সংবাদের খন্দকার মুনীরুজ্জামানসহ জাতীয় প্রেসক্লাবের প্রয়াত ৩৪ সদস্যকে স্মরণ

সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার মুনীরুজ্জামানসহ জাতীয় প্রেসক্লাবের প্রয়াত ৩৪ সদস্যদের স্মৃতিচারণে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্মরণসভায় আলোচকরা প্রয়াত সদস্যদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনার পাশাপাশি তাদের কর্মময় জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

গতকাল দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রয়াত সদস্যদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিনের সঞ্চালনায় স্মরণসভাটি অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি যুগান্তর পত্রিকার সম্পাদক সাইফুল আলম, সাংবাদিক নেতা মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল ও প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম ছাড়াও সিনিয়র সাংবাদিক এবং প্রয়াতদের পরিবারে সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘আমরা আজকে যে ৩৪ জনকে নিয়ে আলোচনা করেছি প্রত্যকে আমাদের আপনজন।’ তিনি আরও বলেন, ‘করোনা অতিমারীর ছোবলে দেশ, জনপদ এখনও বিধ্বস্ত। এ এক দুঃসহ কাল। গত এক বছরে আমরা হারিয়েছি অনেক স্বজন, সুহৃদ-সহযোগীকে। সাংবাদিকতা পেশার উন্নয়ন ও মর্যাদা বৃদ্ধির ধারাবাহিক যে প্রয়াস, তার অগ্রসৈনিক ছিলেন তাদের অনেকে। আমাদের প্রিয় সেকেন্ড হোম জাতীয় প্রেসক্লাবের ৬৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সূচনালগ্নে তাদের গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করছি।’

সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘গত দুই বছরে করোনা আক্রান্ত হয়ে আমাদের ৫২ জন সদস্য প্রাণ হারিয়েছে। যা আমাদের জন্য হৃদয়বিদায়ক। দুর্ভাগ্য আমাদের, যারা চলে যায় আমরা তাদের ভুলে যাই। যারা আমাদের সাংবাদিকতার ভিত্তি গড়ে তুলেছে এবং এই প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠিত করেছে আমরা কয়েকজনকে মনে রেখেছি। আমরা তাদের মনে রাখতে চাই। তাদের আদর্শকে বাঁচিয়ে রাখতে চাই।’

সাংবাদিক নেতা মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, ‘জাতীয় প্রেসক্লাবের এমন গুণী সাংবাদিক সদস্য মৃত্যুবরণ করেছে তা আমাদের জন্য বিরাট ক্ষতি। আমরা স্মরণ করি যারা আমাদের ক্লাবটিকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে।’ প্রয়াত সাংবাদিকদের স্মৃতিচারণে তিনি অনেক কথা বলেন। বিশেষকরে সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুনীরুজ্জামানের বিষয়ে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘মুনীরুজ্জামান ভাই হ্যারিপটার অনুবাদ করেছেন। হ্যারিপটার নিয়ে কোন আলোচনাই নাই।’

প্রয়াত সাংবাদিক মুনীরুজ্জামানের স্ত্রী ডা. রোকেয়া খাতুন বলেন, ‘তার স্টাইলটাই ছিল আলাদা, সে কোন কাজ চাপিয়ে দিতো না, বই ধরিয়ে দিত।’ মুনীরুজ্জামান বিশ্বাস করতো স্বাধীনতা এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে নিয়ে যাবার। তিনি আমৃত্যু এই কাজটি করে গেছেন। উল্লেখ্য, সে সব সময় বলতো ‘মুক্তিযুদ্ধ সব সময় মুক্তিযুদ্ধ, সংগ্রাম সব সময় চালিয়ে যেতে হবে’। তিনি আরও বলেন, ‘ডা. না হলে আমি সাংবাদিকই হতাম। ও যে সাংবাদিকতা করত, তাতে আমার ভালোই লাগতো।’

