নওগাঁর মহাদেবপুরে বিভিন্ন গ্রামীণ সড়কের দু’ধারে গত একমাসে স্বেচ্ছাশ্রমে ১৪ হাজার তালবীজ রোপণ করেছেন গেছোমামা সামসুদ্দিন মন্ডল (৬০)। উপজেলার সদর ইউনিয়নের দাউল বারবাকপুর গ্রামের বাসিন্দা সামসুদ্দিন মন্ডল জানান, তার নিজের তাল গাছ থেকে পরিপক্ক তাল নামিয়ে জমা করে রাখেন। কয়েকদিনে তালগুলো ভালভাবে পেকে নরম হয়। এরপর সেগুলো থেকে একটি একটি করে আঁটি ভাগ করেন। জমিতে পলিথিনের বেড তৈরি করে মাটি ও প্রয়োজনীয় জৈব সার প্রয়োগ করেন। তারপর সেই বেডে তালের আঁটিগুলো সাজিয়ে রাখেন। দু’এক সপ্তাহেই তালের আঁটি থেকে গাছের ভ্রুণ বেরিয়ে আসে। ভ্রুণ একটু বড় হলে সেগুলো রিক্সাভ্যানে করে বিভিন্ন রাস্তায় নিয়ে গিয়ে দুপাশে সামান্য গর্ত করে রোপণ করেন। কখনো এসব কাজ নিজে করেন। আবার কখনো শ্রমিক নিয়োগ করে করান। গত একমাসে তিনি তার গ্রামের পাশে দাউল বারবাকপুর থেকে কুসুমশহর পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার, আলতাদীঘি পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার ও তেতুলপুকুর থেকে হাসানপুরের মোড় পর্যন্ত ২ কিলোমিটার সড়কে ৭ হাজার তালবীজ রোপণ করেন। এছাড়া উপজেলা আনসার ভিডিপি অফিসারকে দিয়েছেন ৪ হাজার বীজ ও উপজেলা বন কর্মকর্তাকে দিয়েছেন ৩ হাজার বীজ। তারাও এসব স্বেচ্ছাশ্রমে রোপণ করেন। গেছোমামা সামসুদ্দিন জানান, সরকার সারাদেশে বজ্রপাতরোধে ব্যাপক তালগাছ রোপণের ঘোষণা দিয়েছেন। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা, এলাকার মানুষকে বজ্রপাতের হাত থেকে রক্ষা করতে ও সর্বোপরি সরকারকে সহযোগিতা করতে তিনি এসব তালবীজ রোপণ করেছেন। ১৯৮৩ সাল থেকে সামসুদ্দিন মন্ডল স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে গাছ লাগিয়ে আসছেন। এরআগে বিভিন্ন সড়ক, বাঁধ, সরকারি অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রভৃতি স্থানে ১৩ লাখ গাছ লাগানোর জন্য ২০০৮ সালে এটিএন বাংলার সাদা মনের মানুষ নির্বাচিত হন। এছাড়া তিনি ২০১৩ সালে জাতীয় পর্যায়ে ফলদ বৃক্ষ রোপণ পুরস্কার ও ২০১৬ সালে বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৮৫ সালে দৈনিক বার্তায় প্রকাশিত তার ৭ লাখ বৃক্ষ রোপণের প্রতিবেদনে সাংবাদিক কিউ. এম. সাঈদ টিটো তাকে গেছোমামা নামে অভিহিত করলে তখন থেকে স্থানীয়রা তাকে ওই নামেই ডাকা শুরু করেন।
সোমবার, ০৪ অক্টোবর ২০২১ , ১৯ আশ্বিন ১৪২৮ ২৫ সফর ১৪৪৩
প্রতিনিধি, মহাদেবপুর (নওগাঁ)
নওগাঁর মহাদেবপুরে বিভিন্ন গ্রামীণ সড়কের দু’ধারে গত একমাসে স্বেচ্ছাশ্রমে ১৪ হাজার তালবীজ রোপণ করেছেন গেছোমামা সামসুদ্দিন মন্ডল (৬০)। উপজেলার সদর ইউনিয়নের দাউল বারবাকপুর গ্রামের বাসিন্দা সামসুদ্দিন মন্ডল জানান, তার নিজের তাল গাছ থেকে পরিপক্ক তাল নামিয়ে জমা করে রাখেন। কয়েকদিনে তালগুলো ভালভাবে পেকে নরম হয়। এরপর সেগুলো থেকে একটি একটি করে আঁটি ভাগ করেন। জমিতে পলিথিনের বেড তৈরি করে মাটি ও প্রয়োজনীয় জৈব সার প্রয়োগ করেন। তারপর সেই বেডে তালের আঁটিগুলো সাজিয়ে রাখেন। দু’এক সপ্তাহেই তালের আঁটি থেকে গাছের ভ্রুণ বেরিয়ে আসে। ভ্রুণ একটু বড় হলে সেগুলো রিক্সাভ্যানে করে বিভিন্ন রাস্তায় নিয়ে গিয়ে দুপাশে সামান্য গর্ত করে রোপণ করেন। কখনো এসব কাজ নিজে করেন। আবার কখনো শ্রমিক নিয়োগ করে করান। গত একমাসে তিনি তার গ্রামের পাশে দাউল বারবাকপুর থেকে কুসুমশহর পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার, আলতাদীঘি পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার ও তেতুলপুকুর থেকে হাসানপুরের মোড় পর্যন্ত ২ কিলোমিটার সড়কে ৭ হাজার তালবীজ রোপণ করেন। এছাড়া উপজেলা আনসার ভিডিপি অফিসারকে দিয়েছেন ৪ হাজার বীজ ও উপজেলা বন কর্মকর্তাকে দিয়েছেন ৩ হাজার বীজ। তারাও এসব স্বেচ্ছাশ্রমে রোপণ করেন। গেছোমামা সামসুদ্দিন জানান, সরকার সারাদেশে বজ্রপাতরোধে ব্যাপক তালগাছ রোপণের ঘোষণা দিয়েছেন। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা, এলাকার মানুষকে বজ্রপাতের হাত থেকে রক্ষা করতে ও সর্বোপরি সরকারকে সহযোগিতা করতে তিনি এসব তালবীজ রোপণ করেছেন। ১৯৮৩ সাল থেকে সামসুদ্দিন মন্ডল স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে গাছ লাগিয়ে আসছেন। এরআগে বিভিন্ন সড়ক, বাঁধ, সরকারি অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রভৃতি স্থানে ১৩ লাখ গাছ লাগানোর জন্য ২০০৮ সালে এটিএন বাংলার সাদা মনের মানুষ নির্বাচিত হন। এছাড়া তিনি ২০১৩ সালে জাতীয় পর্যায়ে ফলদ বৃক্ষ রোপণ পুরস্কার ও ২০১৬ সালে বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৮৫ সালে দৈনিক বার্তায় প্রকাশিত তার ৭ লাখ বৃক্ষ রোপণের প্রতিবেদনে সাংবাদিক কিউ. এম. সাঈদ টিটো তাকে গেছোমামা নামে অভিহিত করলে তখন থেকে স্থানীয়রা তাকে ওই নামেই ডাকা শুরু করেন।