চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসনে ৮ কিমি. সড়কে ১২ জলকপাট

কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক ও বাঁধ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বছরের পর বছর বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা পাবে পুরো চট্টগ্রাবাসী। কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়কটি যা অনেকের কাছে রিং রোড নামেও পরিচিত। সাড়ে আট কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এ প্রকল্পে জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য থাকছে ১২টি জলকপাট। এরমধ্যে ১০টি জলকপাটের নির্মাণ কাজ চলমান থাকলেও এখনো কোনটির কাজ শেষ হয়নি।

চউক’র তথ্য মতে, ১৯৯৫ সালে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন মাস্টারপ্লানে কালুরঘাট থেকে শাহ আমানত সেতু পর্যন্ত সড়ক নির্মাণের কথা উল্লেখ করা হয়। এরই ভিত্তিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয় সিডিএ। এরপর নগরীর অপ্রতুল অবকাঠামোগত অসুবিধা চিহ্নিত করতে ২০০৬ সালে সমীক্ষা পরিচালনা করে জাপান ব্যাংক ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন (জেবিআইসি)। সমীক্ষায় দুটি রিং রোড ও ছয়টি শাখা রোড নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়। এ সমীক্ষাটিও প্রকল্প গ্রহণে বিবেচনা করা হয়। ২০১৭ সালের ২৫ এপ্রিল একনেকে অনুমোদন পাওয়ার আগে মাত্র তিন মাসের মধ্যে প্রকল্পের ডিপিপি, প্ল্যানিং কমিশনের অনুমোদন, প্রি-একনেক শেষ হয় প্রকল্পটির।

এদিকে দশটির মধ্যে পাঁচটি জলকপাটের কাজ অনেকটায় শেষের দিকে দাবি প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের। ২০১৮ সালের অক্টেবরে সড়ক ও বাঁধ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু করে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক)। তিন বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের গত তিন বছরে অগ্রগতি হয়েছে ৫০ শতাংশ। দুই হাজার ৩১০ কোটি টাকার এই প্রকল্পে ইতোমধ্যে ব্যয় হয়েছে ৯০০ কোটি টাকা। প্রথমদিকে এই প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ২২৭৫ কোটি টাকা ধরা হলেও পরবর্তীতে তা বৃদ্ধি করে ২৩১০ কোটি টাকা করা হয়েছে।

প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে চউক’র নির্বাহী প্রকৌশলী ও কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট চাক্তাই (রিং রোড) প্রকল্পের পরিচালক রাজীব দাশ বলেন, প্রতি বছর বর্ষায় জোয়ারের পানি নগরীতে প্রবেশ করে। জোয়ারের পানি যাতে শহরে প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য এই জলকপাট বা রেগুলেটর নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রতিটিতে হাই পাওয়ারের পাম্প রয়েছে। যার মাধ্যমে জমে থাকা বৃষ্টির পানি সরানো যাবে। এই জলকপাট ও রেগুলেটরের মাধ্যমে একদিকে যেমন জোয়ারের পানি প্রবেশে বাধা দিবে, অন্যদিকে জমে থাকা বৃষ্টির পানি সরিয়ে নেয়া যাবে।

প্রকল্প পরিচালকের মতে, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে, নগরী একদিকে যেমন বন্যা ও জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা পাবে, অন্যদিকে জলাবদ্ধতা থেকেও মুক্তি পাবে। কালুরঘাট থেকে চাক্তাই পর্যন্ত এলাকার মানুষকে বন্যা ও জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা করার জন্য সাড়ে আট কিলোমিটারের বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। এরমধ্যে সাড়ে ছয় কিলোমিটারে মাটি ফিলিং এর কাজ ৭০ শতাংশ শেষ হয়েছে।

তিনি বলেন, আগামী বর্ষার আগেই সবগুলো জলকপাটের নির্মাণ কাজ শেষ হবে। এসবের পাশাপাশি আমরা ভূমি অধিগ্রহণের কাজও চালিয়ে যাচ্ছি।

