তথ্য গোপন করে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব পদে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত আব্দুল মোমেন নামে এক ইউপি সচিবকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। আব্দুল মোমেন দিনাজপুর খানসামা উপজেলার ভান্ডারদহ গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে। গত সোমবার দুপুর ২টায় দিনাজপুর জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকী জানান, গত রোববার (৩ অক্টোবর) স্বাক্ষরিত এক পত্রে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগকৃত জেলার হাকিমপুর উপজেলার ২নং বোয়ালদার ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আব্দুল মোমেনকে চারিত্রিক অনুসন্ধানের প্রতিবেদনের আলোকে চাকুরী বাতিল করে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসকের পত্রে উল্লেখ করা হয়, জেলার ইউনিয়ন পরিষদ সচিব নিয়োগ সংক্রান্ত বাছাই কমিটি গত বছরের ২৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ২৮ জানুয়ারি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ২১-৫৯ নং স্মারক ইউনিয়ন পরিষদ সচিব পদে অস্থায়ী ভিত্তিতে মো. আব্দুল মোমেনকে নিয়োগ প্রদান করা হয়। নিয়োগে শর্ত অনুযায়ী সরকারী চাকরিতে প্রবেশকারী পুলিশ তদন্ত সম্পন্ন হওয়া জরুরি। এই তদন্তের দায়িত্বটি পালন করবে নিয়োগ প্রদানকারী সংশ্লিষ্ট দপ্তর। অর্থাৎ মোমেনের নিয়োগের বিষয়ে পুলিশ তদন্ত করার দায়িত্ব দিনাজপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের বা জেলা প্রশাসকের। কিন্তু দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে মোমেনের নিয়োগের ব্যাপারে কোন পুলিশ তদন্ত করা হয়নি। সম্প্রতি ঢাকা থেকে বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) এম এ মোমেনের নিয়োগের ব্যাপারে পুলিশ তদন্ত না হওয়ার জবাব চেয়ে চিঠি দেয়া হয় দিনাজপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে। পরবর্তীতে পুলিশ তদন্তে মোমেনের দুটি মামলাসহ তার পরিবারের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াতের সাথে সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়। একটি সূত্র জানায়, দিনাজপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলম-এর কার্যকাল সময়ে চারিত্রিক অনুসন্ধান না করেই আব্দুল মোমেনকে ইউপি সচিব পদে পদায়ন করা হয়েছিল। কারণ আব্দুল মোমেন সাবেক ওই জেলা প্রশাসকের তল্পিবাহক হিসেবেও ব্যাপক পরিচিত ছিলেন। বর্তমান জেলা প্রশাসকের কার্যকালিন সময়ে গত ৫ এপ্রিল পত্রমূলে পুলিশের বিশেষ শাখায় অনুসন্ধানের জন্য পত্র দেয়া হয়। সূত্রটি আরও জানায়, পুলিশের বিশেষ শাখার পত্রে উল্লেখ করা হয় ইউপি সচিব মো. আব্দুল মোমেন এর বিরুদ্ধে খানসামা থানায় ২টি অভিযোগ লিপিবদ্ধ করা হয়। অভিযোগকারী খানসামা উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে ফরহাদ হোসেন ও একই উপজেলার সুশিলী গ্রামের সাহাজুদ্দিনের ছেলে সাজেদুল ইসলাম অভিযোগ দুটি দায়ের করেন। তাদের অভিযোগ তদন্ত করে খানসামা থানা পুলিশ ৫০৬ ধারায় এনজিআর ৯/২১ ও ২৮/২১ অভিযোগপত্র দিনাজপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দাখিল করেছেন। ওই ২টি মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় তাকে চাকুরীবিধি লঙ্ঘন করে পদায়ন করা হয়। সূত্রটি জানায়, পুলিশের বিশেষ শাখা তাদের রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন উক্ত আব্দুল মোমেন -এর পরিবার সরাসরি জামায়াত রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। এসব বিষয় বিশ্লেষণ করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অবহিতক্রমে গত ৩ অক্টোবর আব্দুল মোমেনকে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ সচিব পদ থেকে চাকুরী বাতিল করে অব্যাহতি দেয়ার পত্র প্রদান করা হয়েছে। সূত্রটি আরও জানায়, মোমেনের নিয়োগ প্রক্রিয়াতেও রয়েছে নানা ধরনের অনিয়ম। তার চাকরি যথাযথ প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে অসন্তোষ দেখা দেয়। এ ব্যাপারে নিরপেক্ষ অধিকতর তদন্ত হলে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসবে।
বুধবার, ০৬ অক্টোবর ২০২১ , ২১ আশ্বিন ১৪২৮ ২৭ সফর ১৪৪৩
