২৪ হাজার মানুষের চিকিৎসক একজন

কুড়িগ্রামের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক সংকট : রোগীর চাপে দিশেহারা স্বাস্থ্যবিভাগ

কুড়িগ্রামে হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক ও নার্স সংকটে রোগীদের সেবা দিতে হিমসিম খাচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। অধিক রোগীর চাপে হাসপাতালগুলোতে শৃংখলা ফিরিয়ে আনা যাচ্ছে না। ফলে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই হাসপাতালের কড়িডোর, বারান্দাসহ রোগীদের কক্ষে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আউডটডোর রোগীর চাপে ডাক্তারদের চেম্বারগুলো যেন হাটবাজারে পরিণত হয়। জনসংখ্যার তুলনায় চিকিৎসক কম থাকায় এ বেহাল অবস্থা। জানা গেছে, কুড়িগ্রামে প্রায় ২৪ হাজার মানুষের জন্য একজন চিকিৎসক এবং সাত হাজার মানুষের জন্য একজন নার্স রয়েছে। এছাড়াও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাবে জটিল ও কঠিন রোগের চিকিৎসা করতে অধিক ব্যয়ে যেতে হচ্ছে রংপুর-ঢাকাসহ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে।

সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানায়, কুড়িগ্রাম জেলায় একটি করে ২৫০ শয্যা, ৫০শয্যা এবং ৩১শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল রয়েছে। এতে চাহিদা রয়েছে ২০১ চিকিৎসকের। কিন্তু আছেন ৯৫জন । শূন্যপদ রয়েছে ১০৬টি। এদের মধ্যে ৮জন চিকিৎসক ডেপুটেশনে জেনারেল হাসপাতাল এবং জেলার বাইরে রয়েছেন। নার্সের ৩৮১টি পদের বিপরীতে রয়েছে ৩৩২জন। এছাড়াও সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৮জন চিকিৎসকের বিপরীতে আছে ৭জন। কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ৪২ চিকিৎসক পদে আছে ১৭জন, নার্স-১৬৬টি পদের মধ্যে আছে ১৫১জন। নাগেশ^রীতে চিকিৎসক ১৮জনের মধ্যে ৮জন,নার্স-৩৩টির মধ্যে ৩০ জন।

ভূরুঙ্গামারীতে চিকিৎসক-১৯টির মধ্যে-১১জন,নার্স ২৭টির মধ্যে-২৪ জন। ফুলবাড়িতে চিকিৎসক-১৬ জনের মধ্যে ৮জন, নার্স-২৫টির মধ্যে ২০ জন। রাজারহাটে চিকিৎসক ১৫জনের মধ্যে ৯জন, নার্স ২৬টির মধ্যে ২২জন। উলিপুরে ২৭টির মধ্যে-১৩জন, চিলমারীতে চিকিৎসক ২৬টির মধ্যে ৯জন। এই দুটি উপজেলার ২৬টি নার্সের মধ্যে আছে ২৬জন। রৌমারীতে চিকিৎসক ১৪জনের মধ্যে ৭জন, নার্স ২৭টির মধ্যে ১৫জন। এবং রাজিবপুরে চিকিৎসক ১১জনের মধ্যে ৩জন, নার্স ২৩টির মধ্যে ১৭জন রয়েছেন।

এসব চিকিৎসকদের মধ্যে কনসালটেন্ট বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই বললে চলে। এতে করে দেখা যায় জেলার প্রায় ২২লাখ জনসংখ্যার অনুপাতে প্রায় ২৪হাজার মানুষের জন্য একজন চিকিৎসক এবং সাত হাজার মানুষের জন্য একজন নার্স সেবাদানে রয়েছেন। চিকিৎসক সংকটে এসব চিকিৎসা প্রত্যাশিদের সঠিক চিকিৎসা পাওয়াই দূরহ হয়ে পড়েছে । রোগির চাপ সামলাতে বিভিন্ন ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে পদায়নকৃত চিকিৎসক এবং ইউনিয়ন সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সংযুক্ত করে চলছে জেলার চিকিৎসা ব্যবস্থা। শুধু চিকিৎসক সংকট নয় আছে টেকনোলজিষ্ট এবং অন্য জনবলেরও। পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরঞ্জামাদী না থাকায় রোগিদের বিভিন্ন টেষ্ট বাইরে করতে হয়।

কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবিবুর রহমান সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকের সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, নার্স সংকট তুলনামূলক রয়েছে। কিন্তু চিকিৎসক সংকটের কারণে কিছুটা সমস্য হচ্ছে। চিকিৎসক বৃদ্ধি এবং জনবল বাড়ানোর কাজ প্রক্রিয়াধীণ রয়েছে। এগুলো বাস্তবায়ন হলে সমস্যা কমে আসবে।

বুধবার, ০৬ অক্টোবর ২০২১ , ২১ আশ্বিন ১৪২৮ ২৭ সফর ১৪৪৩

২৪ হাজার মানুষের চিকিৎসক একজন

কুড়িগ্রামের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক সংকট : রোগীর চাপে দিশেহারা স্বাস্থ্যবিভাগ

