অনিবন্ধিত সুদ কারবারিদের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ হাইকোর্টের

মাইক্রো ক্রেডিটের (ক্ষুদ্রঋণ) নামে সারাদেশে অনিবন্ধিত সুদের ব্যবসা পরিচালনাকারী (সমবায় সমিতি ও এনজিও) প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে আদালতের এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। গত ২৭ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ থেকে দেয়া মৌখিক আদেশের পর গতকাল বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি জাকির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চের লিখিত আদেশ প্রকাশ পায়। রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আইনজীবী সুমন বলেন, গতকাল আমরা তিন পৃষ্ঠার লিখিত আদেশ হাতে পেয়েছি। দেশজুড়ে যেসব সুদ কারবারি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সুদ নেয়ার অনুমোদন নেই, তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

এর আগে গত ২৭ সেপ্টেম্বর বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি জাকির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ সারাদেশের অনিবন্ধিত ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ও সমবায় সমিতি বন্ধের আদেশ দেন। আদেশপ্রাপ্তির ৪৫ দিনের মধ্যে তা প্রতিপালনে অর্থ সচিব ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে নির্দেশ দেন আদালত।

আদেশে বলা হয়েছে, অনুমোদনহীন ক্ষুদ্রঋণের কারবার নিয়ে তদন্ত করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করতে হবে। আদেশের অনুলিপি পাওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে এ কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে হবে। তদন্তের সময় যদি অননুমোদিত বা লাইসেন্স ছাড়া ক্ষুদ্রঋণ কারবারি সমবায় বা কোন অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব পাওয়া যায়, তাহলে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সেসব প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় বন্ধের পাশাপাশি আইনি ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে স্থানীয় পর্যায়ে সুদ কারবারিদের তালিকা দিতে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথোরিটিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সারাদেশে চড়া সুদে ঋণদাতা মহাজনদের চিহ্নিত করার নির্দেশনা চেয়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে এ রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। এ রিট মামলার বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য ৩০ নভেম্বর তারিখ রাখা হয়েছে। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর উস সাদিক। গত ২৮ আগস্ট একটি জাতীয় দৈনিকে ‘চড়া সুদে ঋণের জালে কৃষকেরা’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে জনস্বার্থে তিনি রিট আবেদনটি করেন। এতে মহাজনদের উচ্চহারে অনানুষ্ঠানিক ঋণপ্রথা নিষিদ্ধে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চাওয়ার পাশাপাশি রুল চাওয়া হয়। কিন্তু আদালত গত সোমবার আবেদনে সংশোধন এনে রুলসহ আদেশ দেন।

বৃহস্পতিবার, ০৭ অক্টোবর ২০২১ , ২২ আশ্বিন ১৪২৮ ২৮ সফর ১৪৪৩

অনিবন্ধিত সুদ কারবারিদের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ হাইকোর্টের

আদালত বার্তা পরিবেশক

মাইক্রো ক্রেডিটের (ক্ষুদ্রঋণ) নামে সারাদেশে অনিবন্ধিত সুদের ব্যবসা পরিচালনাকারী (সমবায় সমিতি ও এনজিও) প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে আদালতের এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। গত ২৭ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ থেকে দেয়া মৌখিক আদেশের পর গতকাল বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি জাকির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চের লিখিত আদেশ প্রকাশ পায়। রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আইনজীবী সুমন বলেন, গতকাল আমরা তিন পৃষ্ঠার লিখিত আদেশ হাতে পেয়েছি। দেশজুড়ে যেসব সুদ কারবারি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সুদ নেয়ার অনুমোদন নেই, তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

এর আগে গত ২৭ সেপ্টেম্বর বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি জাকির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ সারাদেশের অনিবন্ধিত ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ও সমবায় সমিতি বন্ধের আদেশ দেন। আদেশপ্রাপ্তির ৪৫ দিনের মধ্যে তা প্রতিপালনে অর্থ সচিব ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে নির্দেশ দেন আদালত।

আদেশে বলা হয়েছে, অনুমোদনহীন ক্ষুদ্রঋণের কারবার নিয়ে তদন্ত করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করতে হবে। আদেশের অনুলিপি পাওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে এ কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে হবে। তদন্তের সময় যদি অননুমোদিত বা লাইসেন্স ছাড়া ক্ষুদ্রঋণ কারবারি সমবায় বা কোন অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব পাওয়া যায়, তাহলে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সেসব প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় বন্ধের পাশাপাশি আইনি ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে স্থানীয় পর্যায়ে সুদ কারবারিদের তালিকা দিতে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথোরিটিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সারাদেশে চড়া সুদে ঋণদাতা মহাজনদের চিহ্নিত করার নির্দেশনা চেয়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে এ রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। এ রিট মামলার বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য ৩০ নভেম্বর তারিখ রাখা হয়েছে। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর উস সাদিক। গত ২৮ আগস্ট একটি জাতীয় দৈনিকে ‘চড়া সুদে ঋণের জালে কৃষকেরা’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে জনস্বার্থে তিনি রিট আবেদনটি করেন। এতে মহাজনদের উচ্চহারে অনানুষ্ঠানিক ঋণপ্রথা নিষিদ্ধে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চাওয়ার পাশাপাশি রুল চাওয়া হয়। কিন্তু আদালত গত সোমবার আবেদনে সংশোধন এনে রুলসহ আদেশ দেন।