জেলা বার্তা পরিবেশক, দিনাজপুর
তথ্য গোপন করে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব পদে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত আব্দুল মোমেন নামে এক ইউপি সচিবকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। আব্দুল মোমেন দিনাজপুর খানসামা উপজেলার ভান্ডারদহ গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে। গত সোমবার দুপুর ২টায় দিনাজপুর জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকী জানান, গত রোববার (৩ অক্টোবর) স্বাক্ষরিত এক পত্রে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগকৃত জেলার হাকিমপুর উপজেলার ২নং বোয়ালদার ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আব্দুল মোমেনকে চারিত্রিক অনুসন্ধানের প্রতিবেদনের আলোকে চাকুরী বাতিল করে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসকের পত্রে উল্লেখ করা হয়, জেলার ইউনিয়ন পরিষদ সচিব নিয়োগ সংক্রান্ত বাছাই কমিটি গত বছরের ২৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ২৮ জানুয়ারি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ২১-৫৯ নং স্মারক ইউনিয়ন পরিষদ সচিব পদে অস্থায়ী ভিত্তিতে মো. আব্দুল মোমেনকে নিয়োগ প্রদান করা হয়। নিয়োগে শর্ত অনুযায়ী সরকারী চাকরিতে প্রবেশকারী পুলিশ তদন্ত সম্পন্ন হওয়া জরুরি। এই তদন্তের দায়িত্বটি পালন করবে নিয়োগ প্রদানকারী সংশ্লিষ্ট দপ্তর। অর্থাৎ মোমেনের নিয়োগের বিষয়ে পুলিশ তদন্ত করার দায়িত্ব দিনাজপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের বা জেলা প্রশাসকের। কিন্তু দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে মোমেনের নিয়োগের ব্যাপারে কোন পুলিশ তদন্ত করা হয়নি। সম্প্রতি ঢাকা থেকে বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) এম এ মোমেনের নিয়োগের ব্যাপারে পুলিশ তদন্ত না হওয়ার জবাব চেয়ে চিঠি দেয়া হয় দিনাজপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে। পরবর্তীতে পুলিশ তদন্তে মোমেনের দুটি মামলাসহ তার পরিবারের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াতের সাথে সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়। একটি সূত্র জানায়, দিনাজপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলম-এর কার্যকাল সময়ে চারিত্রিক অনুসন্ধান না করেই আব্দুল মোমেনকে ইউপি সচিব পদে পদায়ন করা হয়েছিল। কারণ আব্দুল মোমেন সাবেক ওই জেলা প্রশাসকের তল্পিবাহক হিসেবেও ব্যাপক পরিচিত ছিলেন। বর্তমান জেলা প্রশাসকের কার্যকালিন সময়ে গত ৫ এপ্রিল পত্রমূলে পুলিশের বিশেষ শাখায় অনুসন্ধানের জন্য পত্র দেয়া হয়। সূত্রটি আরও জানায়, পুলিশের বিশেষ শাখার পত্রে উল্লেখ করা হয় ইউপি সচিব মো. আব্দুল মোমেন এর বিরুদ্ধে খানসামা থানায় ২টি অভিযোগ লিপিবদ্ধ করা হয়। অভিযোগকারী খানসামা উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে ফরহাদ হোসেন ও একই উপজেলার সুশিলী গ্রামের সাহাজুদ্দিনের ছেলে সাজেদুল ইসলাম অভিযোগ দুটি দায়ের করেন। তাদের অভিযোগ তদন্ত করে খানসামা থানা পুলিশ ৫০৬ ধারায় এনজিআর ৯/২১ ও ২৮/২১ অভিযোগপত্র দিনাজপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দাখিল করেছেন। ওই ২টি মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় তাকে চাকুরীবিধি লঙ্ঘন করে পদায়ন করা হয়। সূত্রটি জানায়, পুলিশের বিশেষ শাখা তাদের রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন উক্ত আব্দুল মোমেন -এর পরিবার সরাসরি জামায়াত রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। এসব বিষয় বিশ্লেষণ করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অবহিতক্রমে গত ৩ অক্টোবর আব্দুল মোমেনকে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ সচিব পদ থেকে চাকুরী বাতিল করে অব্যাহতি দেয়ার পত্র প্রদান করা হয়েছে। সূত্রটি আরও জানায়, মোমেনের নিয়োগ প্রক্রিয়াতেও রয়েছে নানা ধরনের অনিয়ম। তার চাকরি যথাযথ প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে অসন্তোষ দেখা দেয়। এ ব্যাপারে নিরপেক্ষ অধিকতর তদন্ত হলে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসবে।