সাপ নিয়ে কুসংস্কার পরিহার করুন
কাউকে সাপে কাটলে কি করতে হবে তা না ভেবে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। যার খেসারত দিতে হয় সাপে কাটা ব্যক্তিকে। সাপে কাটলে দ্রুত ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়া গ্রামীণ সমাজের সাধারণ চিত্র। ভুল চিকিৎসার কারণে আক্রান্ত ব্যক্তি প্রায়ই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। বর্ষায় সাপে কাটা গ্রামে উল্লেখযোগ্য একটা সমস্যা। সমাজে সাপ নিয়ে তৈরি কল্পকাহিনীকে সত্য বলে ধরে নেয়া মানুষের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। সাপ নিয়ে কুসংস্কার ছড়ানোতে বেশি অবদান রয়েছে সাপ নিয়ে তৈরি কাল্পনিক সিনেমার।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে প্রতি বছর সাপের কামড়ের শিকার হয় ৫ লাখ ৮৯ হাজার ৯১৯ জন। এদের মধ্যে বছরে মারা যায় প্রায় ৬ হাজার ৪১ জন। কিন্তু আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে, এর মধ্যে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয় মাত্র ৩ শতাংশ।
বাংলাদেশে প্রায় ৮৬ প্রজাতির সাপ দেখতে পাওয়া যায়। এরমধ্যে বিষধর সাপের সংখ্যা প্রায় ২৬টি। বিষধর সাপের প্রধানত দুটি লম্বা ও বাঁকানো দাঁত থাকে। তাই বিষধর সাপে কাটলে দুটো দাঁতের স্পষ্ট দাগ দেখতে পাওয়া যায়। অনেকসময় দাঁতের দাগ অস্পষ্টও হতে পারে। এছাড়াও বিষধর সাপের কামড়ে ক্ষতস্থান থেকে রক্তপাত, ক্ষতস্থান ফুলে যাওয়া, খাবার ও ঢোক গিলতে কষ্ট হওয়া, শরীর ফুলে যাওয়া ঘুম ঘুম ভাব, চোখে ঝাপসা দেখা, চোখের পাতা বন্ধ হয়ে যাওয়া, স্থির থাকতে না পারা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়। অন্যদিকে, বিষহীন সাপের ছোটছোট অনেকগুলো দাঁত থাকে। বিষহীন সাপের কামড়ে সামান্য ব্যথা, কামড়ানো স্থান ফুলে যাওয়া ও ক্ষতের সৃষ্টি হতে পারে। এসব লক্ষণ থাকলেও ঝুঁকি নেয়াটা ঠিক নয়।
বিষধর সাপের কামড়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মৃত্যুর মূল কারণ হিসেবে দেখা যায় যথাযথ সচেতনতার অভাব। ওঝা বা বেদের মাধ্যমে কুসংস্কারকে ভিত্তি করে চিকিৎসা করানো এবং রোগীকে হাসপাতালে আনতে বিলম্ব করাও একটি কারণ। তাই যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে নিকটবর্তী হাসপাতালে আনতে হবে। সাপে কাটলে রোগীকে আতঙ্কিত হওয়া থেকে বিরত রাখতে হবে। আতঙ্কের কারণে হার্ট এট্যাক করে রোগী মারা যেতে পারেন। রোগীকে বোঝাতে হবে বহুমানুষ সাপের কামড় খেয়েও বেঁচে আছেন। আপনি নিশ্চিন্তে থাকুন। এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হতে হবে।
মাহমুদুল হাসান মাহদি
শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
শুক্রবার, ০৮ অক্টোবর ২০২১ , ২৩ আশ্বিন ১৪২৮ ৩০ সফর ১৪৪৩
সাপ নিয়ে কুসংস্কার পরিহার করুন
কাউকে সাপে কাটলে কি করতে হবে তা না ভেবে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। যার খেসারত দিতে হয় সাপে কাটা ব্যক্তিকে। সাপে কাটলে দ্রুত ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়া গ্রামীণ সমাজের সাধারণ চিত্র। ভুল চিকিৎসার কারণে আক্রান্ত ব্যক্তি প্রায়ই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। বর্ষায় সাপে কাটা গ্রামে উল্লেখযোগ্য একটা সমস্যা। সমাজে সাপ নিয়ে তৈরি কল্পকাহিনীকে সত্য বলে ধরে নেয়া মানুষের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। সাপ নিয়ে কুসংস্কার ছড়ানোতে বেশি অবদান রয়েছে সাপ নিয়ে তৈরি কাল্পনিক সিনেমার।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে প্রতি বছর সাপের কামড়ের শিকার হয় ৫ লাখ ৮৯ হাজার ৯১৯ জন। এদের মধ্যে বছরে মারা যায় প্রায় ৬ হাজার ৪১ জন। কিন্তু আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে, এর মধ্যে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয় মাত্র ৩ শতাংশ।
বাংলাদেশে প্রায় ৮৬ প্রজাতির সাপ দেখতে পাওয়া যায়। এরমধ্যে বিষধর সাপের সংখ্যা প্রায় ২৬টি। বিষধর সাপের প্রধানত দুটি লম্বা ও বাঁকানো দাঁত থাকে। তাই বিষধর সাপে কাটলে দুটো দাঁতের স্পষ্ট দাগ দেখতে পাওয়া যায়। অনেকসময় দাঁতের দাগ অস্পষ্টও হতে পারে। এছাড়াও বিষধর সাপের কামড়ে ক্ষতস্থান থেকে রক্তপাত, ক্ষতস্থান ফুলে যাওয়া, খাবার ও ঢোক গিলতে কষ্ট হওয়া, শরীর ফুলে যাওয়া ঘুম ঘুম ভাব, চোখে ঝাপসা দেখা, চোখের পাতা বন্ধ হয়ে যাওয়া, স্থির থাকতে না পারা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়। অন্যদিকে, বিষহীন সাপের ছোটছোট অনেকগুলো দাঁত থাকে। বিষহীন সাপের কামড়ে সামান্য ব্যথা, কামড়ানো স্থান ফুলে যাওয়া ও ক্ষতের সৃষ্টি হতে পারে। এসব লক্ষণ থাকলেও ঝুঁকি নেয়াটা ঠিক নয়।
বিষধর সাপের কামড়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মৃত্যুর মূল কারণ হিসেবে দেখা যায় যথাযথ সচেতনতার অভাব। ওঝা বা বেদের মাধ্যমে কুসংস্কারকে ভিত্তি করে চিকিৎসা করানো এবং রোগীকে হাসপাতালে আনতে বিলম্ব করাও একটি কারণ। তাই যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে নিকটবর্তী হাসপাতালে আনতে হবে। সাপে কাটলে রোগীকে আতঙ্কিত হওয়া থেকে বিরত রাখতে হবে। আতঙ্কের কারণে হার্ট এট্যাক করে রোগী মারা যেতে পারেন। রোগীকে বোঝাতে হবে বহুমানুষ সাপের কামড় খেয়েও বেঁচে আছেন। আপনি নিশ্চিন্তে থাকুন। এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হতে হবে।
মাহমুদুল হাসান মাহদি
শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়