এর আগে, এক মিনিট নীরবতা পালনের পর ২৪ অক্টোবর ২০২০-০৬ অক্টোবর ২০২১ পর্যন্ত প্রেসক্লাবের প্রয়াত সদস্য হাসান শাহরিয়ার, জাহিদুজ্জামান ফারুক, এ ইউ এম ফখরুদ্দিন, ফকীর আবদুর রাজ্জাক, আবুল হাসনাত, এরশাদুল হক, হান্নান খান, হুমায়ুন সাদেক চৌধুরী, খোন্দকার আতাউল হক, মিজানুর রহমান খান, হিলালী ওয়াদুদ চৌধুরী, সৈয়দ লুৎফুল হক, আহমদ আখতার, শাহীন রেজা নূর, সৈয়দ আবুল মকসুদ, আতিয়ার রহমান আতিক, এ জেড এম আনাস, মো. নুরুল হুদা, মোহাম্মদ আতিকুল্লাহ খান মাসুদ, কাইয়ুম খান মিলন, খোন্দকার শাহাদাত হোসেন, মো. রফিকুল আলম, এনামুল হক, সৈয়দ শাহজাহান, খোন্দকার ফজলুর রহমান (ফিউরি), শাহিদুজ্জামান খান, মুহীউদ্দিন আহম্মদ, মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস, মো. লুৎফর রহমান বীনু, বজলুল করিম, মো. আবদুর রহিম, গোলাপ মুনীর ও হামিদুজ্জামান রবির স্মৃতিচারণে আলোচনা হয়।

এর আগে তাদের স্মরণে প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খানের পক্ষ থেকে বাণী পড়ে শোনান ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল ইসলাম। সেখানে বলা হয়, করোনা অতিমারীর ছোবলে দেশ, জনপদ এখনও বিধ্বস্ত। এ এক দুঃসহকাল। গত এক বছরে আমরা হারিয়েছি অনেক স্বজন, সুহৃদ-সহযোগীকে। সাংবাদিকতা পেশার উন্নয়ন ও মর্যাদা বৃদ্ধির ধারাবাহিক যে প্রয়াস, তার অগ্রসৈনিক ছিলেন তাদের অনেকে। আমাদের প্রিয় সেকেন্ড হোম জাতীয় প্রেসক্লাবের ৬৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সূচনালগ্নে তাদের গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করছি। যারা ইন্তেকাল করেছেন, তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। তাদের আত্মার চিরশান্তির জন্য পরম করুণাময়ের দরবারে প্রার্থনা করি।

করোনা দুঃসময়ে অন্যসব পেশার মতো সাংবাদিকতা পেশায়ও অস্বাভাবিক বিপর্যয় ঘটেছে। জীবিকার অনিশ্চয়তার পাশাপাশি সুস্থ, স্বাভাবিক জীবনযাপন করাও দুঃসাধ্য। শঙ্কা, উৎকণ্ঠা, অনিশ্চয়তার ধকল সামলাতে না পেয়ে অনেকের মৃত্যু ত্বরান্বিত হয়েছে। এক বছরে ৩৪ জন সদস্যকে হারানো মর্মান্তিক ঘটনা। এ সময় আমরা হারিয়েছি ক্লাবের সাবেক সভাপতি, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সাংবাদিক হাসান শাহরিয়ারকে। হারিয়েছি বর্তমান ব্যবস্থাপনা কমিটির অন্যতম সিনিয়র সদস্য জাহিদুজ্জামান ফারুককে। ক্লাবের ৬৭ বছরের ইতিহাসে এক সঙ্গে এত বেশিসংখ্যক সদস্যের মৃত্যু এক বিরল ও শোকাবহ অধ্যায়। ক্লাব ও সাংবাদিকতা পেশার অপূরণীয় ক্ষতি। এই শূন্যতা ও মর্মবেদনায় আমরা শোকস্তব্ধ।অনন্তলোকে যারা পাড়ি জমিয়েছেন, তাদের আত্মীয় পরিজনের প্রতি আমাদের গভীর আন্তরিক সমবেদনা। তাদের মনোকষ্টের অংশীদার আমরাও। প্রিয়জন বিয়োগের আঘাত সহ্য করার মতো শক্তি যেন আল্লাহ তাদের দান করেন। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সময় আমাদের যে সাথীরা এখন অবর্তমান, আমরা মনে করি তাদের স্বপ্ন-আকাক্সক্ষা আদর্শ আমাদের সঙ্গে সব সঞ্চয় রয়েছে। সেই সঞ্চয় ও পাথেয় সম্বল করে আমরা সামনে এগিয়ে যাব।

image

গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রয়াত ৩৪ সাংবাদিকের স্মরণসভায় দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করেন -সংবাদ

আরও খবর
নিবন্ধন না হলে চালু হবে না অনলাইন পোর্টাল : তথ্যমন্ত্রী
এসএসসির সিলেবাস আর সংক্ষিপ্ত করার সুযোগ নেই শিক্ষামন্ত্রী
রসায়নে নোবেল পেলেন দুই বিজ্ঞানী
ক্লিনফিড তালিকা থেকে ১১টি চ্যানেল বন্ধ
টিকার নিবন্ধন করতে লাগে এক হাজার টাকা
ডেঙ্গু আক্রান্ত ১৯ হাজার ছাড়িয়েছে
খুলনায় গণধর্ষণ ৪ ধর্ষক গ্রেপ্তার
স্বাধীন জীবনযাপনের উদ্দেশ্যে গৃহত্যাগ করেছিল তারা
মহালয়ার মধ্য দিয়ে শুরু দুর্গোৎসবের দিন গোনার পালা
রবীন্দ্রনাথের লন্ডনের স্মৃতি বিজড়িত বাড়ি বিক্রি হয়ে যাচ্ছে
মমতার শপথ আজ

