১৭ বছরের কম বয়সীদের টিকা দিতে সম্মতি ডব্লিউএইচওর

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউিএইচও) করোনা মোকাবিলায় ১২ থেকে ১৭ বছর বা তার চেয়ে কম বয়সীদের টিকা দেয়ার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর বিসিপিএস মিলনায়তনে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন বিষয়ক প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক এ কথা জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি ৩-৪ দিন আগে জেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় গিয়েছিলাম। ডব্লিউএইচও ডিজির সঙ্গে দ্বি-পাক্ষীয় বৈঠক হয়েছে প্রায় ঘণ্টাখানেক এবং অনেক বিষয়ে তিনি বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন। টিকা দেয়ার সক্ষমতা দেখে তিনি প্রশংসা করেছেন। করোনা নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে তিনি প্রশংসা করেছেন।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা আপনাদের টিকা বাড়িয়ে দিতে পারবো। ছেলেমেয়েদের টিকার দেয়ার বিষয়ে তার সঙ্গে আমি আলোচনা করেছি। ডব্লিউএইচও ডিজি বলেছেন, জেনারেল কোন সার্কুলার আমরা দিইনি ১২ থেকে ১৭ বছর বা তার চেয়ে কম বয়সীদের টিকা দেয়ার বিষয়ে। আমি তখন বললাম, বিভিন্ন দেশে টিকা ছেলেমেয়েদের দেয়া হচ্ছে। আমরা দেড় বছর বন্ধ রাখার পরে স্কুল খুলে দিয়েছি। অভিভাবকরা চান, তাদের সন্তানদের টিকা দেয়া হোক। সংক্রমণের হাত থেকে তাদের টিকা দিতে হবে। সব শুনে তিনি সম্মতি দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি বিগত দিনের তুলনায় অনেক ভালো অবস্থায় আছে। আশপাশের যে কোন দেশের চেয়ে আমরা ভালো অবস্থায় আছি। আমাদের হাসপাতালে ৯০ শতাংশ বেড খালি। রোগীর সংখ্যা কমে গেছে। করোনা রোগীর চাপ কমে গেছে। স্কুল খুলে দেয়া হয়েছে। আমি স্বস্তির সঙ্গে থাকলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। এক ঢেউয়ের পরে আরেক ঢেউ চলে আসে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা এ পর্যন্ত ৭ কোটি ২২ লাখ ভ্যাকসিন পেয়েছি। তার মধ্যে ৩ কোটি ৬১ লাখ প্রথম ডোজের ভ্যাকসিন দিয়েছি এবং ১ কোটি ৭৯ লাখ দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। মোট ৫ কোটি ৪১ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। আগামীতে আরও বৃদ্ধি পাবে। এই মুহূর্তে ১ কোটি ৮১ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন আমাদের হাতে আছে। নিবন্ধন করেছে ৫ কোটি ২০ লাখ মানুষ। আমরা আশা করি, আগামীতে রেজিস্ট্রেশনের সংখ্যা আরও বাড়বে। আমাদের বাড়াতেও হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করি অক্টোবর মাসে ৩ কোটি বেশি ভ্যাকসিন আমাদের হাতে থাকবে। আমরা যেন সর্বাধিক ভ্যাকসিন দিয়ে ফেলতে পারি, সেই পরিকল্পনাও হাতে নেয়া হয়েছে। নভেম্বরে হয়তো পৌনে ৪ কোটি ভ্যাকসিন আমাদের হাতে থাকবে। অক্টোবরে যদি আমরা সব ভ্যাকসিন দিতে না পারি তাহলে সেগুলো নভেম্বরে দেয়া হবে। আমাদের হাতে সবচেয়ে বেশি ভ্যাকসিন আসবে ডিসেম্বর মাসে। আমরা হিসাব করে দেখেছি, সব কিছু মিলে ৫ কোটির মতো ভ্যাকসিন আমাদের হাতে আসার কথা।

জানুয়ারিতে পৌনে ৪ কোটি টিকা আমাদের হাতে থাকবে। কোভ্যাক্স সুবিধার আওতায় যে টিকা আমাদের দিচ্ছে, সে সংখ্যা যদি বাড়ে তাহলে আমাদের টিকার সংখ্যাও বাড়বে। ৪ থেকে ৬ লাখ টিকা আমরা দৈনিক দিয়ে আসছি। দৈনিক টিকা দেয়ার হার আমরা বৃদ্ধি করছি। আমরা ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছি, আমাদের প্রতি দিন ১০ থেকে ১৫ লাখ ডোজ টিকা দিতে হবে। পাশাপাশি আমরা এক-আধটা বড় ক্যাম্পেইন করবো যদি প্রয়োজন হয় বলেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, টিকার যে কর্মসূচি আমরা হাতে নিয়েছি এবং প্রাপ্তি যেটা আশা করছি সেটা হলে ডিসেম্বর-জানুয়ারির মধ্যে আমরা প্রায় ৮ কোটি মানুষকে ২ ডোজ টিকা দিতে সক্ষম হবো। মার্চ-এপ্রিলে আমরা আরও ৪ কোটি মানুষকে ২ ডোজের টিকা দিতে পারবো। অর্থাৎ ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকা দেয়া হয়ে যাবে। অনেক দেশ আছে, যারা এখনও ২ শতাংশ টিকা দিতে পারেনি।

সোমবার, ১১ অক্টোবর ২০২১ , ২৬ আশ্বিন ১৪২৮ ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

১৭ বছরের কম বয়সীদের টিকা দিতে সম্মতি ডব্লিউএইচওর

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউিএইচও) করোনা মোকাবিলায় ১২ থেকে ১৭ বছর বা তার চেয়ে কম বয়সীদের টিকা দেয়ার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর বিসিপিএস মিলনায়তনে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন বিষয়ক প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক এ কথা জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি ৩-৪ দিন আগে জেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় গিয়েছিলাম। ডব্লিউএইচও ডিজির সঙ্গে দ্বি-পাক্ষীয় বৈঠক হয়েছে প্রায় ঘণ্টাখানেক এবং অনেক বিষয়ে তিনি বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন। টিকা দেয়ার সক্ষমতা দেখে তিনি প্রশংসা করেছেন। করোনা নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে তিনি প্রশংসা করেছেন।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা আপনাদের টিকা বাড়িয়ে দিতে পারবো। ছেলেমেয়েদের টিকার দেয়ার বিষয়ে তার সঙ্গে আমি আলোচনা করেছি। ডব্লিউএইচও ডিজি বলেছেন, জেনারেল কোন সার্কুলার আমরা দিইনি ১২ থেকে ১৭ বছর বা তার চেয়ে কম বয়সীদের টিকা দেয়ার বিষয়ে। আমি তখন বললাম, বিভিন্ন দেশে টিকা ছেলেমেয়েদের দেয়া হচ্ছে। আমরা দেড় বছর বন্ধ রাখার পরে স্কুল খুলে দিয়েছি। অভিভাবকরা চান, তাদের সন্তানদের টিকা দেয়া হোক। সংক্রমণের হাত থেকে তাদের টিকা দিতে হবে। সব শুনে তিনি সম্মতি দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি বিগত দিনের তুলনায় অনেক ভালো অবস্থায় আছে। আশপাশের যে কোন দেশের চেয়ে আমরা ভালো অবস্থায় আছি। আমাদের হাসপাতালে ৯০ শতাংশ বেড খালি। রোগীর সংখ্যা কমে গেছে। করোনা রোগীর চাপ কমে গেছে। স্কুল খুলে দেয়া হয়েছে। আমি স্বস্তির সঙ্গে থাকলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। এক ঢেউয়ের পরে আরেক ঢেউ চলে আসে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা এ পর্যন্ত ৭ কোটি ২২ লাখ ভ্যাকসিন পেয়েছি। তার মধ্যে ৩ কোটি ৬১ লাখ প্রথম ডোজের ভ্যাকসিন দিয়েছি এবং ১ কোটি ৭৯ লাখ দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। মোট ৫ কোটি ৪১ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। আগামীতে আরও বৃদ্ধি পাবে। এই মুহূর্তে ১ কোটি ৮১ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন আমাদের হাতে আছে। নিবন্ধন করেছে ৫ কোটি ২০ লাখ মানুষ। আমরা আশা করি, আগামীতে রেজিস্ট্রেশনের সংখ্যা আরও বাড়বে। আমাদের বাড়াতেও হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করি অক্টোবর মাসে ৩ কোটি বেশি ভ্যাকসিন আমাদের হাতে থাকবে। আমরা যেন সর্বাধিক ভ্যাকসিন দিয়ে ফেলতে পারি, সেই পরিকল্পনাও হাতে নেয়া হয়েছে। নভেম্বরে হয়তো পৌনে ৪ কোটি ভ্যাকসিন আমাদের হাতে থাকবে। অক্টোবরে যদি আমরা সব ভ্যাকসিন দিতে না পারি তাহলে সেগুলো নভেম্বরে দেয়া হবে। আমাদের হাতে সবচেয়ে বেশি ভ্যাকসিন আসবে ডিসেম্বর মাসে। আমরা হিসাব করে দেখেছি, সব কিছু মিলে ৫ কোটির মতো ভ্যাকসিন আমাদের হাতে আসার কথা।

জানুয়ারিতে পৌনে ৪ কোটি টিকা আমাদের হাতে থাকবে। কোভ্যাক্স সুবিধার আওতায় যে টিকা আমাদের দিচ্ছে, সে সংখ্যা যদি বাড়ে তাহলে আমাদের টিকার সংখ্যাও বাড়বে। ৪ থেকে ৬ লাখ টিকা আমরা দৈনিক দিয়ে আসছি। দৈনিক টিকা দেয়ার হার আমরা বৃদ্ধি করছি। আমরা ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছি, আমাদের প্রতি দিন ১০ থেকে ১৫ লাখ ডোজ টিকা দিতে হবে। পাশাপাশি আমরা এক-আধটা বড় ক্যাম্পেইন করবো যদি প্রয়োজন হয় বলেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, টিকার যে কর্মসূচি আমরা হাতে নিয়েছি এবং প্রাপ্তি যেটা আশা করছি সেটা হলে ডিসেম্বর-জানুয়ারির মধ্যে আমরা প্রায় ৮ কোটি মানুষকে ২ ডোজ টিকা দিতে সক্ষম হবো। মার্চ-এপ্রিলে আমরা আরও ৪ কোটি মানুষকে ২ ডোজের টিকা দিতে পারবো। অর্থাৎ ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকা দেয়া হয়ে যাবে। অনেক দেশ আছে, যারা এখনও ২ শতাংশ টিকা দিতে পারেনি।