গঙ্গা যমুনা উৎসব ঘিরে সরব নাট্যাঙ্গন

দীর্ঘ বিরতির পর ‘গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক’ উৎসব ঘিরে যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে শিল্পের শিকড়ের সঙ্গে যুক্ত মানুষেরা, সক্রিয় হয়ে উঠেছে সংগঠনগুলো। শিল্পকলা একাডেমির সবগুলো মিলনায়তনকে কেন্দ্র করে ১ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এ উৎসব চলবে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত। এ উৎসবে সাড়ে তিন হাজার শিল্পী কলাকুশলীদের অংশগ্রহণ থাকছে বলে জানা গেছে। ফলে প্রথমদিন থেকেই জমজমাট এই ব্যপক আয়োজন। অনেকেই বলছেন, প্রকৃত শিল্পপ্রেমী মানুষরা পর্দার অনুষ্ঠান দেখে ততটা তৃপ্তি পান না যতটা মঞ্চে সরাসরি শিল্পীদের পরিবেশনা দেখে পান। তাই শিল্পের রস আস্বাধনের জন্য দর্শকরা মঞ্চকেই বেছে নেয়।

অপরদিকে মূলধারার শিল্পীদের আসল ঠিকানা মঞ্চ, তারা মঞ্চে কাজ করেই পরিপূর্ণ তৃপ্তি পান, তাই দীর্ঘদিন এসব শিল্পী ও দর্শকরা মঞ্চ থেকে দূরে থেকে হাঁপিয়ে উঠেছিল, ‘গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব’ তাদের স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছে।

এবারের উৎসবে ওপার বংলার দলগুলোর নাটক না থাকার পরেও দর্শকদের আগ্রহের কোন কমতি নেই এই উৎসবকে ঘিরে। শিল্পকলা একাডেমির সবগুলো মিলনায়তনেই নাচ, গান, আবৃত্তি, নাটক প্রদর্শনীতে দর্শকদের ব্যাপক অংশগ্রহণ দেখা যাচ্ছে। আর এসব প্রদর্শনীকে কেন্দ্র করেই শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এখন দর্শক ও শিল্পী কলাকুশলীদের পদচারণায় মুখর। প্রতিদন সন্ধ্যায় কয়েক হাজার মানুষের আগমনে ঘটছে শিল্পকলা একাডেমিতে। অনেকে পরিবার স্বজন নিয়ে আসছে নাটক দেখতে। গতকাল শুক্রবার ছুটির দিনে থাকায় দর্শকদের ভিড় বেড়ে যায় কয়েকগুণ। নাট্যশালার লবির সামনে তৈরি করা হয়েছে মুক্তমঞ্চ, এখানে বিকাল ৪টা থেকে ৭টা পর্যন্ত চলে নাচ-গান আবৃত্তি পথনাটকসহ শিশু-কিশোরদের পরিবেশনা। ফলে নাটক মঞ্চায়ন সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হলেও বিকাল ৪টা থেকেই শিল্পকলায় আসতে শুরু করেন দর্শকরা।

আজ ৯ অক্টোবর এই উৎসবে জাতীয় নাট্যশালার মূল হলে লোক নাট্যদল (সিদ্বেশ্বরী) মঞ্চায়ন করবে ‘আমরা তিনজন’, বুদ্ধদেব বসুর গল্প অবলম্বনে নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন নাট্যজন লিয়াকত আলী লাকী। পরীক্ষণ থিয়েটার হলে রয়েছে তনিমা হামিদের একক অভিনয়ের নাট্যচক্রের নাটক ‘একা এক নারী’, ‘একা এক নারী’র নির্দেশনা দিয়েছেন দেবপ্রসাদ দেবনাথ। ইতালির নোবেল বিজয়ী সাহিত্যিক, নাট্যকার ও অভিনেতা দারিও ফো এবং ফ্রাংক রামে রচিত ‘এ উমেন অ্যালোন’ নাটকটি অনুবাদ করেছেন অধ্যাপক আবদুস সালাম। স্টুডিও থিয়েটার হলে বাতিঘর পরিবেশন করবে ‘র‌্যাড ফ্লিক লাইন’ নাটক। নাটকটি রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছে তরুণ নাট্যকর্মী মুক্তনীল।

এছাড়াও জাতীয় সঙ্গীত, নৃত্যকলা ও আবৃত্তি মিলনায়তনে সত্যেন সেন শিল্প গোষ্ঠী পরিবেশন করবে গীতি আলেখ্য ‘ইতিহাস কথা কও’ স্রোত আবৃত্তি সংসদ পরিবেশন করবে আবৃত্তি প্রযোজনা সূবর্ণবাংলা। নাট্যশালার মূল হলের লবির সামনে মুক্ত মঞ্চে বিকেল ৪টা থেকে শুরু হওয়া আয়োজনে প্রথমে বাঙলা নাট্যদল পধনাটক মঞ্চায়ন করবে, দনিয়া সবুজ-বুঁড়ি ও কচি-কাঁচার মেলার রয়েছে শিশু-কিশোরদের পরিবেশনা, আবৃত্তি পরিবেশন করবে উচ্চারণ আকাদেমি, সুরসাগর ললিতকলা একাডেমি, দলীয় নৃত্য পরিবেশন করবে বহ্নিশিখা।

শনিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২১ , ২৪ আশ্বিন ১৪২৮ ০১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

