বরিশাল নগরীর বিদ্যালয়ের মাঠ রক্ষায় এলাকাবাসী একাট্টা

বরিশাল নগরীর উঁচু অঞ্চল কাউনিয়া প্রধান সড়ক এলাকাটি। এখানে কখনও জোয়ারের পানিও প্রবেশ করে না। একপাশ দিয়ে জেলখাল প্রবাহিত হওয়ায় কোন জলাবদ্ধতা নেই। অথচ এই এলাকাতে একটি দোতালা প্রাইমারি স্কুলের খেলার মাঠে নির্মিত হচ্ছে সাইক্লোন শেল্টার কাম স্কুল। খেলাধুলা ও সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবহৃত এ কাদের চৌধুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠটিতে এই অপ্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মিত হচ্ছে। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসী। মাঠ রক্ষার জন্য তারা বিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন।

শিশু কিশোর সংগঠন জাগৃহী খেলাঘর আসরের সাধারণ সম্পাদক নওরোজ কবির মানববন্ধনে বলেন, সাইক্লোন শেল্টার বন্যা উপদ্রুত এলাকায় নির্মিত হওয়া আবশ্যক। নগরীর মধ্যে বিদ্যালয়ের মাঠ নষ্ট করে সাইক্লোন শেল্টার ভবন নির্মাণ করে ঝড়, বন্যায় যাদের জন্য শেল্টার ভবনের প্রয়োজন সেখানে এ ধরনের ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে না। সমাবেশে বক্তারা বলেন, শুধু বিদ্যালয়ের ৪ শতাধিক শিক্ষার্থী নয়, এলাকার কিশোর-তরুণরা নিয়মিত এ মাঠে ক্রিকেট, ফুটবল খেলেন। সামাজিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠিত হয় এই মাঠে। যেকোন মূল্যে তারা মাঠটি রক্ষা করবেন।  

কাউনিয়া প্রধান সড়কে এ কাদের চৌধুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পূর্ব পাশে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য মাঠের প্রায় অর্ধেক অংশ জুড়ে মাটি খোঁড়ার কাজ চলছে। ২/৩ দিন আগে শ্রমিকরা কাজ শুরু করেছেন। নির্মিতব্য ভবনের পেছনে বড় অংশ ফাঁকা পড়ে আছে। সিটি করপোরেশন ও প্রয়াত সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম মোনায়েমের ওয়ারিশদের মধ্যে মামলা চলমান থাকায় এমন একটি সাইনবোর্ড ঝুলানো আছে ফাঁকা জমিতে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রায় দেড়কোটি টাকা ব্যয়ে এখানে তিনতলা ভবনের নিচতলায় সাইক্লোন শেল্টার এবং দোতালা ও তিনতলায় শ্রেণীকক্ষ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। পেছনে জমি ফাঁকা রেখে মাঠের ভেতর নতুন ভবন নির্মাণের কারণ জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষিকা আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ভবন নির্মাণের স্থান নির্ধারণ করেছে।

পরিচালনা কমিটির সভাপতি আমির হোসেন তালুকদার বলেন, মাঠের পূর্ব দিকের লাগোয়া জমি নিয়ে সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) সঙ্গে একটি পরিবারের মামলা চলছে। বিসিসির নিয়মানুযায়ী সীমানা থেকে ৩ ফুট ফাঁকা রাখায় মাঠের বড় অংশ নির্মিতব্য ভবনের ভেতরে চলে এসেছে। আমির হোসেন তালুকদার জানান, প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য সংলগ্ন মানিক মিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বড় মাঠ আছে। সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের জেলা সদস্য সচিব কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠ নষ্ট না করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে। তাছাড়া ফাঁকা জমি প্রভাবশালী মহলকে দখলের সুযোগ করে দিতে মাঠের মধ্যে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এ কাদের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ রক্ষার জন্য তারা স্থানীয় সংসদ সদস্য পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীমের কাছে যাবেন এবং প্রয়োজনে আইনের আশ্রয় নেবেন।

রবিবার, ১০ অক্টোবর ২০২১ , ২৫ আশ্বিন ১৪২৮ ০২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

