওয়ানো ও মায়ের বুকের দুধও খাওয়াতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
এদিকে, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালেও গেল সপ্তাহ ধরে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। বিশেষ করে হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে পানিবাহিত এ রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়ছে। একই পরিস্থিতি চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালেও। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ দুই হাসপাতালেও গেল কিছুদিন ধরে ঠাণ্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা ক্রমই বাড়ছে।
চমেক হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের প্রধান ডা. জগদীশ দাশ বলেন, এই মৌসুমে সবসময় ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে শিশুরা ভর্তি হয়ে থাকে। এখনও তার বিকল্প কিছুই নেই। বেশ কিছুদিন ধরেই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।