বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক

রাজনীতির চেয়ে ব্যবসা গুরুত্বপূর্ণ : টিপু মুনশি

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ‘ব্যবসা ও উন্নয়ন বিবেচনায় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অংশীদার চীন। দুই দেশের সম্পর্কে রাজনীতির চেয়ে ব্যবসার গুরুত্ব বেশি।’

গতকাল বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিসিসিসিআই) ও ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ‘বাংলাদেশ-চীন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ওপর সেরা রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড’ বিতরণ উপলক্ষে রাজধানীর পল্টনে ইআরএফ কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন ঢাকাস্থ চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।

মন্ত্রী বলেছেন, ‘ব্যবসা ও উন্নয়ন কার্যক্রমের বিবেচনায় চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অংশীদার। বাংলাদেশ যত কাঁচামাল আমদানি করে তার বড় অংশই আসে চীন থেকে। পোশাক খাতের কাঁচামাল ও এক্সেসরিজে চীনের ওপর নির্ভরশীলতা রয়েছে। এছাড়া, দেশের মধ্যে যত বড় বড় নির্মাণ কার্যক্রম আছে, সেগুলোর মধ্যে অনেকক্ষেত্রেই চীনের অংশগ্রহণ রয়েছে। ফলে দুই দেশের সম্পর্কে রাজনীতির চেয়ে ব্যবসার গুরুত্ব বেশি। পৃথিবীটাই ব্যবসার ওপর চলছে। বৈশ্বিক রাজনীতি এখন অর্থনৈতিক রাজনীতি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলে থাকেন, শুধু রাজনৈতিক কূটনীতিতে হবে না। ব্যবসা বাণিজ্যের বিষয়ে কূটনীতি করতে হবে। সেই কূটনীতিতে যে সফল হবে, সে-ই প্রকৃত সফল।’

জাতিসংঘের ৭৬তম অধিবেশনে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিংপিংয়ের বক্তব্যের উদ্বৃতি দিয়ে রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, চীন বৈশ্বিক উন্নয়নে কাজ করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে। সবুজ ও স্বাস্থ্যসম্মত বৈশ্বিক উন্নয়ন চায় চীন। মানব কল্যাণে এবং কাউকে পেছনে না ফেলে উন্নয়ন চায় চীন। এজন্য আঞ্চলিক উন্নয়ন ও বিভিন্ন উদ্ভাবনে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশও চীনের এ বৈশ্বিক উন্নয়ন উদ্যোগ থেকে সহায়তা পাবে। গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের অসাধারণ অগ্রগতি হয়েছে। সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) নির্ধারিত সময়ে অর্জন হয়েছে। আগামী উন্নয়ন লক্ষ্যগুলোও সময়মত অর্জন হবে। ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উত্তরণ ঘটবে বাংলাদেশের। আর ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের ৩৫তম অর্থনীতিতে রূপান্তরিত হবে।’

প্রথমবার বিসিসিসিআই ও ইধারএফ যৌথভাবে এ ধরনের অ্যাওয়ার্ডের আয়োজন করল। এতে ইআরএফের অর্ধশতাধিক সদস্য প্রতিবেদন জমা দেন। এর মধ্য থেকে বাংলাদেশ চীনের সম্পর্কের বিভিন্ন খাতভিত্তিক ১০টি ক্যাটাগরিতে ১০টি রিপোর্টকে সেরা হিসেবে অ্যাওয়ার্ড দেয়া হয়েছে। বিজয়ী রিপোর্টারদের ক্রেস্ট, সনদ ও ৫০ হাজার টাকা করে পুরস্কার দেয়া হয়েছে। বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন বাণিজ্যমন্ত্রী, বিসিসিসিআই সভাপতি গাজী গোলাম মুর্তজা, ইআরএফ সভাপতি শারমীন রিনভীসহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত অন্যান্যরা।

বিসিসিসিআইয়ের যুগ্ম মহাসচিব আল মামুন মৃধার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির মহাসচিব শাহাজাহান মৃধা বেনু। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ-চীনের উষ্ণতম অর্থনৈতিক, ব্যবসায়িক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক সৃষ্টি করাই বিসিসিসিআইয়ের মূল লক্ষ্য। এ ধরনের রিপোর্টিং এ লক্ষ্যকে এগিয়ে নেবে।’

ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশিদুল ইসলাম বলেন, ‘চীন বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন অংশীদার। ব্যবসা বাণিজ্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে চীনের ওপর নির্ভরশীলতা রয়েছে। মহামারী মোকাবিলায় করোনার টিকা এবং অন্যান্য উন্নয়ন কর্মকা-ে সহযোগিতা করছে। আশা করা যায় বিসিসিসিআই এ সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নেবে।’

পরে ধন্যবাদ জানান বিসিসিসিআই সভাপতি গাজী গোলাম মুর্তজা ও ইআরএফ সভাপতি শারমীন রিনভী। বিসিসিসিআইয়ের যুগ্ম মহাসচিব আল মামুন মৃধা তার সমাপনী বক্তব্যে এই অ্যাওয়ার্ডের ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং সাংবাদিকদের জন্য ফেলোশিপ চালু করা হবে বলে জানান।