জেলা বার্তা পরিবেশক, কুড়িগ্রাম

image

কুড়িগ্রাম : সদর হাসপাতালের করিডোর, বারান্দায় রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে রোগীদের -সংবাদ

কুড়িগ্রামে হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক ও নার্স সংকটে রোগীদের সেবা দিতে হিমসিম খাচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। অধিক রোগীর চাপে হাসপাতালগুলোতে শৃংখলা ফিরিয়ে আনা যাচ্ছে না। ফলে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই হাসপাতালের কড়িডোর, বারান্দাসহ রোগীদের কক্ষে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আউডটডোর রোগীর চাপে ডাক্তারদের চেম্বারগুলো যেন হাটবাজারে পরিণত হয়। জনসংখ্যার তুলনায় চিকিৎসক কম থাকায় এ বেহাল অবস্থা। জানা গেছে, কুড়িগ্রামে প্রায় ২৪ হাজার মানুষের জন্য একজন চিকিৎসক এবং সাত হাজার মানুষের জন্য একজন নার্স রয়েছে। এছাড়াও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাবে জটিল ও কঠিন রোগের চিকিৎসা করতে অধিক ব্যয়ে যেতে হচ্ছে রংপুর-ঢাকাসহ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে।

সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানায়, কুড়িগ্রাম জেলায় একটি করে ২৫০ শয্যা, ৫০শয্যা এবং ৩১শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল রয়েছে। এতে চাহিদা রয়েছে ২০১ চিকিৎসকের। কিন্তু আছেন ৯৫জন । শূন্যপদ রয়েছে ১০৬টি। এদের মধ্যে ৮জন চিকিৎসক ডেপুটেশনে জেনারেল হাসপাতাল এবং জেলার বাইরে রয়েছেন। নার্সের ৩৮১টি পদের বিপরীতে রয়েছে ৩৩২জন। এছাড়াও সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৮জন চিকিৎসকের বিপরীতে আছে ৭জন। কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ৪২ চিকিৎসক পদে আছে ১৭জন, নার্স-১৬৬টি পদের মধ্যে আছে ১৫১জন। নাগেশ^রীতে চিকিৎসক ১৮জনের মধ্যে ৮জন,নার্স-৩৩টির মধ্যে ৩০ জন।

ভূরুঙ্গামারীতে চিকিৎসক-১৯টির মধ্যে-১১জন,নার্স ২৭টির মধ্যে-২৪ জন। ফুলবাড়িতে চিকিৎসক-১৬ জনের মধ্যে ৮জন, নার্স-২৫টির মধ্যে ২০ জন। রাজারহাটে চিকিৎসক ১৫জনের মধ্যে ৯জন, নার্স ২৬টির মধ্যে ২২জন। উলিপুরে ২৭টির মধ্যে-১৩জন, চিলমারীতে চিকিৎসক ২৬টির মধ্যে ৯জন। এই দুটি উপজেলার ২৬টি নার্সের মধ্যে আছে ২৬জন। রৌমারীতে চিকিৎসক ১৪জনের মধ্যে ৭জন, নার্স ২৭টির মধ্যে ১৫জন। এবং রাজিবপুরে চিকিৎসক ১১জনের মধ্যে ৩জন, নার্স ২৩টির মধ্যে ১৭জন রয়েছেন।

এসব চিকিৎসকদের মধ্যে কনসালটেন্ট বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই বললে চলে। এতে করে দেখা যায় জেলার প্রায় ২২লাখ জনসংখ্যার অনুপাতে প্রায় ২৪হাজার মানুষের জন্য একজন চিকিৎসক এবং সাত হাজার মানুষের জন্য একজন নার্স সেবাদানে রয়েছেন। চিকিৎসক সংকটে এসব চিকিৎসা প্রত্যাশিদের সঠিক চিকিৎসা পাওয়াই দূরহ হয়ে পড়েছে । রোগির চাপ সামলাতে বিভিন্ন ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে পদায়নকৃত চিকিৎসক এবং ইউনিয়ন সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সংযুক্ত করে চলছে জেলার চিকিৎসা ব্যবস্থা। শুধু চিকিৎসক সংকট নয় আছে টেকনোলজিষ্ট এবং অন্য জনবলেরও। পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরঞ্জামাদী না থাকায় রোগিদের বিভিন্ন টেষ্ট বাইরে করতে হয়।

কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবিবুর রহমান সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকের সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, নার্স সংকট তুলনামূলক রয়েছে। কিন্তু চিকিৎসক সংকটের কারণে কিছুটা সমস্য হচ্ছে। চিকিৎসক বৃদ্ধি এবং জনবল বাড়ানোর কাজ প্রক্রিয়াধীণ রয়েছে। এগুলো বাস্তবায়ন হলে সমস্যা কমে আসবে।