সলিমুল্লাহ হাসপাতালে আলট্রাসনোগ্রাম করাতে ভোগান্তি দুই কর্মীর স্বেচ্চারিতা, দুর্নীতি

স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালে রোগ নির্ণয়ে আলট্রাসনোগ্রাম করাতে রোগীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। আলট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষা করাতে রোগীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা মিটফোর্ডের আলট্রাসনোগ্রাম রুমের সামনে অপেক্ষা করতে হয় বলে ভূক্তভোগীরা অভিযোগ করেন। যারা আলট্রাসনোগ্রাম রুমের দুই কর্মীকে ঘুষ দিবেন তাদের আলট্রাসনোগ্রাম আগে হয় বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক রোগী।

গত রোববার সেখানে গিয়ে দেখা গেল এক গৃহবধূ নিয়ে এসেছেন তার তিনদিনের সন্তানকে। তিনি বলেন, ‘আমার তিনদিন বয়সী নবজাতকের পিঠে টিউমারের মত বড় আকারের ফুলা দেখা দিয়েছে। মিটফোর্ড হাসপাতালের ডাক্তারের পরামর্শে বাচ্চাকে নিয়ে আলট্রাসনোগ্রাম করাতে এসে কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা করেও শিশুর উক্ত টেস্ট করাতে পারি নাই। ঘুষ দিতে অস্বীকার করায় আলট্রাসনোগ্রাম রুমের স্টাফ তাহমিনা আমার সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করেছে এবং সে আমাকে হুমকি দিয়েছে। পরে হাসপাতালে পরিচিত এক স্টাফের সহযোগীতায় নবজাতকের আলট্রাসনোগ্রাম করিয়েছি।’

নবাবগঞ্জ থেকে এসেছেন কৃষক মঙ্গল বেপারী। সঙ্গে ছিলেন তার কলেজ পড়–য়া মেয়ে। তিনি জানান, ‘মিটফোর্ড হাসপাতালে রোববার সকাল আটটার সময় এসে ২২০টাকা জমা দিয়ে আলট্রাসনোগ্রাম করার জন্য বাবাকে নিয়ে অপেক্ষা করতেছি। কিন্তু টেস্টটা করাতে পারছি না। তবে উক্ত বিভাগের সিরিয়ালকারি শাহনাজ নামে এক মহিলার সঙ্গে বাবার কথা হয়েছে যে, তাকে টাকা দিতে হবে তাহলে তিনি আগে আলট্রাসনোগ্রাম করিয়ে দিবে।’

এভাবে সীমা (৩১) নামে আরেক গৃহবধূ আক্ষেপ করে জানান, ‘বাসায় ছোট বাচ্চা রাইখা হাসপাতালে রোববার সকাল নয়টায় আইছি। ২২০টাকা জমা দিয়ে ব্রেস্টের পরীক্ষার জন্য আলট্রাসনোগ্রাম করাতে উক্ত বিভাগের সামনে চারঘণ্টা যাবত অপেক্ষা করতেছি। বারবার আলট্রাসনোগ্রাম রুমের স্টাফদের অনুরোধ করলেও তারা আমাকে পাত্তা দেয়নি। আবার সোমবার আসতে হবে। গরিব দেইখাইতো সরকারি মিটফোড হাসপাতালে অল্প টাকায় চিকিৎসার আশায় আইছি।’

এ ব্যাপারে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল কাজী মো. রশিদ উন-নবী সংবাদকে বলেন, ‘আমি অভিযুক্তদের ব্যাপারে অবশ্যই শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নেব। মিটফোর্ড হাসপাতালের আলট্রাসনোগ্রাম বিভাগে মাত্র একটি মেশিন ছিল। রোগীদের সুবিধার্থে আর একটি আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন বসিয়েছি। বর্তমানে দুটি মেশিনে আলট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষা হচ্ছে। রোগীদের দুর্ভোগে যারা জড়িত থাকবে হাসপাতালের সেসব স্টাফদের কোন ছাড় দেয়া হবে না।’