গঙ্গা যমুনা উৎসব ঘিরে সরব নাট্যাঙ্গন

নিথর মাহবুব

image

দীর্ঘ বিরতির পর ‘গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক’ উৎসব ঘিরে যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে শিল্পের শিকড়ের সঙ্গে যুক্ত মানুষেরা, সক্রিয় হয়ে উঠেছে সংগঠনগুলো। শিল্পকলা একাডেমির সবগুলো মিলনায়তনকে কেন্দ্র করে ১ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এ উৎসব চলবে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত। এ উৎসবে সাড়ে তিন হাজার শিল্পী কলাকুশলীদের অংশগ্রহণ থাকছে বলে জানা গেছে। ফলে প্রথমদিন থেকেই জমজমাট এই ব্যপক আয়োজন। অনেকেই বলছেন, প্রকৃত শিল্পপ্রেমী মানুষরা পর্দার অনুষ্ঠান দেখে ততটা তৃপ্তি পান না যতটা মঞ্চে সরাসরি শিল্পীদের পরিবেশনা দেখে পান। তাই শিল্পের রস আস্বাধনের জন্য দর্শকরা মঞ্চকেই বেছে নেয়।

অপরদিকে মূলধারার শিল্পীদের আসল ঠিকানা মঞ্চ, তারা মঞ্চে কাজ করেই পরিপূর্ণ তৃপ্তি পান, তাই দীর্ঘদিন এসব শিল্পী ও দর্শকরা মঞ্চ থেকে দূরে থেকে হাঁপিয়ে উঠেছিল, ‘গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব’ তাদের স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছে।

এবারের উৎসবে ওপার বংলার দলগুলোর নাটক না থাকার পরেও দর্শকদের আগ্রহের কোন কমতি নেই এই উৎসবকে ঘিরে। শিল্পকলা একাডেমির সবগুলো মিলনায়তনেই নাচ, গান, আবৃত্তি, নাটক প্রদর্শনীতে দর্শকদের ব্যাপক অংশগ্রহণ দেখা যাচ্ছে। আর এসব প্রদর্শনীকে কেন্দ্র করেই শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এখন দর্শক ও শিল্পী কলাকুশলীদের পদচারণায় মুখর। প্রতিদন সন্ধ্যায় কয়েক হাজার মানুষের আগমনে ঘটছে শিল্পকলা একাডেমিতে। অনেকে পরিবার স্বজন নিয়ে আসছে নাটক দেখতে। গতকাল শুক্রবার ছুটির দিনে থাকায় দর্শকদের ভিড় বেড়ে যায় কয়েকগুণ। নাট্যশালার লবির সামনে তৈরি করা হয়েছে মুক্তমঞ্চ, এখানে বিকাল ৪টা থেকে ৭টা পর্যন্ত চলে নাচ-গান আবৃত্তি পথনাটকসহ শিশু-কিশোরদের পরিবেশনা। ফলে নাটক মঞ্চায়ন সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হলেও বিকাল ৪টা থেকেই শিল্পকলায় আসতে শুরু করেন দর্শকরা।

আজ ৯ অক্টোবর এই উৎসবে জাতীয় নাট্যশালার মূল হলে লোক নাট্যদল (সিদ্বেশ্বরী) মঞ্চায়ন করবে ‘আমরা তিনজন’, বুদ্ধদেব বসুর গল্প অবলম্বনে নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন নাট্যজন লিয়াকত আলী লাকী। পরীক্ষণ থিয়েটার হলে রয়েছে তনিমা হামিদের একক অভিনয়ের নাট্যচক্রের নাটক ‘একা এক নারী’, ‘একা এক নারী’র নির্দেশনা দিয়েছেন দেবপ্রসাদ দেবনাথ। ইতালির নোবেল বিজয়ী সাহিত্যিক, নাট্যকার ও অভিনেতা দারিও ফো এবং ফ্রাংক রামে রচিত ‘এ উমেন অ্যালোন’ নাটকটি অনুবাদ করেছেন অধ্যাপক আবদুস সালাম। স্টুডিও থিয়েটার হলে বাতিঘর পরিবেশন করবে ‘র‌্যাড ফ্লিক লাইন’ নাটক। নাটকটি রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছে তরুণ নাট্যকর্মী মুক্তনীল।

এছাড়াও জাতীয় সঙ্গীত, নৃত্যকলা ও আবৃত্তি মিলনায়তনে সত্যেন সেন শিল্প গোষ্ঠী পরিবেশন করবে গীতি আলেখ্য ‘ইতিহাস কথা কও’ স্রোত আবৃত্তি সংসদ পরিবেশন করবে আবৃত্তি প্রযোজনা সূবর্ণবাংলা। নাট্যশালার মূল হলের লবির সামনে মুক্ত মঞ্চে বিকেল ৪টা থেকে শুরু হওয়া আয়োজনে প্রথমে বাঙলা নাট্যদল পধনাটক মঞ্চায়ন করবে, দনিয়া সবুজ-বুঁড়ি ও কচি-কাঁচার মেলার রয়েছে শিশু-কিশোরদের পরিবেশনা, আবৃত্তি পরিবেশন করবে উচ্চারণ আকাদেমি, সুরসাগর ললিতকলা একাডেমি, দলীয় নৃত্য পরিবেশন করবে বহ্নিশিখা।