আজ মহালয়া দেবীপক্ষের শুরু

চন্ডীপাঠ, মহালয়ার ঘট স্থাপন ও বিশেষ পূজার মধ্যদিয়ে আজ অনুষ্ঠিত হবে মহালয়া। মহালয়া মানেই সনাতন ধর্মের বৃহৎ ধর্মীয় আয়োজন দুর্গাপূজার দিন গোনা শুরু হয়ে যাওয়া। মহালয়া কথাটির বিশেষ অর্থ রয়েছে। পিতৃপক্ষের অবসান বা দেবীপক্ষের পূর্ববর্তী অবস্থাকে বলা হয় মহালয়া। এই ব্যাপারে অবশ্য মতান্তর রয়েছে। ‘মহ’ শব্দটির অর্থ মানে ‘পূজা’, আবার ‘মহ’ বলতে উৎসবও বোঝায়। এছাড়া মহালয়া বলতে বোঝা যায় ‘মহান’ ও ‘আলয়’ নিয়ে মহালয়া। এর সঙ্গে ‘আ’ যোগ করে পূজার ‘আলয়’। ‘আলয়’ শব্দের অর্থ ‘আশ্রয়’। আবার মহালয় বলতে বোঝা যায় পিতৃলোককে, যেখানে স্বর্গত পিতৃপুরুষদের অবস্থান।

বিশুদ্ধ পঞ্জিকা অনুযায়ী, ১১ অক্টোবর সোমবার বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। ১১ অক্টোবর ষষ্ঠী, ১২ অক্টোবর সপ্তমী, ১৩ অক্টোবর অষ্টমী, ১৪ অক্টোবর নবমী এবং ১৫ অক্টোবর দশমী।

সনাতন ধর্মে বলা হয়, দেবীপক্ষকে বলা হয় সবচেয়ে শুভ দিন। এ সময় সব ধরনের শুভ কাজ সম্পন্ন করা যায়। পুরাণে আছে, অশুভ অসুর শক্তির কাছে পরাভূত দেবতারা স্বর্গলোকচ্যুত হয়েছিলেন। চারদিকে অশুভের প্রতাপ। এই অশুভ শক্তিকে বিনাশ করতে একত্র হলেন দেবতারা। অসুর শক্তির বিনাশে অনুভূত হলো এক মহাশক্তির আবির্ভাব। দেবতাদের তেজরশ্মি থেকে আবির্ভূত হলেন অসুরবিনাশী দেবী দুর্গা। পুরাণ মতে, রাজা সুরথ প্রথম দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু করেন। বসন্তে তিনি এই পূজার আয়োজন করায় দেবীর এ পূজাকে বাসন্তী পূজাও বলা হয়। কিন্তু রাবণের হাত থেকে সীতাকে উদ্ধার করতে যাওয়ার আগে শ্রী রামচন্দ্র দুর্গাপূজার আয়োজন করেছিলেন। তাই শরৎকালের এই পূজাকে হিন্দুমতে অকালবোধনও বলা হয়। ধর্মমতে, এই দিনে দেব-দেবীকুল দুর্গাপূজার জন্য নিজেদের জাগ্রত করেন। মহালয়ার দিন ভোরে মন্দিরে মন্দিরে শঙ্খের ধ্বনি ও চন্ডীপাঠের মধ্যদিয়ে দেবীকে আবাহন জানানো হয়।

সনাতন বিশ্বাস ও বিশুদ্ধ পঞ্জিকা মতে, জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার মর্ত্যলোকে (পৃথিবীতে) আসবেন ঘোটকে (ঘোড়ায়) চড়ে। এর ফল হচ্ছে ছত্রভঙ্গ। আর দেবী স্বপরিবারে স্বর্গালোকে বিদায় নেবেন দোলায় (পালকিতে) চড়ে। যার ফল হচ্ছে মড়ক।

মহালয়া উপলক্ষে বিভিন্ন মন্দির ও পূজা কমিটি বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে। মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনে কেন্দ্রীয় পূজা ম-পে, ঢাকাস্থ রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল, সিদ্ধেশ্বরী মন্দির, রমনা কালীমন্দির, স্বামীবাগের লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম ও মন্দির, রামসীতা মন্দির, জয়কালী মন্দির, হবিগঞ্জের বাহুবলের জয়পুর শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর মামার বাড়ি শ্রী শ্রী শচী অঙ্গন ধামসহ বিভিন্ন পূজাম-পে ভোর থেকেই শুরু হবে চন্ডীপাঠ, চন্ডীপূজা ও বিশেষ পূজার মধ্য দিয়ে মহালয়ার ঘট স্থাপন ও বিশেষ পূজা। তবে করোনাকালে সব আয়োজন অনুষ্ঠিত হবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে।

আরও খবর
জাপার দুর্গ রংপুরে মহাসচিব কে হচ্ছেন চলছে জল্পনা-কল্পনা
জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনার অভিনন্দন
সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবি শিক্ষকদের
মিরপুর থেকে নিখোঁজ ৪ কিশোরী উদ্ধার
ক্লিনফিড বাস্তবায়নে আজ থেকে ফের মোবাইল কোর্ট : তথ্যমন্ত্রী
এসকে সিনহার মামলার রায় পেছালো
যুক্তরাষ্ট্রের ২৫ লাখ ফাইজারের টিকা হস্তান্তর
মাদক চোরাচালান বন্ধে প্রয়োজনে মায়ানমার সীমান্তে গুলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী
১৮ বছরের কম বয়সীরা এখনই টিকা পাচ্ছে না
চলনবিলে পাখি ধরার কিল্লা ধ্বংস
খালেদার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি পেছালো
৩০ ঘণ্টা আটকে রাখার পর প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে গ্রেপ্তার দেখালো পুলিশ