বৃহস্পতিবার, ০৭ অক্টোবর ২০২১ , ২২ আশ্বিন ১৪২৮ ২৮ সফর ১৪৪৩

সলিমুল্লাহ হাসপাতালে আলট্রাসনোগ্রাম করাতে ভোগান্তি দুই কর্মীর স্বেচ্চারিতা, দুর্নীতি

খন্দকার জাফর আহমদ

স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালে রোগ নির্ণয়ে আলট্রাসনোগ্রাম করাতে রোগীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। আলট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষা করাতে রোগীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা মিটফোর্ডের আলট্রাসনোগ্রাম রুমের সামনে অপেক্ষা করতে হয় বলে ভূক্তভোগীরা অভিযোগ করেন। যারা আলট্রাসনোগ্রাম রুমের দুই কর্মীকে ঘুষ দিবেন তাদের আলট্রাসনোগ্রাম আগে হয় বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক রোগী।

গত রোববার সেখানে গিয়ে দেখা গেল এক গৃহবধূ নিয়ে এসেছেন তার তিনদিনের সন্তানকে। তিনি বলেন, ‘আমার তিনদিন বয়সী নবজাতকের পিঠে টিউমারের মত বড় আকারের ফুলা দেখা দিয়েছে। মিটফোর্ড হাসপাতালের ডাক্তারের পরামর্শে বাচ্চাকে নিয়ে আলট্রাসনোগ্রাম করাতে এসে কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা করেও শিশুর উক্ত টেস্ট করাতে পারি নাই। ঘুষ দিতে অস্বীকার করায় আলট্রাসনোগ্রাম রুমের স্টাফ তাহমিনা আমার সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করেছে এবং সে আমাকে হুমকি দিয়েছে। পরে হাসপাতালে পরিচিত এক স্টাফের সহযোগীতায় নবজাতকের আলট্রাসনোগ্রাম করিয়েছি।’

নবাবগঞ্জ থেকে এসেছেন কৃষক মঙ্গল বেপারী। সঙ্গে ছিলেন তার কলেজ পড়–য়া মেয়ে। তিনি জানান, ‘মিটফোর্ড হাসপাতালে রোববার সকাল আটটার সময় এসে ২২০টাকা জমা দিয়ে আলট্রাসনোগ্রাম করার জন্য বাবাকে নিয়ে অপেক্ষা করতেছি। কিন্তু টেস্টটা করাতে পারছি না। তবে উক্ত বিভাগের সিরিয়ালকারি শাহনাজ নামে এক মহিলার সঙ্গে বাবার কথা হয়েছে যে, তাকে টাকা দিতে হবে তাহলে তিনি আগে আলট্রাসনোগ্রাম করিয়ে দিবে।’

এভাবে সীমা (৩১) নামে আরেক গৃহবধূ আক্ষেপ করে জানান, ‘বাসায় ছোট বাচ্চা রাইখা হাসপাতালে রোববার সকাল নয়টায় আইছি। ২২০টাকা জমা দিয়ে ব্রেস্টের পরীক্ষার জন্য আলট্রাসনোগ্রাম করাতে উক্ত বিভাগের সামনে চারঘণ্টা যাবত অপেক্ষা করতেছি। বারবার আলট্রাসনোগ্রাম রুমের স্টাফদের অনুরোধ করলেও তারা আমাকে পাত্তা দেয়নি। আবার সোমবার আসতে হবে। গরিব দেইখাইতো সরকারি মিটফোড হাসপাতালে অল্প টাকায় চিকিৎসার আশায় আইছি।’

এ ব্যাপারে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল কাজী মো. রশিদ উন-নবী সংবাদকে বলেন, ‘আমি অভিযুক্তদের ব্যাপারে অবশ্যই শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নেব। মিটফোর্ড হাসপাতালের আলট্রাসনোগ্রাম বিভাগে মাত্র একটি মেশিন ছিল। রোগীদের সুবিধার্থে আর একটি আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন বসিয়েছি। বর্তমানে দুটি মেশিনে আলট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষা হচ্ছে। রোগীদের দুর্ভোগে যারা জড়িত থাকবে হাসপাতালের সেসব স্টাফদের কোন ছাড় দেয়া হবে না।’