ডুমুরতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়

নিম্নœমানের সামগ্রীতে চলছে শৌচাগার নির্মাণ

ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে ১৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ডুমুরতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শৌচাগার নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নিম্নœমানের ইট, বালুসহ নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। নির্মাণাধীন ভবনটির ব্যয় মূল্য বা কিভাবে করা হবে তাও জানেন না বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটিসহ এলাকার কেউ। এমনকি কাজটির তদারকিতে কেউ নেই। ঠিকাদার তার ইচ্ছা মোতাবেক কাজ করে যাচ্ছেন। এদিকে কাজ তদারকির প্রশ্নে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তর ও অন্য দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান দায় এড়াতে রশি টানাটানি করছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পিডিবি গণস্বাস্থ্য প্যাকেজে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় ১ কোটি ২৪ লাখ ৭৮ হাজার ৮৭৭ টাকা ব্যয়ে সাতটি কাজের বরাদ্দ হয়েছে। এরমধ্যে সুন্দরপুর-দুর্গাপুর ইউনিয়নের ডুমুরতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৩ লাখ টাকার একটি দুই তলা বিশিষ্ট শৌচাগার ভবনের কাজটি চলমান। কাজটি পেয়েছেন ঝিনাইদহের ঠিকাদার মিজানুর রহমান মাসুম। কিন্তু এ কাজের সাব ঠিকাদার হিসাবে নির্মাণ কাজটি করছেন আব্দুস সালাম নামে ঠিকাদার। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি তিনি একই টেন্ডারের তত্ত্বিপুর স্কুলের কাজে নিম্নœমানের ইট খোয়া ব্যবহার করতে গিয়ে এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়েন। কিন্তু সেই স্থানের ইট খোয়া তুলে এনেই তিনি আবার ডুমুরতলা বিদ্যালয়ের শৌচাগারের কাজ শুরু করেন। এতে এ এলাকার লোকজনও প্রশ্ন তুলেছেন। তবে তারা তদারকির দায়িত্বেকে আছেন তা খুঁজে পাচ্ছেন না। বর্তমানে এ কাজটি চলমান থাকলেও সেখানে জনস্বাস্থ্য বা বিদ্যালয়ের কেউই দেখছেন না। স্কুলের পাশর্^বর্তী এক ব্যক্তি জানান, ঠিকাদার ও হেড মিস্ত্রির নির্দেশনা মোতাবেকই কাজ চলছে । এর বেশি কিছু আমরা জানিনা বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমান জানান, একদিন ঠিকাদার এসে আমার কাছে শুধুমাত্র কাজের জায়গাটা দেখিয়ে দিতে বলেন। তবে কত টাকার কাজ বা কোন সিডিউলের কোন কপি আমার কাছে দেয়া হয়নি। কেউ কাজ তদারকি ও করছেন না।

স্কুল কমিটির সভাপতি আনছার আলী জানান, প্রধান শিক্ষকের মুখে শুনেছি, স্কুলের শৌচাগার নির্মাণের কাজ চলছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার বা জনস্বাস্থ্য অফিস থেকে আমাকে কিছুই জানাননি। সে কারণে ওই কাজের দেখভাল বা তদারকি করতে পারবো কিনা তা আমারও জানা নেই। কালীগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলে অফিসের কর্মকর্তা জেসমিন আরা জানান, কাজটির বরাদ্দ পেয়েছেন ঝিনাইদহের ঠিকাদার মিজানুর রহমান মাসুম। তবে তার পরিবর্তে কাজটি কে করছেন সেটা আমার দেখার বিষয় নহে। কাজের ইট খোয়া নিম্নœমানের বিষয়ে বলেন, ঠিকাদার অনেক কষ্ট করে অন্য একটি ঝামেলাপূর্ণ কাজের সাইট থেকে ওই ইট খোয়া তুলে এনেছেন শুনেছি। যে কারনে ইট খোয়া একটু কেমন দেখা যাচ্ছে। তবে শুনেছি তা মানসম্মত। এ নিয়ে এলাকাবাসীর অভিযোগ উঠছে শুনে বলেন, খোঁজ নিয়ে নিম্নœমানের কাজ হলে ঠিকাদারকে বলবেন বলে তিনি অনেকটা এড়িয়ে যান। এ বিষয়ে কাজের সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার আব্দুস সালাম মুঠোফোনে জানান, কাজে কোন অনিয়ম করা হচ্ছে না। আর এ কাজের ইস্টিমেট বা কোন কিছু জানতে হলে আপনারা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী কর্মকর্তা জেসমিন আরার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন বলে জানান। এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিনা আক্তার বানু মুঠোফোনে জানান, অনিয়মের কথা আমাকে কেউ জানায়নি। এ কাজ গুলো জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলের হলেও অর্থ তার দপ্তরের। ফলে অবশ্যই বিষয়টি খোঁজ নেবো।

মঙ্গলবার, ০৫ অক্টোবর ২০২১ , ২০ আশ্বিন ১৪২৮ ২৬ সফর ১৪৪৩

ডুমুরতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়

নিম্নœমানের সামগ্রীতে চলছে শৌচাগার নির্মাণ

প্রতিনিধি, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ)

image

কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) : স্কুল ভবনের সামনে স্তূপ করে রাখা নিম্নমানের সামগ্রী -সংবাদ

ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে ১৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ডুমুরতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শৌচাগার নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নিম্নœমানের ইট, বালুসহ নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। নির্মাণাধীন ভবনটির ব্যয় মূল্য বা কিভাবে করা হবে তাও জানেন না বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটিসহ এলাকার কেউ। এমনকি কাজটির তদারকিতে কেউ নেই। ঠিকাদার তার ইচ্ছা মোতাবেক কাজ করে যাচ্ছেন। এদিকে কাজ তদারকির প্রশ্নে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তর ও অন্য দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান দায় এড়াতে রশি টানাটানি করছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পিডিবি গণস্বাস্থ্য প্যাকেজে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় ১ কোটি ২৪ লাখ ৭৮ হাজার ৮৭৭ টাকা ব্যয়ে সাতটি কাজের বরাদ্দ হয়েছে। এরমধ্যে সুন্দরপুর-দুর্গাপুর ইউনিয়নের ডুমুরতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৩ লাখ টাকার একটি দুই তলা বিশিষ্ট শৌচাগার ভবনের কাজটি চলমান। কাজটি পেয়েছেন ঝিনাইদহের ঠিকাদার মিজানুর রহমান মাসুম। কিন্তু এ কাজের সাব ঠিকাদার হিসাবে নির্মাণ কাজটি করছেন আব্দুস সালাম নামে ঠিকাদার। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি তিনি একই টেন্ডারের তত্ত্বিপুর স্কুলের কাজে নিম্নœমানের ইট খোয়া ব্যবহার করতে গিয়ে এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়েন। কিন্তু সেই স্থানের ইট খোয়া তুলে এনেই তিনি আবার ডুমুরতলা বিদ্যালয়ের শৌচাগারের কাজ শুরু করেন। এতে এ এলাকার লোকজনও প্রশ্ন তুলেছেন। তবে তারা তদারকির দায়িত্বেকে আছেন তা খুঁজে পাচ্ছেন না। বর্তমানে এ কাজটি চলমান থাকলেও সেখানে জনস্বাস্থ্য বা বিদ্যালয়ের কেউই দেখছেন না। স্কুলের পাশর্^বর্তী এক ব্যক্তি জানান, ঠিকাদার ও হেড মিস্ত্রির নির্দেশনা মোতাবেকই কাজ চলছে । এর বেশি কিছু আমরা জানিনা বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমান জানান, একদিন ঠিকাদার এসে আমার কাছে শুধুমাত্র কাজের জায়গাটা দেখিয়ে দিতে বলেন। তবে কত টাকার কাজ বা কোন সিডিউলের কোন কপি আমার কাছে দেয়া হয়নি। কেউ কাজ তদারকি ও করছেন না।

স্কুল কমিটির সভাপতি আনছার আলী জানান, প্রধান শিক্ষকের মুখে শুনেছি, স্কুলের শৌচাগার নির্মাণের কাজ চলছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার বা জনস্বাস্থ্য অফিস থেকে আমাকে কিছুই জানাননি। সে কারণে ওই কাজের দেখভাল বা তদারকি করতে পারবো কিনা তা আমারও জানা নেই। কালীগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলে অফিসের কর্মকর্তা জেসমিন আরা জানান, কাজটির বরাদ্দ পেয়েছেন ঝিনাইদহের ঠিকাদার মিজানুর রহমান মাসুম। তবে তার পরিবর্তে কাজটি কে করছেন সেটা আমার দেখার বিষয় নহে। কাজের ইট খোয়া নিম্নœমানের বিষয়ে বলেন, ঠিকাদার অনেক কষ্ট করে অন্য একটি ঝামেলাপূর্ণ কাজের সাইট থেকে ওই ইট খোয়া তুলে এনেছেন শুনেছি। যে কারনে ইট খোয়া একটু কেমন দেখা যাচ্ছে। তবে শুনেছি তা মানসম্মত। এ নিয়ে এলাকাবাসীর অভিযোগ উঠছে শুনে বলেন, খোঁজ নিয়ে নিম্নœমানের কাজ হলে ঠিকাদারকে বলবেন বলে তিনি অনেকটা এড়িয়ে যান। এ বিষয়ে কাজের সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার আব্দুস সালাম মুঠোফোনে জানান, কাজে কোন অনিয়ম করা হচ্ছে না। আর এ কাজের ইস্টিমেট বা কোন কিছু জানতে হলে আপনারা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী কর্মকর্তা জেসমিন আরার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন বলে জানান। এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিনা আক্তার বানু মুঠোফোনে জানান, অনিয়মের কথা আমাকে কেউ জানায়নি। এ কাজ গুলো জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলের হলেও অর্থ তার দপ্তরের। ফলে অবশ্যই বিষয়টি খোঁজ নেবো।