বিরামপুর প্রাণিসম্পদ অফিসে নানা অনিয়ম

দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলার প্রাণিসম্পদ অফিস দুর্নীতির আখরায় পরিণত হয়েছে। অফিস সুত্রে জানা গেছে, করোনাকালীণ ক্ষতিগ্রস্থ খামারিদের জন্য সরকার প্রণোদনার যে অর্থ বরাদ্দ দিয়েছিলো তা প্রকৃত ডেইরি খামারীদের অনেক কে বাদ দিয়ে যারা খামারি নয় তাদের কে খামারি করে তালিকা পাঠিয়েছে এবং ঘুস গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে স্ট্যাফদের বিরুদ্ধে। বিরামপুর প্রাণিসম্পদ অফিসার ইদ্রীস আলীর সঙ্গে অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনিয়ম হয়েছে তবে আমি অনিয়ম করি নাই। প্রণোদনার টাকা দেয়ার কথা বলে খামারী কিংবা ভুয়া খামারির নিকট কোন প্রকার উৎকোচ গ্রহণ করি নাই। তবে আমার স্ট্যাফদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ পাওয়া গেছে কিন্তু ব্যবস্থা নিতে পারছি না। খামারীর তালিকা চাইলে প্রকৃত খামারির তালিকা দিতে পারবো না, কতজনকে প্রণোদনার অর্থ দিয়েছেন, তালিকা কীভাবে কাদের দ্বারা করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিরামপুর উপজেলা ৭নং ইউনিয়নে ৭জন এল,এস,পি মাঠ পরিদর্শক দ্বারা ৭নং ইউনিয়নের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। পৌরসভার মধ্যে কোন মাঠকর্মী পরিদর্শক নাই, অন্যদের কে দিয়ে তালিকা করা হয়েছে।

মুকুন্দপুর ইউনিয়নের এল,এস,পি মাঠ পরিদর্শক পলাশের বিরুদ্ধে ভুয়া খামারির তালিকা তৈরি ও উৎকোচের টাকা গ্রহণের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করেন। পলাশের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। প্রাণিসম্পদ অফিসার ইদ্রীস আলী বলেন, খামারিদের তালিকা তৈরির অনিয়ম হয়েছে কিনা উপজেলায় কতজন ডেইরি খামারি আছে এগুলো দেখার দায়িত্ব সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা. ফারহানার। এ জন্য সরকার তাকে একটি মটর বাইক বরাদ্দ দিয়েছে। তেল খরচ নেয় কিন্তু দায়িত্ব পালন যদি ঠিকমতো না করে। ডা. ফারহানা ইসলাম জুম্মির সঙ্গে কথা বললে সে জানায়, আমি মটর বাইক পেয়েছি চালাতে পারিনা, অফিসে রাখলে চুরি হতে পারে। তাই বাইকটি বাড়িতে নিয়ে রেখেছি। চালাতে পারেননা, তেল খরচ নেন কেন? সে বলে , যে টাকা পাই তার চেয়ে বেশি টাকা খরচ হয়, আমার ছোট ভাই থাকলে তাকে দিয়ে মটর বাইক চালিয়ে এবং কখনো অন্য যানবাহনে চড়ে মাঠ পরিদর্শনে যাই। এতে যা পাই তার চেয়ে বেশি খরচ হয়। অফিস কক্ষ্যে কথা বলার সময় দিওর ইউনিয়নের জলকামড়া গ্রামের নাহিদের মা আলেয়া বেগম অভিযোগ করেন তার আটটি গরু, ৭২টি হাঁস, ৬০টি মুরগি আছে কিন্তু সফল খামারির তালিকা নাই, প্রণোদনার টাকা পাইনি। অথচ যার গরু নাই অন্যের গরু দেখায়ে প্রণোদনার টাকা পেয়েছে বলে টিএলও ইদ্রীস আলী নিজেই স্বীকার করেছে।

বিরামপুর উপজেলায় ১৩শত দুগ্ধ খামারি প্রণোদনার টাকা নেয় অধিকাংশ খামারি নয় বলে জানাগেছে। এ ছাড়াও খামারি আলেয়া বেগম অভিযোগ করে যে প্রাণিসম্পদ অফিসে ঔষধ নাই। ছাগল, গরু, হাঁস, মুরগির ঔষধ বাহির থেকে কিনতে হয়। ঔষধ সংকটের কথা টিএলও স্বীকার করেছে।

রবিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২১ , ১৮ আশ্বিন ১৪২৮ ২৪ সফর ১৪৪৩