বরিশাল নগরীর বিদ্যালয়ের মাঠ রক্ষায় এলাকাবাসী একাট্টা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, বরিশাল

বরিশাল নগরীর উঁচু অঞ্চল কাউনিয়া প্রধান সড়ক এলাকাটি। এখানে কখনও জোয়ারের পানিও প্রবেশ করে না। একপাশ দিয়ে জেলখাল প্রবাহিত হওয়ায় কোন জলাবদ্ধতা নেই। অথচ এই এলাকাতে একটি দোতালা প্রাইমারি স্কুলের খেলার মাঠে নির্মিত হচ্ছে সাইক্লোন শেল্টার কাম স্কুল। খেলাধুলা ও সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবহৃত এ কাদের চৌধুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠটিতে এই অপ্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মিত হচ্ছে। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসী। মাঠ রক্ষার জন্য তারা বিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন।

শিশু কিশোর সংগঠন জাগৃহী খেলাঘর আসরের সাধারণ সম্পাদক নওরোজ কবির মানববন্ধনে বলেন, সাইক্লোন শেল্টার বন্যা উপদ্রুত এলাকায় নির্মিত হওয়া আবশ্যক। নগরীর মধ্যে বিদ্যালয়ের মাঠ নষ্ট করে সাইক্লোন শেল্টার ভবন নির্মাণ করে ঝড়, বন্যায় যাদের জন্য শেল্টার ভবনের প্রয়োজন সেখানে এ ধরনের ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে না। সমাবেশে বক্তারা বলেন, শুধু বিদ্যালয়ের ৪ শতাধিক শিক্ষার্থী নয়, এলাকার কিশোর-তরুণরা নিয়মিত এ মাঠে ক্রিকেট, ফুটবল খেলেন। সামাজিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠিত হয় এই মাঠে। যেকোন মূল্যে তারা মাঠটি রক্ষা করবেন।  

কাউনিয়া প্রধান সড়কে এ কাদের চৌধুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পূর্ব পাশে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য মাঠের প্রায় অর্ধেক অংশ জুড়ে মাটি খোঁড়ার কাজ চলছে। ২/৩ দিন আগে শ্রমিকরা কাজ শুরু করেছেন। নির্মিতব্য ভবনের পেছনে বড় অংশ ফাঁকা পড়ে আছে। সিটি করপোরেশন ও প্রয়াত সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম মোনায়েমের ওয়ারিশদের মধ্যে মামলা চলমান থাকায় এমন একটি সাইনবোর্ড ঝুলানো আছে ফাঁকা জমিতে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রায় দেড়কোটি টাকা ব্যয়ে এখানে তিনতলা ভবনের নিচতলায় সাইক্লোন শেল্টার এবং দোতালা ও তিনতলায় শ্রেণীকক্ষ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। পেছনে জমি ফাঁকা রেখে মাঠের ভেতর নতুন ভবন নির্মাণের কারণ জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষিকা আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ভবন নির্মাণের স্থান নির্ধারণ করেছে।

পরিচালনা কমিটির সভাপতি আমির হোসেন তালুকদার বলেন, মাঠের পূর্ব দিকের লাগোয়া জমি নিয়ে সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) সঙ্গে একটি পরিবারের মামলা চলছে। বিসিসির নিয়মানুযায়ী সীমানা থেকে ৩ ফুট ফাঁকা রাখায় মাঠের বড় অংশ নির্মিতব্য ভবনের ভেতরে চলে এসেছে। আমির হোসেন তালুকদার জানান, প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য সংলগ্ন মানিক মিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বড় মাঠ আছে। সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের জেলা সদস্য সচিব কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠ নষ্ট না করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে। তাছাড়া ফাঁকা জমি প্রভাবশালী মহলকে দখলের সুযোগ করে দিতে মাঠের মধ্যে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এ কাদের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ রক্ষার জন্য তারা স্থানীয় সংসদ সদস্য পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীমের কাছে যাবেন এবং প্রয়োজনে আইনের আশ্রয় নেবেন।