সোমবার, ১১ অক্টোবর ২০২১ , ২৬ আশ্বিন ১৪২৮ ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসনে ৮ কিমি. সড়কে ১২ জলকপাট

চট্টগ্রাম ব্যুরো

কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক ও বাঁধ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বছরের পর বছর বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা পাবে পুরো চট্টগ্রাবাসী। কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়কটি যা অনেকের কাছে রিং রোড নামেও পরিচিত। সাড়ে আট কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এ প্রকল্পে জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য থাকছে ১২টি জলকপাট। এরমধ্যে ১০টি জলকপাটের নির্মাণ কাজ চলমান থাকলেও এখনো কোনটির কাজ শেষ হয়নি।

চউক’র তথ্য মতে, ১৯৯৫ সালে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন মাস্টারপ্লানে কালুরঘাট থেকে শাহ আমানত সেতু পর্যন্ত সড়ক নির্মাণের কথা উল্লেখ করা হয়। এরই ভিত্তিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয় সিডিএ। এরপর নগরীর অপ্রতুল অবকাঠামোগত অসুবিধা চিহ্নিত করতে ২০০৬ সালে সমীক্ষা পরিচালনা করে জাপান ব্যাংক ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন (জেবিআইসি)। সমীক্ষায় দুটি রিং রোড ও ছয়টি শাখা রোড নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়। এ সমীক্ষাটিও প্রকল্প গ্রহণে বিবেচনা করা হয়। ২০১৭ সালের ২৫ এপ্রিল একনেকে অনুমোদন পাওয়ার আগে মাত্র তিন মাসের মধ্যে প্রকল্পের ডিপিপি, প্ল্যানিং কমিশনের অনুমোদন, প্রি-একনেক শেষ হয় প্রকল্পটির।

এদিকে দশটির মধ্যে পাঁচটি জলকপাটের কাজ অনেকটায় শেষের দিকে দাবি প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের। ২০১৮ সালের অক্টেবরে সড়ক ও বাঁধ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু করে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক)। তিন বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের গত তিন বছরে অগ্রগতি হয়েছে ৫০ শতাংশ। দুই হাজার ৩১০ কোটি টাকার এই প্রকল্পে ইতোমধ্যে ব্যয় হয়েছে ৯০০ কোটি টাকা। প্রথমদিকে এই প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ২২৭৫ কোটি টাকা ধরা হলেও পরবর্তীতে তা বৃদ্ধি করে ২৩১০ কোটি টাকা করা হয়েছে।

প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে চউক’র নির্বাহী প্রকৌশলী ও কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট চাক্তাই (রিং রোড) প্রকল্পের পরিচালক রাজীব দাশ বলেন, প্রতি বছর বর্ষায় জোয়ারের পানি নগরীতে প্রবেশ করে। জোয়ারের পানি যাতে শহরে প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য এই জলকপাট বা রেগুলেটর নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রতিটিতে হাই পাওয়ারের পাম্প রয়েছে। যার মাধ্যমে জমে থাকা বৃষ্টির পানি সরানো যাবে। এই জলকপাট ও রেগুলেটরের মাধ্যমে একদিকে যেমন জোয়ারের পানি প্রবেশে বাধা দিবে, অন্যদিকে জমে থাকা বৃষ্টির পানি সরিয়ে নেয়া যাবে।

প্রকল্প পরিচালকের মতে, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে, নগরী একদিকে যেমন বন্যা ও জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা পাবে, অন্যদিকে জলাবদ্ধতা থেকেও মুক্তি পাবে। কালুরঘাট থেকে চাক্তাই পর্যন্ত এলাকার মানুষকে বন্যা ও জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা করার জন্য সাড়ে আট কিলোমিটারের বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। এরমধ্যে সাড়ে ছয় কিলোমিটারে মাটি ফিলিং এর কাজ ৭০ শতাংশ শেষ হয়েছে।

তিনি বলেন, আগামী বর্ষার আগেই সবগুলো জলকপাটের নির্মাণ কাজ শেষ হবে। এসবের পাশাপাশি আমরা ভূমি অধিগ্রহণের কাজও চালিয়ে যাচ্ছি।