বিরামপুর প্রাণিসম্পদ অফিসে নানা অনিয়ম

প্রতিনিধি বিরামপুর

দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলার প্রাণিসম্পদ অফিস দুর্নীতির আখরায় পরিণত হয়েছে। অফিস সুত্রে জানা গেছে, করোনাকালীণ ক্ষতিগ্রস্থ খামারিদের জন্য সরকার প্রণোদনার যে অর্থ বরাদ্দ দিয়েছিলো তা প্রকৃত ডেইরি খামারীদের অনেক কে বাদ দিয়ে যারা খামারি নয় তাদের কে খামারি করে তালিকা পাঠিয়েছে এবং ঘুস গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে স্ট্যাফদের বিরুদ্ধে। বিরামপুর প্রাণিসম্পদ অফিসার ইদ্রীস আলীর সঙ্গে অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনিয়ম হয়েছে তবে আমি অনিয়ম করি নাই। প্রণোদনার টাকা দেয়ার কথা বলে খামারী কিংবা ভুয়া খামারির নিকট কোন প্রকার উৎকোচ গ্রহণ করি নাই। তবে আমার স্ট্যাফদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ পাওয়া গেছে কিন্তু ব্যবস্থা নিতে পারছি না। খামারীর তালিকা চাইলে প্রকৃত খামারির তালিকা দিতে পারবো না, কতজনকে প্রণোদনার অর্থ দিয়েছেন, তালিকা কীভাবে কাদের দ্বারা করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিরামপুর উপজেলা ৭নং ইউনিয়নে ৭জন এল,এস,পি মাঠ পরিদর্শক দ্বারা ৭নং ইউনিয়নের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। পৌরসভার মধ্যে কোন মাঠকর্মী পরিদর্শক নাই, অন্যদের কে দিয়ে তালিকা করা হয়েছে।

মুকুন্দপুর ইউনিয়নের এল,এস,পি মাঠ পরিদর্শক পলাশের বিরুদ্ধে ভুয়া খামারির তালিকা তৈরি ও উৎকোচের টাকা গ্রহণের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করেন। পলাশের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। প্রাণিসম্পদ অফিসার ইদ্রীস আলী বলেন, খামারিদের তালিকা তৈরির অনিয়ম হয়েছে কিনা উপজেলায় কতজন ডেইরি খামারি আছে এগুলো দেখার দায়িত্ব সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা. ফারহানার। এ জন্য সরকার তাকে একটি মটর বাইক বরাদ্দ দিয়েছে। তেল খরচ নেয় কিন্তু দায়িত্ব পালন যদি ঠিকমতো না করে। ডা. ফারহানা ইসলাম জুম্মির সঙ্গে কথা বললে সে জানায়, আমি মটর বাইক পেয়েছি চালাতে পারিনা, অফিসে রাখলে চুরি হতে পারে। তাই বাইকটি বাড়িতে নিয়ে রেখেছি। চালাতে পারেননা, তেল খরচ নেন কেন? সে বলে , যে টাকা পাই তার চেয়ে বেশি টাকা খরচ হয়, আমার ছোট ভাই থাকলে তাকে দিয়ে মটর বাইক চালিয়ে এবং কখনো অন্য যানবাহনে চড়ে মাঠ পরিদর্শনে যাই। এতে যা পাই তার চেয়ে বেশি খরচ হয়। অফিস কক্ষ্যে কথা বলার সময় দিওর ইউনিয়নের জলকামড়া গ্রামের নাহিদের মা আলেয়া বেগম অভিযোগ করেন তার আটটি গরু, ৭২টি হাঁস, ৬০টি মুরগি আছে কিন্তু সফল খামারির তালিকা নাই, প্রণোদনার টাকা পাইনি। অথচ যার গরু নাই অন্যের গরু দেখায়ে প্রণোদনার টাকা পেয়েছে বলে টিএলও ইদ্রীস আলী নিজেই স্বীকার করেছে।

বিরামপুর উপজেলায় ১৩শত দুগ্ধ খামারি প্রণোদনার টাকা নেয় অধিকাংশ খামারি নয় বলে জানাগেছে। এ ছাড়াও খামারি আলেয়া বেগম অভিযোগ করে যে প্রাণিসম্পদ অফিসে ঔষধ নাই। ছাগল, গরু, হাঁস, মুরগির ঔষধ বাহির থেকে কিনতে হয়। ঔষধ সংকটের কথা টিএলও স্বীকার করেছে।