এসএসসি পরীক্ষা, মাঠপর্যায়ে কার্যক্রম শুরু ১৭ অক্টোবর

এবারের এসএসসি পরীক্ষা নেয়ার মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম শুরু হচ্ছে আগামী ১৭ অক্টোবর। ওইদিন মূল খাতা, অতিরিক্তি উত্তরপত্র ও আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম কেন্দ্রগুলোতে পাঠাতে শুরু করবে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত বোর্ড থেকে এসব সরঞ্জাম বিতরণ করা হবে।

নির্ধারিত দিনে নির্ধারিত জেলার কেন্দ্রগুলোর কেন্দ্র সচিব বা দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষককে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টার মধ্যে পরীক্ষার সরঞ্জাম গ্রহণ করতে হবে। এ তথ্য জানিয়ে গতকাল ঢাকা শিক্ষা বোর্ড থেকে এসএসসি পরীক্ষার উত্তরপত্র ও সরঞ্জাম বিতরণের সূচি প্রকাশ করা হয়েছে।

আগামী ১৪ নভেম্বর চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত এসএসসির লিখিত পরীক্ষা চলবে। এই পরীক্ষা শেষে ২ ডিসেম্বর এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

পূর্বঘোষিত সূচি অনুযায়ী, এই পাবলিক পরীক্ষা শুরু হলে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত বার্ষিক পরীক্ষা নেয়ার সুযোগও থাকছে না। কারণ স্কুলগুলোকে এসএসসি পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। একই সঙ্গে শিক্ষকদেরও খাতা মূল্যায়নের কাজ করতে হবে।

করোনা মহামারীতে টানা দেড় বছরের ছুটি থাকার পর গত ১২ সেপ্টেম্বর সরাসরি শ্রেণীকক্ষে ক্লাস শুরু হয়েছে। সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখনও পুরোদমে ক্লাস শুরু হয়নি। প্রাথমিক পর্যায়ের প্রথম থেকে ৪র্থ শ্রেণী ও মাধ্যমিকের ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের সীমিত পরিসরে ক্লাস হচ্ছে।

পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের ‘ওয়ার্কশিটে’ বাড়ির কাজ ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের ‘অ্যাসাইনমেন্ট’ দেয়া হচ্ছে।

এ কারণে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের শ্রেণী সমাপনী বা বার্ষিক পরীক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। সরাসরি এই পরীক্ষা নেয়া হবে, নাকি ‘ওয়ার্কশিট’ ও ‘অ্যাসাইনমেন্ট’র ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হবে সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত জানায়নি শিক্ষা বিভাগ।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক বেলাল হোসেন গত বুধবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে মূল্যায়ন হবে, নাকি বার্ষিক পরীক্ষা নেয়া হবে- সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। সিদ্ধান্ত হলে দ্রুত জানিয়ে দেয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজধানীর মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ হাফিজুল ইসলাম সংবাদকে বলেন, ‘সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এসএসসি পরীক্ষা হচ্ছে, এই পরীক্ষা ৮/৯ দিনেই শেষ হয়ে যাবে। এরপর ছোট পরিসরে হলেও বার্ষিক পরীক্ষা নিতে পারলে ভালো হয়। কারণ দীর্ঘ ছুটিতে শিক্ষার্থীদের বেশ ক্ষতি হয়েছে, পর্যায়ক্রমে সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে হবে। তবে আমরা এখন পর্যন্ত বার্ষিক পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত পাইনি। পরীক্ষা নেয়া সম্ভব না হলে অ্যাসাইনমেন্টের ভিত্তিতেই মূল্যায়ন করতে হবে।’

বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ১৭ অক্টোবর ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার কেন্দ্রগুলোকে, ১৮ অক্টোবর কিশোরগঞ্জ ও শরিয়তপুরের সব কেন্দ্র, ২০ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ ও মাদারীপুরে, ২১ অক্টোবর নরসিংদী ও রাজবাড়ীর কেন্দ্রে, ২৩ অক্টোবর মুন্সীগঞ্জ ও মানিকগঞ্জে, ১৪ অক্টোবর টাঙ্গাইলের সব কেন্দ্রে, ২৫ অক্টোবর গাজীপুর, ২৭ অক্টোবর ঢাকা মহানগরীর ঢাকা-১ থেকে ঢাকা-৪৫ কেন্দ্রগুলোকে এবং ২৮ অক্টোবর ঢাকা-৪৬ থেকে রাজধানীর অবশিষ্ট কেন্দ্রগুলোকে উত্তরপত্র ও আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম বিতরণ করা হবে।

নির্ধারিত তারিখে কেন্দ্রসচিব নিজে বা তার প্রাধিকারপ্রাপ্ত একজন শিক্ষকের (যিনি পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট) মাধ্যমে সরঞ্জাম গ্রহণ করতে হবে। কোন অবস্থাতেই শিক্ষক ছাড়া অফিস সহকারী বা অন্য কাউকে প্রাধিকারপত্র দেয়া যাবে না। প্রধান শিক্ষক, অধ্যক্ষ বা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বা অধ্যক্ষের বেলায় সরঞ্জাম গ্রহণের আবেদনপত্রে কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (জেলা পর্যায়ের ডিসি, এডিসি ও ইউএনও) প্রতিস্বাক্ষর থাকতে হবে এবং প্রাধিকারপ্রাপ্ত শিক্ষকের বেলায় প্রাধিকারপত্রে কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (জেলা পর্যায়ে ডিসি, এডিসি এবং ইউএনও) প্রতিস্বাক্ষর থাকতে হবে।

শিক্ষা বোর্ড জানিয়েছে, বর্তমানে ঢাকা শহরে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ট্রাক চলাচল নিষিদ্ধ রয়েছে। এ কারণে বিকল্প পরিবহনের ব্যবস্থা করতে হবে এবং সরঞ্জাম গাড়িতে উঠানোর জন্য বোর্ড কর্তৃপক্ষ কোন ব্যয় বহন করবে না।

শুক্রবার, ০৮ অক্টোবর ২০২১ , ২৩ আশ্বিন ১৪২৮ ৩০ সফর ১৪৪৩

এসএসসি পরীক্ষা, মাঠপর্যায়ে কার্যক্রম শুরু ১৭ অক্টোবর

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

এবারের এসএসসি পরীক্ষা নেয়ার মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম শুরু হচ্ছে আগামী ১৭ অক্টোবর। ওইদিন মূল খাতা, অতিরিক্তি উত্তরপত্র ও আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম কেন্দ্রগুলোতে পাঠাতে শুরু করবে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত বোর্ড থেকে এসব সরঞ্জাম বিতরণ করা হবে।

নির্ধারিত দিনে নির্ধারিত জেলার কেন্দ্রগুলোর কেন্দ্র সচিব বা দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষককে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টার মধ্যে পরীক্ষার সরঞ্জাম গ্রহণ করতে হবে। এ তথ্য জানিয়ে গতকাল ঢাকা শিক্ষা বোর্ড থেকে এসএসসি পরীক্ষার উত্তরপত্র ও সরঞ্জাম বিতরণের সূচি প্রকাশ করা হয়েছে।

আগামী ১৪ নভেম্বর চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত এসএসসির লিখিত পরীক্ষা চলবে। এই পরীক্ষা শেষে ২ ডিসেম্বর এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

পূর্বঘোষিত সূচি অনুযায়ী, এই পাবলিক পরীক্ষা শুরু হলে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত বার্ষিক পরীক্ষা নেয়ার সুযোগও থাকছে না। কারণ স্কুলগুলোকে এসএসসি পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। একই সঙ্গে শিক্ষকদেরও খাতা মূল্যায়নের কাজ করতে হবে।

করোনা মহামারীতে টানা দেড় বছরের ছুটি থাকার পর গত ১২ সেপ্টেম্বর সরাসরি শ্রেণীকক্ষে ক্লাস শুরু হয়েছে। সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখনও পুরোদমে ক্লাস শুরু হয়নি। প্রাথমিক পর্যায়ের প্রথম থেকে ৪র্থ শ্রেণী ও মাধ্যমিকের ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের সীমিত পরিসরে ক্লাস হচ্ছে।

পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের ‘ওয়ার্কশিটে’ বাড়ির কাজ ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের ‘অ্যাসাইনমেন্ট’ দেয়া হচ্ছে।

এ কারণে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের শ্রেণী সমাপনী বা বার্ষিক পরীক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। সরাসরি এই পরীক্ষা নেয়া হবে, নাকি ‘ওয়ার্কশিট’ ও ‘অ্যাসাইনমেন্ট’র ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হবে সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত জানায়নি শিক্ষা বিভাগ।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক বেলাল হোসেন গত বুধবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে মূল্যায়ন হবে, নাকি বার্ষিক পরীক্ষা নেয়া হবে- সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। সিদ্ধান্ত হলে দ্রুত জানিয়ে দেয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজধানীর মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ হাফিজুল ইসলাম সংবাদকে বলেন, ‘সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এসএসসি পরীক্ষা হচ্ছে, এই পরীক্ষা ৮/৯ দিনেই শেষ হয়ে যাবে। এরপর ছোট পরিসরে হলেও বার্ষিক পরীক্ষা নিতে পারলে ভালো হয়। কারণ দীর্ঘ ছুটিতে শিক্ষার্থীদের বেশ ক্ষতি হয়েছে, পর্যায়ক্রমে সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে হবে। তবে আমরা এখন পর্যন্ত বার্ষিক পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত পাইনি। পরীক্ষা নেয়া সম্ভব না হলে অ্যাসাইনমেন্টের ভিত্তিতেই মূল্যায়ন করতে হবে।’

বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ১৭ অক্টোবর ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার কেন্দ্রগুলোকে, ১৮ অক্টোবর কিশোরগঞ্জ ও শরিয়তপুরের সব কেন্দ্র, ২০ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ ও মাদারীপুরে, ২১ অক্টোবর নরসিংদী ও রাজবাড়ীর কেন্দ্রে, ২৩ অক্টোবর মুন্সীগঞ্জ ও মানিকগঞ্জে, ১৪ অক্টোবর টাঙ্গাইলের সব কেন্দ্রে, ২৫ অক্টোবর গাজীপুর, ২৭ অক্টোবর ঢাকা মহানগরীর ঢাকা-১ থেকে ঢাকা-৪৫ কেন্দ্রগুলোকে এবং ২৮ অক্টোবর ঢাকা-৪৬ থেকে রাজধানীর অবশিষ্ট কেন্দ্রগুলোকে উত্তরপত্র ও আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম বিতরণ করা হবে।

নির্ধারিত তারিখে কেন্দ্রসচিব নিজে বা তার প্রাধিকারপ্রাপ্ত একজন শিক্ষকের (যিনি পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট) মাধ্যমে সরঞ্জাম গ্রহণ করতে হবে। কোন অবস্থাতেই শিক্ষক ছাড়া অফিস সহকারী বা অন্য কাউকে প্রাধিকারপত্র দেয়া যাবে না। প্রধান শিক্ষক, অধ্যক্ষ বা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বা অধ্যক্ষের বেলায় সরঞ্জাম গ্রহণের আবেদনপত্রে কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (জেলা পর্যায়ের ডিসি, এডিসি ও ইউএনও) প্রতিস্বাক্ষর থাকতে হবে এবং প্রাধিকারপ্রাপ্ত শিক্ষকের বেলায় প্রাধিকারপত্রে কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (জেলা পর্যায়ে ডিসি, এডিসি এবং ইউএনও) প্রতিস্বাক্ষর থাকতে হবে।

শিক্ষা বোর্ড জানিয়েছে, বর্তমানে ঢাকা শহরে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ট্রাক চলাচল নিষিদ্ধ রয়েছে। এ কারণে বিকল্প পরিবহনের ব্যবস্থা করতে হবে এবং সরঞ্জাম গাড়িতে উঠানোর জন্য বোর্ড কর্তৃপক্ষ কোন ব্যয় বহন করবে না।