সোমবার, ১১ অক্টোবর ২০২১ , ২৬ আশ্বিন ১৪২৮ ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক

রাজনীতির চেয়ে ব্যবসা গুরুত্বপূর্ণ : টিপু মুনশি

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

image

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ‘ব্যবসা ও উন্নয়ন বিবেচনায় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অংশীদার চীন। দুই দেশের সম্পর্কে রাজনীতির চেয়ে ব্যবসার গুরুত্ব বেশি।’

গতকাল বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিসিসিসিআই) ও ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ‘বাংলাদেশ-চীন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ওপর সেরা রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড’ বিতরণ উপলক্ষে রাজধানীর পল্টনে ইআরএফ কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন ঢাকাস্থ চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।

মন্ত্রী বলেছেন, ‘ব্যবসা ও উন্নয়ন কার্যক্রমের বিবেচনায় চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অংশীদার। বাংলাদেশ যত কাঁচামাল আমদানি করে তার বড় অংশই আসে চীন থেকে। পোশাক খাতের কাঁচামাল ও এক্সেসরিজে চীনের ওপর নির্ভরশীলতা রয়েছে। এছাড়া, দেশের মধ্যে যত বড় বড় নির্মাণ কার্যক্রম আছে, সেগুলোর মধ্যে অনেকক্ষেত্রেই চীনের অংশগ্রহণ রয়েছে। ফলে দুই দেশের সম্পর্কে রাজনীতির চেয়ে ব্যবসার গুরুত্ব বেশি। পৃথিবীটাই ব্যবসার ওপর চলছে। বৈশ্বিক রাজনীতি এখন অর্থনৈতিক রাজনীতি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলে থাকেন, শুধু রাজনৈতিক কূটনীতিতে হবে না। ব্যবসা বাণিজ্যের বিষয়ে কূটনীতি করতে হবে। সেই কূটনীতিতে যে সফল হবে, সে-ই প্রকৃত সফল।’

জাতিসংঘের ৭৬তম অধিবেশনে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিংপিংয়ের বক্তব্যের উদ্বৃতি দিয়ে রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, চীন বৈশ্বিক উন্নয়নে কাজ করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে। সবুজ ও স্বাস্থ্যসম্মত বৈশ্বিক উন্নয়ন চায় চীন। মানব কল্যাণে এবং কাউকে পেছনে না ফেলে উন্নয়ন চায় চীন। এজন্য আঞ্চলিক উন্নয়ন ও বিভিন্ন উদ্ভাবনে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশও চীনের এ বৈশ্বিক উন্নয়ন উদ্যোগ থেকে সহায়তা পাবে। গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের অসাধারণ অগ্রগতি হয়েছে। সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) নির্ধারিত সময়ে অর্জন হয়েছে। আগামী উন্নয়ন লক্ষ্যগুলোও সময়মত অর্জন হবে। ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উত্তরণ ঘটবে বাংলাদেশের। আর ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের ৩৫তম অর্থনীতিতে রূপান্তরিত হবে।’

প্রথমবার বিসিসিসিআই ও ইধারএফ যৌথভাবে এ ধরনের অ্যাওয়ার্ডের আয়োজন করল। এতে ইআরএফের অর্ধশতাধিক সদস্য প্রতিবেদন জমা দেন। এর মধ্য থেকে বাংলাদেশ চীনের সম্পর্কের বিভিন্ন খাতভিত্তিক ১০টি ক্যাটাগরিতে ১০টি রিপোর্টকে সেরা হিসেবে অ্যাওয়ার্ড দেয়া হয়েছে। বিজয়ী রিপোর্টারদের ক্রেস্ট, সনদ ও ৫০ হাজার টাকা করে পুরস্কার দেয়া হয়েছে। বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন বাণিজ্যমন্ত্রী, বিসিসিসিআই সভাপতি গাজী গোলাম মুর্তজা, ইআরএফ সভাপতি শারমীন রিনভীসহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত অন্যান্যরা।

বিসিসিসিআইয়ের যুগ্ম মহাসচিব আল মামুন মৃধার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির মহাসচিব শাহাজাহান মৃধা বেনু। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ-চীনের উষ্ণতম অর্থনৈতিক, ব্যবসায়িক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক সৃষ্টি করাই বিসিসিসিআইয়ের মূল লক্ষ্য। এ ধরনের রিপোর্টিং এ লক্ষ্যকে এগিয়ে নেবে।’

ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশিদুল ইসলাম বলেন, ‘চীন বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন অংশীদার। ব্যবসা বাণিজ্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে চীনের ওপর নির্ভরশীলতা রয়েছে। মহামারী মোকাবিলায় করোনার টিকা এবং অন্যান্য উন্নয়ন কর্মকা-ে সহযোগিতা করছে। আশা করা যায় বিসিসিসিআই এ সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নেবে।’

পরে ধন্যবাদ জানান বিসিসিসিআই সভাপতি গাজী গোলাম মুর্তজা ও ইআরএফ সভাপতি শারমীন রিনভী। বিসিসিসিআইয়ের যুগ্ম মহাসচিব আল মামুন মৃধা তার সমাপনী বক্তব্যে এই অ্যাওয়ার্ডের ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং সাংবাদিকদের জন্য ফেলোশিপ চালু করা হবে বলে জানান।