বৃহস্পতিবার, ০৭ অক্টোবর ২০২১ , ২২ আশ্বিন ১৪২৮ ২৮ সফর ১৪৪৩

সংবাদের খন্দকার মুনীরুজ্জামানসহ জাতীয় প্রেসক্লাবের প্রয়াত ৩৪ সদস্যকে স্মরণ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রয়াত ৩৪ সাংবাদিকের স্মরণসভায় দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করেন -সংবাদ

সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার মুনীরুজ্জামানসহ জাতীয় প্রেসক্লাবের প্রয়াত ৩৪ সদস্যদের স্মৃতিচারণে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্মরণসভায় আলোচকরা প্রয়াত সদস্যদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনার পাশাপাশি তাদের কর্মময় জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

গতকাল দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রয়াত সদস্যদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিনের সঞ্চালনায় স্মরণসভাটি অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি যুগান্তর পত্রিকার সম্পাদক সাইফুল আলম, সাংবাদিক নেতা মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল ও প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম ছাড়াও সিনিয়র সাংবাদিক এবং প্রয়াতদের পরিবারে সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘আমরা আজকে যে ৩৪ জনকে নিয়ে আলোচনা করেছি প্রত্যকে আমাদের আপনজন।’ তিনি আরও বলেন, ‘করোনা অতিমারীর ছোবলে দেশ, জনপদ এখনও বিধ্বস্ত। এ এক দুঃসহ কাল। গত এক বছরে আমরা হারিয়েছি অনেক স্বজন, সুহৃদ-সহযোগীকে। সাংবাদিকতা পেশার উন্নয়ন ও মর্যাদা বৃদ্ধির ধারাবাহিক যে প্রয়াস, তার অগ্রসৈনিক ছিলেন তাদের অনেকে। আমাদের প্রিয় সেকেন্ড হোম জাতীয় প্রেসক্লাবের ৬৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সূচনালগ্নে তাদের গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করছি।’

সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘গত দুই বছরে করোনা আক্রান্ত হয়ে আমাদের ৫২ জন সদস্য প্রাণ হারিয়েছে। যা আমাদের জন্য হৃদয়বিদায়ক। দুর্ভাগ্য আমাদের, যারা চলে যায় আমরা তাদের ভুলে যাই। যারা আমাদের সাংবাদিকতার ভিত্তি গড়ে তুলেছে এবং এই প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠিত করেছে আমরা কয়েকজনকে মনে রেখেছি। আমরা তাদের মনে রাখতে চাই। তাদের আদর্শকে বাঁচিয়ে রাখতে চাই।’

সাংবাদিক নেতা মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, ‘জাতীয় প্রেসক্লাবের এমন গুণী সাংবাদিক সদস্য মৃত্যুবরণ করেছে তা আমাদের জন্য বিরাট ক্ষতি। আমরা স্মরণ করি যারা আমাদের ক্লাবটিকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে।’ প্রয়াত সাংবাদিকদের স্মৃতিচারণে তিনি অনেক কথা বলেন। বিশেষকরে সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুনীরুজ্জামানের বিষয়ে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘মুনীরুজ্জামান ভাই হ্যারিপটার অনুবাদ করেছেন। হ্যারিপটার নিয়ে কোন আলোচনাই নাই।’

প্রয়াত সাংবাদিক মুনীরুজ্জামানের স্ত্রী ডা. রোকেয়া খাতুন বলেন, ‘তার স্টাইলটাই ছিল আলাদা, সে কোন কাজ চাপিয়ে দিতো না, বই ধরিয়ে দিত।’ মুনীরুজ্জামান বিশ্বাস করতো স্বাধীনতা এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে নিয়ে যাবার। তিনি আমৃত্যু এই কাজটি করে গেছেন। উল্লেখ্য, সে সব সময় বলতো ‘মুক্তিযুদ্ধ সব সময় মুক্তিযুদ্ধ, সংগ্রাম সব সময় চালিয়ে যেতে হবে’। তিনি আরও বলেন, ‘ডা. না হলে আমি সাংবাদিকই হতাম। ও যে সাংবাদিকতা করত, তাতে আমার ভালোই লাগতো।’

এর আগে, এক মিনিট নীরবতা পালনের পর ২৪ অক্টোবর ২০২০-০৬ অক্টোবর ২০২১ পর্যন্ত প্রেসক্লাবের প্রয়াত সদস্য হাসান শাহরিয়ার, জাহিদুজ্জামান ফারুক, এ ইউ এম ফখরুদ্দিন, ফকীর আবদুর রাজ্জাক, আবুল হাসনাত, এরশাদুল হক, হান্নান খান, হুমায়ুন সাদেক চৌধুরী, খোন্দকার আতাউল হক, মিজানুর রহমান খান, হিলালী ওয়াদুদ চৌধুরী, সৈয়দ লুৎফুল হক, আহমদ আখতার, শাহীন রেজা নূর, সৈয়দ আবুল মকসুদ, আতিয়ার রহমান আতিক, এ জেড এম আনাস, মো. নুরুল হুদা, মোহাম্মদ আতিকুল্লাহ খান মাসুদ, কাইয়ুম খান মিলন, খোন্দকার শাহাদাত হোসেন, মো. রফিকুল আলম, এনামুল হক, সৈয়দ শাহজাহান, খোন্দকার ফজলুর রহমান (ফিউরি), শাহিদুজ্জামান খান, মুহীউদ্দিন আহম্মদ, মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস, মো. লুৎফর রহমান বীনু, বজলুল করিম, মো. আবদুর রহিম, গোলাপ মুনীর ও হামিদুজ্জামান রবির স্মৃতিচারণে আলোচনা হয়।

এর আগে তাদের স্মরণে প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খানের পক্ষ থেকে বাণী পড়ে শোনান ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল ইসলাম। সেখানে বলা হয়, করোনা অতিমারীর ছোবলে দেশ, জনপদ এখনও বিধ্বস্ত। এ এক দুঃসহকাল। গত এক বছরে আমরা হারিয়েছি অনেক স্বজন, সুহৃদ-সহযোগীকে। সাংবাদিকতা পেশার উন্নয়ন ও মর্যাদা বৃদ্ধির ধারাবাহিক যে প্রয়াস, তার অগ্রসৈনিক ছিলেন তাদের অনেকে। আমাদের প্রিয় সেকেন্ড হোম জাতীয় প্রেসক্লাবের ৬৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সূচনালগ্নে তাদের গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করছি। যারা ইন্তেকাল করেছেন, তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। তাদের আত্মার চিরশান্তির জন্য পরম করুণাময়ের দরবারে প্রার্থনা করি।

করোনা দুঃসময়ে অন্যসব পেশার মতো সাংবাদিকতা পেশায়ও অস্বাভাবিক বিপর্যয় ঘটেছে। জীবিকার অনিশ্চয়তার পাশাপাশি সুস্থ, স্বাভাবিক জীবনযাপন করাও দুঃসাধ্য। শঙ্কা, উৎকণ্ঠা, অনিশ্চয়তার ধকল সামলাতে না পেয়ে অনেকের মৃত্যু ত্বরান্বিত হয়েছে। এক বছরে ৩৪ জন সদস্যকে হারানো মর্মান্তিক ঘটনা। এ সময় আমরা হারিয়েছি ক্লাবের সাবেক সভাপতি, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সাংবাদিক হাসান শাহরিয়ারকে। হারিয়েছি বর্তমান ব্যবস্থাপনা কমিটির অন্যতম সিনিয়র সদস্য জাহিদুজ্জামান ফারুককে। ক্লাবের ৬৭ বছরের ইতিহাসে এক সঙ্গে এত বেশিসংখ্যক সদস্যের মৃত্যু এক বিরল ও শোকাবহ অধ্যায়। ক্লাব ও সাংবাদিকতা পেশার অপূরণীয় ক্ষতি। এই শূন্যতা ও মর্মবেদনায় আমরা শোকস্তব্ধ।অনন্তলোকে যারা পাড়ি জমিয়েছেন, তাদের আত্মীয় পরিজনের প্রতি আমাদের গভীর আন্তরিক সমবেদনা। তাদের মনোকষ্টের অংশীদার আমরাও। প্রিয়জন বিয়োগের আঘাত সহ্য করার মতো শক্তি যেন আল্লাহ তাদের দান করেন। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সময় আমাদের যে সাথীরা এখন অবর্তমান, আমরা মনে করি তাদের স্বপ্ন-আকাক্সক্ষা আদর্শ আমাদের সঙ্গে সব সঞ্চয় রয়েছে। সেই সঞ্চয় ও পাথেয় সম্বল করে আমরা সামনে এগিয়ে যাব।