এক সপ্তাহের বদলে চার মাস পর ভিসেরা নমুনা সংগ্রহ

ময়নাতদন্তের চারমাস পর ভিসেরা নমুনা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ঢাকায় প্রেরণের উদ্যোগ নিয়েছে বানারীপড়া থানা পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বানারীপাড়া থানার উপ-পরিদর্শক ওসমান গনি হাওলাদারে গাফেলতিতে ভিসেরা নমুনা সংগ্রহের চার মাস পর বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালের (শেবাচিম) মর্গে পড়ে থাকে। নানামুখী চাপের পর তিনি গতকাল নমুনা শেবাচিমের মর্গ থেকে বানারীপাড়া থানায় নিয়ে যান। স্বাভাবিক নিয়মানুযায়ী ময়নাতদন্তের এক সপ্তাহের মধ্যে ভিসেরা নমুনা পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) পাঠাতে হয়।

উপ-পরিদর্শক ওসমান গনি হাওলাদার বলেন, গতকাল বেলা ১১টার দিকে তিনি ওই নারীর ভিসেরা নমুনা শেবাচিমের মর্গ থেকে গ্রহণ করেছেন। দ্রুত তিনি নমুনা ঢাকায় পাঠাবেন। চার মাস দেরির কারণ জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর না দিয়ে বলেন, এসব ক্ষেত্রে মাঝে মাঝে দেরি হয়ে যায়। এখন সবকিছু দ্রুত করার ব্যবস্থা করছেন।

শেবাচিমের মর্গের ডোম বিজয় কুমার বলেন, আদালতের নির্দেশে গত ২৭ মে বানারীপাড়ার বাকপুর গ্রাম থেকে মমতাজ বেগম (৬৫) নামক এক নারীর মৃতদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হলে ওই দিনই শেবাচিমের মর্গে মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়। গত চার মাসে অন্তত ১০ বার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ওসমান ও বানারীপাড়া থানার বকশিকে ফোন করে ভিসেরা নমুনা নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করা হয়। তারা এতে উল্টো বিরক্তি প্রকাশ করেন। সর্বশেষ গত ৭ অক্টোবর ফোন দেয়ার পর গতকাল মর্গ থেকে নমুনা নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

মৃত মমতাজ বেগমের ছেলে কাজী জুয়েল বলেন, মায়ের ময়নাতদন্ত রিপোর্টের জন্য গত চার মাস ধরে বানারীপাড়া থানার এসআই ওসমান গনির কাছে ধর্ণা দিয়েছি। তিনি প্রতিবারই জানিয়েছেন এখনও রিপোর্ট আসেনি। সম্প্রতি খোঁজ নিয়ে জনতে পারি, মায়ের শরীর থেকে সংগৃহীত নমুনা শেবাচিমের মর্গ থেকে সংগ্রহ করে ঢাকাতে পাঠাননি তিনি। তিনি এটা গোপন রেখে আমাদেরকে বলেছেন, রিপোর্ট এখনও ঢাকা থেকে আসেনি। কাজী জুয়েল জানান, গত ৫ এপ্রিল তার মা মমতাজ বেগম ঘরের বাইরে তিন ফুট উঁচু জায়গা থেকে পড়ে গিয়ে মারা যান। মায়ের মৃত্যুর সংবাদে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় জানাজা ও দাফনে অংশগ্রহণ করতে পারেননি। পরে মৃতদেহ যারা গোসল করিয়েছেন তারা জানান, তার মায়ের মাথায় গুরুতর জখমের চিহ্ন ছিল। ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করে মাকে হত্যার আশঙ্কায় তিনি মৃতদেহের ময়নাতদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করেছিলেন। আদালতের নির্দেশে ঘটনার ৩২ দিন পর কবর থেকে মৃতদেহ তুলে ময়নাতদন্ত করা হয়।

সোমবার, ১১ অক্টোবর ২০২১ , ২৬ আশ্বিন ১৪২৮ ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

পুলিশের চরম গাফিলতি

এক সপ্তাহের বদলে চার মাস পর ভিসেরা নমুনা সংগ্রহ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, বরিশাল

ময়নাতদন্তের চারমাস পর ভিসেরা নমুনা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ঢাকায় প্রেরণের উদ্যোগ নিয়েছে বানারীপড়া থানা পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বানারীপাড়া থানার উপ-পরিদর্শক ওসমান গনি হাওলাদারে গাফেলতিতে ভিসেরা নমুনা সংগ্রহের চার মাস পর বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালের (শেবাচিম) মর্গে পড়ে থাকে। নানামুখী চাপের পর তিনি গতকাল নমুনা শেবাচিমের মর্গ থেকে বানারীপাড়া থানায় নিয়ে যান। স্বাভাবিক নিয়মানুযায়ী ময়নাতদন্তের এক সপ্তাহের মধ্যে ভিসেরা নমুনা পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) পাঠাতে হয়।

উপ-পরিদর্শক ওসমান গনি হাওলাদার বলেন, গতকাল বেলা ১১টার দিকে তিনি ওই নারীর ভিসেরা নমুনা শেবাচিমের মর্গ থেকে গ্রহণ করেছেন। দ্রুত তিনি নমুনা ঢাকায় পাঠাবেন। চার মাস দেরির কারণ জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর না দিয়ে বলেন, এসব ক্ষেত্রে মাঝে মাঝে দেরি হয়ে যায়। এখন সবকিছু দ্রুত করার ব্যবস্থা করছেন।

শেবাচিমের মর্গের ডোম বিজয় কুমার বলেন, আদালতের নির্দেশে গত ২৭ মে বানারীপাড়ার বাকপুর গ্রাম থেকে মমতাজ বেগম (৬৫) নামক এক নারীর মৃতদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হলে ওই দিনই শেবাচিমের মর্গে মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়। গত চার মাসে অন্তত ১০ বার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ওসমান ও বানারীপাড়া থানার বকশিকে ফোন করে ভিসেরা নমুনা নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করা হয়। তারা এতে উল্টো বিরক্তি প্রকাশ করেন। সর্বশেষ গত ৭ অক্টোবর ফোন দেয়ার পর গতকাল মর্গ থেকে নমুনা নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

মৃত মমতাজ বেগমের ছেলে কাজী জুয়েল বলেন, মায়ের ময়নাতদন্ত রিপোর্টের জন্য গত চার মাস ধরে বানারীপাড়া থানার এসআই ওসমান গনির কাছে ধর্ণা দিয়েছি। তিনি প্রতিবারই জানিয়েছেন এখনও রিপোর্ট আসেনি। সম্প্রতি খোঁজ নিয়ে জনতে পারি, মায়ের শরীর থেকে সংগৃহীত নমুনা শেবাচিমের মর্গ থেকে সংগ্রহ করে ঢাকাতে পাঠাননি তিনি। তিনি এটা গোপন রেখে আমাদেরকে বলেছেন, রিপোর্ট এখনও ঢাকা থেকে আসেনি। কাজী জুয়েল জানান, গত ৫ এপ্রিল তার মা মমতাজ বেগম ঘরের বাইরে তিন ফুট উঁচু জায়গা থেকে পড়ে গিয়ে মারা যান। মায়ের মৃত্যুর সংবাদে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় জানাজা ও দাফনে অংশগ্রহণ করতে পারেননি। পরে মৃতদেহ যারা গোসল করিয়েছেন তারা জানান, তার মায়ের মাথায় গুরুতর জখমের চিহ্ন ছিল। ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করে মাকে হত্যার আশঙ্কায় তিনি মৃতদেহের ময়নাতদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করেছিলেন। আদালতের নির্দেশে ঘটনার ৩২ দিন পর কবর থেকে মৃতদেহ তুলে ময়নাতদন্ত করা হয়।