বুধবার, ০৬ অক্টোবর ২০২১ , ২১ আশ্বিন ১৪২৮ ২৭ সফর ১৪৪৩

আজ মহালয়া দেবীপক্ষের শুরু

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

চন্ডীপাঠ, মহালয়ার ঘট স্থাপন ও বিশেষ পূজার মধ্যদিয়ে আজ অনুষ্ঠিত হবে মহালয়া। মহালয়া মানেই সনাতন ধর্মের বৃহৎ ধর্মীয় আয়োজন দুর্গাপূজার দিন গোনা শুরু হয়ে যাওয়া। মহালয়া কথাটির বিশেষ অর্থ রয়েছে। পিতৃপক্ষের অবসান বা দেবীপক্ষের পূর্ববর্তী অবস্থাকে বলা হয় মহালয়া। এই ব্যাপারে অবশ্য মতান্তর রয়েছে। ‘মহ’ শব্দটির অর্থ মানে ‘পূজা’, আবার ‘মহ’ বলতে উৎসবও বোঝায়। এছাড়া মহালয়া বলতে বোঝা যায় ‘মহান’ ও ‘আলয়’ নিয়ে মহালয়া। এর সঙ্গে ‘আ’ যোগ করে পূজার ‘আলয়’। ‘আলয়’ শব্দের অর্থ ‘আশ্রয়’। আবার মহালয় বলতে বোঝা যায় পিতৃলোককে, যেখানে স্বর্গত পিতৃপুরুষদের অবস্থান।

বিশুদ্ধ পঞ্জিকা অনুযায়ী, ১১ অক্টোবর সোমবার বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। ১১ অক্টোবর ষষ্ঠী, ১২ অক্টোবর সপ্তমী, ১৩ অক্টোবর অষ্টমী, ১৪ অক্টোবর নবমী এবং ১৫ অক্টোবর দশমী।

সনাতন ধর্মে বলা হয়, দেবীপক্ষকে বলা হয় সবচেয়ে শুভ দিন। এ সময় সব ধরনের শুভ কাজ সম্পন্ন করা যায়। পুরাণে আছে, অশুভ অসুর শক্তির কাছে পরাভূত দেবতারা স্বর্গলোকচ্যুত হয়েছিলেন। চারদিকে অশুভের প্রতাপ। এই অশুভ শক্তিকে বিনাশ করতে একত্র হলেন দেবতারা। অসুর শক্তির বিনাশে অনুভূত হলো এক মহাশক্তির আবির্ভাব। দেবতাদের তেজরশ্মি থেকে আবির্ভূত হলেন অসুরবিনাশী দেবী দুর্গা। পুরাণ মতে, রাজা সুরথ প্রথম দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু করেন। বসন্তে তিনি এই পূজার আয়োজন করায় দেবীর এ পূজাকে বাসন্তী পূজাও বলা হয়। কিন্তু রাবণের হাত থেকে সীতাকে উদ্ধার করতে যাওয়ার আগে শ্রী রামচন্দ্র দুর্গাপূজার আয়োজন করেছিলেন। তাই শরৎকালের এই পূজাকে হিন্দুমতে অকালবোধনও বলা হয়। ধর্মমতে, এই দিনে দেব-দেবীকুল দুর্গাপূজার জন্য নিজেদের জাগ্রত করেন। মহালয়ার দিন ভোরে মন্দিরে মন্দিরে শঙ্খের ধ্বনি ও চন্ডীপাঠের মধ্যদিয়ে দেবীকে আবাহন জানানো হয়।

সনাতন বিশ্বাস ও বিশুদ্ধ পঞ্জিকা মতে, জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার মর্ত্যলোকে (পৃথিবীতে) আসবেন ঘোটকে (ঘোড়ায়) চড়ে। এর ফল হচ্ছে ছত্রভঙ্গ। আর দেবী স্বপরিবারে স্বর্গালোকে বিদায় নেবেন দোলায় (পালকিতে) চড়ে। যার ফল হচ্ছে মড়ক।

মহালয়া উপলক্ষে বিভিন্ন মন্দির ও পূজা কমিটি বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে। মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনে কেন্দ্রীয় পূজা ম-পে, ঢাকাস্থ রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল, সিদ্ধেশ্বরী মন্দির, রমনা কালীমন্দির, স্বামীবাগের লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম ও মন্দির, রামসীতা মন্দির, জয়কালী মন্দির, হবিগঞ্জের বাহুবলের জয়পুর শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর মামার বাড়ি শ্রী শ্রী শচী অঙ্গন ধামসহ বিভিন্ন পূজাম-পে ভোর থেকেই শুরু হবে চন্ডীপাঠ, চন্ডীপূজা ও বিশেষ পূজার মধ্য দিয়ে মহালয়ার ঘট স্থাপন ও বিশেষ পূজা। তবে করোনাকালে সব আয়োজন অনুষ্ঠিত হবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে।